০৮:২৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

শেষদিনে টেস্ট বাঁচানোর লড়াই

পচেফস্ট্রুম টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের সামনে কঠিন সমীকরণ। জয়ের চিন্তা করা এককথায় দুঃসাধ্য। রোববার টেস্টের শেষ সেশনের প্রায় পুরোটাই বৃষ্টির কারণে ভেস্তে যায়। এতে করে ম্যাচ বাঁচানোর সম্ভাবনা দেখা দেখা টাইগার শিবিরে। সোমবার টেস্টের শেষ দিন ৭ উইকেট হাতে রেখে ব্যাটিংয়ে নামবে বাংলাদেশ। ম্যাচ বাঁচানো বাংলাদেশের জন্য যতটা কঠিন দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য জয় ঠিক ততটাই সহজ। জিততে হলে মাত্র সাতটি উইকেট দরকার প্রোটিয়াদের।

তবে শেষ দিনও প্রকৃতি বাংলাদেশের জন্য স্বস্তি বয়ে আনতে পারে। স্থানীয় আবহাওয়া অফিস জানায়, সোমবার মধ্যাহ্ন বিরতির পর বৃষ্টি হানা দিতে পারে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের তোপের মুখে বাংলাদেশ কতটুকু প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে সেটিই দেখার বিষয়।

পচেফস্ট্রুমের সেনওয়েস পার্কে প্রথম ইনিংসে ৩ উইকেটে ৪৯৬ রান তোলে ইনিংস ঘোষণা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে শনিবার টেস্টের তৃতীয় দিনের শেষ সেশনের শুরুতে ৩২০ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। ১৭৬ রানে লিড পাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকা রোববার ৬ উইকেটে ২৪৭ রান তোলে ইনিংস ঘোষণা করলে বাংলাদেশের সামনে ৪২৩ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য দাঁড়ায়। সেইলক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে তৃতীয় দিন শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে ৪৯ রান তুলেছে বাংলাদেশ।

দিনশেষে মুশফিকুর রহীম ১৬ রানে অপরাজিত রয়েছেন। তার সঙ্গে সোমবার হয়তো যোগ দেবেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ইমরুল কায়েস ৩২ রান করে আউট হলেও রানের খাতাই খুলতে পারেননি তামিম ও মুমিনুল। দুজনই ইনিংসের প্রথম ওভারে বিদায় নেন।

৪২৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ের নেমে মরনে মরকেলের করা প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন তামিম। পরের বলে লেগ বিফোরের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার জোরালো আবেদন নাকচ করে দেন আম্পায়ার। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি প্রোটিয়াদের।

তবে ওভারের শেষ বলে ভুল করেন মুমিনুল। মরকেলের বল তার প্যাডে আঘাত হানলে লেগ বিফোরের আবেদন করে প্রোটিয়ারা; আম্পায়ার তাতে সাড়াও দেন। ইমরুলের সঙ্গে পরামর্শ করে রিভিউ না দিয়ে সাজঘরের দিকে হাঁটা দেন মুমিনুল। তবে টিভি রিপ্লে পরিষ্কার দেখায়, বল স্টাম্পের লাইন মিস করে যাচ্ছিল।

শুরুতেই তামিম-মুমিনুলকে হারিয়ে চাপের মুখে পড়া বাংলাদেশকে পথ দেখান মুশফিক-ইমরুল। তবে কেশব মহারাজার করা ১৬তম ওভারের তৃতীয় বলে ইমরুল উইকেটের পেছনে কুইন্টন ডি কককে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরলে ফের ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। ইমরুল ফিরতেই বৃষ্টি হানা দিলে খেলা বন্ধ হয়ে যায়; এরপর আর মাঠে গড়ায়নি দিনের খেলা।

রোববার ২ উইকেটে ৫৪ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামা দক্ষিণ আফ্রিকা ৬ উইকেটে ২৪৭ রান তোলে ইনিংস ঘোষণা করে। দ্বিতীয় ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সর্বোচ্চ ৮১ রান করেন ডু প্লেসিস। এছাড়া টেম্বা বাভুমা ৭১ আমলা, হাশিম আমলা ২৮, এইডেন মার্করাম ১৫, কেশব মহারাজ ১৯ এবং ডিন এলগার করেন ১৮ রান।

