০৫:৪৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

পাঁচ মাস ধরে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম

রাজধানীতে এখন দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০ টাকায়। ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ৬০ টাকা।

পাঁচমাস আগে দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল ৩১ টাকা ৫০ পয়সা। ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ছিল ২৫ টাকা ৭৫ পয়সা। পাঁচমাস ধরে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। সরকার ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, অতিবৃষ্টির কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে ভোক্তাদের নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) জানিয়েছে, কৃত্রিম সংকট তৈরি করে পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হয়েছে।

পাঁচ মাস ধরে বাড়ছে দাম

ক্যাবের দেওয়া পণ্যের দামের তালিকায় দেখা যায়, পাঁচ মাস ধরে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। দেশি পেঁয়াজ প্রতিমাসে প্রতিকেজিতে গড়ে বেড়েছে প্রায় ৯ টাকা। ভারতীয় পেঁয়াজ গড়ে বেড়েছে প্রায় ৭ টাকা।

গত জুন মাসে দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল প্রতি কেজি ৩১ টাকা ৫০ পয়সা, জুলাই মাসে তা ছিল ৪০ টাকা, আগস্ট মাসে ৫৭ টাকা ৫০ পয়সা, সেপ্টেম্বরে ছিল ৫৫ টাকা ৫০ পয়সা। অক্টোবর মাসেই তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭৩ টাকা ৫০ পয়সায়।

ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম গত জুনে ছিল ২৫ টাকা ৭৫ পয়সা, জুলাইয়ে ৩৬ টাকা ৫০ পয়সা, আগস্টে ৫৪ টাকা ৫০ পয়সা, সেপ্টেম্বরে ছিল ৫০ টাকা ৬৬ পয়সা। অক্টোবরে এসে দাঁড়ায় ৫৬ টাকা ৬০ পয়সায়।

খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দাম বাড়ার কারণে বিক্রিও কমেছে। মুগদা কাঁচাবাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মোহাম্মাদ মোতালেব বলেন, ‘দাম বাড়ার কারণে বেচাকেনা কম। যারা পাঁচ কেজি কিনতেন তাঁরা এখন দুই কেজি দিয়েই কাজ চালিয়ে দেন।

কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজের পাইকারি ব্যবসায়ী জয়নাল বলেন, ‘নতুন পেঁয়াজ এখনো বাজারে আসেনি। দেশি পেঁয়াজের জোগান কম। আর দাম বাড়ায় ক্রেতাও কম।’

দফায় দফায় দাম বাড়ায় বেচাকেনা কমে গেছে কারওরান বাজারের পেঁয়াজের পাইকারি ব্যবস্যায়ীদের। ছবি : এনটিভি

‘অতিবৃষ্টির কারণে’

পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, অতিবৃষ্টির কারণে উৎপাদন কম হয়েছে। পেঁয়াজ নষ্টের ভয়ে গুদামজাত করেনি ব্যবসায়ীরা। আর চাহিদার চেয়ে আমদানি কম হচ্ছে। তবে আগামী মৌসুমে পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক হবে জানা গেছে।

মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোন কর্মকর্তা পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে সরাসরি কথা বলতে রাজি হননি।

পেঁয়াজের দাম বাড়ার ব্যাপারে শ্যামবাজারের কৃষি পণ্যের আড়ৎদার বাতুল সাহা জানান, ভারতে ও দেশে বন্যার কারণে পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে। আর পেঁয়াজের মৌসুমও শেষ। দাম কিছুটা কমেছে, নতুন পেঁয়াজ আসলে আরও দাম কমবে।

‘কৃত্রিম সংকট তৈরি’

ক্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘কোরবানি ঈদের সময় পেঁয়াজের দাম কমে যায়। সেই সময়ের ক্ষতি পুষিয়ে নিতেই পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বৃদ্ধি করেছে। চাল, ডাল, তেলসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধির পর সরকার দাম কমানোর উদ্যোগ নেয়। কিন্তু পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির পর, সরকারের কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।’

বৃষ্টির কারণে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে এমন কথা গ্রহণযোগ্য নয় বলে নাজের হোসাইন বলেন, ‘বৃষ্টি হলেও পেঁয়াজের বাজারে এর প্রভাব পড়তে মাস খানেক লাগবে, কিন্তু দাম এর আগেই বৃদ্ধি হয়েছে। দেশে ৮০ ভাগ পেঁয়াজ উৎপাদন করে আর বাকি ২০ ভাগ আমদানি করা হয়।’ এজন্য আমদানি পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কথাও বাস্তবসম্মত নয় বলে তিনি জানান।

ট্যাগ :

পাঁচ মাস ধরে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম

প্রকাশিত : ০৪:২৪:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ নভেম্বর ২০১৭

রাজধানীতে এখন দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০ টাকায়। ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ৬০ টাকা।

পাঁচমাস আগে দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল ৩১ টাকা ৫০ পয়সা। ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ছিল ২৫ টাকা ৭৫ পয়সা। পাঁচমাস ধরে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। সরকার ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, অতিবৃষ্টির কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে ভোক্তাদের নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) জানিয়েছে, কৃত্রিম সংকট তৈরি করে পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হয়েছে।

পাঁচ মাস ধরে বাড়ছে দাম

ক্যাবের দেওয়া পণ্যের দামের তালিকায় দেখা যায়, পাঁচ মাস ধরে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। দেশি পেঁয়াজ প্রতিমাসে প্রতিকেজিতে গড়ে বেড়েছে প্রায় ৯ টাকা। ভারতীয় পেঁয়াজ গড়ে বেড়েছে প্রায় ৭ টাকা।

গত জুন মাসে দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল প্রতি কেজি ৩১ টাকা ৫০ পয়সা, জুলাই মাসে তা ছিল ৪০ টাকা, আগস্ট মাসে ৫৭ টাকা ৫০ পয়সা, সেপ্টেম্বরে ছিল ৫৫ টাকা ৫০ পয়সা। অক্টোবর মাসেই তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭৩ টাকা ৫০ পয়সায়।

ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম গত জুনে ছিল ২৫ টাকা ৭৫ পয়সা, জুলাইয়ে ৩৬ টাকা ৫০ পয়সা, আগস্টে ৫৪ টাকা ৫০ পয়সা, সেপ্টেম্বরে ছিল ৫০ টাকা ৬৬ পয়সা। অক্টোবরে এসে দাঁড়ায় ৫৬ টাকা ৬০ পয়সায়।

খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দাম বাড়ার কারণে বিক্রিও কমেছে। মুগদা কাঁচাবাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মোহাম্মাদ মোতালেব বলেন, ‘দাম বাড়ার কারণে বেচাকেনা কম। যারা পাঁচ কেজি কিনতেন তাঁরা এখন দুই কেজি দিয়েই কাজ চালিয়ে দেন।

কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজের পাইকারি ব্যবসায়ী জয়নাল বলেন, ‘নতুন পেঁয়াজ এখনো বাজারে আসেনি। দেশি পেঁয়াজের জোগান কম। আর দাম বাড়ায় ক্রেতাও কম।’

দফায় দফায় দাম বাড়ায় বেচাকেনা কমে গেছে কারওরান বাজারের পেঁয়াজের পাইকারি ব্যবস্যায়ীদের। ছবি : এনটিভি

‘অতিবৃষ্টির কারণে’

পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, অতিবৃষ্টির কারণে উৎপাদন কম হয়েছে। পেঁয়াজ নষ্টের ভয়ে গুদামজাত করেনি ব্যবসায়ীরা। আর চাহিদার চেয়ে আমদানি কম হচ্ছে। তবে আগামী মৌসুমে পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক হবে জানা গেছে।

মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোন কর্মকর্তা পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে সরাসরি কথা বলতে রাজি হননি।

পেঁয়াজের দাম বাড়ার ব্যাপারে শ্যামবাজারের কৃষি পণ্যের আড়ৎদার বাতুল সাহা জানান, ভারতে ও দেশে বন্যার কারণে পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে। আর পেঁয়াজের মৌসুমও শেষ। দাম কিছুটা কমেছে, নতুন পেঁয়াজ আসলে আরও দাম কমবে।

‘কৃত্রিম সংকট তৈরি’

ক্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘কোরবানি ঈদের সময় পেঁয়াজের দাম কমে যায়। সেই সময়ের ক্ষতি পুষিয়ে নিতেই পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বৃদ্ধি করেছে। চাল, ডাল, তেলসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধির পর সরকার দাম কমানোর উদ্যোগ নেয়। কিন্তু পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির পর, সরকারের কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।’

বৃষ্টির কারণে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে এমন কথা গ্রহণযোগ্য নয় বলে নাজের হোসাইন বলেন, ‘বৃষ্টি হলেও পেঁয়াজের বাজারে এর প্রভাব পড়তে মাস খানেক লাগবে, কিন্তু দাম এর আগেই বৃদ্ধি হয়েছে। দেশে ৮০ ভাগ পেঁয়াজ উৎপাদন করে আর বাকি ২০ ভাগ আমদানি করা হয়।’ এজন্য আমদানি পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কথাও বাস্তবসম্মত নয় বলে তিনি জানান।