০১:০৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪

বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চাকুরী নীতিকে বৈষম্যমূলক দাবি, চাটমোহরে কর্মবিরতিতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি

পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, বেতন বৈষম্য, অভিন্ন চাকরি বিধি ও চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের চাকরি স্থায়ীকরণসহ বিভিন্ন দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছেন পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীরা। টানা কর্মবিরতির ৭ম দিনে রবিবার চাটমোহর সমিতির প্রধান কার্যালয়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেন বিভিন্ন ইউনিটে কর্মরত ৫ শতাধিক কর্মকর্তা কর্মচারী। এ সময় পল্লীবিদ্যুৎ কর্মীদের দাবীর বিপক্ষে অবস্থান নেয়া কর্মকর্তাদের কুশপুত্তলিকাও দাহ করেন তারা।
এতে বক্তব্য দেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি – ১ এর মানসম্পদ বিভাগের এজিএম খ.ম কুদরতি এলাহী, এজিএম ইএন্ড সি সুফিয়া আমির, জুনিয়ার ইঞ্জিনিয়ার হাসানুজ্জামান, লাইন টেকনিশিয়ান মোশারফ হোসেন ও এম আর সিএম সাইফুল ইসলাম সহ অনেকেই।
বক্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ বিদ্যুতকে বাদ রেখে হবে না। আমরা তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সারাদেশে প্রায় ১২ কোটি গ্রাহককে নিরলস বিদ্যুৎ সেবা দিয়ে আসছি। শ্রমনীতি অনুযায়ী ৮ ঘন্টা কাজ করার কথা থাকলেও আমরা কাজ করছি ১২ থেকে ১৮ ঘন্টা, কখনো কখনো দিনরাত দিয়েও কাজ করতে হয়। অথচ আমাদের অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে। অতিরিক্ত শ্রমের কোনো মূল্য দেয়া হয় না। আবার প্রয়োজনীয় লোকবলও নিয়োগ দেয়া হয় না। যারা রয়েছেন তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে অনিয়মিত ক্যাটাগরিতে ফেলে রাখা হয়েছে। আবার একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করলেও পদপদবি, বেতন-ভাতা, বোনাসসহ পদোন্নতির ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছি আমরা।
পদোন্নতির ব্যাপারে বিদ্যুতায়ন বোর্ডের অনিয়ম প্রসঙ্গে তারা বলেন, ২০/২৫ বছর ধরে কেউ সার্ভিস দিচ্ছে অথচ কোনো পদোন্নতি নেই। যে দু’একজনকে দেয়া হচ্ছে তারা বিদ্যুতায়ন বোর্ডকে ম্যানেজ করেই পাচ্ছেন। নিয়মিত কোনো পদোন্নতি নেই। একজন কর্মকর্তা যোগদান করে কোনো পদোন্নতি ছাড়া অবসরে যাচ্ছেন, এটি কি কোনো চাকরি নীতি হতে পারে?
প্রান্তিক পর্যায়ে বৈদ্যুতিক সেবা দিতে প্রয়োজনীয় সকল সরঞ্জাম কেনার একমাত্র দায়িত্ব বিদ্যুতায়ন বোর্ডের। মানববন্ধনে এ সরঞ্জাম কেনায়ও অনিয়মের অভিযোগ তোলেন বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা কর্মচারীরা। এ প্রসঙ্গে তারা বলেন, অত্যন্ত কম দামের নিম্নমানের সরঞ্জাম সরবরাহ করেন আরইবি। যে বৈদ্যুতিক মিটার দেয়া হয় সেগুলো পনেরো দিন থেকে একমাস চলেই নষ্ট হয়ে যায়। ভুতুরে বিল আসে, রিডিং ঠিকমতো দেখা যায় না। এসব নিয়ে গ্রাহকেরা কর্মকর্তা কর্মচারীদের ওপর চড়াও হন। চরম দুর্ব্যবহারের শিকার হতে হয়। অথচ এগুলোতে আমাদের কিছুই করার থাকে না।
বক্তারা বলেন, এধরণের সকল সমস্যা নিয়ে অসংখ্যবার বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তারা কর্ণপাত করেন নাই। উল্টো সমিতির তদারকি প্রতিষ্ঠান পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বিআরইবি) দ্বৈত নীতির কারণে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রায় ৪০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী ন্যায্য সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে বলেও জানান তারা। এক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক চাকরীনীতি পরিহার করে বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে একীভূত করে অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন এবং চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিত করার দাবি জানান তারা। এসময় দ্রুতই এটি বাস্তবায়ন নাহলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
ট্যাগ :
জনপ্রিয়

মুরাদনগরের সাবেক ৫বারের এমপি কায়কোবাদের অপেক্ষায় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ

বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চাকুরী নীতিকে বৈষম্যমূলক দাবি, চাটমোহরে কর্মবিরতিতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি

প্রকাশিত : ০৪:০২:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ জুলাই ২০২৪
পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, বেতন বৈষম্য, অভিন্ন চাকরি বিধি ও চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের চাকরি স্থায়ীকরণসহ বিভিন্ন দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছেন পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীরা। টানা কর্মবিরতির ৭ম দিনে রবিবার চাটমোহর সমিতির প্রধান কার্যালয়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেন বিভিন্ন ইউনিটে কর্মরত ৫ শতাধিক কর্মকর্তা কর্মচারী। এ সময় পল্লীবিদ্যুৎ কর্মীদের দাবীর বিপক্ষে অবস্থান নেয়া কর্মকর্তাদের কুশপুত্তলিকাও দাহ করেন তারা।
এতে বক্তব্য দেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি – ১ এর মানসম্পদ বিভাগের এজিএম খ.ম কুদরতি এলাহী, এজিএম ইএন্ড সি সুফিয়া আমির, জুনিয়ার ইঞ্জিনিয়ার হাসানুজ্জামান, লাইন টেকনিশিয়ান মোশারফ হোসেন ও এম আর সিএম সাইফুল ইসলাম সহ অনেকেই।
বক্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ বিদ্যুতকে বাদ রেখে হবে না। আমরা তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সারাদেশে প্রায় ১২ কোটি গ্রাহককে নিরলস বিদ্যুৎ সেবা দিয়ে আসছি। শ্রমনীতি অনুযায়ী ৮ ঘন্টা কাজ করার কথা থাকলেও আমরা কাজ করছি ১২ থেকে ১৮ ঘন্টা, কখনো কখনো দিনরাত দিয়েও কাজ করতে হয়। অথচ আমাদের অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে। অতিরিক্ত শ্রমের কোনো মূল্য দেয়া হয় না। আবার প্রয়োজনীয় লোকবলও নিয়োগ দেয়া হয় না। যারা রয়েছেন তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে অনিয়মিত ক্যাটাগরিতে ফেলে রাখা হয়েছে। আবার একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করলেও পদপদবি, বেতন-ভাতা, বোনাসসহ পদোন্নতির ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছি আমরা।
পদোন্নতির ব্যাপারে বিদ্যুতায়ন বোর্ডের অনিয়ম প্রসঙ্গে তারা বলেন, ২০/২৫ বছর ধরে কেউ সার্ভিস দিচ্ছে অথচ কোনো পদোন্নতি নেই। যে দু’একজনকে দেয়া হচ্ছে তারা বিদ্যুতায়ন বোর্ডকে ম্যানেজ করেই পাচ্ছেন। নিয়মিত কোনো পদোন্নতি নেই। একজন কর্মকর্তা যোগদান করে কোনো পদোন্নতি ছাড়া অবসরে যাচ্ছেন, এটি কি কোনো চাকরি নীতি হতে পারে?
প্রান্তিক পর্যায়ে বৈদ্যুতিক সেবা দিতে প্রয়োজনীয় সকল সরঞ্জাম কেনার একমাত্র দায়িত্ব বিদ্যুতায়ন বোর্ডের। মানববন্ধনে এ সরঞ্জাম কেনায়ও অনিয়মের অভিযোগ তোলেন বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা কর্মচারীরা। এ প্রসঙ্গে তারা বলেন, অত্যন্ত কম দামের নিম্নমানের সরঞ্জাম সরবরাহ করেন আরইবি। যে বৈদ্যুতিক মিটার দেয়া হয় সেগুলো পনেরো দিন থেকে একমাস চলেই নষ্ট হয়ে যায়। ভুতুরে বিল আসে, রিডিং ঠিকমতো দেখা যায় না। এসব নিয়ে গ্রাহকেরা কর্মকর্তা কর্মচারীদের ওপর চড়াও হন। চরম দুর্ব্যবহারের শিকার হতে হয়। অথচ এগুলোতে আমাদের কিছুই করার থাকে না।
বক্তারা বলেন, এধরণের সকল সমস্যা নিয়ে অসংখ্যবার বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তারা কর্ণপাত করেন নাই। উল্টো সমিতির তদারকি প্রতিষ্ঠান পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বিআরইবি) দ্বৈত নীতির কারণে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রায় ৪০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী ন্যায্য সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে বলেও জানান তারা। এক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক চাকরীনীতি পরিহার করে বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে একীভূত করে অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন এবং চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিত করার দাবি জানান তারা। এসময় দ্রুতই এটি বাস্তবায়ন নাহলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন কর্মকর্তা কর্মচারীরা।