০৬:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

অপবাদের জবাব দিয়েছে বাংলাদেশ

অপবাদের জবাব দিয়েছে বাংলাদেশ

নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আনিত তথাকথিত ‘দূর্নীতি’র মিথ্যা অভিযোগের সমুচিত জবাব দিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনে তিন সপ্তাহের সফর শেষে দেশে ফেরার পর বিমান বন্দরে সংক্ষিপ্ত ভাষণে তিনি বলেন, ‘আমরা নিজস্ব অর্থে পদ্মাসেতু নির্মাণ করছি। যারা আমাদের এই পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে মিথ্যা অপবাদ এবং বাংলাদেশের সামর্থ্যকে হেয় করার চেষ্টা করেছিল আমরা তাদের সমুচিত জবাব দিয়েছি।’ নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সদ্য সমাপ্ত ৭২তম অধিবেশনে তাঁর সফল অংশগ্রহণের জন্য এক সংবর্ধনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে আবারো বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জল হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তিন সপ্তাহের সফর শেষে দেশে ফেরার পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের ভিভিআইপি লাউঞ্জে এই সংবর্ধনার আয়োজন করে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মত বৃহৎ প্রকল্প গ্রহণ সরকারের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একে কেন্দ্র করে তাঁর সরকার এবং পরিবারকে নিয়ে কুৎসা রটনা করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছিল। শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বার্থান্বেষী মহল একে কেন্দ্র করে আমাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ দেয়ার চেষ্টা করে এবং অতি উৎসাহী মহল জনগণকেও বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে।’ তিনি বলেন, অনেকেই মনে করে যখন একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা এমন অভিযোগ করছে, কাজেই এটি সত্যি হতে পারে। কিন্তুু আমার আত্মবিশ্বাস ছিল যে, এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্যই আমার এই দেশে আসা, নিজের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য নয়। তিনি এবং তাঁর পরিবার পদ্মা সেতু নিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থার মিথ্যা দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপনের সময় কেমন মানসিক যন্ত্রণায় সময় অতিবাহিত করেছেন সে প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সবাই আমাদের এমনভাবে দেখতে আরম্ভ করে যেন আমরা না যেন কি অন্যায় করে ফেলেছি।’ শেখ হাসিনা বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাটি সে সময় অপপ্রচার শুরু করে এবং দুর্নীতির অভিযোগে পদ্মাসেত ুপ্রকল্পে অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়, দুর্নীতির তদন্তে একটি কমিটিও গঠন করে তারা। প্রেধানমন্ত্রী বলেন, আমি তখন বলেছি প্রকল্পে কোন দুর্নীতি হয়নি। আর যদি হয়ে থাকে তাহলে তা প্রমাণ করতে হবে। কিন্তু তারা এই অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হয়। অথচ, যিনি বাংলাদেশের দুর্নীতির বিষয়ে সে সময় সবচেয়ে সরব ছিলেন তার নিজেরই ৪০ হাজার পৃষ্টার দুর্নীতির খতিয়ান প্রকাশ পেয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, অনেকেই তখন বিশ্বাস করতে পারেনি সরকার নিজস্ব অর্থে এই সেতু নির্মাণে সক্ষম হবে,মন্ত্রী সভার অনেকের মধ্যেও তখন সে বিশ্বাস ছিল না। কিন্তুু আমার প্রতিজ্ঞা ছিল, নিজস্ব অর্থেই পদ্মাসেতু নির্মাণ হবে। অনেকেই তখন আশংকা প্রকাশ করেছিল, যেহেতু পদ্মাসেতু এলাকার সাথে তার নির্বাচনী এলাকা সম্পর্কিত সেহেতু তার নির্বাচনী আসনের কি হবে, তখন আমি বলেছিলাম, আমরা ক্ষমতায় যাওয়ার লোভে বা নির্বাচনে বিজয়ের জন্য এটা করছি না,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন সত্যের জয় অনিবার্য। আর এটা শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র। পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যান বসানোর দিন তিনি এবং তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অবস্থানকালিন বিনিদ্র রাত কাটিয়েছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘রাত ৩ টায় ব্রিজের প্রথম স্প্যান বসানোর কাজ সফলভাবে সম্পন্ন হবার সংবাদ পেয়ে আমরা আনন্দে কেঁদে ফেলি।’ প্রধানমন্ত্রী এ সময় দেশের দক্ষিণ জনপদকে যুক্তকারি এই সেতু নির্মানে তাঁকে অকুন্ঠ সমর্থনের জন্য দেশে-বেদেশে অবস্থানকারি সকল বাংলাদেশীদের অভিনন্দন জানান। নিজস্ব অর্থায়নে এই সেতু নির্মাণে সমর্থ হওয়ায় তাঁর সরকার দেশ ও জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনে সক্ষম হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের চেয়ে বড়ো আর কিছু একজন রাজনীতিকের জীবনে হতে পারে না। আর এটাই সব থেকে বড়ো উপহার, যা আমি অর্জন করেছি।

ট্যাগ :

