০২:৫৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪

ডমিঙ্গোর সময় বেশি নেই !

রাসেল ডমিঙ্গো

বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর তাঁর শুরুই হয়েছিল দেশের মাটিতে আফগানিস্তানের কাছে ২২৪ রানের লজ্জাকর হার দিয়ে। অবশ্য একই রকম বিব্রতকর শুরু ছিল চন্দিকা হাতুরাসিংহের জায়গায় কোচ হয়ে আসা স্টিভ রোডসেরও। ২০১৮-র জুলাইতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অ্যান্টিগা টেস্টে প্রথম ইনিংসে মাত্র ৪৩ রানে গুটিয়ে যাওয়া দল অবশ্য ওই ইংলিশ কোচের অধীনে পরে ছন্দেও ফিরেছিল। কিন্তু দেড় বছর পার করে দেওয়ার পরও রাসেল ডমিঙ্গো যেন পথ দেখাতে না পারা নাবিকই। এই দক্ষিণ আফ্রিকানের কোচিংয়ে উন্নতির সুস্পষ্ট কোনো চিহ্নও ফুটে উঠছে না বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্সে। দেশে এবং দেশের বাইরে লাগাতার ব্যর্থতায় ডমিঙ্গোকে নিয়ে প্রশ্ন উঠে kalerkanthoযেতে বাধ্যও। তবে নীতিনির্ধারকদের ধৈর্যের বাঁধ এখনো না ভাঙলেও ভাঙতে কতক্ষণ! শিগগিরই সেরকম কিছুর সম্ভাবনার ইঙ্গিত আছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) এক পরিচালকের কথায়ও, ‘এভাবেই যদি চলতে থাকে, তাহলে…।’

অর্থাৎ যেভাবে চলছে, সেভাবেই চলতে থাকলে ডমিঙ্গোর ভাগ্য নির্ধারণে উদ্যোগী হবে দেশের সর্বোচ্চ ক্রিকেট প্রশাসন। তার আগে অপেক্ষার নীতি। কিন্তু সেই অপেক্ষা যে লম্বা সময়ের হবে না, সেটিও জানিয়ে দিয়েছেন ক্রিকেট অপারেশনস কমিটির প্রধান আকরাম খান, ‘অবশ্যই আমরা সন্তুষ্ট নই (ডমিঙ্গোর পারফরম্যান্সে)। তাই বলে এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলার ভাবনা বোর্ডের নেই। সামনে আমাদের দুটি সিরিজ আছে। সেই দুটি শেষ হলেই আমরা পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করতে বসব, এর আগে নয়।’

সামনের দুটি সিরিজই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। সেখানে দুই টেস্টের সিরিজ খেলতে ১২ এপ্রিল যাওয়ার কথা আছে মমিনুল হকদের। এরপর মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে ফিরতি সফরে লঙ্কানরা বাংলাদেশে আসবে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে। বলা যেতে পারে, আসন্ন দুই সিরিজের পারফরম্যান্সের ওপরই ঝুলছে ডমিঙ্গোর ভাগ্য। কঠিন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা অবশ্য মুখে উচ্চারণও করছেন না আকরাম। বারবারই ‘মূল্যায়ন’ শব্দের আড়াল খুঁজে নেওয়া বাংলাদেশ দলের সাবেক এই অধিনায়ক জানালেন, ‘শুধু ডমিঙ্গো নন, কোচিং স্টাফের অন্য সদস্যদেরও পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করা হবে। বাদ যাবে না ক্রিকেটাররাও।’ ২০২১ সালের কেন্দ্রীয় চুক্তির ক্রিকেটারদের নামও বাছা হবে লঙ্কানদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ শেষেই, ‘আমরা কিন্তু নতুন বছরের চুক্তি এখনো ঘোষণা করিনি। সে বিষয়েও আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে চাই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুটি সিরিজের পারফরম্যান্স দেখে।’

নিউজিল্যান্ডে ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি সিরিজে বিধ্বস্ত হয়ে ফেরার পর এবার শ্রীলঙ্কায় টেস্টের চ্যালেঞ্জ। নির্বাচক হাবিবুল বাশারের কেন যেন মনে হচ্ছে আসন্ন সফরটি ভালোই যাবে বাংলাদেশের। নিউজিল্যান্ডে বাজে পারফরম্যান্সের মধ্যেও দলের প্রাপ্তি কী—জানতে চাওয়া হলে তিনি কাল সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এটি বোঝা যাবে পরবর্তী সিরিজে, শ্রীলঙ্কা সফরে। সাধারণত একটি কঠিন সিরিজ পার করে আসার পর পরের সিরিজটি একটু সহজ হয়। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলা। প্রাপ্তি বলতে (নিউজিল্যান্ড সফর থেকে) আমাদের উপলব্ধিটা। আমরা কোথায় দাঁড়িয়ে আছি এবং আমাদের কোন কোন জায়গায় উন্নতি করতে হবে।’ এই সফরে দলের পারফরম্যান্সে উন্নতিই হতে পারে ডমিঙ্গোর ‘লাইফলাইন’। না হলে তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর দলীয় প্রাপ্তির হিসাব আড়াল করে রাখার মতোই। তাঁর সময়ে খেলা সাত টেস্টের ছয়টিতেই হার। একটি মাত্র জয়, তাও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ৯ ওয়ানডে খেলে ছয় জয়ের তিনটিতেও প্রতিপক্ষ একই। টি-টোয়েন্টিতে ১০ ম্যাচ খেলে পাওয়া তিন জয়ের দুটিতেও সামনে ছিল সেই জিম্বাবুয়েই। ২০১৯-এর নভেম্বরে দিল্লিতে ভারতকে টি-টোয়েন্টিতে হারানোই ডমিঙ্গোর সময়ে বাংলাদেশের একমাত্র উল্লেখযোগ্য সাফল্য। তুলনায় বিস্মরণযোগ্য ব্যর্থতাই বেশি বলে বাংলাদেশের হেড কোচ হিসেবে ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এস শিকদার

জনপ্রিয়

মুরাদনগরের সাবেক ৫বারের এমপি কায়কোবাদের অপেক্ষায় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ

ডমিঙ্গোর সময় বেশি নেই !

প্রকাশিত : ১১:০২:৩১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ এপ্রিল ২০২১

বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর তাঁর শুরুই হয়েছিল দেশের মাটিতে আফগানিস্তানের কাছে ২২৪ রানের লজ্জাকর হার দিয়ে। অবশ্য একই রকম বিব্রতকর শুরু ছিল চন্দিকা হাতুরাসিংহের জায়গায় কোচ হয়ে আসা স্টিভ রোডসেরও। ২০১৮-র জুলাইতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অ্যান্টিগা টেস্টে প্রথম ইনিংসে মাত্র ৪৩ রানে গুটিয়ে যাওয়া দল অবশ্য ওই ইংলিশ কোচের অধীনে পরে ছন্দেও ফিরেছিল। কিন্তু দেড় বছর পার করে দেওয়ার পরও রাসেল ডমিঙ্গো যেন পথ দেখাতে না পারা নাবিকই। এই দক্ষিণ আফ্রিকানের কোচিংয়ে উন্নতির সুস্পষ্ট কোনো চিহ্নও ফুটে উঠছে না বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্সে। দেশে এবং দেশের বাইরে লাগাতার ব্যর্থতায় ডমিঙ্গোকে নিয়ে প্রশ্ন উঠে kalerkanthoযেতে বাধ্যও। তবে নীতিনির্ধারকদের ধৈর্যের বাঁধ এখনো না ভাঙলেও ভাঙতে কতক্ষণ! শিগগিরই সেরকম কিছুর সম্ভাবনার ইঙ্গিত আছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) এক পরিচালকের কথায়ও, ‘এভাবেই যদি চলতে থাকে, তাহলে…।’

