সিরাজগঞ্জে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর সঙ্গে গোপন বৈঠক করার অভিযোগে ৫ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও এক শিক্ষক নেতাসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এঘটনায় পৃথক পৃথক অভিযোগের ভিত্তিতে ২ প্রার্থীকে শোকজ করে ১২ ঘন্টার মধ্যে জবাব চেয়ে নোটিশ দেয় নির্বাচন কমিশন।
এবিষয়ে মঙ্গলবার (৭ মে) জেলা নির্বাচন কমিশনার শহিদুল ইসলাম কাছে শোকজের জবাব এবং পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, অপরাধ যেই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা ৬ জনকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনেছি। এছাড়া ২৮ জনের নামে মামলা হয়েছে । তিনি আরও বলেন, অপরাধী যদি নির্বাচিতও হয়, নির্বাচন পরবর্তী সময়ে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গ্রেফতার প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা হলেন যমুনা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও রাশিদাজ্জোহা সরকারি মহিলা কলেজ ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম, এসবি রেলওয়ে কলোনি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ওমর আলী কওমি মহিলা মাদরাসা কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক ও এসবি রেলওয়ে কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আবু সামা, বাহুকা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক ও বনবাড়িয়া পাইকপাড়া মডেল স্কুল কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা বাচ্চু কুমার ঘোষ, জনতা ব্যাংক পিএলসি শহরের এসবি ফজলুল হক সড়ক শাখার সিনিয়র প্রিন্সিপাল কর্মকর্তা ও হরিণা বাগবাটি স্কুল কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ইয়াসির আরাফাত।

এছাড়া বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি ও শিয়ালকোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আমিনুর ইসলামকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।

সোমবার (৬ মে) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের হলরুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান জেলা প্রশাসক মীর মাহবুবুর রহমান। এসময় পুলিশ সুপার আরিফুল হক মন্ডল ও জেলা নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে রোববার (৫ মে) রাত ৯টার দিকে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের বনবাড়িয়া কাদাই পার্কে প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের নিয়ে এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর গোপন বৈঠক হয়।
এ ঘটনা জানার পর জেলা-উপজেলা প্রশাসন ঘটনাস্থলে হাজির হলে প্রিসাইডিং ও চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকরা ছোটাছুটি শুরু করেন। এরপর পার্কে দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে প্রিসাইডিং ও চেয়ারম্যান প্রার্থীকে পাওয়া যায়নি। পরে প্রশাসন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পার্কের ম্যানেজারসহ তিনজনকে থানা হেফাজতে নেন।
এসময় জিজ্ঞাসাবাদ ও সিসিটিভির ফুটেজের ভিত্তিতে ঘটনার সত্যতা পায় প্রশাসন। পরে রাতে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০ জনের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা করেন।

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