০১:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

চিকন চালের দাম বৃদ্ধি

কৌশলে আবারও চালের দাম বাড়িয়েছে ব্যবসায়ীরা। পাগলা ঘোড়ার মতো অস্থির চালের বাজারকে লাগাম পরাতে দীর্ঘ দিন ধরেই চেষ্টা করে যাচ্ছে সরকার। ইতোমধ্যে কিছুটা সফলও হয়েছে বটে। তবে ব্যবসায়ীরাও কম যান না। ঠিকই খুঁজে নিয়েছেন ভিন্ন ‘চালবাজি’। মোটা চালের দামে সকলের নজর থাকায় মোটা চালের দাম কিছুটা কমিয়ে সরু চালগুলোর দাম প্রায় একই রকম রেখেছেন। এতে চাল বাজারের সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বলে বলা যাচ্ছে না। তবে রাজধানীর বিভিন্ন পাইকারি চাল ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সব কারসাজি চালকল মালিক আর মজুদদারের হাতে।

১১ অক্টোবর বুধবার রাজধানীর কয়েকটি বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, চালের দাম কমাতে সরকারের টানা প্রচেষ্টার পর দাম কমেছে ঠিকই, কিন্তু তা শুধু মোটা চালের ক্ষেত্রে। অন্যান্য চালের দাম প্রায় আগের মতোই আছে।
পাইকারি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, চালকল মালিক ও মজুদদার-আড়ৎদারেরা কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। তারা জানান, সরকার চালের দাম কমাতে চাপ দিলে প্রথমে সরু (চিকন) চালের দাম কমায় তারা (চালকল মালিক ও মজুদদার), কিন্তু মোটা চালের সরবরাহ নেই দেখিয়ে দাম অপরিবর্তিত রাখে। এতে সরকার-মিডিয়াসহ সংশ্লিষ্ট সকলের নজর দিয়ে পড়ে মোটা চালের দামের ওপর।
পরে মোটা চালের দাম কমাতে চাল ব্যবসায়ী ও সরকার দফায় দফায় বৈঠকের পর দাম কমিয়ে মোটা চাল বাজারে ছাড়তে শুরু করে। ফলে খুচরা বাজারেও মোটা চালের দাম কেজি প্রতি ৪ থেকে ৫ টাকা কমে আসে। এতে সবার মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসতে শুরু করে। কিন্তু এর পরই চাল ব্যবসায়ীরা চাতুরির আশ্রয় নেয়। পাইকারি ব্যবসায়ীরা চিকন চালের অর্ডার দিলে ‘মৌসুম নয় ও ধানের সকংট রয়েছে’ দাবি করে চিকন চালের দাম কেজিপ্রতি একদুই টাকা করে বাড়িয়ে দিতে থাকে। দুই সপ্তাহ শেষে চালের দাম গিয়ে পৌঁছে প্রায় আগের জায়গাতেই। শুধু নাজিরশাইল চাল ব্যাতীত অন্য সব ধরনের সরু চালের ক্ষেত্রে এ ঘটেছে বলেও দাবি করেন পাইকারেরা।
রাজধানীর বৃহত্তম চালের বাজার মোহম্মদপুর কৃষি মার্কেট, মিরপুর এক নম্বরের পাইকারি চাল বাজার, কারওয়ান বাজারসহ অন্যান্য বাজারগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, পাইজাম, এলসি, গুটি ও নূরজাহান (ভারতীয়) চাল বাজারে মোটা চাল হিসেবে পরিচিত। এসব চালের দাম দুই সপ্তাহ আগের তুলনায় কেজিপ্রতি ৪ থেকে ৬ টাকা কমে গিয়ে মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৪৪ থেকে ৫০ টাকায়। মাঝারি মানের চাল হিসেবে পরিচিত ২৮ ধানের চাল ও লতা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৫০ থেকে ৫২ টাকায়। তবে চাল ব্যবসায়ী রমজান জানান, দুর্গা ও জোড়া কবুতর নামে দুটি চাল রয়েছে যার দাম ৫৫ থেকে ৫৭ টাকা। এই চালটির দাম কয়েকদিন আগেই বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ৬০ টাকায়। এই চাল লতা ও ২৮ চালের চেয়ে একটু উন্নতমানের ও কিছুটা সরু বলেও দাবি করেন তিনি।
চালের দাম নিয়ে মূল কারসাজি হয়েছে চিকন চাল হিসেবে পরিচিত ‘মিনিকেট’ চালের ক্ষেত্রে। গত তিন সপ্তাহ আগে চালটি কেজিপ্রতি ৫৮ থেকে ৬২ টাকায় বিক্রি হলেও প্রথমে দাম কমে কেজিপ্রতি ৫৬ থেকে ৬০ টাকায় নেমে আসে। কিন্তু এক সপ্তাহ না যেতেই ধানের মৌসুম নয়, বাজারে ধানের সরবরাহ কম ইত্যাদি অজুহাত দেখিয়ে আমলযোগ্য নয় এমন অঙ্কে কয়েকধাপে পুনরায় দাম বাড়িয়ে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। এছাড়া একই অজুহাতে নাজিরশাইল চালের দাম আগের মতই ৬৮ থেকে ৭০ টাকায় স্থির হয়ে আছে।

