১২:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

যাত্রী বহন করতে পারবে না সুন্দরবন-১০ ও মানামী লঞ্চ

বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার কালীগঞ্জ সংলগ্ন মেঘনা নদীতে দুটি যাত্রীবাহী লঞ্চের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনার সময় লঞ্চ দুটিতে নয় শতাধিক যাত্রী ছিল। এতে হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও দুটি লঞ্চই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লঞ্চ দুটি ঢাকা থেকে বরিশাল যাওয়ার সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিআইডব্লিউটিএ বরিশাল কার্যালয়ের নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগ, বন্দর কর্মকর্তা ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্ঘটনাকবলিত এমভি সুন্দরবন-১০ ও এমভি মানামী লঞ্চ পরিদর্শন করা হয়েছে। পরিদর্শন শেষে লঞ্চ দুটির যাত্রা বাতিলের নির্দেশ দেয়া হয়। পাশাপাশি এ ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এমভি মানামী লঞ্চের সুপারভাইজার শাহাদাৎ হোসেন শুভ বলেন, ঢাকার সদরঘাট থেকে পাঁচ শতাধিক যাত্রী নিয়ে বুধবার রাত ৯টার দিকে এমভি মানামী লঞ্চ বরিশালের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। রাত আড়াইটার দিকে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার কালীগঞ্জ সংলগ্ন মেঘনা নদীতে ডুবোচরে আটকা পড়ে লঞ্চটি। এ সময় পেছন থেকে এমভি সুন্দরবন-১০ লঞ্চ মানামী লঞ্চটিকে ধাক্কা দেয়। এতে লঞ্চের যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। দুমড়ে-মুচড়ে যায় মানামী লঞ্চের নিচতলার পানির ট্যাংকসহ ডান দিকের অংশ। এতে তিন লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে কোনো যাত্রী হতাহত হয়নি।

সুপারভাইজার শাহাদাৎ হোসেন শুভ বলেন, সংঘর্ষ এড়াতে বারবার হর্ন বাজিয়ে লঞ্চের অবস্থান জানান দিচ্ছিল মানামী লঞ্চটি। লঞ্চ মাস্টার ও সুকানি লঞ্চটিকে চর থেকে নামানোর চেষ্টা করছিল। এমন সময় সুন্দরবন-১০ লঞ্চ মানামী লঞ্চটিকে ধাক্কা দেয়। সুন্দরবন-১০ লঞ্চ স্টাফদের বেপরোয়ার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারা এসে লঞ্চটি পরিদর্শন করেন।

এমভি সুন্দরবন-১০ লঞ্চের সুপারভাইজার মো. হারুন অর রশিদ বলেন, চার শতাধিক যাত্রী নিয়ে বুধবার রাত ৯টার দিকে ঢাকার সদরঘাট থেকে আমাদের লঞ্চটি বরিশালের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। রাত আড়াইটার দিকে কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই সুন্দরবন-১০ লঞ্চের বাম দিকে মানামী লঞ্চটি ধাক্কা দেয়। এতে লঞ্চের নিচতলার বাম দিকের বড় অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে ক্ষতি হয় নিচতলার চা ও পানের দোকান। সেই সঙ্গে লঞ্চের পাঁচ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে।

এমভি সুন্দরবন-১০ লঞ্চের মালিক সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, মানামী লঞ্চের মাস্টার ও সুকানির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তারা সতর্ক হয়ে লঞ্চ চালালে এ দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া যেত। এ ব্যাপারে মানামী লঞ্চের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ঢাকার কার্যালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএর বরিশাল কার্যালয়ের যুগ্ম পরিচালক আজমল হুদা মিঠু সরকার বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত এমভি সুন্দরবন-১০ ও এমভি মানামী লঞ্চ পরিদর্শন করা হয়েছে। দুর্ঘটনার জন্য দুই লঞ্চের মালিকপক্ষ একে-অপরকে দোষারোপ করছে। তবে কি কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখতে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি লঞ্চ দুটির চলাচল বাতিল করা হয়েছে। লঞ্চ দুটি মেরামতের পর চলাচলের উপযোগী হলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ও সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের সার্ভে দল দিয়ে পরীক্ষা করানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এরপর তারা যদি অনুমতি দেয় তাহলে যাত্রী বহন করতে পারবে লঞ্চ দুটি।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর

যাত্রী বহন করতে পারবে না সুন্দরবন-১০ ও মানামী লঞ্চ

প্রকাশিত : ০৭:৪৮:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জুলাই ২০২০

বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার কালীগঞ্জ সংলগ্ন মেঘনা নদীতে দুটি যাত্রীবাহী লঞ্চের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনার সময় লঞ্চ দুটিতে নয় শতাধিক যাত্রী ছিল। এতে হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও দুটি লঞ্চই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লঞ্চ দুটি ঢাকা থেকে বরিশাল যাওয়ার সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিআইডব্লিউটিএ বরিশাল কার্যালয়ের নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগ, বন্দর কর্মকর্তা ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্ঘটনাকবলিত এমভি সুন্দরবন-১০ ও এমভি মানামী লঞ্চ পরিদর্শন করা হয়েছে। পরিদর্শন শেষে লঞ্চ দুটির যাত্রা বাতিলের নির্দেশ দেয়া হয়। পাশাপাশি এ ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এমভি মানামী লঞ্চের সুপারভাইজার শাহাদাৎ হোসেন শুভ বলেন, ঢাকার সদরঘাট থেকে পাঁচ শতাধিক যাত্রী নিয়ে বুধবার রাত ৯টার দিকে এমভি মানামী লঞ্চ বরিশালের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। রাত আড়াইটার দিকে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার কালীগঞ্জ সংলগ্ন মেঘনা নদীতে ডুবোচরে আটকা পড়ে লঞ্চটি। এ সময় পেছন থেকে এমভি সুন্দরবন-১০ লঞ্চ মানামী লঞ্চটিকে ধাক্কা দেয়। এতে লঞ্চের যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। দুমড়ে-মুচড়ে যায় মানামী লঞ্চের নিচতলার পানির ট্যাংকসহ ডান দিকের অংশ। এতে তিন লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে কোনো যাত্রী হতাহত হয়নি।

সুপারভাইজার শাহাদাৎ হোসেন শুভ বলেন, সংঘর্ষ এড়াতে বারবার হর্ন বাজিয়ে লঞ্চের অবস্থান জানান দিচ্ছিল মানামী লঞ্চটি। লঞ্চ মাস্টার ও সুকানি লঞ্চটিকে চর থেকে নামানোর চেষ্টা করছিল। এমন সময় সুন্দরবন-১০ লঞ্চ মানামী লঞ্চটিকে ধাক্কা দেয়। সুন্দরবন-১০ লঞ্চ স্টাফদের বেপরোয়ার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারা এসে লঞ্চটি পরিদর্শন করেন।

এমভি সুন্দরবন-১০ লঞ্চের সুপারভাইজার মো. হারুন অর রশিদ বলেন, চার শতাধিক যাত্রী নিয়ে বুধবার রাত ৯টার দিকে ঢাকার সদরঘাট থেকে আমাদের লঞ্চটি বরিশালের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। রাত আড়াইটার দিকে কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই সুন্দরবন-১০ লঞ্চের বাম দিকে মানামী লঞ্চটি ধাক্কা দেয়। এতে লঞ্চের নিচতলার বাম দিকের বড় অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে ক্ষতি হয় নিচতলার চা ও পানের দোকান। সেই সঙ্গে লঞ্চের পাঁচ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে।

এমভি সুন্দরবন-১০ লঞ্চের মালিক সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, মানামী লঞ্চের মাস্টার ও সুকানির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তারা সতর্ক হয়ে লঞ্চ চালালে এ দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া যেত। এ ব্যাপারে মানামী লঞ্চের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ঢাকার কার্যালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএর বরিশাল কার্যালয়ের যুগ্ম পরিচালক আজমল হুদা মিঠু সরকার বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত এমভি সুন্দরবন-১০ ও এমভি মানামী লঞ্চ পরিদর্শন করা হয়েছে। দুর্ঘটনার জন্য দুই লঞ্চের মালিকপক্ষ একে-অপরকে দোষারোপ করছে। তবে কি কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখতে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি লঞ্চ দুটির চলাচল বাতিল করা হয়েছে। লঞ্চ দুটি মেরামতের পর চলাচলের উপযোগী হলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ও সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের সার্ভে দল দিয়ে পরীক্ষা করানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এরপর তারা যদি অনুমতি দেয় তাহলে যাত্রী বহন করতে পারবে লঞ্চ দুটি।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর