১০:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪
জনবল সংকটে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের এস্টেট শাখা

৬৮ শতাংশ পদই খালী, শতভাগ শুন্য পদ, জনবল সংকট ও লজিস্ট্রিক সাপোর্ট দুর্বলতায় পার পেয়ে যাচ্ছে ভূমিদস্যুরা

আধুনিক ও যুগোপযোগী যোগাযোগমাধ্যম হিসেবে বাংলাদেশ রেলওয়েকে গড়ে তুলতে ঢেলে সাজানোর কাজ শুরু হলেও সংস্থাটি চলছে জনবল সংকটে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে পূর্বাঞ্চলের এস্টেট শাখার কার্যক্রম।

শতভাগ পদ শুন্য রয়েছে একাধিক পদ। এই সংস্থার ২৪ হাজার ৪৪১ একর জমি দেখবালের জন্য সরকারের মঞ্জুরীকৃত ১৪৪ টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছে মাত্র ৪৬ জন। বাকি ৯৮ টি পদই খালী। শতকরা হিসেবে এর পরিমান ৬৮ দশমিক শুন্য ৫ শতাংশ। লোক না থাকায় নিয়মিত কাজ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে এই শাখার দায়িত্বশীল পদে কর্মরতদের। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এই সংস্থার কয়েক হাজার মুল্যবান সম্পত্তি জবর দখল করে রেখেছে ভূমিদস্যু চক্র। সংশ্লিষ্ট শাখার বিশ্বস্ত সুত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। তবে যথা সম্ভব দ্রুত সময়ের মধ্যেই নতুন জনবল নিয়োগ করার আশ্বাস দিয়েছেন রেলমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের এস্টেট শাখা সুত্রে জানা গেছে, এই শাখার সরকার মঞ্জুরীকৃত লিটিগেসন ইন্সপেক্ট ৫জন, সার্কেল অফিসার ৭ জন, উপ সহকারি প্রকৌশলী ২ জন, জুনিয়র ড্রাফটম্যান ৫ জন ও বেঞ্চ সহকারি ৩ জনের বিপরীতে সবগুলো পদই শুন্য রয়েছে। অর্থাৎ এই ৫টি পদে ২২ জন লোকের বিপরীতে একনও কর্মরত নেই। অন্য পদের লোকদের মাধ্যমে জোড়াতালি চালাতে হয় গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো আবার এসব কাজ করতে লোক সংকটে আটকে থাকে আরো অনেক জরুরী কাজ। এছাড়া ৯ জন কানুনগোর বিপরীতে আছে ৬ জন ৩টি শুন্য, ২৪ জন আমিনের মধ্যে আছে মাত্র ৭ জন এখানে ১৭টি পদ শুন্য, ৯ জন উচ্চমান সহকারির মধ্যে ৭টি খালি আছে মাত্র ২ জন, ৫ জন ট্রেসারের মধ্যে আছে ২ জন ৩টি খালি ও ১০ জন অফিস সহায়কের মধ্যে আছে মাত্র ৪ জন বাকি ৬টি পদই খালি।

রেল সুত্রে জানায়, পূবাঞ্চলের ভূসম্পত্তি শাখায় সরকার মঞ্জুরীকৃত ১ থেকে ৯ম গ্রেডের প্রথম শ্রেনির পদ রয়েছে ৯ টি এর মধ্যে কর্মরত আছে ৫ জন খালি আছে ৪টি, ১০ থেকে ১২ গ্রেডের ১৬টি পদের বিপরীতে সবগুলো পদই শুন্য রয়েছে,১৩ থেকে ১৬ গ্রেডের ৭৬ জনের বিপরীতে কর্মরত আছে ৩০ জন ৪৬টি পদ খালি এবং ১৭ থেকে ২০ গ্রেডের ৪৩ টি পদেও বিপরীতে কর্মরত আছে ১১ জন এবং খালি আছে ৩২ টি পদ। অর্থাৎ সর্বমোট ১৪৪ জনের বিপরীতে কর্মরত আছে মাত্র ৪৬ জন আর শুন্য পদ রয়েছে ৯৮ জন। রেলের ভূসম্পত্তি রক্ষার স্বার্থে এসব শুন্য পদে দ্রুত লোকবল নিয়োগ জরুরী বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

তবে রেলওয়ে পুর্বাঞ্চলের ভূসম্পত্তি শাখার হিসাব অনুযায়ী অবৈধ দখলীয় জমির পরিমাণ ৬১৯ দশমিক ৬৭ একর। আর গত একবছরে উদ্ধারের পরিমাণ ৪ দশমিক ৬৩৫ একর।

রেলওয়ে পুর্বাঞ্চলের এস্টেট শাখার তথ্য বলছে, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে মোট জমির পরিমাণ ২৪,৪৪০ দশমিক ৯৩ একর। এর মধ্যে অপারেশন কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে ১৫,০৩১ দশমিক ৩১ একর। অপারেশন কাজের বাইরে জমি আছে ৯,৪০৯ দশমিক ৬২ একর। এরমধ্যে লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে ৫,৬০৪ দশমিক ৭,৯৬৪ একর এবং নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করেছে ৩৬৫ দশমিক ৮৯ একর। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে অবৈধ দখলে আছে ৪৫৫ দশমিক ৫৯ একর ও এবং বেসরকারি ও ব্যক্তির দখলে রয়েছে ২৫২ দশমিক ৫৫২ একর অর্থাৎ মোট অবৈধ দখলে ৭০৮ দশমিক ১৪২ একর। অব্যবহৃত জমির পরিমাণ ৩৫৫১ দশমিক ৩০৮ একর।

জানা যায়, রেলওয়ের পুর্বাঞ্চলের এস্টেট শাখার হিসাব অনুযায়ী ৭০৮ একর জমি অবৈধ দখলে থাকলেও অব্যবহৃত ৩,৫৫১ একর জমির বেশিরভাগই অবৈধ দখলদারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এছাড়া অপারেশন কাজে ব্যবহৃত জমির একটি অংশেও চলে দখলবাজের রাজত্ব। এর মধ্যে রেললাইনের উভয় পাশে ১০ ফুটের মধ্যে অনেক স্থানে গড়ে ওঠেছে কাঁচা/পাকা দোকানপাট ও বসতি। কর্মকর্তাদের আবাসিক এলাকায়ও অবৈধভাবে গড়ে ওঠেছে হাজার হাজার বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও ভাড়া বাসা। আবার অনেক মাফিয়া দখল বাজরা রেলের জমি দখল করে গড়ে তুলেছে বহুতল ভবন। এরা আবার অবৈধ ভাবে ব্যবহার করছে রেলের বিদ্যুৎ ও চোরা লাইনের গ্যাস। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পরিবহন, জনবল সংকট ও লজিস্ট্রিক সাপোর্ট দুর্বলতার ফলে এসব ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।

এই বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে জনবল সংকটের কথা স্বীকার করে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা সুজন চৌধুরী বলেন, জনবল সংকট রেলের একটি বড় সমস্যা। এছাড়াও রয়েছে লজিস্ট্রিক সাপোর্ট দুর্বলতা। নেই প্রয়োজনীয় পরিবহন। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিশাল এলাকার ২৪ হাজার ৪৪১ একর জমি দেখবালের জন্য আছে মাত্র ২ জন এর মধ্যে ডিইও পদটিও খালি ছিল দীর্ঘদিন। সম্প্রতি এই পদে একজন অফিসার দেয়া হয়েছে তবে গাড়ি সংকটে এখনো অভিযান চালানো যাচ্ছে না। নানা সংকের মঝেই কাঙ্খিত সেবা দেয়ার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছি আমরা। এই বছরেই মাত্র নতুন মন্ত্রী দায়িত্ব নিয়েছেন, সংকটের বিষয়গুলো তিনি অবগত আছেন। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে পর্যায়ক্রমে সমস্যাগুলোর সমাধান হবে। সম্প্রতি আমিন ও কানুনগো পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে, বাকি পদেও পর্যায়ক্রমে নিয়োগ দেয়া হবে বলে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।

তবে জনবল নিয়োগের কার্যক্রম চলমান রয়েছে জানিয়ে রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদাত শাহাদাত আলী বিজনেস বাংলাদেশকে বলেন, ‘ইতিমধ্যে কয়েকটি পদে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। পর্যায়ক্রমে শূন্যপদগুলো পূরণ করা হবে। রেলওয়ের মোট ৬১ হাজার ৮২১ একর ভূসম্পত্তির মধ্যে অবৈধ দখলে ২৪০১ একর রেলভূমি। এই ভূমি উদ্ধারে নিয়মিত উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘রেলওয়ের আয় বাড়াতে অব্যবহৃত ভূমি লিজ দেওয়া হচ্ছে। রেলওয়ের চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।’

এব্যপারে রেলমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম বলেন, আমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েছি মাত্র কয়েক মাস হলো। এরইমধ্যে সমাস্যাগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। জনবল সংকটের বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। সারাদেশে ৫ হাজার লোক নিয়োগ দেয়ার পরিকল্পনা আছে আমাদের। এসব নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান আছে। এগুলো হয়ে গেলে আশা করছি জনবল সংকট অনেকটা কমে আসবে, কাজের গতি বাড়বে এবং রেলের সেবা ও মান বৃদ্ধি পাবে অনেকাংশে।

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ

ট্যাগ :

জনবল সংকটে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের এস্টেট শাখা

৬৮ শতাংশ পদই খালী, শতভাগ শুন্য পদ, জনবল সংকট ও লজিস্ট্রিক সাপোর্ট দুর্বলতায় পার পেয়ে যাচ্ছে ভূমিদস্যুরা

প্রকাশিত : ০৭:২৬:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ মার্চ ২০২৪

আধুনিক ও যুগোপযোগী যোগাযোগমাধ্যম হিসেবে বাংলাদেশ রেলওয়েকে গড়ে তুলতে ঢেলে সাজানোর কাজ শুরু হলেও সংস্থাটি চলছে জনবল সংকটে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে পূর্বাঞ্চলের এস্টেট শাখার কার্যক্রম।

শতভাগ পদ শুন্য রয়েছে একাধিক পদ। এই সংস্থার ২৪ হাজার ৪৪১ একর জমি দেখবালের জন্য সরকারের মঞ্জুরীকৃত ১৪৪ টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছে মাত্র ৪৬ জন। বাকি ৯৮ টি পদই খালী। শতকরা হিসেবে এর পরিমান ৬৮ দশমিক শুন্য ৫ শতাংশ। লোক না থাকায় নিয়মিত কাজ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে এই শাখার দায়িত্বশীল পদে কর্মরতদের। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এই সংস্থার কয়েক হাজার মুল্যবান সম্পত্তি জবর দখল করে রেখেছে ভূমিদস্যু চক্র। সংশ্লিষ্ট শাখার বিশ্বস্ত সুত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। তবে যথা সম্ভব দ্রুত সময়ের মধ্যেই নতুন জনবল নিয়োগ করার আশ্বাস দিয়েছেন রেলমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের এস্টেট শাখা সুত্রে জানা গেছে, এই শাখার সরকার মঞ্জুরীকৃত লিটিগেসন ইন্সপেক্ট ৫জন, সার্কেল অফিসার ৭ জন, উপ সহকারি প্রকৌশলী ২ জন, জুনিয়র ড্রাফটম্যান ৫ জন ও বেঞ্চ সহকারি ৩ জনের বিপরীতে সবগুলো পদই শুন্য রয়েছে। অর্থাৎ এই ৫টি পদে ২২ জন লোকের বিপরীতে একনও কর্মরত নেই। অন্য পদের লোকদের মাধ্যমে জোড়াতালি চালাতে হয় গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো আবার এসব কাজ করতে লোক সংকটে আটকে থাকে আরো অনেক জরুরী কাজ। এছাড়া ৯ জন কানুনগোর বিপরীতে আছে ৬ জন ৩টি শুন্য, ২৪ জন আমিনের মধ্যে আছে মাত্র ৭ জন এখানে ১৭টি পদ শুন্য, ৯ জন উচ্চমান সহকারির মধ্যে ৭টি খালি আছে মাত্র ২ জন, ৫ জন ট্রেসারের মধ্যে আছে ২ জন ৩টি খালি ও ১০ জন অফিস সহায়কের মধ্যে আছে মাত্র ৪ জন বাকি ৬টি পদই খালি।

রেল সুত্রে জানায়, পূবাঞ্চলের ভূসম্পত্তি শাখায় সরকার মঞ্জুরীকৃত ১ থেকে ৯ম গ্রেডের প্রথম শ্রেনির পদ রয়েছে ৯ টি এর মধ্যে কর্মরত আছে ৫ জন খালি আছে ৪টি, ১০ থেকে ১২ গ্রেডের ১৬টি পদের বিপরীতে সবগুলো পদই শুন্য রয়েছে,১৩ থেকে ১৬ গ্রেডের ৭৬ জনের বিপরীতে কর্মরত আছে ৩০ জন ৪৬টি পদ খালি এবং ১৭ থেকে ২০ গ্রেডের ৪৩ টি পদেও বিপরীতে কর্মরত আছে ১১ জন এবং খালি আছে ৩২ টি পদ। অর্থাৎ সর্বমোট ১৪৪ জনের বিপরীতে কর্মরত আছে মাত্র ৪৬ জন আর শুন্য পদ রয়েছে ৯৮ জন। রেলের ভূসম্পত্তি রক্ষার স্বার্থে এসব শুন্য পদে দ্রুত লোকবল নিয়োগ জরুরী বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

তবে রেলওয়ে পুর্বাঞ্চলের ভূসম্পত্তি শাখার হিসাব অনুযায়ী অবৈধ দখলীয় জমির পরিমাণ ৬১৯ দশমিক ৬৭ একর। আর গত একবছরে উদ্ধারের পরিমাণ ৪ দশমিক ৬৩৫ একর।

রেলওয়ে পুর্বাঞ্চলের এস্টেট শাখার তথ্য বলছে, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে মোট জমির পরিমাণ ২৪,৪৪০ দশমিক ৯৩ একর। এর মধ্যে অপারেশন কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে ১৫,০৩১ দশমিক ৩১ একর। অপারেশন কাজের বাইরে জমি আছে ৯,৪০৯ দশমিক ৬২ একর। এরমধ্যে লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে ৫,৬০৪ দশমিক ৭,৯৬৪ একর এবং নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করেছে ৩৬৫ দশমিক ৮৯ একর। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে অবৈধ দখলে আছে ৪৫৫ দশমিক ৫৯ একর ও এবং বেসরকারি ও ব্যক্তির দখলে রয়েছে ২৫২ দশমিক ৫৫২ একর অর্থাৎ মোট অবৈধ দখলে ৭০৮ দশমিক ১৪২ একর। অব্যবহৃত জমির পরিমাণ ৩৫৫১ দশমিক ৩০৮ একর।

জানা যায়, রেলওয়ের পুর্বাঞ্চলের এস্টেট শাখার হিসাব অনুযায়ী ৭০৮ একর জমি অবৈধ দখলে থাকলেও অব্যবহৃত ৩,৫৫১ একর জমির বেশিরভাগই অবৈধ দখলদারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এছাড়া অপারেশন কাজে ব্যবহৃত জমির একটি অংশেও চলে দখলবাজের রাজত্ব। এর মধ্যে রেললাইনের উভয় পাশে ১০ ফুটের মধ্যে অনেক স্থানে গড়ে ওঠেছে কাঁচা/পাকা দোকানপাট ও বসতি। কর্মকর্তাদের আবাসিক এলাকায়ও অবৈধভাবে গড়ে ওঠেছে হাজার হাজার বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও ভাড়া বাসা। আবার অনেক মাফিয়া দখল বাজরা রেলের জমি দখল করে গড়ে তুলেছে বহুতল ভবন। এরা আবার অবৈধ ভাবে ব্যবহার করছে রেলের বিদ্যুৎ ও চোরা লাইনের গ্যাস। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পরিবহন, জনবল সংকট ও লজিস্ট্রিক সাপোর্ট দুর্বলতার ফলে এসব ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।

এই বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে জনবল সংকটের কথা স্বীকার করে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা সুজন চৌধুরী বলেন, জনবল সংকট রেলের একটি বড় সমস্যা। এছাড়াও রয়েছে লজিস্ট্রিক সাপোর্ট দুর্বলতা। নেই প্রয়োজনীয় পরিবহন। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিশাল এলাকার ২৪ হাজার ৪৪১ একর জমি দেখবালের জন্য আছে মাত্র ২ জন এর মধ্যে ডিইও পদটিও খালি ছিল দীর্ঘদিন। সম্প্রতি এই পদে একজন অফিসার দেয়া হয়েছে তবে গাড়ি সংকটে এখনো অভিযান চালানো যাচ্ছে না। নানা সংকের মঝেই কাঙ্খিত সেবা দেয়ার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছি আমরা। এই বছরেই মাত্র নতুন মন্ত্রী দায়িত্ব নিয়েছেন, সংকটের বিষয়গুলো তিনি অবগত আছেন। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে পর্যায়ক্রমে সমস্যাগুলোর সমাধান হবে। সম্প্রতি আমিন ও কানুনগো পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে, বাকি পদেও পর্যায়ক্রমে নিয়োগ দেয়া হবে বলে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।

তবে জনবল নিয়োগের কার্যক্রম চলমান রয়েছে জানিয়ে রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদাত শাহাদাত আলী বিজনেস বাংলাদেশকে বলেন, ‘ইতিমধ্যে কয়েকটি পদে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। পর্যায়ক্রমে শূন্যপদগুলো পূরণ করা হবে। রেলওয়ের মোট ৬১ হাজার ৮২১ একর ভূসম্পত্তির মধ্যে অবৈধ দখলে ২৪০১ একর রেলভূমি। এই ভূমি উদ্ধারে নিয়মিত উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘রেলওয়ের আয় বাড়াতে অব্যবহৃত ভূমি লিজ দেওয়া হচ্ছে। রেলওয়ের চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।’

এব্যপারে রেলমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম বলেন, আমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েছি মাত্র কয়েক মাস হলো। এরইমধ্যে সমাস্যাগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। জনবল সংকটের বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। সারাদেশে ৫ হাজার লোক নিয়োগ দেয়ার পরিকল্পনা আছে আমাদের। এসব নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান আছে। এগুলো হয়ে গেলে আশা করছি জনবল সংকট অনেকটা কমে আসবে, কাজের গতি বাড়বে এবং রেলের সেবা ও মান বৃদ্ধি পাবে অনেকাংশে।

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