০৫:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪
অবৈধভাবে খাল দখল ও পুকুর ভরাট

টাঙ্গাইলে অল্প বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় চরম জনদুর্ভোগ

টাঙ্গাইল শহরের বেশিরভাগ খাল অবৈধ দখল ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভাল না থাকায় অল্প বৃষ্টিতে জলবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পৌরবাসীকে। দুর্ভোগ লাঘবে ইতিপূর্বে মেয়রকে অবগত করার পর তারা প্রতিশ্রুতি দিলেও দীর্ঘদিনেও কোন সুরাহা হয়নি। ফলে বছরের পর বছর যাবত চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে হচ্ছে স্থানীয়দের। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির কর্মকর্তা বলছে, ড্রেনের অব্যবস্থাপনার পাশাপাশি অবৈধভাবে খাল দখল ও শহরের পুকুর ভরাটের কারনে এ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পৌরসভার প্রশাসক জানিয়েছে, জনদুর্ভোগ লাঘবে পরিকল্পনা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জানা যায়, ১৮৮৭ সালের ১ জুলাই টাঙ্গাইল পৌরসভা স্থাপিত হয়। ১৯৮৫ সালে টাঙ্গাইল পৌরসভা ‘গ’ থেকে ‘খ’ এবং ১৯৮৯ সালে ‘খ’ থেকে ‘ক’ শ্রেণীতে উন্নতি লাভ করে। তারপরও দীর্ঘ প্রায় ৩৫ বছরেও দুর্ভোগ কমেনি পৌরবাসীর।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, টাঙ্গাইল শহরের সাবালিয়া, বিশ^াস বেতকা, পূর্ব আদালতপাড়া, থানা পাড়া, আদি টাঙ্গাইলসহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় অল্প বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকের বাসা বাড়িতে পানি জমে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

শহরের সাবালিয়া এলাকার স্কুল ছাত্র মেরাজ উদ্দিন বলেন, অল্প বৃষ্টিতে পাকা সড়ক তলিয়ে আমার বাসায় পানি প্রবেশ করেছে। এতে আমাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। গতকাল পানিতে থাকায় শরীর চুলকিয়েছে। এছাড়াও রাতে জ¦র এসেছিলো।

নাসিমা বেগম নামের এক গৃহবধু বলেন, আমাদের এলাকার খালটি প্রায় পাঁচ বছর যাবত একবারেই বন্ধ হয়েছে। তারপর থেকে একটু বৃষ্টিতে বাসায় পানিবন্ধী হয়ে পরি। রান্না বন্ধ থাকায় গতকাল সারাদিনে একবার খেয়েছি। খাল অবৈধ দখল মুক্তের পাশাপাশি ড্রেনেজ ব্যবস্থা আরও ভাল করতে হবে।

রাসেল মিয়া বলেন, আমাদের বাসায় দুই দিন যাবত পানিবন্ধী ছিলাম। শনিবার সকালে মোটর ভাড়া করে এনে পানি সেঁচেছি। যদি আবার বৃষ্টি হয় তাহলে বাসায় আবার পানি প্রবেশ করবে।

রিকশা চালক সেকান্দার আলী বলেন, বৃষ্টি হওয়ার পর টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের দক্ষিণপাশে ও সাবালিয়া এলাকায় যাওয়া যায় না। অল্প বৃষ্টিতে সড়ক তলিয়ে থাকে। রিকশার মোটরে পানি প্রবেশ করে অনেক সময় নষ্ট হয়ে যায়।

পূর্ব আদালত পাড়া এলাকার আকবর আলী বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে মালঞ্চ হলের সড়ক ও সাহাপাড়া টেক্সাইলের সামনে অল্প বৃষ্টিতে সড়কে হাটু পানি জমে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভাল না হওয়ায় দীর্ঘ দিনেও আমাদের দুর্ভোগ লাঘব হয়নি। ইতিপূর্বে ড্রেন নির্মাণ করা হলেও তা পর্যাপ্ত নয়। আমাদের দুর্ভোগ লাঘবে কর্তৃপক্ষের নজদারির দাবি করছি।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) বিভাগীয় সমন্বয়কারী গৌতম চন্দ্র চন্দ বলেন, শহরের ২৭ টি খালের মধ্যে প্রায় সব ক টি খাল অবৈধভাবে দখল হয়েছে। এছাড়াও শহরের পুকুর গুলো প্রভাব খাটিয়ে ভরাট করা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা পর্যান্ত না থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দুর্ভোগ লাঘবে খাল দখল মুক্তের পাশাপাশি ড্রেনেজ ব্যবস্থা সচল করা জরুরি। তাহলেই টাঙ্গাইল শহরবাসীর দুর্ভোগ অনেকটা লাঘব হবে।

টাঙ্গাইল পৌরসভার প্রশাসক মো. শিহাব রায়হান বলছেন, বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জন দুর্ভোগ লাঘবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ডিএস