বাংলাদেশের সফলতম বোলার মুমিনুল হক। ক্যারিয়ার-সেরা বোলিং করা মুমিনুল ২৭ রানে তিন উইকেট নেন। এছাড়া মোস্তাফিজুর রহমান দুটি ও শফিউল ইসলাম নেন একটি উইকেট।

এর আগে শনিবার ৩ উইকেটে ১২৭ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ ৩২০ রানে গুটিয়ে যায়। বাংলাদেশের হয়ে মুমিনুল সর্বোচ্চ ৭৭ রান করেন। এছাড়া মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৬৬, মুশফিক ৪৪, তামিম ৩৯, সাব্বির রহমান ৩০, লিটন ২৫ এবং শেষ দিকে মোস্তাফিজুর রহমান করেন ১০ রান।

দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে কেশব মহারাজ তিনটি এবং দুটি করে উইকেট নেন মরনে মরকেল ও ক্যাগিসো রাবাদা। একটি করে উইকেট নেন ডোয়াইন অলিভিয়ে ও আন্দিলে ফেলুকওয়ে।

শুক্রবার টেস্টের দ্বিতীয় দিন ১ উইকেটে ২৯৮ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামা দক্ষিণ আফ্রিকা চা বিরতির আগ পর্যন্ত ৩ উইকেটে ৪৯৬ রান তোলা পরে আর ব্যাটিংয়ে না নেমে ইনিংস ঘোষণা করে। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে দারুণ ব্যাটিংয়ের দিনে ডাবল সেঞ্চুরি মিসের হতাশায় পুড়েন ডিন এলগার। ১৯৯ রান করে মোস্তাফিজুর রহমানের বলে আউট হন তিনি।

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ব্যাটসম্যান এবং সবমিলিয়ে ১২তম খেলোয়াড় হিসেবে টেস্টে ১৯৯ রানের ইনিংস খেলেন এলগার। এদের মধ্যে দুজন সঙ্গীর অভাবে ১৯৯ রান করে অপরাজিত থাকেন। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে এছাড়া আমলা ১৩৭, এইডেন মার্করাম ৯৭ রানের ইনিংস খেলেন। টেম্বা বাভুমা ৩১ এবং ফাফ ডু প্লেসিস ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন।

ট্যাগ :

শেষদিনে টেস্ট বাঁচানোর লড়াই

প্রকাশিত : ১১:৪৬:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২ অক্টোবর ২০১৭

পচেফস্ট্রুম টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের সামনে কঠিন সমীকরণ। জয়ের চিন্তা করা এককথায় দুঃসাধ্য। রোববার টেস্টের শেষ সেশনের প্রায় পুরোটাই বৃষ্টির কারণে ভেস্তে যায়। এতে করে ম্যাচ বাঁচানোর সম্ভাবনা দেখা দেখা টাইগার শিবিরে। সোমবার টেস্টের শেষ দিন ৭ উইকেট হাতে রেখে ব্যাটিংয়ে নামবে বাংলাদেশ। ম্যাচ বাঁচানো বাংলাদেশের জন্য যতটা কঠিন দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য জয় ঠিক ততটাই সহজ। জিততে হলে মাত্র সাতটি উইকেট দরকার প্রোটিয়াদের।

তবে শেষ দিনও প্রকৃতি বাংলাদেশের জন্য স্বস্তি বয়ে আনতে পারে। স্থানীয় আবহাওয়া অফিস জানায়, সোমবার মধ্যাহ্ন বিরতির পর বৃষ্টি হানা দিতে পারে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের তোপের মুখে বাংলাদেশ কতটুকু প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে সেটিই দেখার বিষয়।

পচেফস্ট্রুমের সেনওয়েস পার্কে প্রথম ইনিংসে ৩ উইকেটে ৪৯৬ রান তোলে ইনিংস ঘোষণা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে শনিবার টেস্টের তৃতীয় দিনের শেষ সেশনের শুরুতে ৩২০ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। ১৭৬ রানে লিড পাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকা রোববার ৬ উইকেটে ২৪৭ রান তোলে ইনিংস ঘোষণা করলে বাংলাদেশের সামনে ৪২৩ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য দাঁড়ায়। সেইলক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে তৃতীয় দিন শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে ৪৯ রান তুলেছে বাংলাদেশ।

