০৬:২৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪

দেখা মিললো সেই মাকসুদ আলমের, পেলেন শতকোটি টাকার চেক

অবশেষে দেখা মিলল মুন সিনেমা হলের মালিক মাকসুদুল আলমের। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে প্রধান বিচাপতির এজলাসে দেখা গেল তাকে। মুন সিনেমার সম্পত্তির মূল্যবাবদ আদালত তার হাতে প্রায় শতকোটি টাকার চেক তুলে দিলেন।

একইসঙ্গে দ্রুত জমির রেজিস্ট্রেশন মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট্রের নামে সম্পন্ন করে দিতে বলেছে সর্বোচ্চ আদালত। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।

মাকসুদুল আলম বলেন, আমি সন্তুষ্ট। ১৯৭২ সাল থেকে আমি অপেক্ষায় ছিলাম। আজ তার অবসান হলো।

প্রসঙ্গত, মুন সিনেমা হলের মালিকানা নিয়ে পঞ্চম সংশোধনী বাতিলের রায় এসেছিল আট বছর আগে। সেই রায়ের আলোকে সংবিধানও সংশোধন করা হয়েছে। তবে সর্বোচ্চ আদালত থেকে চূড়ান্ত রায়ের পর আজ সেই সিনেমা হলের মালিক মূল্য বুঝে পেলেন।

অর্থ মন্ত্রণালয় এক চিঠিতে আদালতকে জানিয়েছিলো, মুন সিনেমা হল ও এর সম্পত্তির মূল্য বাবদ ৯৯ কোটি ২১ লাখ ৭৩ হাজার টাকা পরিশোধের জন্য মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের অনুকূলে চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, মুন সিনেমা হলের মালিকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি ও সাইফুল্লাহ মামুন। আজমালুল হোসেন কিউসি জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে আইনি লড়াই করে আজ তার ফল পেলাম।

পুরান ঢাকার ওয়াইজঘাটে অবস্থিত মুন সিনেমা হলটি মুক্তিযুদ্ধের সময় ওই সম্পত্তি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। পরে জিয়াউর রহমানের সময়ে সামরিক ফরমানের মাধ্যমে ওই সম্পত্তি মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের অধীনে ন্যস্ত করা হয়। অন্য সামরিক ফরমানগুলোর মতো এটিও সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে বৈধতা দেয়া হয়।

পরে ওই সম্পত্তির মালিকানা দাবি করে ইতালিয়ান মার্বেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদুল আলম ২০০০ সালে হাইকোর্টে ওই ফরমানসহ সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করেন।

২০০৫ সালের ২৯ আগস্ট হাইকোর্ট এক রায়ে পঞ্চম সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে সম্পত্তির মালিকানা ইতালিয়ান মার্বেলকে ফিরিয়ে দিতে বলেন।

২০১০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। পাশাপাশি ৯০ দিনের মধ্যে ইতালিয়ান মার্বেলকে মুন সিনেমা হল ফেরত দিতে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

সেই রায়ের আলোকে ২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী পাশ করা হয়। অথচ মুন সিনেমা হলের মালিককে নির্ধারিত সময়ে ওই সম্পত্তি বুঝিয়ে দেয়া হয়নি।

পরে সম্পত্তি ফিরে পেতে ২০১২ সালের ১০ জানুয়ারি ইতালিয়ান মার্বেল ওয়ার্কস মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করেন।

বিজনেস বাংলাদেশ/এম মিজান

জনপ্রিয়

মুরাদনগরের সাবেক ৫বারের এমপি কায়কোবাদের অপেক্ষায় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ

দেখা মিললো সেই মাকসুদ আলমের, পেলেন শতকোটি টাকার চেক

প্রকাশিত : ০৪:১৮:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯

অবশেষে দেখা মিলল মুন সিনেমা হলের মালিক মাকসুদুল আলমের। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে প্রধান বিচাপতির এজলাসে দেখা গেল তাকে। মুন সিনেমার সম্পত্তির মূল্যবাবদ আদালত তার হাতে প্রায় শতকোটি টাকার চেক তুলে দিলেন।

একইসঙ্গে দ্রুত জমির রেজিস্ট্রেশন মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট্রের নামে সম্পন্ন করে দিতে বলেছে সর্বোচ্চ আদালত। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।

মাকসুদুল আলম বলেন, আমি সন্তুষ্ট। ১৯৭২ সাল থেকে আমি অপেক্ষায় ছিলাম। আজ তার অবসান হলো।

প্রসঙ্গত, মুন সিনেমা হলের মালিকানা নিয়ে পঞ্চম সংশোধনী বাতিলের রায় এসেছিল আট বছর আগে। সেই রায়ের আলোকে সংবিধানও সংশোধন করা হয়েছে। তবে সর্বোচ্চ আদালত থেকে চূড়ান্ত রায়ের পর আজ সেই সিনেমা হলের মালিক মূল্য বুঝে পেলেন।

অর্থ মন্ত্রণালয় এক চিঠিতে আদালতকে জানিয়েছিলো, মুন সিনেমা হল ও এর সম্পত্তির মূল্য বাবদ ৯৯ কোটি ২১ লাখ ৭৩ হাজার টাকা পরিশোধের জন্য মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের অনুকূলে চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, মুন সিনেমা হলের মালিকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি ও সাইফুল্লাহ মামুন। আজমালুল হোসেন কিউসি জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে আইনি লড়াই করে আজ তার ফল পেলাম।

পুরান ঢাকার ওয়াইজঘাটে অবস্থিত মুন সিনেমা হলটি মুক্তিযুদ্ধের সময় ওই সম্পত্তি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। পরে জিয়াউর রহমানের সময়ে সামরিক ফরমানের মাধ্যমে ওই সম্পত্তি মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের অধীনে ন্যস্ত করা হয়। অন্য সামরিক ফরমানগুলোর মতো এটিও সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে বৈধতা দেয়া হয়।

পরে ওই সম্পত্তির মালিকানা দাবি করে ইতালিয়ান মার্বেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদুল আলম ২০০০ সালে হাইকোর্টে ওই ফরমানসহ সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করেন।

২০০৫ সালের ২৯ আগস্ট হাইকোর্ট এক রায়ে পঞ্চম সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে সম্পত্তির মালিকানা ইতালিয়ান মার্বেলকে ফিরিয়ে দিতে বলেন।

২০১০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। পাশাপাশি ৯০ দিনের মধ্যে ইতালিয়ান মার্বেলকে মুন সিনেমা হল ফেরত দিতে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

সেই রায়ের আলোকে ২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী পাশ করা হয়। অথচ মুন সিনেমা হলের মালিককে নির্ধারিত সময়ে ওই সম্পত্তি বুঝিয়ে দেয়া হয়নি।

পরে সম্পত্তি ফিরে পেতে ২০১২ সালের ১০ জানুয়ারি ইতালিয়ান মার্বেল ওয়ার্কস মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করেন।

বিজনেস বাংলাদেশ/এম মিজান