অর্থাৎ যেভাবে চলছে, সেভাবেই চলতে থাকলে ডমিঙ্গোর ভাগ্য নির্ধারণে উদ্যোগী হবে দেশের সর্বোচ্চ ক্রিকেট প্রশাসন। তার আগে অপেক্ষার নীতি। কিন্তু সেই অপেক্ষা যে লম্বা সময়ের হবে না, সেটিও জানিয়ে দিয়েছেন ক্রিকেট অপারেশনস কমিটির প্রধান আকরাম খান, ‘অবশ্যই আমরা সন্তুষ্ট নই (ডমিঙ্গোর পারফরম্যান্সে)। তাই বলে এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলার ভাবনা বোর্ডের নেই। সামনে আমাদের দুটি সিরিজ আছে। সেই দুটি শেষ হলেই আমরা পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করতে বসব, এর আগে নয়।’

সামনের দুটি সিরিজই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। সেখানে দুই টেস্টের সিরিজ খেলতে ১২ এপ্রিল যাওয়ার কথা আছে মমিনুল হকদের। এরপর মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে ফিরতি সফরে লঙ্কানরা বাংলাদেশে আসবে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে। বলা যেতে পারে, আসন্ন দুই সিরিজের পারফরম্যান্সের ওপরই ঝুলছে ডমিঙ্গোর ভাগ্য। কঠিন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা অবশ্য মুখে উচ্চারণও করছেন না আকরাম। বারবারই ‘মূল্যায়ন’ শব্দের আড়াল খুঁজে নেওয়া বাংলাদেশ দলের সাবেক এই অধিনায়ক জানালেন, ‘শুধু ডমিঙ্গো নন, কোচিং স্টাফের অন্য সদস্যদেরও পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করা হবে। বাদ যাবে না ক্রিকেটাররাও।’ ২০২১ সালের কেন্দ্রীয় চুক্তির ক্রিকেটারদের নামও বাছা হবে লঙ্কানদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ শেষেই, ‘আমরা কিন্তু নতুন বছরের চুক্তি এখনো ঘোষণা করিনি। সে বিষয়েও আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে চাই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুটি সিরিজের পারফরম্যান্স দেখে।’

নিউজিল্যান্ডে ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি সিরিজে বিধ্বস্ত হয়ে ফেরার পর এবার শ্রীলঙ্কায় টেস্টের চ্যালেঞ্জ। নির্বাচক হাবিবুল বাশারের কেন যেন মনে হচ্ছে আসন্ন সফরটি ভালোই যাবে বাংলাদেশের। নিউজিল্যান্ডে বাজে পারফরম্যান্সের মধ্যেও দলের প্রাপ্তি কী—জানতে চাওয়া হলে তিনি কাল সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এটি বোঝা যাবে পরবর্তী সিরিজে, শ্রীলঙ্কা সফরে। সাধারণত একটি কঠিন সিরিজ পার করে আসার পর পরের সিরিজটি একটু সহজ হয়। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলা। প্রাপ্তি বলতে (নিউজিল্যান্ড সফর থেকে) আমাদের উপলব্ধিটা। আমরা কোথায় দাঁড়িয়ে আছি এবং আমাদের কোন কোন জায়গায় উন্নতি করতে হবে।’ এই সফরে দলের পারফরম্যান্সে উন্নতিই হতে পারে ডমিঙ্গোর ‘লাইফলাইন’। না হলে তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর দলীয় প্রাপ্তির হিসাব আড়াল করে রাখার মতোই। তাঁর সময়ে খেলা সাত টেস্টের ছয়টিতেই হার। একটি মাত্র জয়, তাও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ৯ ওয়ানডে খেলে ছয় জয়ের তিনটিতেও প্রতিপক্ষ একই। টি-টোয়েন্টিতে ১০ ম্যাচ খেলে পাওয়া তিন জয়ের দুটিতেও সামনে ছিল সেই জিম্বাবুয়েই। ২০১৯-এর নভেম্বরে দিল্লিতে ভারতকে টি-টোয়েন্টিতে হারানোই ডমিঙ্গোর সময়ে বাংলাদেশের একমাত্র উল্লেখযোগ্য সাফল্য। তুলনায় বিস্মরণযোগ্য ব্যর্থতাই বেশি বলে বাংলাদেশের হেড কোচ হিসেবে ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এস শিকদার