দিনশেষে মুশফিকুর রহীম ১৬ রানে অপরাজিত রয়েছেন। তার সঙ্গে সোমবার হয়তো যোগ দেবেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ইমরুল কায়েস ৩২ রান করে আউট হলেও রানের খাতাই খুলতে পারেননি তামিম ও মুমিনুল। দুজনই ইনিংসের প্রথম ওভারে বিদায় নেন।

৪২৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ের নেমে মরনে মরকেলের করা প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন তামিম। পরের বলে লেগ বিফোরের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার জোরালো আবেদন নাকচ করে দেন আম্পায়ার। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি প্রোটিয়াদের।

তবে ওভারের শেষ বলে ভুল করেন মুমিনুল। মরকেলের বল তার প্যাডে আঘাত হানলে লেগ বিফোরের আবেদন করে প্রোটিয়ারা; আম্পায়ার তাতে সাড়াও দেন। ইমরুলের সঙ্গে পরামর্শ করে রিভিউ না দিয়ে সাজঘরের দিকে হাঁটা দেন মুমিনুল। তবে টিভি রিপ্লে পরিষ্কার দেখায়, বল স্টাম্পের লাইন মিস করে যাচ্ছিল।

শুরুতেই তামিম-মুমিনুলকে হারিয়ে চাপের মুখে পড়া বাংলাদেশকে পথ দেখান মুশফিক-ইমরুল। তবে কেশব মহারাজার করা ১৬তম ওভারের তৃতীয় বলে ইমরুল উইকেটের পেছনে কুইন্টন ডি কককে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরলে ফের ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। ইমরুল ফিরতেই বৃষ্টি হানা দিলে খেলা বন্ধ হয়ে যায়; এরপর আর মাঠে গড়ায়নি দিনের খেলা।

রোববার ২ উইকেটে ৫৪ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামা দক্ষিণ আফ্রিকা ৬ উইকেটে ২৪৭ রান তোলে ইনিংস ঘোষণা করে। দ্বিতীয় ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সর্বোচ্চ ৮১ রান করেন ডু প্লেসিস। এছাড়া টেম্বা বাভুমা ৭১ আমলা, হাশিম আমলা ২৮, এইডেন মার্করাম ১৫, কেশব মহারাজ ১৯ এবং ডিন এলগার করেন ১৮ রান।

বাংলাদেশের সফলতম বোলার মুমিনুল হক। ক্যারিয়ার-সেরা বোলিং করা মুমিনুল ২৭ রানে তিন উইকেট নেন। এছাড়া মোস্তাফিজুর রহমান দুটি ও শফিউল ইসলাম নেন একটি উইকেট।

এর আগে শনিবার ৩ উইকেটে ১২৭ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ ৩২০ রানে গুটিয়ে যায়। বাংলাদেশের হয়ে মুমিনুল সর্বোচ্চ ৭৭ রান করেন। এছাড়া মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৬৬, মুশফিক ৪৪, তামিম ৩৯, সাব্বির রহমান ৩০, লিটন ২৫ এবং শেষ দিকে মোস্তাফিজুর রহমান করেন ১০ রান।

দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে কেশব মহারাজ তিনটি এবং দুটি করে উইকেট নেন মরনে মরকেল ও ক্যাগিসো রাবাদা। একটি করে উইকেট নেন ডোয়াইন অলিভিয়ে ও আন্দিলে ফেলুকওয়ে।

শুক্রবার টেস্টের দ্বিতীয় দিন ১ উইকেটে ২৯৮ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামা দক্ষিণ আফ্রিকা চা বিরতির আগ পর্যন্ত ৩ উইকেটে ৪৯৬ রান তোলা পরে আর ব্যাটিংয়ে না নেমে ইনিংস ঘোষণা করে। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে দারুণ ব্যাটিংয়ের দিনে ডাবল সেঞ্চুরি মিসের হতাশায় পুড়েন ডিন এলগার। ১৯৯ রান করে মোস্তাফিজুর রহমানের বলে আউট হন তিনি।

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ব্যাটসম্যান এবং সবমিলিয়ে ১২তম খেলোয়াড় হিসেবে টেস্টে ১৯৯ রানের ইনিংস খেলেন এলগার। এদের মধ্যে দুজন সঙ্গীর অভাবে ১৯৯ রান করে অপরাজিত থাকেন। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে এছাড়া আমলা ১৩৭, এইডেন মার্করাম ৯৭ রানের ইনিংস খেলেন। টেম্বা বাভুমা ৩১ এবং ফাফ ডু প্লেসিস ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন।