০৮:১৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫

৩৭৫ গ্রাম ওজনের সেই শিশুটি বেঁচে আছে!

ভারতের হায়দ্রাবাদে চিকিৎসা বিজ্ঞানের আরেকটি বিস্ময়কর ঘটনা ঘটল। রেইনবো নামে হায়দ্রাবাদের একটি হাসপাতালে মাত্র ৩৭৫ গ্রাম ওজন নিয়ে জন্মানো একটি শিশু সুস্থভাবেই বেঁচে আছে।

শিশুটির নাম রাখা হয়েছে চেরি। তার বাবা-মা নিকিতা এবং সৌরভ ছত্তিশগড়ের বাসিন্দা।

গর্ভধারণের ২৫ সপ্তাহের মাথায় মাত্র ৩৭৫ গ্রাম ওজন নিয়ে জন্ম নেয় শিশুটি। নির্ধারিত সময়ের প্রায় ৪ মাস আগেই তাকে গর্ভ থেকে বের করে নিয়ে আসতে বাধ্য হন চিকিৎসকরা।

এরপর চিকিৎসকরা ব্যাপকভাবে নিবিড় পরিচর্যা চালিয়ে শিশুটিকে বাঁচিয়ে রাখেন। শিশুটির ওজন যখন প্রায় ২ কেজিতে (১.৯৮০ কেজি) গিয়ে দাঁড়ায় তখন তাকে বাবা-মার হাতে তুলে দেওয়া হয়।

এই শিশুটির জন্মের আগে নিকিতার চারবার গর্ভপাত হয়। ফলে এবারই নিকিতার সন্তানের মা হওয়ার সর্বশেষ সুযোগ ছিল।

গর্ভধারণের ২৪ সপ্তাহ পর আল্ট্রাসাউন্ড পরীক্ষায় ধরা পড়ে যে, শিশুটির চারপাশে খুব কম পরিমাণ অ্যামনিয়োটিক তরল আছে। তার ওজনও হয়েছে মাত্র ৩৫০ গ্রাম। আর মায়ের শরীর থেকে শিশুটির শরীরে যে রক্ত প্রবাহিত হচ্ছিল তার পরিমাণও ছিল খুবই কম।

ডাক্তাররা শিশুটির বাবা-মাকে এই বলে আশ্বস্ত করেন যে, তারা এর আগেও ২৪-২৫ সপ্তাহে জন্ম নেওয়া শিশুকে পরিচর্যা করে বাঁচিয়ে রেখেছেন। এর আগে ওই হাসপাতালে সর্বনিম্ন ৪৪৯ গ্রাম ওজনের শিশু জন্ম নিয়ে স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠেছে।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি নিকিতা মাত্র ৩৭৫ গ্রাম ওজনের একটি শিশু সিজারে প্রসব করেন। বাচ্চাটির দৈর্ঘ্য ছিল মাত্র ২০ সেন্টিমিটার। এবং মাত্র একটি হাতের তালুতেই বাচ্চাটিকে ধারণ করা যেত।

জন্মের পর প্রথম তিন-চার দিন ছিল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এই সময়টাতেই অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেওয়া এবং রক্তচাপ কমে যাওয়ার মতো বিপদ ঘটে যেতে পারত। ডাক্তাররা বলেন, এই সময়টাতে শিশুটির শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে তাদেরকে সম্ভাব্য সবচেয়ে ছোট নল লাগাতে হয়েছে। এছাড়া শিশুটিকে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা দিতে হয়েছে এবং কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্রেরও সহায়তা নিতে হয়েছে। আর সৌভাগ্যক্রমে শিশুটির মস্তিষ্কেও কোনো রক্তক্ষরণ হয়নি।

পঞ্চম দিনে গিয়ে শিশুটির ফুসফুসে রক্তক্ষরণ হয়। ফলে তাকে আরও উন্নত কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্রের সাহায্যে নিশ্বাস গ্রহণে সহায়তা করতে হয়। এভাবে প্রায় ১০৫ দিন পর্যন্ত শিশুটিকে কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্র দিয়ে নিশ্বাস গ্রহণে সহায়তা করতে হয়। হাসপাতালে মোট ১২৮ দিন পরিচর্যার পর শিশুটিকে তার বাবা-মায়ের কোলে তুলে দেওয়া হয়। এর একসপ্তাহ পরে শিশুটির ওজন হয়েছিল ২.১৪ কেজি।

উল্লেখ্য, চিকিৎসা বিজ্ঞানে জন্মের সময় একটি শিশুর স্বাভাবিক ওজন ধরা হয় ২.৫ থেকে ৩ কেজি। সূত্র: ব্যাঙ্গালোর মিরর

ট্যাগ :

রামগঞ্জে হতদরিদ্র হৃদয়ের স্বপ্ন পুরন করবে স্মার্ট জহির

৩৭৫ গ্রাম ওজনের সেই শিশুটি বেঁচে আছে!

প্রকাশিত : ১০:০৫:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুলাই ২০১৮

ভারতের হায়দ্রাবাদে চিকিৎসা বিজ্ঞানের আরেকটি বিস্ময়কর ঘটনা ঘটল। রেইনবো নামে হায়দ্রাবাদের একটি হাসপাতালে মাত্র ৩৭৫ গ্রাম ওজন নিয়ে জন্মানো একটি শিশু সুস্থভাবেই বেঁচে আছে।

শিশুটির নাম রাখা হয়েছে চেরি। তার বাবা-মা নিকিতা এবং সৌরভ ছত্তিশগড়ের বাসিন্দা।

গর্ভধারণের ২৫ সপ্তাহের মাথায় মাত্র ৩৭৫ গ্রাম ওজন নিয়ে জন্ম নেয় শিশুটি। নির্ধারিত সময়ের প্রায় ৪ মাস আগেই তাকে গর্ভ থেকে বের করে নিয়ে আসতে বাধ্য হন চিকিৎসকরা।

এরপর চিকিৎসকরা ব্যাপকভাবে নিবিড় পরিচর্যা চালিয়ে শিশুটিকে বাঁচিয়ে রাখেন। শিশুটির ওজন যখন প্রায় ২ কেজিতে (১.৯৮০ কেজি) গিয়ে দাঁড়ায় তখন তাকে বাবা-মার হাতে তুলে দেওয়া হয়।

এই শিশুটির জন্মের আগে নিকিতার চারবার গর্ভপাত হয়। ফলে এবারই নিকিতার সন্তানের মা হওয়ার সর্বশেষ সুযোগ ছিল।

গর্ভধারণের ২৪ সপ্তাহ পর আল্ট্রাসাউন্ড পরীক্ষায় ধরা পড়ে যে, শিশুটির চারপাশে খুব কম পরিমাণ অ্যামনিয়োটিক তরল আছে। তার ওজনও হয়েছে মাত্র ৩৫০ গ্রাম। আর মায়ের শরীর থেকে শিশুটির শরীরে যে রক্ত প্রবাহিত হচ্ছিল তার পরিমাণও ছিল খুবই কম।

ডাক্তাররা শিশুটির বাবা-মাকে এই বলে আশ্বস্ত করেন যে, তারা এর আগেও ২৪-২৫ সপ্তাহে জন্ম নেওয়া শিশুকে পরিচর্যা করে বাঁচিয়ে রেখেছেন। এর আগে ওই হাসপাতালে সর্বনিম্ন ৪৪৯ গ্রাম ওজনের শিশু জন্ম নিয়ে স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠেছে।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি নিকিতা মাত্র ৩৭৫ গ্রাম ওজনের একটি শিশু সিজারে প্রসব করেন। বাচ্চাটির দৈর্ঘ্য ছিল মাত্র ২০ সেন্টিমিটার। এবং মাত্র একটি হাতের তালুতেই বাচ্চাটিকে ধারণ করা যেত।

জন্মের পর প্রথম তিন-চার দিন ছিল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এই সময়টাতেই অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেওয়া এবং রক্তচাপ কমে যাওয়ার মতো বিপদ ঘটে যেতে পারত। ডাক্তাররা বলেন, এই সময়টাতে শিশুটির শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে তাদেরকে সম্ভাব্য সবচেয়ে ছোট নল লাগাতে হয়েছে। এছাড়া শিশুটিকে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা দিতে হয়েছে এবং কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্রেরও সহায়তা নিতে হয়েছে। আর সৌভাগ্যক্রমে শিশুটির মস্তিষ্কেও কোনো রক্তক্ষরণ হয়নি।

পঞ্চম দিনে গিয়ে শিশুটির ফুসফুসে রক্তক্ষরণ হয়। ফলে তাকে আরও উন্নত কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্রের সাহায্যে নিশ্বাস গ্রহণে সহায়তা করতে হয়। এভাবে প্রায় ১০৫ দিন পর্যন্ত শিশুটিকে কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্র দিয়ে নিশ্বাস গ্রহণে সহায়তা করতে হয়। হাসপাতালে মোট ১২৮ দিন পরিচর্যার পর শিশুটিকে তার বাবা-মায়ের কোলে তুলে দেওয়া হয়। এর একসপ্তাহ পরে শিশুটির ওজন হয়েছিল ২.১৪ কেজি।

উল্লেখ্য, চিকিৎসা বিজ্ঞানে জন্মের সময় একটি শিশুর স্বাভাবিক ওজন ধরা হয় ২.৫ থেকে ৩ কেজি। সূত্র: ব্যাঙ্গালোর মিরর