০১:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

বিশ্বজিৎ হত্যা : মৃত্যুদন্ড বহাল রেখে হাইকোর্টের পূর্নাঙ্গ রায় প্রকাশ

বহুল আলোচিত বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলায় দুই আসামীর মৃত্যুদন্ড বহাল রেখে দেয়া হাইকোর্টের পূর্নাঙ্গ রায় আজ প্রকাশ করা হয়েছে।

বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ গত ৬ আগষ্ট মামলাটির ওপর সংক্ষিপ্ত রায় দেয়। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তরা হলেন-রফিকুল ইসলাম শাকিল ও রাজন তালুকদার (পলাতক)। রায় প্রদানকারী বিচারকদের স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে আজ ৮০ পৃষ্ঠায় দেয়া পূর্নাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলো।

বিচারিক আদালতের রায়ে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তরা হলেন-রফিকুল ইসলাম শাকিল, মাহফুজুর রহমান নাহিদ, এমদাদুল হক এমদাদ, জি এম রাশেদুজ্জামান শাওন, সাইফুল ইসলাম, কাইয়ুম মিঞা টিপু, রাজন তালুকদার ও মীর মো. নূরে আলম লিমন। এদের মধ্যে রায়ে রফিকুল ইসলাম শাকিল ও রাজন তালুকদারের মৃত্যুদন্ড বহাল, মাহফুজুর রহমান নাহিদ, এমদাদুল হক এমদাদ, জি এম রাশেদুজ্জামান শাওন, ও মীর মো. নূরে আলম লিমনের (পলাতক) মৃত্যুদন্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং বিচারিক আদালতে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত সাইফুল ইসলাম ও কাইয়ুম মিয়া টিপুকে হাইকোর্ট খালাস দিয়েছে। বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া আসামী গোলাম মোস্তফা ও এএইচএম কিবরিয়াকেও হাইকোর্টের রায়ে খালাস দেয়া হয়েছে।

রায়ে ২১ আসামীর মধ্যে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথরেফারেন্স ও আসামীদের দায়ের করা আপিলের শুনানি শেষে ২ জনের মৃতুদন্ড বহাল, ৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড, ৪ জনকে খালাস দেয়া হয়েছে। আপিল না করা পলাতক ১১ আসামীর বিষয়ে কোন কিছু বলেনি আদালত। এ বিষয়ে আইনজীবীরা জানায়, পলাতকদের বিচারিক আদালতের দেয়া যাবজ্জীবন সাজা রায়ই বহাল থাকল। বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন কারাদন্ড সাজা পাওয়া পলাতক ১১ আসামী হচ্ছেন- ইউনুস আলী, তারিক বিন জোহর তমাল, আলাউদ্দিন, ওবায়দুর কাদের তাহসিন, ইমরান হোসেন, আজিজুর রহমান, আল-আমিন, রফিকুল ইসলাম, মনিরুল হক পাভেল, মোশাররফ হোসেন ও কামরুল হাসান।

শুনানিকালে আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল নজিবুর রহমান। আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী ও আইনজীবী শাহ আলম।

বহুল আলোচিত রাজধানীর পুরান ঢাকার টেইলার্স শ্রমিক বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলায় ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর ৮ জনকে মৃত্যুদন্ড ও ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয় বিচারিক আদালত। এছাড়া তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ডও দেয়া হয় অনাদায়ে ১ বছরের কারাদন্ডের আদেশ দেয়া হয়।

ঢাকার চার নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এবিএম নিজামুল হক এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ের এক সপ্তাহের মধ্যে বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার ডেথরেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধেও আপিল করেন আটক আসামিরা।

বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলায় ২০১৩ সালের ৫ মার্চ ২১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ ২১ আসামির মধ্যে ৮ জন কারাগারে এবং বাকিরা পলাতক। ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে রাজধানীর পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রলীগের কর্মী পরিচয়দানকারী উল্লেখিত আসামীরা নির্মমভাবে খুন করে বিশ্বজিৎ দাসকে। শাখারীবাজারে বিশ্বজিতের একটি টেইলার্স ছিল। তিনি থাকতেন লক্ষ্মীবাজার। গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর।

এ হত্যার ঘটনায় রাজধানীর সূত্রাপুর থানায় মামলা করা হয়। এ হত্যার ঘটনা গনমাধ্যমে প্রকাশ ও প্রচার হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। সে আলোকে দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

ট্যাগ :