চালের বর্তমান বাজার দর নিয়ে কথা বললেন মিরপুর এক নম্বর চাল বাজারের মায়ের দোয়া রাইস এজেন্সির পাইকারি ব্যবসায়ী আবদুর রহমান বলেন
চালের দাম তো কমেছেই। তবে চিকন চাল খাওয়ার শখ করবেন আর টাকা গুনবেন না তা তো হয় না। যার টাকা আছে সেই তো চিকন চাল খাচ্ছে। সরকারও তো মোটা চালের দাম কমাতেই ব্যস্ত ছিল। তো সরকার যা চেয়েছে তাই হয়েছে’।

চিকন চালের দাম কমার পরেও কেন নতুন করে চালের দাম বাড়ল এ প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, ওই দামে (কমে যাওয়া) চাল বিক্রি করলে যারা স্টক (মজুদ) করেছিল তাদের অনেক লস হতো। তাই প্রথমে সামান্য কিছু লস দিয়েছে কিন্তু পরে সিস্টেম (কৌশল) করে ঠিকই উসুল করে নিচ্ছে’।
বাজার পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয় রাজধানীর অন্যতম বৃহত্তম চালের বাজার কারওয়ান বাজারের বি-বাড়িয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক মোহম্মদ মহসীনের সাথে। তিনি বলেন, চালকল মালিক আর মজুদদারদের জন্যই তো চালের দাম বেড়েছিল। কাদের মজুদে চাল ছিল তা তো সবাই জানে। এখন চালের দাম কমে যাওয়ায় তাদেরই তো লস হচ্ছে। সরকার যদি সুযোগ করে দেয় তারা কি আঙ্গুল চুষবে? তাছাড়া আপনি কবে দেখেছেন যে, দেশে কোন জিনিসের দাম একবার বাড়লে তা আবার কমে আগের জায়গায় ফিরে আসে?
চাল ব্যবসায়ী মোহম্মদ মহসীন আরও জানান, সবার চোখ ছিল মোটা চালের দামে। সেটা দাম কমে যাওয়ার পর চাল বাজার থেকে সবাই যখন চোখ ফিরিয়ে নিয়েছে। ঠিক তখনই লাভের হিসাব আগের মত করতে কল মালিক আর ব্যবসায়ীরা যোগসাজশে কয়েকধাপে চিকন চালের দাম আবার বাড়িয়ে দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত প্রায় দুই মাস ধরে দেশে চালের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে চরম সমালোচনার মুখে পড়ে সরকার। পরিস্থিতি সামাল দিতে দফায় দফায় চাল ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠক করে। ওই বৈঠকে ব্যবসায়ীরা চালের দাম কেজিপ্রতি ২ থেকে তিন টাকা কমানো প্রতিশ্রুতি দেন।
চালের মজুদদারদের কারণেও চালের দাম বেড়েছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সারা দেশে বিভিন্ন চাল গুদামে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত এবং অভিযানে চাল মজুদের প্রমাণ পাওয়ায় বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীকে জরিমানাও করা হয়। একইসাথে আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় কিছুটা উচ্চ দামে হলেও ভারত, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড থেকে স্বল্পতম সময়ে চাল আমদানি ও রেশনিংয়ের মাধ্যমে চালে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে চেষ্টা করে সরকার। কিছুটা সফলও হয় বটে। এতে দেশের সাধারণ ও দরিদ্র মানুষের মধ্যে কিছুটা হলেও স্বস্তির ফিরে আসতে শুরু করে। কিন্তু এরইমধ্যে ব্যবসায়ীরা নতুন কৌশলের আশ্রয় নিয়ে সরু চালের দাম আবার বাড়িয়েছে।
এদিকে চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনার সর্বশেষ চেষ্টা হিসেবে ১১ অক্টোবর বুধবার এক বৈঠকে মিয়ানমার থেকে নতুন করে আরো এক লাখ মেট্রিকটন চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার কমিটি।

ট্যাগ :

চিকন চালের দাম বৃদ্ধি

প্রকাশিত : ১০:০১:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর ২০১৭

কৌশলে আবারও চালের দাম বাড়িয়েছে ব্যবসায়ীরা। পাগলা ঘোড়ার মতো অস্থির চালের বাজারকে লাগাম পরাতে দীর্ঘ দিন ধরেই চেষ্টা করে যাচ্ছে সরকার। ইতোমধ্যে কিছুটা সফলও হয়েছে বটে। তবে ব্যবসায়ীরাও কম যান না। ঠিকই খুঁজে নিয়েছেন ভিন্ন ‘চালবাজি’। মোটা চালের দামে সকলের নজর থাকায় মোটা চালের দাম কিছুটা কমিয়ে সরু চালগুলোর দাম প্রায় একই রকম রেখেছেন। এতে চাল বাজারের সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বলে বলা যাচ্ছে না। তবে রাজধানীর বিভিন্ন পাইকারি চাল ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সব কারসাজি চালকল মালিক আর মজুদদারের হাতে।

১১ অক্টোবর বুধবার রাজধানীর কয়েকটি বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, চালের দাম কমাতে সরকারের টানা প্রচেষ্টার পর দাম কমেছে ঠিকই, কিন্তু তা শুধু মোটা চালের ক্ষেত্রে। অন্যান্য চালের দাম প্রায় আগের মতোই আছে।
পাইকারি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, চালকল মালিক ও মজুদদার-আড়ৎদারেরা কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। তারা জানান, সরকার চালের দাম কমাতে চাপ দিলে প্রথমে সরু (চিকন) চালের দাম কমায় তারা (চালকল মালিক ও মজুদদার), কিন্তু মোটা চালের সরবরাহ নেই দেখিয়ে দাম অপরিবর্তিত রাখে। এতে সরকার-মিডিয়াসহ সংশ্লিষ্ট সকলের নজর দিয়ে পড়ে মোটা চালের দামের ওপর।
পরে মোটা চালের দাম কমাতে চাল ব্যবসায়ী ও সরকার দফায় দফায় বৈঠকের পর দাম কমিয়ে মোটা চাল বাজারে ছাড়তে শুরু করে। ফলে খুচরা বাজারেও মোটা চালের দাম কেজি প্রতি ৪ থেকে ৫ টাকা কমে আসে। এতে সবার মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসতে শুরু করে। কিন্তু এর পরই চাল ব্যবসায়ীরা চাতুরির আশ্রয় নেয়। পাইকারি ব্যবসায়ীরা চিকন চালের অর্ডার দিলে ‘মৌসুম নয় ও ধানের সকংট রয়েছে’ দাবি করে চিকন চালের দাম কেজিপ্রতি একদুই টাকা করে বাড়িয়ে দিতে থাকে। দুই সপ্তাহ শেষে চালের দাম গিয়ে পৌঁছে প্রায় আগের জায়গাতেই। শুধু নাজিরশাইল চাল ব্যাতীত অন্য সব ধরনের সরু চালের ক্ষেত্রে এ ঘটেছে বলেও দাবি করেন পাইকারেরা।
রাজধানীর বৃহত্তম চালের বাজার মোহম্মদপুর কৃষি মার্কেট, মিরপুর এক নম্বরের পাইকারি চাল বাজার, কারওয়ান বাজারসহ অন্যান্য বাজারগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, পাইজাম, এলসি, গুটি ও নূরজাহান (ভারতীয়) চাল বাজারে মোটা চাল হিসেবে পরিচিত। এসব চালের দাম দুই সপ্তাহ আগের তুলনায় কেজিপ্রতি ৪ থেকে ৬ টাকা কমে গিয়ে মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৪৪ থেকে ৫০ টাকায়। মাঝারি মানের চাল হিসেবে পরিচিত ২৮ ধানের চাল ও লতা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৫০ থেকে ৫২ টাকায়। তবে চাল ব্যবসায়ী রমজান জানান, দুর্গা ও জোড়া কবুতর নামে দুটি চাল রয়েছে যার দাম ৫৫ থেকে ৫৭ টাকা। এই চালটির দাম কয়েকদিন আগেই বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ৬০ টাকায়। এই চাল লতা ও ২৮ চালের চেয়ে একটু উন্নতমানের ও কিছুটা সরু বলেও দাবি করেন তিনি।
চালের দাম নিয়ে মূল কারসাজি হয়েছে চিকন চাল হিসেবে পরিচিত ‘মিনিকেট’ চালের ক্ষেত্রে। গত তিন সপ্তাহ আগে চালটি কেজিপ্রতি ৫৮ থেকে ৬২ টাকায় বিক্রি হলেও প্রথমে দাম কমে কেজিপ্রতি ৫৬ থেকে ৬০ টাকায় নেমে আসে। কিন্তু এক সপ্তাহ না যেতেই ধানের মৌসুম নয়, বাজারে ধানের সরবরাহ কম ইত্যাদি অজুহাত দেখিয়ে আমলযোগ্য নয় এমন অঙ্কে কয়েকধাপে পুনরায় দাম বাড়িয়ে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। এছাড়া একই অজুহাতে নাজিরশাইল চালের দাম আগের মতই ৬৮ থেকে ৭০ টাকায় স্থির হয়ে আছে।

