০৬:৩৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে হবে

ঢাকা সফররত ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বলেছেন, ‘মায়ানমারকে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে হবে, এটা বাংলাদেশের বড় বোঝা’। রবিবার
সন্ধ্যায় গণভবনের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। সফরে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানে ১৫টি উন্নয়ন কর্মসূচি প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। সেখানে তিনি অতিথিদের
উদ্দেশে বক্তব্য রাখবেন। গতকাল বিকালে চতুর্থ জেসিসি বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। অপরদিকে, ভারতীয় প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দেবেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা সঙ্কটের বিষয়টিতে অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভারতের ভ‚মিকা সা¤প্রতিকালে বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
মানবিক কারণে আশ্রয় : মানবিক কারণেই সরকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, মানবিক বিপর্যয়ে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়ানো প্রত্যেকের দায়িত্ব। রোহিঙ্গাদের বিপর্যয়ের সময় আমরা যদি তাদের পাশে না দাঁড়াতাম তবে তা অমানবিক হতো। বৈঠক শেষেপ্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংক এর সদস্য ৩১টি ব্যাংকের পক্ষ থেকে ত্রাণ তহবিলের চেক গ্রহণকালে তিনি এ কথা বলেন। অ্যাসোসিয়েশনের উদ্দেশে তিনি বলেন, মানবিক কল্যাণে সবসময় এগিয়ে আসে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস। স¤প্রতি বন্যার সময় তারা জনগণের পাশে ছিল। এখন মায়ানমার থেকে অত্যাচারিত হয়ে বাংলাদেশে আসা লোকদের সাহায্যেও এগিয়ে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, একাত্তর সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যেমন অত্যাচার করেছিল, এরাও একই রকমের অত্যাচারের শিকার। একাত্তরে তিন কোটি বাঙালি গৃহহারা হয়েছিল, আর এক কোটি শরণার্থী হয়েছিল। ১৯৭৫ সালের বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তার এবং তার ছোট বোনের শরণার্থী জীবনের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘৬ বছর শরণার্থী হিসেবে থাকার কারণে আমরা রোহিঙ্গাদের দুঃখ ও যন্ত্রণা বুঝি।’ রোহিঙ্গাদের সমস্যা নিয়ে জাতিসংঘে বাংলাদেশের উত্থাপিত পাঁচ প্রস্তাবের আলোকেই এ সঙ্কটের সমাধান সম্ভব বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের এখানেও জঙ্গিবাদী ঘটনা ঘটেছিল। আমরা তা দমন করেছি। নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের সহায়তায় সর্বশ্রেণির মানুষের এগিয়ে আসার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এ দেশের মানুষ মানবতাবোধ সম্পন্ন। তারা প্রত্যন্ত এলাকা থেকে সহায়তা নিয়ে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেসামরিক প্রশাসন, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী, বিজিবি, পুলিশ এবং তার দলের স্বেচ্ছাসেবকরা এসব নিপীড়িত মানুষের ভোগান্তি লাঘবে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ স্থানে নিতে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। সেখানে বহুমুখী সাইক্লোন সেন্টারসহ আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। আমরা যুদ্ধ চাই না। আমরা বিশ্বাস করি, আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান সম্ভব।

ট্যাগ :

রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে হবে

প্রকাশিত : ০১:৩২:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ অক্টোবর ২০১৭

ঢাকা সফররত ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বলেছেন, ‘মায়ানমারকে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে হবে, এটা বাংলাদেশের বড় বোঝা’। রবিবার
সন্ধ্যায় গণভবনের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। সফরে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানে ১৫টি উন্নয়ন কর্মসূচি প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। সেখানে তিনি অতিথিদের
উদ্দেশে বক্তব্য রাখবেন। গতকাল বিকালে চতুর্থ জেসিসি বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। অপরদিকে, ভারতীয় প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দেবেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা সঙ্কটের বিষয়টিতে অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভারতের ভ‚মিকা সা¤প্রতিকালে বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
মানবিক কারণে আশ্রয় : মানবিক কারণেই সরকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, মানবিক বিপর্যয়ে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়ানো প্রত্যেকের দায়িত্ব। রোহিঙ্গাদের বিপর্যয়ের সময় আমরা যদি তাদের পাশে না দাঁড়াতাম তবে তা অমানবিক হতো। বৈঠক শেষেপ্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংক এর সদস্য ৩১টি ব্যাংকের পক্ষ থেকে ত্রাণ তহবিলের চেক গ্রহণকালে তিনি এ কথা বলেন। অ্যাসোসিয়েশনের উদ্দেশে তিনি বলেন, মানবিক কল্যাণে সবসময় এগিয়ে আসে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস। স¤প্রতি বন্যার সময় তারা জনগণের পাশে ছিল। এখন মায়ানমার থেকে অত্যাচারিত হয়ে বাংলাদেশে আসা লোকদের সাহায্যেও এগিয়ে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, একাত্তর সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যেমন অত্যাচার করেছিল, এরাও একই রকমের অত্যাচারের শিকার। একাত্তরে তিন কোটি বাঙালি গৃহহারা হয়েছিল, আর এক কোটি শরণার্থী হয়েছিল। ১৯৭৫ সালের বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তার এবং তার ছোট বোনের শরণার্থী জীবনের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘৬ বছর শরণার্থী হিসেবে থাকার কারণে আমরা রোহিঙ্গাদের দুঃখ ও যন্ত্রণা বুঝি।’ রোহিঙ্গাদের সমস্যা নিয়ে জাতিসংঘে বাংলাদেশের উত্থাপিত পাঁচ প্রস্তাবের আলোকেই এ সঙ্কটের সমাধান সম্ভব বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের এখানেও জঙ্গিবাদী ঘটনা ঘটেছিল। আমরা তা দমন করেছি। নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের সহায়তায় সর্বশ্রেণির মানুষের এগিয়ে আসার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এ দেশের মানুষ মানবতাবোধ সম্পন্ন। তারা প্রত্যন্ত এলাকা থেকে সহায়তা নিয়ে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেসামরিক প্রশাসন, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী, বিজিবি, পুলিশ এবং তার দলের স্বেচ্ছাসেবকরা এসব নিপীড়িত মানুষের ভোগান্তি লাঘবে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ স্থানে নিতে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। সেখানে বহুমুখী সাইক্লোন সেন্টারসহ আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। আমরা যুদ্ধ চাই না। আমরা বিশ্বাস করি, আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান সম্ভব।