০১:৪৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪

কুষ্টিয়ায় বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফোরামের সংবাদ সম্মেলন

বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফোরামের নেতারা তাদের দাবি অনুযায়ী চলতি অর্থ বছরের বাজেটে বেতন বাবদ ১৪৬ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন। বিধি অনুযায়ী নিয়োগ দেয়া হলেও শিক্ষকরা বেতন ভাতা পাচ্ছেন না। এতে মানবেতর জীবন-যাপন করছে তারা। এ অবস্থায় তারা সরকারের প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। আর দাবি না মানলে ভিসির পদত্যাগের দাবিতে একদফা আন্দোলনে নামবেন।

রোববার সকালে কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় কমিটির আহবায়ক নেকবার হোসেন লিখিত বক্তব্যে এসব দাবি জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন জেলা থেকে আগত কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহবায়ক এমদাদুল ইসলাম, মুনিরুজ্জামান নাহিদ রেজা, শফিকুল রহমান, হালিম, কামাল হোসেন, আসমা খাতুন, আরিফুর রহমান, আবু কায়েস, আজম আলী, হাসিবুল ইসলাম, এরশাদ আলীসহ অন্যরা।

শিক্ষক নেতারা বলেন, ১৯৯৩ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে দীর্ঘ ২৮বছর “জনবল কাঠামো এমপিও নীতিমালার” অন্তর্ভুক্ত না থাকার কারনে আমরা সরকারী অথবা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোন আর্থিক সুবিধা পাই না।

সরকারী ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক শিক্ষক হিসেবে আমাদেরকে নিয়োগ দিয়েও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের বেতন ভাতার দায়িত্ব গ্রহণ করে না। এমতাবস্থায় কলেজ কর্তৃপক্ষ একান্তই মানবিক দিক বিবেচনা করে কলেজে যাতায়াত খরচও পোশাক পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা বাবদ কলেজ ভেদে মাসিক ২০০০ টাকা থেকে ৮০০০ টাকা সম্মানী হিসেবে দিয়ে থাকে। যা দিয়ে মাসের এক সপ্তাহের নূন্যতম বাজার খরচ চলে না।কলেজে ফান্ড না থাকার কারনে সেই সম্মানীটাও ঢাকা শহরের কয়েকটি কলেজ বাদে সারা দেশেই প্রায় ২ মাস থেকে ১বছর বন্ধ রয়েছে। সারাদেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের ডিগ্রী কলেজ গুলোতে অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স চালু করার কারনে দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পেয়েছে। অথচ কলেজ কর্র্তৃপক্ষ উচ্চ শিক্ষাকে ব্যবসায়িক পণ্য হিসাবে ব্যবহার করে ছাত্র/ছাত্রীদের নিকট থেকে ইচ্ছা মতো কলেজ ভেদে ৫০০ হতে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত মাসিক বেতন বাবদ আদায় করছে। অপর দিকে সরকারি কলেজ সমূহে মাত্র ২৫ টাকা মাসিক বেতন নির্ধারণ করা আছে।

দীর্ঘ ২৮ বছরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ২৮ লক্ষ ছাত্র/ছাত্রী থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈত নীতির কারনে প্রায় ৮০% ছাত্র/ছাত্রী ক্লাশ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। ক্লাশ করার সুযোগ না পাওয়ার ফলে ছাত্র/ছাত্রীদের সঠিক ভাবে মেধা বিকাশের সুযোগ পায় না। ফলে দেশে বেকারত্বে পরিমান দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ও সামাজিক অবক্ষয় দেখা দিচ্ছে।

এতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বেকার তৈরির কারখানায় পরিনত হয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে অধিভুক্ত কলেজ গুলোতে একটি নিদিষ্ট পরিমান অর্থ ভর্তি ও বেতন বাবদ নির্ধারণ করে দেয়া প্রয়োজন।কলেজ থেকে ভর্তি ও বেতন বাবদ আদায়কৃত অর্থ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ভাবে জমা করলে বছরে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার বেশি তাদের আদায় হবে। আর এমপিও ভুক্তির আগ পর্যন্ত আমাদের বেতন দেয়া হলে বছরে মাত্র খরচ হবে মাত্র ১৪৬ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা।

বাকি প্রায় ৮৫০ কোটি টাকা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় অনেক উন্নয়ন মূলক কাজ করতে পারবে।এছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ডে ২২৬০ কোটিরও বেশি টাকা অলস পড়ে আছে।নোভেল করোনা ভাইরাসের কারনে শিক্ষকদের বর্তমানে অর্ধাহারে অনাহারে দিনাতিপাত করা সহ পরিবারের ভরণপোষন করা একেবারেই সম্ভব হচ্ছে না।

এই সময়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে আমাদের জন্য প্রনোদনার চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত উপজেলা পর্যায়ে একটি করে কলেজ সরকারি করণ করায় নন এমপিও অনার্স মাস্টার্স কোর্সের প্রায় ৩০০০শিক্ষক কর্মচারি সরকারি আত্বিকরনের প্রক্রিাধীন রয়েছে।এমতাবস্থায় জনবল কাঠামোও এমপিও নীতিমালায় আমাদের ৫৫০০ শিক্ষক কর্মচারীর অন্তর্ভুক্ত করে এমপিও ভুক্তির জন্য জন্য বাৎসরিক মাত্র ১৪৬ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা প্রয়োজন।

এদিকে এসব দাবি নিয়ে তারা ভিসির সাথে কথা বলছেন। দাবি না মানলে তার পদত্যাগের দাবি একদফা দাবি নিয়ে মাঠে নামবেন।

 

বিজনেস বাংলাদেশ/ ইমরান মাসুদ

জনপ্রিয়

মুরাদনগরের সাবেক ৫বারের এমপি কায়কোবাদের অপেক্ষায় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ

কুষ্টিয়ায় বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফোরামের সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশিত : ০৪:১১:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ জুন ২০২০

বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফোরামের নেতারা তাদের দাবি অনুযায়ী চলতি অর্থ বছরের বাজেটে বেতন বাবদ ১৪৬ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন। বিধি অনুযায়ী নিয়োগ দেয়া হলেও শিক্ষকরা বেতন ভাতা পাচ্ছেন না। এতে মানবেতর জীবন-যাপন করছে তারা। এ অবস্থায় তারা সরকারের প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। আর দাবি না মানলে ভিসির পদত্যাগের দাবিতে একদফা আন্দোলনে নামবেন।

রোববার সকালে কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় কমিটির আহবায়ক নেকবার হোসেন লিখিত বক্তব্যে এসব দাবি জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন জেলা থেকে আগত কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহবায়ক এমদাদুল ইসলাম, মুনিরুজ্জামান নাহিদ রেজা, শফিকুল রহমান, হালিম, কামাল হোসেন, আসমা খাতুন, আরিফুর রহমান, আবু কায়েস, আজম আলী, হাসিবুল ইসলাম, এরশাদ আলীসহ অন্যরা।

শিক্ষক নেতারা বলেন, ১৯৯৩ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে দীর্ঘ ২৮বছর “জনবল কাঠামো এমপিও নীতিমালার” অন্তর্ভুক্ত না থাকার কারনে আমরা সরকারী অথবা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোন আর্থিক সুবিধা পাই না।

সরকারী ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক শিক্ষক হিসেবে আমাদেরকে নিয়োগ দিয়েও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের বেতন ভাতার দায়িত্ব গ্রহণ করে না। এমতাবস্থায় কলেজ কর্তৃপক্ষ একান্তই মানবিক দিক বিবেচনা করে কলেজে যাতায়াত খরচও পোশাক পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা বাবদ কলেজ ভেদে মাসিক ২০০০ টাকা থেকে ৮০০০ টাকা সম্মানী হিসেবে দিয়ে থাকে। যা দিয়ে মাসের এক সপ্তাহের নূন্যতম বাজার খরচ চলে না।কলেজে ফান্ড না থাকার কারনে সেই সম্মানীটাও ঢাকা শহরের কয়েকটি কলেজ বাদে সারা দেশেই প্রায় ২ মাস থেকে ১বছর বন্ধ রয়েছে। সারাদেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের ডিগ্রী কলেজ গুলোতে অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স চালু করার কারনে দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পেয়েছে। অথচ কলেজ কর্র্তৃপক্ষ উচ্চ শিক্ষাকে ব্যবসায়িক পণ্য হিসাবে ব্যবহার করে ছাত্র/ছাত্রীদের নিকট থেকে ইচ্ছা মতো কলেজ ভেদে ৫০০ হতে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত মাসিক বেতন বাবদ আদায় করছে। অপর দিকে সরকারি কলেজ সমূহে মাত্র ২৫ টাকা মাসিক বেতন নির্ধারণ করা আছে।

দীর্ঘ ২৮ বছরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ২৮ লক্ষ ছাত্র/ছাত্রী থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈত নীতির কারনে প্রায় ৮০% ছাত্র/ছাত্রী ক্লাশ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। ক্লাশ করার সুযোগ না পাওয়ার ফলে ছাত্র/ছাত্রীদের সঠিক ভাবে মেধা বিকাশের সুযোগ পায় না। ফলে দেশে বেকারত্বে পরিমান দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ও সামাজিক অবক্ষয় দেখা দিচ্ছে।

এতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বেকার তৈরির কারখানায় পরিনত হয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে অধিভুক্ত কলেজ গুলোতে একটি নিদিষ্ট পরিমান অর্থ ভর্তি ও বেতন বাবদ নির্ধারণ করে দেয়া প্রয়োজন।কলেজ থেকে ভর্তি ও বেতন বাবদ আদায়কৃত অর্থ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ভাবে জমা করলে বছরে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার বেশি তাদের আদায় হবে। আর এমপিও ভুক্তির আগ পর্যন্ত আমাদের বেতন দেয়া হলে বছরে মাত্র খরচ হবে মাত্র ১৪৬ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা।

বাকি প্রায় ৮৫০ কোটি টাকা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় অনেক উন্নয়ন মূলক কাজ করতে পারবে।এছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ডে ২২৬০ কোটিরও বেশি টাকা অলস পড়ে আছে।নোভেল করোনা ভাইরাসের কারনে শিক্ষকদের বর্তমানে অর্ধাহারে অনাহারে দিনাতিপাত করা সহ পরিবারের ভরণপোষন করা একেবারেই সম্ভব হচ্ছে না।

এই সময়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে আমাদের জন্য প্রনোদনার চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত উপজেলা পর্যায়ে একটি করে কলেজ সরকারি করণ করায় নন এমপিও অনার্স মাস্টার্স কোর্সের প্রায় ৩০০০শিক্ষক কর্মচারি সরকারি আত্বিকরনের প্রক্রিাধীন রয়েছে।এমতাবস্থায় জনবল কাঠামোও এমপিও নীতিমালায় আমাদের ৫৫০০ শিক্ষক কর্মচারীর অন্তর্ভুক্ত করে এমপিও ভুক্তির জন্য জন্য বাৎসরিক মাত্র ১৪৬ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা প্রয়োজন।

এদিকে এসব দাবি নিয়ে তারা ভিসির সাথে কথা বলছেন। দাবি না মানলে তার পদত্যাগের দাবি একদফা দাবি নিয়ে মাঠে নামবেন।

 

বিজনেস বাংলাদেশ/ ইমরান মাসুদ