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

অবৈধভাবে খাল দখল ও পুকুর ভরাট

টাঙ্গাইলে অল্প বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় চরম জনদুর্ভোগ

প্রকাশিত : ১২:৫৪:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪

টাঙ্গাইল শহরের বেশিরভাগ খাল অবৈধ দখল ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভাল না থাকায় অল্প বৃষ্টিতে জলবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পৌরবাসীকে। দুর্ভোগ লাঘবে ইতিপূর্বে মেয়রকে অবগত করার পর তারা প্রতিশ্রুতি দিলেও দীর্ঘদিনেও কোন সুরাহা হয়নি। ফলে বছরের পর বছর যাবত চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে হচ্ছে স্থানীয়দের। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির কর্মকর্তা বলছে, ড্রেনের অব্যবস্থাপনার পাশাপাশি অবৈধভাবে খাল দখল ও শহরের পুকুর ভরাটের কারনে এ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পৌরসভার প্রশাসক জানিয়েছে, জনদুর্ভোগ লাঘবে পরিকল্পনা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জানা যায়, ১৮৮৭ সালের ১ জুলাই টাঙ্গাইল পৌরসভা স্থাপিত হয়। ১৯৮৫ সালে টাঙ্গাইল পৌরসভা ‘গ’ থেকে ‘খ’ এবং ১৯৮৯ সালে ‘খ’ থেকে ‘ক’ শ্রেণীতে উন্নতি লাভ করে। তারপরও দীর্ঘ প্রায় ৩৫ বছরেও দুর্ভোগ কমেনি পৌরবাসীর।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, টাঙ্গাইল শহরের সাবালিয়া, বিশ^াস বেতকা, পূর্ব আদালতপাড়া, থানা পাড়া, আদি টাঙ্গাইলসহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় অল্প বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকের বাসা বাড়িতে পানি জমে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

শহরের সাবালিয়া এলাকার স্কুল ছাত্র মেরাজ উদ্দিন বলেন, অল্প বৃষ্টিতে পাকা সড়ক তলিয়ে আমার বাসায় পানি প্রবেশ করেছে। এতে আমাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। গতকাল পানিতে থাকায় শরীর চুলকিয়েছে। এছাড়াও রাতে জ¦র এসেছিলো।

নাসিমা বেগম নামের এক গৃহবধু বলেন, আমাদের এলাকার খালটি প্রায় পাঁচ বছর যাবত একবারেই বন্ধ হয়েছে। তারপর থেকে একটু বৃষ্টিতে বাসায় পানিবন্ধী হয়ে পরি। রান্না বন্ধ থাকায় গতকাল সারাদিনে একবার খেয়েছি। খাল অবৈধ দখল মুক্তের পাশাপাশি ড্রেনেজ ব্যবস্থা আরও ভাল করতে হবে।

রাসেল মিয়া বলেন, আমাদের বাসায় দুই দিন যাবত পানিবন্ধী ছিলাম। শনিবার সকালে মোটর ভাড়া করে এনে পানি সেঁচেছি। যদি আবার বৃষ্টি হয় তাহলে বাসায় আবার পানি প্রবেশ করবে।

রিকশা চালক সেকান্দার আলী বলেন, বৃষ্টি হওয়ার পর টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের দক্ষিণপাশে ও সাবালিয়া এলাকায় যাওয়া যায় না। অল্প বৃষ্টিতে সড়ক তলিয়ে থাকে। রিকশার মোটরে পানি প্রবেশ করে অনেক সময় নষ্ট হয়ে যায়।

পূর্ব আদালত পাড়া এলাকার আকবর আলী বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে মালঞ্চ হলের সড়ক ও সাহাপাড়া টেক্সাইলের সামনে অল্প বৃষ্টিতে সড়কে হাটু পানি জমে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভাল না হওয়ায় দীর্ঘ দিনেও আমাদের দুর্ভোগ লাঘব হয়নি। ইতিপূর্বে ড্রেন নির্মাণ করা হলেও তা পর্যাপ্ত নয়। আমাদের দুর্ভোগ লাঘবে কর্তৃপক্ষের নজদারির দাবি করছি।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) বিভাগীয় সমন্বয়কারী গৌতম চন্দ্র চন্দ বলেন, শহরের ২৭ টি খালের মধ্যে প্রায় সব ক টি খাল অবৈধভাবে দখল হয়েছে। এছাড়াও শহরের পুকুর গুলো প্রভাব খাটিয়ে ভরাট করা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা পর্যান্ত না থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দুর্ভোগ লাঘবে খাল দখল মুক্তের পাশাপাশি ড্রেনেজ ব্যবস্থা সচল করা জরুরি। তাহলেই টাঙ্গাইল শহরবাসীর দুর্ভোগ অনেকটা লাঘব হবে।

টাঙ্গাইল পৌরসভার প্রশাসক মো. শিহাব রায়হান বলছেন, বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জন দুর্ভোগ লাঘবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ডিএস