অপবাদের জবাব দিয়েছে বাংলাদেশ

প্রকাশিত : ১০:০২:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ অক্টোবর ২০১৭

অপবাদের জবাব দিয়েছে বাংলাদেশ

নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আনিত তথাকথিত ‘দূর্নীতি’র মিথ্যা অভিযোগের সমুচিত জবাব দিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনে তিন সপ্তাহের সফর শেষে দেশে ফেরার পর বিমান বন্দরে সংক্ষিপ্ত ভাষণে তিনি বলেন, ‘আমরা নিজস্ব অর্থে পদ্মাসেতু নির্মাণ করছি। যারা আমাদের এই পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে মিথ্যা অপবাদ এবং বাংলাদেশের সামর্থ্যকে হেয় করার চেষ্টা করেছিল আমরা তাদের সমুচিত জবাব দিয়েছি।’ নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সদ্য সমাপ্ত ৭২তম অধিবেশনে তাঁর সফল অংশগ্রহণের জন্য এক সংবর্ধনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে আবারো বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জল হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তিন সপ্তাহের সফর শেষে দেশে ফেরার পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের ভিভিআইপি লাউঞ্জে এই সংবর্ধনার আয়োজন করে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মত বৃহৎ প্রকল্প গ্রহণ সরকারের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একে কেন্দ্র করে তাঁর সরকার এবং পরিবারকে নিয়ে কুৎসা রটনা করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছিল। শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বার্থান্বেষী মহল একে কেন্দ্র করে আমাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ দেয়ার চেষ্টা করে এবং অতি উৎসাহী মহল জনগণকেও বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে।’ তিনি বলেন, অনেকেই মনে করে যখন একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা এমন অভিযোগ করছে, কাজেই এটি সত্যি হতে পারে। কিন্তুু আমার আত্মবিশ্বাস ছিল যে, এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্যই আমার এই দেশে আসা, নিজের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য নয়। তিনি এবং তাঁর পরিবার পদ্মা সেতু নিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থার মিথ্যা দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপনের সময় কেমন মানসিক যন্ত্রণায় সময় অতিবাহিত করেছেন সে প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সবাই আমাদের এমনভাবে দেখতে আরম্ভ করে যেন আমরা না যেন কি অন্যায় করে ফেলেছি।’ শেখ হাসিনা বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাটি সে সময় অপপ্রচার শুরু করে এবং দুর্নীতির অভিযোগে পদ্মাসেত ুপ্রকল্পে অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়, দুর্নীতির তদন্তে একটি কমিটিও গঠন করে তারা। প্রেধানমন্ত্রী বলেন, আমি তখন বলেছি প্রকল্পে কোন দুর্নীতি হয়নি। আর যদি হয়ে থাকে তাহলে তা প্রমাণ করতে হবে। কিন্তু তারা এই অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হয়। অথচ, যিনি বাংলাদেশের দুর্নীতির বিষয়ে সে সময় সবচেয়ে সরব ছিলেন তার নিজেরই ৪০ হাজার পৃষ্টার দুর্নীতির খতিয়ান প্রকাশ পেয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, অনেকেই তখন বিশ্বাস করতে পারেনি সরকার নিজস্ব অর্থে এই সেতু নির্মাণে সক্ষম হবে,মন্ত্রী সভার অনেকের মধ্যেও তখন সে বিশ্বাস ছিল না। কিন্তুু আমার প্রতিজ্ঞা ছিল, নিজস্ব অর্থেই পদ্মাসেতু নির্মাণ হবে। অনেকেই তখন আশংকা প্রকাশ করেছিল, যেহেতু পদ্মাসেতু এলাকার সাথে তার নির্বাচনী এলাকা সম্পর্কিত সেহেতু তার নির্বাচনী আসনের কি হবে, তখন আমি বলেছিলাম, আমরা ক্ষমতায় যাওয়ার লোভে বা নির্বাচনে বিজয়ের জন্য এটা করছি না,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন সত্যের জয় অনিবার্য। আর এটা শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র। পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যান বসানোর দিন তিনি এবং তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অবস্থানকালিন বিনিদ্র রাত কাটিয়েছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘রাত ৩ টায় ব্রিজের প্রথম স্প্যান বসানোর কাজ সফলভাবে সম্পন্ন হবার সংবাদ পেয়ে আমরা আনন্দে কেঁদে ফেলি।’ প্রধানমন্ত্রী এ সময় দেশের দক্ষিণ জনপদকে যুক্তকারি এই সেতু নির্মানে তাঁকে অকুন্ঠ সমর্থনের জন্য দেশে-বেদেশে অবস্থানকারি সকল বাংলাদেশীদের অভিনন্দন জানান। নিজস্ব অর্থায়নে এই সেতু নির্মাণে সমর্থ হওয়ায় তাঁর সরকার দেশ ও জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনে সক্ষম হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের চেয়ে বড়ো আর কিছু একজন রাজনীতিকের জীবনে হতে পারে না। আর এটাই সব থেকে বড়ো উপহার, যা আমি অর্জন করেছি।