০৭:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪

লক্ষ লক্ষ মানুষের আহাজারি,বন্যায় ধুঁকছে পাকিস্তান

পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যার তাণ্ডব অব্যাহত রয়েছে। দেশটির বিভিন্ন প্রদেশে বন্যার পরিস্থিতির তেমন উন্নতির কোনো খবর পাওয়া যায়নি। উল্টো এই পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে।

পাকিস্তানের একাধিক সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, বন্যায় এখন পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা এক হাজার ১৩৬ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছে শতাধিক। এতে তিন কোটিরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জুন থেকে শুরু হওয়া বন্যা লাখো মানুষকে ঘরছাড়া করেছে। এই পরিস্থিতিতে জনগণকে সহায়তায় পাকিস্তান সরকার তার ক্ষমতার সর্বোচ্চটাই করছে। বন্যায় বিপর্যস্ত দেশটি আন্তর্জাতিক সহায়তা পেতে বিভিন্ন সংস্থা ও রাষ্ট্রের কাছে আবেদন জানিয়েছে। ইতোমধ্যে পাকিস্তানের সাহায্যের আবেদনের প্রেক্ষিতে সাড়া দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও অন্য কয়েকটি দেশ।

পাকিস্তানের ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির (এনডিএমএ) প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৭ শিশু ও ১৭ জন নারীসহ সর্বমোট ৭৫ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এছাড়াও আহত হয়েছে ৫৯ জন। এনডিএমএ জানিয়েছে, বন্যায় ১০ লাখেরও বেশি বাড়ি ধ্বংস হয়েছে।

এনডিএমএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা বেড়ে তিন কোটিতে দাঁড়িয়েছে। সিন্ধু প্রদেশের ২৩টি জেলায় এক কোটি ৪০ লাখ মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও বেলুচিস্তানের ৩১টি জেলায় ৯০ লাখ, পাঞ্জাবের ৩টি জেলায় ৪৮ লাখ ও খাইবার পাখতুনখোয়ার ৯টি জেলায় ৪৪ লাখের মতো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এনডিএমএ রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, গিলগিট বালতিস্তানের (জি-বি) ছয়টি জেলায় ৫১ হাজার ৫০০ মানুষ ও আজাদ জম্মু ও কাশ্মিরের বন্যায় আরও ৫৩ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও এই বন্যায় ৮ হাজার ২৩১টি গৃহপালিত পশু মারা গেছে।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে মানুর উপত্যকায় নদীর দুধারে বন্যার কারণে আটকে পড়েছে শত শত মানুষ। শুক্রবার হঠাৎ করে ধেয়ে আসা পানির তোড়ে সেখানে দশটি সেতু ভেঙে যায়। বহু ভবন ধসে পড়ে।

“আমাদের খাবার দরকার, আমাদের ওষুধ দরকার এবং দয়া করে সেতুটি পুননির্মাণ করুন, আমাদের এখন আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।” এই ছিল বানভাসি মানুষদের একটি চিরকুটের লেখা। একই অবস্থান দেশটির বিভিন্ন প্রদেশের মানুষের।

দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিতে চলমান অবিরাম বৃষ্টিপাতকে ‘জলবায়ু-প্রবর্তিত মহাকাব্যিক মানবিক সংকট’ বলে অভিহিত করে পাকিস্তান সরকার গত বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) আনুষ্ঠানিকভাবে ‘জাতীয় জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করে।

জনপ্রিয়

রংপুরে রেল স্টেশনে বৈষম্য উন্নয়ন হয়নি,প্রতিবাদে অবরোধ

লক্ষ লক্ষ মানুষের আহাজারি,বন্যায় ধুঁকছে পাকিস্তান

প্রকাশিত : ০১:২৫:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ অগাস্ট ২০২২

পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যার তাণ্ডব অব্যাহত রয়েছে। দেশটির বিভিন্ন প্রদেশে বন্যার পরিস্থিতির তেমন উন্নতির কোনো খবর পাওয়া যায়নি। উল্টো এই পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে।

পাকিস্তানের একাধিক সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, বন্যায় এখন পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা এক হাজার ১৩৬ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছে শতাধিক। এতে তিন কোটিরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জুন থেকে শুরু হওয়া বন্যা লাখো মানুষকে ঘরছাড়া করেছে। এই পরিস্থিতিতে জনগণকে সহায়তায় পাকিস্তান সরকার তার ক্ষমতার সর্বোচ্চটাই করছে। বন্যায় বিপর্যস্ত দেশটি আন্তর্জাতিক সহায়তা পেতে বিভিন্ন সংস্থা ও রাষ্ট্রের কাছে আবেদন জানিয়েছে। ইতোমধ্যে পাকিস্তানের সাহায্যের আবেদনের প্রেক্ষিতে সাড়া দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও অন্য কয়েকটি দেশ।

পাকিস্তানের ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির (এনডিএমএ) প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৭ শিশু ও ১৭ জন নারীসহ সর্বমোট ৭৫ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এছাড়াও আহত হয়েছে ৫৯ জন। এনডিএমএ জানিয়েছে, বন্যায় ১০ লাখেরও বেশি বাড়ি ধ্বংস হয়েছে।

এনডিএমএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা বেড়ে তিন কোটিতে দাঁড়িয়েছে। সিন্ধু প্রদেশের ২৩টি জেলায় এক কোটি ৪০ লাখ মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও বেলুচিস্তানের ৩১টি জেলায় ৯০ লাখ, পাঞ্জাবের ৩টি জেলায় ৪৮ লাখ ও খাইবার পাখতুনখোয়ার ৯টি জেলায় ৪৪ লাখের মতো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এনডিএমএ রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, গিলগিট বালতিস্তানের (জি-বি) ছয়টি জেলায় ৫১ হাজার ৫০০ মানুষ ও আজাদ জম্মু ও কাশ্মিরের বন্যায় আরও ৫৩ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও এই বন্যায় ৮ হাজার ২৩১টি গৃহপালিত পশু মারা গেছে।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে মানুর উপত্যকায় নদীর দুধারে বন্যার কারণে আটকে পড়েছে শত শত মানুষ। শুক্রবার হঠাৎ করে ধেয়ে আসা পানির তোড়ে সেখানে দশটি সেতু ভেঙে যায়। বহু ভবন ধসে পড়ে।

“আমাদের খাবার দরকার, আমাদের ওষুধ দরকার এবং দয়া করে সেতুটি পুননির্মাণ করুন, আমাদের এখন আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।” এই ছিল বানভাসি মানুষদের একটি চিরকুটের লেখা। একই অবস্থান দেশটির বিভিন্ন প্রদেশের মানুষের।

দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিতে চলমান অবিরাম বৃষ্টিপাতকে ‘জলবায়ু-প্রবর্তিত মহাকাব্যিক মানবিক সংকট’ বলে অভিহিত করে পাকিস্তান সরকার গত বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) আনুষ্ঠানিকভাবে ‘জাতীয় জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করে।