১১:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪

বন্যায় ডুবে গেছে মাছের ঘের, দুঃশ্চিন্তায় খামারিরা

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ডুবে গেছে অধিকাংশ মৎস্য ঘের, বেড়েই চলেছে বন্যা ও জোয়ারের পানি। গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, বসতবাড়ি, মাছের ঘের স্কুল ও ফসলি জমিসহ তলিয়ে গেছে। সেই সঙ্গে ডুবে গেছে খামারিদের মাছের ঘের ও পুকুর। এতে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন অনেক মাছ চাষিরা। সোমবার (২৪ আগষ্ট) উপজেলার কলাবাড়ী ইউনিয়নের পেটকাটা, রামনগর,কাফুলাবাড়ী,কলাবাড়ী, কুমুরিয়া, বৈকুন্ঠপুর, তেঁতুল বাড়ী,বুরুয়া,রুথীয়ার পাড়,মাছপাড়া, শিমুল বাড়ী, নলুয়া, ছত্রকান্দাসহ কয়েকটি এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায় মৎস্য ঘেরের উপরে দেড় থেকে দুই ফিট পানি। প্রতিটি ঘেরে মাছ আটকিয়ে রাখার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে নেটের ও কচুরীপানার বাধঁ।

মৎস্য খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত তিন সপ্তাহ থেকে এ এলাকায় বন্যার পানির প্রবনতা বেড়েই চলেছে,তবে বন্যারপানি এখন একটু কমলেও বৃষ্টিতে পানি বেড়ে সেটুকু পূরণ হচ্ছে। ফলে তাদের মাছের ঘের ,পুকুরের পাড় পানির নিচে নিমজ্জিত। সড়ক, বাড়ি-ঘর উচুঁ জমি সহ ঘেরের উপর সব ধরনের সবজি গাছ তলিয়ে গেছে ।

প্রতিদিন প্রচুর বৃষ্টির কারণে এলাকায় মাছের ঘেরগুলোতে পানির পরিমাণ আরো বেড়ে যাওয়ায় ভেসে গেছে মাছ ব্যাংক লোনসহ অনেকে কড়া সুদে টাকা মাছ চাষ করেছে। বন্যার পানিতে পুকুর ডুবে সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব প্রায় মাছ চাষীরা।

পেটকাটা গ্রামের চিংড়ি ঘের মালিক অজয় কির্ত্তনীয়া বলেন,আমি এ বছর ধারদেনা করে ৬টি মাছের ঘেরে চিংড়ি চাষ করেছি, এ বছরের বন্যায় আমার সবকটি ঘের পানিতে তলিয়ে যাওয়ার সব চিংড়ি বেরিয় গেছে। আমি নিঃশ^ হয়ে গেছি। বৈকুন্ঠপুর গ্রামের মৎস্য ঘের মালিক সুশীল বৈদ্য ও প্রমথ বৈদ্য জানান, এবছর প্রথম মাছের ঘেরে মাছ চাষ করেছি। কড়া সুদে টাকা এনে দুটো ঘের কেটে তাতে মাছ চাষ করে প্রায় বিশ লক্ষ টাকা দেনা হয়েছি। বন্যার শুরু থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি মাছ আটকিয়ে রাখার জন্য, কিন্তু শেষ চেষ্টা করেও মাছ আটকাতে পারিনি, এরপর চারপাশে নেটের বাঁধ ও কচুরিপানা দিয়ে আটকিয়ে রেখেছি কিন্তু কোন লাভ হয়নি সব মাছ বেড় হয়ে গেছে। আমার ঘেরের কাঁচার উপর দুই হাত পানি। তাই শত চেষ্টাতেও কোন মাছ রাখা সম্ভব হয়নি। অপরদিকে ইউনিয়নের হিজলবাড়ী গ্রামের মৎস্য ঘের মালিক চিন্ময় হাজরা বলেন, এ বছর আমি ৩টি ঘেরে সাদা মাছের চাষ করেছি, তিনটা ঘেরেই এখন পানিতে তলিয়ে গেছে, নেট দিয়ে বাঁধ দিয়েছি এতে কোন কাজ হবে বলে আমার মনে হয় না। তাই এবছর বন্যায় আমার প্রায় তিন লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

কলাবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান মাইকেল ওঝা বলেন, সা¤প্রতিক বন্যায় আমার এলাকায় মৎস্য ঘেরে ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। বর্তমান বন্যার পরিস্থিতি একটু নিয়ন্ত্রণে এসেছে তবে প্রচুর বৃষ্টির কারণে পানি কিছুটা বেড়েছে। ক্ষতির দিক থেকে কোটালীপাড়ায় উপজেলার কলাবাড়ী ইউনিয়নে বেশি হয়েছে আমি মনে করি।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সরকার বলেন , সা¤প্রতিক বন্যায় কোটালীপাড়া উপজেলায় প্রায় আড়াই হাজারের বেশী মৎস্য ঘের ও পুকুর বন্যায় প্লাবিত হয়েছে এবং ১৭কোটি টাকার অধিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যদি বন্যার পানি বেড়ে যায় তাহলে ক্ষতির পরিমাণ ও বেড়ে যাবে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর

জনপ্রিয়

রংপুরে রেল স্টেশনে বৈষম্য উন্নয়ন হয়নি,প্রতিবাদে অবরোধ

বন্যায় ডুবে গেছে মাছের ঘের, দুঃশ্চিন্তায় খামারিরা

প্রকাশিত : ০২:০০:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ অগাস্ট ২০২০

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ডুবে গেছে অধিকাংশ মৎস্য ঘের, বেড়েই চলেছে বন্যা ও জোয়ারের পানি। গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, বসতবাড়ি, মাছের ঘের স্কুল ও ফসলি জমিসহ তলিয়ে গেছে। সেই সঙ্গে ডুবে গেছে খামারিদের মাছের ঘের ও পুকুর। এতে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন অনেক মাছ চাষিরা। সোমবার (২৪ আগষ্ট) উপজেলার কলাবাড়ী ইউনিয়নের পেটকাটা, রামনগর,কাফুলাবাড়ী,কলাবাড়ী, কুমুরিয়া, বৈকুন্ঠপুর, তেঁতুল বাড়ী,বুরুয়া,রুথীয়ার পাড়,মাছপাড়া, শিমুল বাড়ী, নলুয়া, ছত্রকান্দাসহ কয়েকটি এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায় মৎস্য ঘেরের উপরে দেড় থেকে দুই ফিট পানি। প্রতিটি ঘেরে মাছ আটকিয়ে রাখার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে নেটের ও কচুরীপানার বাধঁ।

মৎস্য খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত তিন সপ্তাহ থেকে এ এলাকায় বন্যার পানির প্রবনতা বেড়েই চলেছে,তবে বন্যারপানি এখন একটু কমলেও বৃষ্টিতে পানি বেড়ে সেটুকু পূরণ হচ্ছে। ফলে তাদের মাছের ঘের ,পুকুরের পাড় পানির নিচে নিমজ্জিত। সড়ক, বাড়ি-ঘর উচুঁ জমি সহ ঘেরের উপর সব ধরনের সবজি গাছ তলিয়ে গেছে ।

প্রতিদিন প্রচুর বৃষ্টির কারণে এলাকায় মাছের ঘেরগুলোতে পানির পরিমাণ আরো বেড়ে যাওয়ায় ভেসে গেছে মাছ ব্যাংক লোনসহ অনেকে কড়া সুদে টাকা মাছ চাষ করেছে। বন্যার পানিতে পুকুর ডুবে সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব প্রায় মাছ চাষীরা।

পেটকাটা গ্রামের চিংড়ি ঘের মালিক অজয় কির্ত্তনীয়া বলেন,আমি এ বছর ধারদেনা করে ৬টি মাছের ঘেরে চিংড়ি চাষ করেছি, এ বছরের বন্যায় আমার সবকটি ঘের পানিতে তলিয়ে যাওয়ার সব চিংড়ি বেরিয় গেছে। আমি নিঃশ^ হয়ে গেছি। বৈকুন্ঠপুর গ্রামের মৎস্য ঘের মালিক সুশীল বৈদ্য ও প্রমথ বৈদ্য জানান, এবছর প্রথম মাছের ঘেরে মাছ চাষ করেছি। কড়া সুদে টাকা এনে দুটো ঘের কেটে তাতে মাছ চাষ করে প্রায় বিশ লক্ষ টাকা দেনা হয়েছি। বন্যার শুরু থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি মাছ আটকিয়ে রাখার জন্য, কিন্তু শেষ চেষ্টা করেও মাছ আটকাতে পারিনি, এরপর চারপাশে নেটের বাঁধ ও কচুরিপানা দিয়ে আটকিয়ে রেখেছি কিন্তু কোন লাভ হয়নি সব মাছ বেড় হয়ে গেছে। আমার ঘেরের কাঁচার উপর দুই হাত পানি। তাই শত চেষ্টাতেও কোন মাছ রাখা সম্ভব হয়নি। অপরদিকে ইউনিয়নের হিজলবাড়ী গ্রামের মৎস্য ঘের মালিক চিন্ময় হাজরা বলেন, এ বছর আমি ৩টি ঘেরে সাদা মাছের চাষ করেছি, তিনটা ঘেরেই এখন পানিতে তলিয়ে গেছে, নেট দিয়ে বাঁধ দিয়েছি এতে কোন কাজ হবে বলে আমার মনে হয় না। তাই এবছর বন্যায় আমার প্রায় তিন লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

কলাবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান মাইকেল ওঝা বলেন, সা¤প্রতিক বন্যায় আমার এলাকায় মৎস্য ঘেরে ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। বর্তমান বন্যার পরিস্থিতি একটু নিয়ন্ত্রণে এসেছে তবে প্রচুর বৃষ্টির কারণে পানি কিছুটা বেড়েছে। ক্ষতির দিক থেকে কোটালীপাড়ায় উপজেলার কলাবাড়ী ইউনিয়নে বেশি হয়েছে আমি মনে করি।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সরকার বলেন , সা¤প্রতিক বন্যায় কোটালীপাড়া উপজেলায় প্রায় আড়াই হাজারের বেশী মৎস্য ঘের ও পুকুর বন্যায় প্লাবিত হয়েছে এবং ১৭কোটি টাকার অধিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যদি বন্যার পানি বেড়ে যায় তাহলে ক্ষতির পরিমাণ ও বেড়ে যাবে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর