০২:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪

ভালো দামের আশায় নওগাঁয় আগাম শীতকালীন কপি চাষ

নবান্নে বাজার ধরতে নওগাঁয় আগাম কপি চাষ শুরু করেছেন কৃষকরা। নবান্নের আগে প্রতিটি কপি গড়ে প্রতি কেজিতে ১শ’ টাকা বিক্রি হয়ে থাকে। ইত্যে মধ্যে নওগাঁয় প্রায় ১শ’ হেক্টর জমিতে শীতকালীন ফুলকপি ও পাতাকপি লাগানো হয়েছে। জেলায় চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি কপি চাষ করা হবে বলে আশা ব্যক্ত করছেন সংশ্লিষ্টরা।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় চলতি মৌসুমে ১১শ’ হেক্টর জমিতে শীতকালীন কপি চাষের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ফুলকপি ৬শ’ হেক্টর ও ৭শ’ হেক্টর জমিতে পাতাকপি। তবে বর্তমানে সবধরণের সবজির ভালো দাম পাওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে কপি চাষ হওয়ার সম্ভবনা হয়েছে। আগাম উৎপাদিত কপি নবান্নের বাজারে ভালোদামে কেনা-বেচা হয়ে থাকে। ফলে কৃষকরা বেশি লাভবান হন।

কপি শীতকালীন ফসল হওয়ায় সাধারণত সেপ্টেম্বরের শেষ থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত চাষ করা হয়ে থাকে। এই সময় লাগানো কপি ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে বাজারে কেনা-বেচা হয়। সে সময় সব কৃষকের কপি এক সাথে বাজারে আসায় দাম কিছুটা কম পেয়ে থাকে।

কৃষকরা বলছেন, আগাম কপি আবাদ করতে এক বিঘা জমিতে চাষ, সেচ, সার, শ্রমিক, বীজ, কিটনাশকসহ অন্যান্যে খচরবাবদ ২০ হাজার টাকা থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়ে থাকে। ভালো ফলন হলে ১ লাখ টাকা খেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা বিক্রি করা সম্ভব হয়।

নওগাঁ সদর উপজেলার গবিন্দপুর গ্রামের কপি চাষি সাদ্দাম হোসেন জানান, তার নিজেস্ব ১৫ কাঠা জমিতে প্রতি বছরের মতো মিষ্টি ঘরে তোলারপর ওই জমিতে চাষ করে শীতকালীন ফুলকপি আগাম চাষ করেছেন। এই পরিমাণ জমিতে কিটনাশন বেশি খরচ না হলে ১৭/১৮ হাজার টাকা খরচ হয়ে থাকে। আগাম কপি চাষ করার মূল লক্ষ্য নবান্নের বাজার বিক্রি করতে পারা। সে সময় প্রতি কেজি কপি কপি গড়ে প্রতি কেজিতে ১শ’ টাকা বিক্রি হয়ে থাকে। ফলে তাদের বেশি লাভবান হয়ে থাকেন। তার মতো আগাম কপি চাষি একই মাঠে কাশেম সদরদার, ইউসুফ হাসানসহ অনেকেই একই কথা বললেন। তারা আরো বললেন, পরে যে কৃষকরা কপি চাষ করেন সেই কপিগুলো এক সাথে বাজারে কেনা-বেচা শুরু হওয়ায় দাম পাওয়া যায় না।

চকআতিথা গ্রামের খবির উদ্দিন জানালেন, তার ১২ কাঠা জমিতে লাগানো মরিচ টাকা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে মরিচ গাছে মরে গেছে। আগাম কপি বিক্রি করে ভালো দাম পাওয়া যায় এই আশায় সেই জমি দ্রæত চাষ করে পাতাকপি লাগিয়েছেন। চকআতিতা, হাজিপুর, কীত্তিপুর ও বর্ষাইল তার মতো অনেক ক্ষতিগ্রস্থ্য মরিচ চাষি জানালেন, আবহাওয়া ভালো হওয়ায় শীতকালীন ফুলকপি ও পাতাকপি আগাম চাষ করেছেন।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তারের উপ-পরিচালক শামছুল ওয়াদুদ জানান, কৃষকদের আগামজাতের সবজি আবাদ করতে পরামর্শ দেওয়া হয়। আগাম জাতের সবজি বিক্রি করেও বেশি দাম পেয়ে থাকেন কৃষকরা। ইত্যে মধ্যে জেলায় প্রায় ১শ’ হেক্টর জমিতে কপি চাষ করা হয়েছে। এই কপিগুলো নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ অর্থাৎ নবান্নের আগেই বাজারে কেনা-বেচা শুরু হবে। নতুন সবজি কপির দামও ভালো পান কৃষকরা। বর্তমানে সবধরণের সবজির ভালো দাম পাওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে কপি চাষ হওয়ার সম্ভবনা হয়েছে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর

জনপ্রিয়

ভালো দামের আশায় নওগাঁয় আগাম শীতকালীন কপি চাষ

প্রকাশিত : ০৪:১৪:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২০

নবান্নে বাজার ধরতে নওগাঁয় আগাম কপি চাষ শুরু করেছেন কৃষকরা। নবান্নের আগে প্রতিটি কপি গড়ে প্রতি কেজিতে ১শ’ টাকা বিক্রি হয়ে থাকে। ইত্যে মধ্যে নওগাঁয় প্রায় ১শ’ হেক্টর জমিতে শীতকালীন ফুলকপি ও পাতাকপি লাগানো হয়েছে। জেলায় চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি কপি চাষ করা হবে বলে আশা ব্যক্ত করছেন সংশ্লিষ্টরা।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় চলতি মৌসুমে ১১শ’ হেক্টর জমিতে শীতকালীন কপি চাষের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ফুলকপি ৬শ’ হেক্টর ও ৭শ’ হেক্টর জমিতে পাতাকপি। তবে বর্তমানে সবধরণের সবজির ভালো দাম পাওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে কপি চাষ হওয়ার সম্ভবনা হয়েছে। আগাম উৎপাদিত কপি নবান্নের বাজারে ভালোদামে কেনা-বেচা হয়ে থাকে। ফলে কৃষকরা বেশি লাভবান হন।

কপি শীতকালীন ফসল হওয়ায় সাধারণত সেপ্টেম্বরের শেষ থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত চাষ করা হয়ে থাকে। এই সময় লাগানো কপি ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে বাজারে কেনা-বেচা হয়। সে সময় সব কৃষকের কপি এক সাথে বাজারে আসায় দাম কিছুটা কম পেয়ে থাকে।

কৃষকরা বলছেন, আগাম কপি আবাদ করতে এক বিঘা জমিতে চাষ, সেচ, সার, শ্রমিক, বীজ, কিটনাশকসহ অন্যান্যে খচরবাবদ ২০ হাজার টাকা থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়ে থাকে। ভালো ফলন হলে ১ লাখ টাকা খেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা বিক্রি করা সম্ভব হয়।

নওগাঁ সদর উপজেলার গবিন্দপুর গ্রামের কপি চাষি সাদ্দাম হোসেন জানান, তার নিজেস্ব ১৫ কাঠা জমিতে প্রতি বছরের মতো মিষ্টি ঘরে তোলারপর ওই জমিতে চাষ করে শীতকালীন ফুলকপি আগাম চাষ করেছেন। এই পরিমাণ জমিতে কিটনাশন বেশি খরচ না হলে ১৭/১৮ হাজার টাকা খরচ হয়ে থাকে। আগাম কপি চাষ করার মূল লক্ষ্য নবান্নের বাজার বিক্রি করতে পারা। সে সময় প্রতি কেজি কপি কপি গড়ে প্রতি কেজিতে ১শ’ টাকা বিক্রি হয়ে থাকে। ফলে তাদের বেশি লাভবান হয়ে থাকেন। তার মতো আগাম কপি চাষি একই মাঠে কাশেম সদরদার, ইউসুফ হাসানসহ অনেকেই একই কথা বললেন। তারা আরো বললেন, পরে যে কৃষকরা কপি চাষ করেন সেই কপিগুলো এক সাথে বাজারে কেনা-বেচা শুরু হওয়ায় দাম পাওয়া যায় না।

চকআতিথা গ্রামের খবির উদ্দিন জানালেন, তার ১২ কাঠা জমিতে লাগানো মরিচ টাকা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে মরিচ গাছে মরে গেছে। আগাম কপি বিক্রি করে ভালো দাম পাওয়া যায় এই আশায় সেই জমি দ্রæত চাষ করে পাতাকপি লাগিয়েছেন। চকআতিতা, হাজিপুর, কীত্তিপুর ও বর্ষাইল তার মতো অনেক ক্ষতিগ্রস্থ্য মরিচ চাষি জানালেন, আবহাওয়া ভালো হওয়ায় শীতকালীন ফুলকপি ও পাতাকপি আগাম চাষ করেছেন।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তারের উপ-পরিচালক শামছুল ওয়াদুদ জানান, কৃষকদের আগামজাতের সবজি আবাদ করতে পরামর্শ দেওয়া হয়। আগাম জাতের সবজি বিক্রি করেও বেশি দাম পেয়ে থাকেন কৃষকরা। ইত্যে মধ্যে জেলায় প্রায় ১শ’ হেক্টর জমিতে কপি চাষ করা হয়েছে। এই কপিগুলো নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ অর্থাৎ নবান্নের আগেই বাজারে কেনা-বেচা শুরু হবে। নতুন সবজি কপির দামও ভালো পান কৃষকরা। বর্তমানে সবধরণের সবজির ভালো দাম পাওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে কপি চাষ হওয়ার সম্ভবনা হয়েছে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর