১২:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

মেজর গণি ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবেন : আবদুল মতিন খসরু

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক আইনমন্ত্রী এডভোকেট আবদুল মতিন খসরু বলেছেন, ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রাদেশিক আইন সভার সদস্য মেজর আবদুল গণি তার বিভিন্ন অবদানের জন্য ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবেন।

ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা মেজর গণির ৬১তম মৃত্যু দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাব অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে দেয়া বক্তৃতায় আবদুল মতিন খসরু শনিবার একথা বলেন।

তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলনের সূচনা সৈনিক ও বাঙালি সৈনিকদের নিয়ে প্রথম কোন সামরিক রেজিমেন্ট ‘ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট’ প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি অমর হয়ে থাকবেন। ইতিহাস থেকে তার নাম কখনো মোছা যাবে না।

মতিন খসরু বলেন, সমাজে অনেকেই মন্ত্রী, এমপি, জনপ্রতিনিধি হন। এদের মধ্যে ক’জনকে মানুষ মনে রাখে। মানুষের মন জয় করতে গেলে রাষ্ট্র ও সমাজের জন্য কল্যাণকার কাজ করে যেতে হবে। মৃত্যুর ৬১ বছর পরও হাজার মানুষের উপস্থিতিতে মেজর গণির জন্য আয়োজিত আলোচনা সভা প্রমাণ করে তিনি দেশ ও সমাজের জন্য অবদানের সাক্ষর রেখেছেন।

তিনি বলেন, কুমিল্লার বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া আসন থেকে ১৯৫৪ সালে সে সময়কার বড় বড় রাজনৈতিক দলের প্রার্থীর বিপরীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এমপি নির্বাচিত হয়ে মেজর গণি তার প্রতি মানুষের আস্থার প্রমাণ পেয়েছেন। গুণি এ ব্যক্তির অবদান পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে সংশ্লিষ্টদের কাছে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান।

মেজর গণি পরিষদের সভাপতি মো. হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে সাংবাদিক দিদারুল আলম, ফারুক খান ও বশির আল হেলালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তৃতা করেন মেজর জেনারেল (অব.) ইমামুজ্জামান বীর বিক্রম, মেজর জেনারেল সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহীম বীর বিক্রম, বিএফইউজে’র সভাপতি শওকত মাহমুদ, এটিএন বাংলার উপদেষ্টা কর্ণেল (অব:) মীর মোতাহার হাসান, সিজেএডি’র সভাপতি মাহমুদুর রহমান খোকন, কুমিল্লার কাগজ সম্পাদক আবুল কাশেম হৃদয়, এফবিসিসিআই-এর পরিচালক হেলেনা জাহাঙ্গীর সিআইপি, কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, সাংবাদিক রমিজ খান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহ আলম সরকার প্রমুখ।

মেজর গণির মৃত্যু দিবসে দোয়া পরিচালনা করেন নাগাইশ দরবার শরীফের পীর মাওলানা মোশতাক ফয়েজী।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মেজর গণি ১৯৪৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারী ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অগ্রযাত্রা শুরু করেন। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট গঠনে মেজর গণি যে সাহস, শক্তি, দূরদর্শীতার পরিচয় দিয়ে বাংলাদেশী জাতির জন্য উজ্জল প্রদীপ প্রজ্জলন করেছিলেন তাঁর শিখা আজও চির সমুজ্জ্বল।

বক্তারা মেজর গনির জীবনী পাঠ্যপুস্তকে প্রকাশ, কুমিল্লা ময়নামতি সেনানিবাসের নাম মেজর গনির নামে নামকরণ,তার নামে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মানসহ তার অবদানের স্বীকৃতি ও পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তাকে তুলে ধরতে বিভিন্ন দাবী উপস্থাপন করেন।
মেজর আব্দুর গনির জন্ম ১৯১৫ সালের

১লা ডিসেম্বর কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার নাগাইশ গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। ১৯৪১ সালে মেজর গণি যোগ দেন ব্রিটিশ-ভারতীয় সেনাবাহিনীর পাইনিয়র কোরে কমিশন্ড অফিসার হিসেবে। মেজর গনির গড়া ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অফিসার ও সৈন্যরা ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে অসীম সাহসের সাথে নেতত্ব দেন এবং লড়াই করেন। মেজর গনি ১৯৫৩ সালে সামরিক চাকরি থেকে বেরিয়ে যোগ দেন রাজনীতিতে। ১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক আইন সভার নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নিজ জেলা কুমিল্লার বুড়িচং নির্বাচনী এলাকা থেকে বিপুল ভোটে আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৫৭ সালে জার্মানী সফর কালে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৪২ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন।

ট্যাগ :

মেজর গণি ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবেন : আবদুল মতিন খসরু

প্রকাশিত : ০৭:৪০:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ নভেম্বর ২০১৭

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক আইনমন্ত্রী এডভোকেট আবদুল মতিন খসরু বলেছেন, ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রাদেশিক আইন সভার সদস্য মেজর আবদুল গণি তার বিভিন্ন অবদানের জন্য ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবেন।

ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা মেজর গণির ৬১তম মৃত্যু দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাব অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে দেয়া বক্তৃতায় আবদুল মতিন খসরু শনিবার একথা বলেন।

তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলনের সূচনা সৈনিক ও বাঙালি সৈনিকদের নিয়ে প্রথম কোন সামরিক রেজিমেন্ট ‘ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট’ প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি অমর হয়ে থাকবেন। ইতিহাস থেকে তার নাম কখনো মোছা যাবে না।

মতিন খসরু বলেন, সমাজে অনেকেই মন্ত্রী, এমপি, জনপ্রতিনিধি হন। এদের মধ্যে ক’জনকে মানুষ মনে রাখে। মানুষের মন জয় করতে গেলে রাষ্ট্র ও সমাজের জন্য কল্যাণকার কাজ করে যেতে হবে। মৃত্যুর ৬১ বছর পরও হাজার মানুষের উপস্থিতিতে মেজর গণির জন্য আয়োজিত আলোচনা সভা প্রমাণ করে তিনি দেশ ও সমাজের জন্য অবদানের সাক্ষর রেখেছেন।

তিনি বলেন, কুমিল্লার বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া আসন থেকে ১৯৫৪ সালে সে সময়কার বড় বড় রাজনৈতিক দলের প্রার্থীর বিপরীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এমপি নির্বাচিত হয়ে মেজর গণি তার প্রতি মানুষের আস্থার প্রমাণ পেয়েছেন। গুণি এ ব্যক্তির অবদান পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে সংশ্লিষ্টদের কাছে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান।

মেজর গণি পরিষদের সভাপতি মো. হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে সাংবাদিক দিদারুল আলম, ফারুক খান ও বশির আল হেলালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তৃতা করেন মেজর জেনারেল (অব.) ইমামুজ্জামান বীর বিক্রম, মেজর জেনারেল সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহীম বীর বিক্রম, বিএফইউজে’র সভাপতি শওকত মাহমুদ, এটিএন বাংলার উপদেষ্টা কর্ণেল (অব:) মীর মোতাহার হাসান, সিজেএডি’র সভাপতি মাহমুদুর রহমান খোকন, কুমিল্লার কাগজ সম্পাদক আবুল কাশেম হৃদয়, এফবিসিসিআই-এর পরিচালক হেলেনা জাহাঙ্গীর সিআইপি, কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, সাংবাদিক রমিজ খান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহ আলম সরকার প্রমুখ।

মেজর গণির মৃত্যু দিবসে দোয়া পরিচালনা করেন নাগাইশ দরবার শরীফের পীর মাওলানা মোশতাক ফয়েজী।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মেজর গণি ১৯৪৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারী ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অগ্রযাত্রা শুরু করেন। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট গঠনে মেজর গণি যে সাহস, শক্তি, দূরদর্শীতার পরিচয় দিয়ে বাংলাদেশী জাতির জন্য উজ্জল প্রদীপ প্রজ্জলন করেছিলেন তাঁর শিখা আজও চির সমুজ্জ্বল।

বক্তারা মেজর গনির জীবনী পাঠ্যপুস্তকে প্রকাশ, কুমিল্লা ময়নামতি সেনানিবাসের নাম মেজর গনির নামে নামকরণ,তার নামে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মানসহ তার অবদানের স্বীকৃতি ও পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তাকে তুলে ধরতে বিভিন্ন দাবী উপস্থাপন করেন।
মেজর আব্দুর গনির জন্ম ১৯১৫ সালের

১লা ডিসেম্বর কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার নাগাইশ গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। ১৯৪১ সালে মেজর গণি যোগ দেন ব্রিটিশ-ভারতীয় সেনাবাহিনীর পাইনিয়র কোরে কমিশন্ড অফিসার হিসেবে। মেজর গনির গড়া ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অফিসার ও সৈন্যরা ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে অসীম সাহসের সাথে নেতত্ব দেন এবং লড়াই করেন। মেজর গনি ১৯৫৩ সালে সামরিক চাকরি থেকে বেরিয়ে যোগ দেন রাজনীতিতে। ১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক আইন সভার নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নিজ জেলা কুমিল্লার বুড়িচং নির্বাচনী এলাকা থেকে বিপুল ভোটে আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৫৭ সালে জার্মানী সফর কালে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৪২ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন।