১২:৫৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪

কুষ্টিয়ায় অভ্যন্তরীন বোরো সংগ্রহ মৌসুম-২০ উদ্বোধন

কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় অভ্যন্তরীন বোরো সংগ্রহ মৌসুম-২০২০এ সরাসরি কৃষকের নিকট থেকে ধান ক্রয়ের জন্য কৃষক তালিকা চুড়ান্তকরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে। সোমবার কুষ্টিয়া সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা প্রশাসন ও খাদ্যবিভাগের আয়োজনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুবায়ের হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এই কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা, কৃষি কর্মকর্তা বিষ্ণুপদ সাহা, খাদ্য নিয়ন্ত্রন কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেনসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত কৃষকবৃন্দ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, সদর উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌর এলাকার ১১হাজার ৬শ ৫২জন কৃষকের ৭৫হাজার ৬শ ২৯মে:টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্র অর্জিত হয়। এর মধ্য থেকে ২হাজার ৫শ ১জন কৃষকের নিকট থেকে দুই ধাপে মোট ২হাজার ৫শ ১মে:টন ধান ক্রয় করা হবে বলে জানান জেলা খাদ্য বিভাগ। তবে এতে কৃষকের মাঝে চরম অসন্তোষ ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সদর উপজেলার আলামপুর গ্রামের কৃষক আব্বাস উদ্দিনের অভিযোগ, শুষ্ক এই বোরো মৌসুমে নানা প্রতিকুল অবস্থায় ধান চাষে সব মিলিয়ে অন্যান্য বারের চেয়ে খরচ বেশী হয়। আমরা আশা করি সব চাষীর কাছ থেকে যদি সরকার কমবেশী করে কিছু ধান কেনে তাহলে সেই টাকাটা খরচ করে পরের মৌসুমে ধান লাগানোর কাজটা করতে পারি। কিন্তু আমাদের কাছে বিক্রয়যোগ্য যে পরিমান ধান আছে তার শতকরা দুই ভাগ ধানও নিচ্ছে না। এটা অনেকটা কৃষকের সাথে একটা তামাসা করা হচ্ছে। সেকারণে মিলাররাও কমদামে ধান কিনতে ফাঁদ পেতে বসে আছে। কষ্ট করে ধান চাষ করে প্রতিবারই চাষীরা ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।
পোড়াদহ আইলচারা গ্রামের কৃষক জলিল সেখ বলেন, সরকারের ধান ক্রয় দেখে চাষীদের কোন লাভ নেই; প্রৃকত চাষীরা সরকারী ক্রয়কেন্দ্রে ধান বেঁচতে না পারলেও দলের নাম ভাঙ্গিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীরা আমাদের কাছ থেকে কম দামে ধান নিয়ে নানা কায়দা কৌশলে সরকারী ক্রয়কেন্দ্রে বেশী দামে বিক্রি করছে। কারো কিছু বলার সাহস নেই।

কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শ্যামল কুমার বিশ^াস জানান, জেলার ৬টি উপজেলায় ৩হাজার ৩শ ৩০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড এবং ২৯ হাজার ৯শ ৪৫ হেক্টর জমিতে উপশী ধানের চাষ হয়েছে। এতে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী হাইব্রিড ধান ২১হাজার ৭শ ১১ মে:টন এবং উপ্শী জাতের ১লক্ষ ৮৮হাজার ৬শ ৫৩ মে:টন ধানের উৎপাদন হয়েছে। চলতি বোরো মৌসুমে জেলার ৩৩হাজার ২শ ৭৫ হেক্টর জমিতে মোট ধান উৎপাদন হয়েছে ২লক্ষ ১০হাজার ৩শ ৬৪ মে:টন।

কুষ্টিয়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক(কারিগরি) একে এম শাহনেওয়াজ বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে জেলা ৬টি উপজেলা থেকে মোট ৬হাজার মে:টন ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে সোমবার প্রথম ধাপে কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় কৃষক তালিকা চাড়ান্তকরণ শেষ করে জেলায় সরকারী ধান ক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধন হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য উপজেলা থেকেও এই ক্রয় কার্যক্রম শুরু করা হবে।

কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সরকারী ক্রয়কেন্দ্রে যাতে প্রকৃত কৃষকরা ধান বেঁচতে পারে সে বিষয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব রকম সহযোগিতা করা হবে। কোন রকম অনিয়মকে প্রশ্রয় দেয়া হবে না। তবে কৃষি অধ্যুষিত জেলা হিসেবে কুষ্টিয়াতে উৎপাদিত ধান যাতে সরকারী ক্রয়কেন্দ্রে আরও বেশী সংখ্যক কৃষক ধান বেঁচতে পারেন সেবিয়টিও আমাদের বিবেচনায় রয়েছে।

 

বিজনেস বাংলাদেশ/ইমরান

জনপ্রিয়

মুরাদনগরের সাবেক ৫বারের এমপি কায়কোবাদের অপেক্ষায় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ

কুষ্টিয়ায় অভ্যন্তরীন বোরো সংগ্রহ মৌসুম-২০ উদ্বোধন

প্রকাশিত : ০৩:২৪:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জুন ২০২০

কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় অভ্যন্তরীন বোরো সংগ্রহ মৌসুম-২০২০এ সরাসরি কৃষকের নিকট থেকে ধান ক্রয়ের জন্য কৃষক তালিকা চুড়ান্তকরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে। সোমবার কুষ্টিয়া সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা প্রশাসন ও খাদ্যবিভাগের আয়োজনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুবায়ের হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এই কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা, কৃষি কর্মকর্তা বিষ্ণুপদ সাহা, খাদ্য নিয়ন্ত্রন কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেনসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত কৃষকবৃন্দ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, সদর উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌর এলাকার ১১হাজার ৬শ ৫২জন কৃষকের ৭৫হাজার ৬শ ২৯মে:টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্র অর্জিত হয়। এর মধ্য থেকে ২হাজার ৫শ ১জন কৃষকের নিকট থেকে দুই ধাপে মোট ২হাজার ৫শ ১মে:টন ধান ক্রয় করা হবে বলে জানান জেলা খাদ্য বিভাগ। তবে এতে কৃষকের মাঝে চরম অসন্তোষ ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সদর উপজেলার আলামপুর গ্রামের কৃষক আব্বাস উদ্দিনের অভিযোগ, শুষ্ক এই বোরো মৌসুমে নানা প্রতিকুল অবস্থায় ধান চাষে সব মিলিয়ে অন্যান্য বারের চেয়ে খরচ বেশী হয়। আমরা আশা করি সব চাষীর কাছ থেকে যদি সরকার কমবেশী করে কিছু ধান কেনে তাহলে সেই টাকাটা খরচ করে পরের মৌসুমে ধান লাগানোর কাজটা করতে পারি। কিন্তু আমাদের কাছে বিক্রয়যোগ্য যে পরিমান ধান আছে তার শতকরা দুই ভাগ ধানও নিচ্ছে না। এটা অনেকটা কৃষকের সাথে একটা তামাসা করা হচ্ছে। সেকারণে মিলাররাও কমদামে ধান কিনতে ফাঁদ পেতে বসে আছে। কষ্ট করে ধান চাষ করে প্রতিবারই চাষীরা ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।
পোড়াদহ আইলচারা গ্রামের কৃষক জলিল সেখ বলেন, সরকারের ধান ক্রয় দেখে চাষীদের কোন লাভ নেই; প্রৃকত চাষীরা সরকারী ক্রয়কেন্দ্রে ধান বেঁচতে না পারলেও দলের নাম ভাঙ্গিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীরা আমাদের কাছ থেকে কম দামে ধান নিয়ে নানা কায়দা কৌশলে সরকারী ক্রয়কেন্দ্রে বেশী দামে বিক্রি করছে। কারো কিছু বলার সাহস নেই।

কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শ্যামল কুমার বিশ^াস জানান, জেলার ৬টি উপজেলায় ৩হাজার ৩শ ৩০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড এবং ২৯ হাজার ৯শ ৪৫ হেক্টর জমিতে উপশী ধানের চাষ হয়েছে। এতে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী হাইব্রিড ধান ২১হাজার ৭শ ১১ মে:টন এবং উপ্শী জাতের ১লক্ষ ৮৮হাজার ৬শ ৫৩ মে:টন ধানের উৎপাদন হয়েছে। চলতি বোরো মৌসুমে জেলার ৩৩হাজার ২শ ৭৫ হেক্টর জমিতে মোট ধান উৎপাদন হয়েছে ২লক্ষ ১০হাজার ৩শ ৬৪ মে:টন।

কুষ্টিয়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক(কারিগরি) একে এম শাহনেওয়াজ বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে জেলা ৬টি উপজেলা থেকে মোট ৬হাজার মে:টন ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে সোমবার প্রথম ধাপে কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় কৃষক তালিকা চাড়ান্তকরণ শেষ করে জেলায় সরকারী ধান ক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধন হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য উপজেলা থেকেও এই ক্রয় কার্যক্রম শুরু করা হবে।

কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সরকারী ক্রয়কেন্দ্রে যাতে প্রকৃত কৃষকরা ধান বেঁচতে পারে সে বিষয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব রকম সহযোগিতা করা হবে। কোন রকম অনিয়মকে প্রশ্রয় দেয়া হবে না। তবে কৃষি অধ্যুষিত জেলা হিসেবে কুষ্টিয়াতে উৎপাদিত ধান যাতে সরকারী ক্রয়কেন্দ্রে আরও বেশী সংখ্যক কৃষক ধান বেঁচতে পারেন সেবিয়টিও আমাদের বিবেচনায় রয়েছে।

 

বিজনেস বাংলাদেশ/ইমরান