চালের বর্তমান বাজার দর নিয়ে কথা বললেন মিরপুর এক নম্বর চাল বাজারের মায়ের দোয়া রাইস এজেন্সির পাইকারি ব্যবসায়ী আবদুর রহমান বলেন
চালের দাম তো কমেছেই। তবে চিকন চাল খাওয়ার শখ করবেন আর টাকা গুনবেন না তা তো হয় না। যার টাকা আছে সেই তো চিকন চাল খাচ্ছে। সরকারও তো মোটা চালের দাম কমাতেই ব্যস্ত ছিল। তো সরকার যা চেয়েছে তাই হয়েছে’।

চিকন চালের দাম কমার পরেও কেন নতুন করে চালের দাম বাড়ল এ প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, ওই দামে (কমে যাওয়া) চাল বিক্রি করলে যারা স্টক (মজুদ) করেছিল তাদের অনেক লস হতো। তাই প্রথমে সামান্য কিছু লস দিয়েছে কিন্তু পরে সিস্টেম (কৌশল) করে ঠিকই উসুল করে নিচ্ছে’।
বাজার পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয় রাজধানীর অন্যতম বৃহত্তম চালের বাজার কারওয়ান বাজারের বি-বাড়িয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক মোহম্মদ মহসীনের সাথে। তিনি বলেন, চালকল মালিক আর মজুদদারদের জন্যই তো চালের দাম বেড়েছিল। কাদের মজুদে চাল ছিল তা তো সবাই জানে। এখন চালের দাম কমে যাওয়ায় তাদেরই তো লস হচ্ছে। সরকার যদি সুযোগ করে দেয় তারা কি আঙ্গুল চুষবে? তাছাড়া আপনি কবে দেখেছেন যে, দেশে কোন জিনিসের দাম একবার বাড়লে তা আবার কমে আগের জায়গায় ফিরে আসে?
চাল ব্যবসায়ী মোহম্মদ মহসীন আরও জানান, সবার চোখ ছিল মোটা চালের দামে। সেটা দাম কমে যাওয়ার পর চাল বাজার থেকে সবাই যখন চোখ ফিরিয়ে নিয়েছে। ঠিক তখনই লাভের হিসাব আগের মত করতে কল মালিক আর ব্যবসায়ীরা যোগসাজশে কয়েকধাপে চিকন চালের দাম আবার বাড়িয়ে দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত প্রায় দুই মাস ধরে দেশে চালের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে চরম সমালোচনার মুখে পড়ে সরকার। পরিস্থিতি সামাল দিতে দফায় দফায় চাল ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠক করে। ওই বৈঠকে ব্যবসায়ীরা চালের দাম কেজিপ্রতি ২ থেকে তিন টাকা কমানো প্রতিশ্রুতি দেন।
চালের মজুদদারদের কারণেও চালের দাম বেড়েছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সারা দেশে বিভিন্ন চাল গুদামে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত এবং অভিযানে চাল মজুদের প্রমাণ পাওয়ায় বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীকে জরিমানাও করা হয়। একইসাথে আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় কিছুটা উচ্চ দামে হলেও ভারত, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড থেকে স্বল্পতম সময়ে চাল আমদানি ও রেশনিংয়ের মাধ্যমে চালে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে চেষ্টা করে সরকার। কিছুটা সফলও হয় বটে। এতে দেশের সাধারণ ও দরিদ্র মানুষের মধ্যে কিছুটা হলেও স্বস্তির ফিরে আসতে শুরু করে। কিন্তু এরইমধ্যে ব্যবসায়ীরা নতুন কৌশলের আশ্রয় নিয়ে সরু চালের দাম আবার বাড়িয়েছে।
এদিকে চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনার সর্বশেষ চেষ্টা হিসেবে ১১ অক্টোবর বুধবার এক বৈঠকে মিয়ানমার থেকে নতুন করে আরো এক লাখ মেট্রিকটন চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার কমিটি।