বিশ্বজিৎ হত্যা : মৃত্যুদন্ড বহাল রেখে হাইকোর্টের পূর্নাঙ্গ রায় প্রকাশ

প্রকাশিত : ০৬:৪৪:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ নভেম্বর ২০১৭

বহুল আলোচিত বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলায় দুই আসামীর মৃত্যুদন্ড বহাল রেখে দেয়া হাইকোর্টের পূর্নাঙ্গ রায় আজ প্রকাশ করা হয়েছে।

বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ গত ৬ আগষ্ট মামলাটির ওপর সংক্ষিপ্ত রায় দেয়। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তরা হলেন-রফিকুল ইসলাম শাকিল ও রাজন তালুকদার (পলাতক)। রায় প্রদানকারী বিচারকদের স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে আজ ৮০ পৃষ্ঠায় দেয়া পূর্নাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলো।

বিচারিক আদালতের রায়ে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তরা হলেন-রফিকুল ইসলাম শাকিল, মাহফুজুর রহমান নাহিদ, এমদাদুল হক এমদাদ, জি এম রাশেদুজ্জামান শাওন, সাইফুল ইসলাম, কাইয়ুম মিঞা টিপু, রাজন তালুকদার ও মীর মো. নূরে আলম লিমন। এদের মধ্যে রায়ে রফিকুল ইসলাম শাকিল ও রাজন তালুকদারের মৃত্যুদন্ড বহাল, মাহফুজুর রহমান নাহিদ, এমদাদুল হক এমদাদ, জি এম রাশেদুজ্জামান শাওন, ও মীর মো. নূরে আলম লিমনের (পলাতক) মৃত্যুদন্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং বিচারিক আদালতে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত সাইফুল ইসলাম ও কাইয়ুম মিয়া টিপুকে হাইকোর্ট খালাস দিয়েছে। বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া আসামী গোলাম মোস্তফা ও এএইচএম কিবরিয়াকেও হাইকোর্টের রায়ে খালাস দেয়া হয়েছে।

রায়ে ২১ আসামীর মধ্যে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথরেফারেন্স ও আসামীদের দায়ের করা আপিলের শুনানি শেষে ২ জনের মৃতুদন্ড বহাল, ৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড, ৪ জনকে খালাস দেয়া হয়েছে। আপিল না করা পলাতক ১১ আসামীর বিষয়ে কোন কিছু বলেনি আদালত। এ বিষয়ে আইনজীবীরা জানায়, পলাতকদের বিচারিক আদালতের দেয়া যাবজ্জীবন সাজা রায়ই বহাল থাকল। বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন কারাদন্ড সাজা পাওয়া পলাতক ১১ আসামী হচ্ছেন- ইউনুস আলী, তারিক বিন জোহর তমাল, আলাউদ্দিন, ওবায়দুর কাদের তাহসিন, ইমরান হোসেন, আজিজুর রহমান, আল-আমিন, রফিকুল ইসলাম, মনিরুল হক পাভেল, মোশাররফ হোসেন ও কামরুল হাসান।

শুনানিকালে আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল নজিবুর রহমান। আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী ও আইনজীবী শাহ আলম।

বহুল আলোচিত রাজধানীর পুরান ঢাকার টেইলার্স শ্রমিক বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলায় ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর ৮ জনকে মৃত্যুদন্ড ও ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয় বিচারিক আদালত। এছাড়া তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ডও দেয়া হয় অনাদায়ে ১ বছরের কারাদন্ডের আদেশ দেয়া হয়।

ঢাকার চার নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এবিএম নিজামুল হক এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ের এক সপ্তাহের মধ্যে বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার ডেথরেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধেও আপিল করেন আটক আসামিরা।

বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলায় ২০১৩ সালের ৫ মার্চ ২১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ ২১ আসামির মধ্যে ৮ জন কারাগারে এবং বাকিরা পলাতক। ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে রাজধানীর পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রলীগের কর্মী পরিচয়দানকারী উল্লেখিত আসামীরা নির্মমভাবে খুন করে বিশ্বজিৎ দাসকে। শাখারীবাজারে বিশ্বজিতের একটি টেইলার্স ছিল। তিনি থাকতেন লক্ষ্মীবাজার। গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর।

এ হত্যার ঘটনায় রাজধানীর সূত্রাপুর থানায় মামলা করা হয়। এ হত্যার ঘটনা গনমাধ্যমে প্রকাশ ও প্রচার হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। সে আলোকে দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।