প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘নৌবাহিনীকে আরো আধুনিক ও শক্তিশালী হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। আমরা আরো সুযোগ-সুবিধা দেব। বিশ্বের উন্নত দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নৌবাহিনীর সদস্যদের টেকনোলজি জানতে হবে।’ আজ বৃহস্পতিবার ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বানৌজা ‘সংগ্রাম’-এর কমিশনিং উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আগামীতে আমরাও যেন এমন যুদ্ধজাহাজ তৈরি করতে পারি, সে চিন্তা আমাদের করতে হবে। এ ছাড়া আমাদের নিজেদের প্রয়োজন ছাড়াও, এ ধরনের জাহাজ যেন আমরা বিদেশে রপ্তানি করতে পারি সেভাবে আমাদের কাজ করতে হবে।’
আজ সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বানৌজা ‘সংগ্রাম’র কমিশনিং করেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছিল, আমাদের প্রবৃদ্ধি ক্রমান্বয়ে বাড়ছিল, কিন্তু কোনো এক অদৃশ্য শক্তি এসে সমস্ত উন্নয়ন অগ্রগতি স্তব্ধ করে দিয়েছে। উন্নত ও খুব শক্তিশালী এবং অতি দরিদ্র সবার একই অবস্থা সৃষ্টি করেছে এ অদৃশ্য শক্তি। এর বিরুদ্ধে কেউ লড়তে পারছে না।’ তিনি নৌবাহিনীর সকল সদস্যকে সুরক্ষিত থেকে তাদের দায়িত্ব পালন করার জন্য আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ চাই না, আমরা শান্তি চাই। সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয় । বঙ্গবন্ধুর এ নীতিতে আমরা বিশ্বাসী।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বিশাল সমুদ্রসীমা অর্জন করেছি। সমুদ্র সম্পদকে কাজে লাগিয়ে আমরা দেশের উন্নয়ন করতে চাই।’ তিনি আশা করেন এ ক্ষেত্রে নৌবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
চীনে তৈরি বানৌজা ‘সংগ্রাম’-এর দৈর্ঘ্য ৯০ মিটার এবং প্রস্থ ১১ মিটার। এটি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৫ নটিক্যাল মাইল বেগে চলতে সক্ষম। শত্রু বিমান, জাহাজ এবং স্থাপনায় আঘাত হানতে সক্ষম জাহাজটিতে আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন কামান, ভূমি থেকে আকাশে এবং ভূমি থেকে ভূমিতে উৎক্ষেপণযোগ্য মিসাইল, অত্যাধুনিক থ্রিডি রাডার, ফায়ার কন্ট্রোল সিস্টেম, রাডার জ্যামিং সিস্টেমসহ বিভিন্ন ধরনের যুদ্ধ সরঞ্জামাদিতে সুসজ্জিত। জাহাজটিতে হেলিকপ্টার অবতরণ ও উড্ডয়নের জন্য ডেক ল্যান্ডিংসহ অন্যান্য সুবিধাদি রয়েছে।
গভীর সমুদ্রে দীর্ঘ সময়ব্যাপী মোতায়েনযোগ্য এ জাহাজর মাধ্যমে বিশাল সমুদ্র এলাকায় অনুপ্রবেশ ঠেকানো, চোরাচালান ও জলদস্যুতা রোধ, সমুদ্রে উদ্ধার তৎপরতা, সমুদ্র অর্থনীতির বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনাসহ মৎস্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষার পাশাপাশি তেল, গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য বরাদ্দকৃত ব্লকসমূহের অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
বর্তমান সরকার ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নে বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর অংশ হিসেবে নৌবহরে যুক্ত হয়েছে আধুনিক প্রযুক্তি ও যুদ্ধ সরঞ্জামে সজ্জিত আধুনিক যুদ্ধজাহাজ, সাবমেরিন, হেলিকপ্টার ও মেরিটাইম পেট্রল এয়ারক্রাফট।
বানৌজা ‘সংগ্রাম’ -এর কমিশনিংয়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সক্ষমতা আরো বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিজনেস বাংলাদেশ/ এস শিকদার