০৬:৫৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

চুড়ান্ত করতে সময় লাগবে

অর্ধশতাব্দী আগে প্রণীত সংসদীয় আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ আইন সংশোধনের খসড়া প্রস্তুত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেন, এই আইনটি এখন কমিশনের আইন শাখা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। সংশ্লিষ্টরা আইনটি চুড়ান্ত করতে প্রায় প্রতিদিনই কমিশনে বৈঠকে বসছেন। আইনটি চূড়ান্ত করে তা কমিশনের অনুমোদন নিয়ে মতামতের জন্য (ভেটিং) আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এ জন্য বেশ কিছুদিন সময় লাগতে পারে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কমিশন ‘দ্য ডিলিমিটেশন অব কন্সটিটিউয়েন্সিস অর্ডিনেন্স, ১৯৭৬’ রহিত করে ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনঃনির্ধারণ আইন, ২০১৭’ নামে নতুন আইন করছে। নতুন এই আইনটি অংশীজনদের কাছে সহজবোধ্য করতে বাংলায় প্রণয়ন করা হচ্ছে। আগামী সংসদ নির্বাচনে গ্রামাঞ্চলে সংসদীয় আসনের আসন সংখ্যা ঠিক রেখে, শহরের আসনগুলোতে পরিবর্তন এনে নতুন খসড়া প্রস্তুত করেছে কমিশন।
এ প্রসঙ্গে কবিতা খানম বলেন, গ্রামাঞ্চলে যে আসন রয়েছে, সেটা যাতে আর না কমে। সেজন্য কমিশন চিন্তা ভাবনা করছে। গ্রামাঞ্চলে যেন আসন সংখ্যা কোনভাবেই কমে না যায়, এটা মাথায় রেখেই কমিশন আইনের খসড়াটি পরীক্ষা করছে। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে ৪০টি রজনৈতিক দলের মধ্যে বিএনপিসহ ৯টি রাজনৈতিক দল ২০০১ সালে আগের সীমানা অনুযায়ী আসন বিন্যাসের দাবি করেছে। সীমানা আইনে কোন পরিবর্তন না এনে ২০০৮-২০১৪ অনুযায়ী আসন বিন্যাসের দাবি সুপারিশ আওয়ামী লীগসহ ১৩টি দল। ইসি কর্মকর্তারা জানান, জনসংখ্যা, ভোটার সংখ্যা ও সংসদীয় এলাকার আয়তনের ভিত্তিতে ভৌগলিক অখন্ডতা, প্রশাসনিক সুবিধা ও য্গোাযোগ ব্যবস্থা বিবেচনায় রেখে ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনঃনির্ধারণ আইন, ২০১৭’ এর খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। আইনের খসড়া প্রণয়নের পর সীমানা পুনঃনির্ধারণ বিধিমালার খসড়া তৈরি করে তা কমিশনে উপস্থাপন করা হবে। এ বিষয়ে ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ১৯৭৬ সালের অধ্যাদেশটি বাংলায় ভাষাস্তর করা হয়েছে। কমিশনারদের চূড়ান্ত অনুমোদন নিয়ে তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। সর্বশেষ আদমশুমারি প্রতিবেদন প্রকাশের আগের সীমানায় ভোট করার সুযোগ রাখা হয়েছে। ২০১১ সালে সর্বশেষ পঞ্চম আদমশুমারি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বিদ্যমান অধ্যাদেশ অনুযায়ী জনসংখ্যার যথাসম্ভব সমতা রেখে দশম সংসদ নির্বাচনে আদমশুমারি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আসন বিন্যাস করা হয়। পরবর্তী আদমশুমারির প্রতিবেদন হবে ২০২১ সালে। ইসি কর্মকর্তারা জানান, প্রস্তাবিত আইন পাস হলে একাদশ সংসদ নির্বাচন বিদ্যমান সীমানাতেই হতে পারবে। শুধু বিলুপ্ত ছিটমহল ও নতুন উপজেলা বা প্রশাসনিক কিছু এলাকা সংসদীয় আসনের যুক্ত করলেই চলবে। সেক্ষেত্রে বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন আনার দরকার পড়বে না। ২০০১ সালের নির্বাচনের সময় ১৯৯৫ সালের সীমানার গেজেট বহাল রাখা হয়েছিল। তবে ১৯৮৪, ১৯৯১ ও ২০০৮ সালে ১৩৩ সংসদীয় আসনে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছিল। সর্বশেষ ২০১৪ সালে দশম সংসদে ছয়টি নীতিমালা অনুসরণ করে ৫০টি আসনে ছোটখাটো পরিবর্তন করে আসন পুনর্বিন্যাস করা হয়। কমিশনের আইন শাখার এক কর্মকর্তা জানান, বর্তমান সীমানাতেই নির্বাচন করা যেতে পারে। ব্যাপক পরিবর্তন করার সময় ও সুযোগ এখন নেই, কারণ সময় অনেক কম। সীমানা পুনঃবিন্যাস অনেক জটিল কাজ।

ট্যাগ :

চুড়ান্ত করতে সময় লাগবে

প্রকাশিত : ১২:৫০:৪৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর ২০১৭

অর্ধশতাব্দী আগে প্রণীত সংসদীয় আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ আইন সংশোধনের খসড়া প্রস্তুত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেন, এই আইনটি এখন কমিশনের আইন শাখা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। সংশ্লিষ্টরা আইনটি চুড়ান্ত করতে প্রায় প্রতিদিনই কমিশনে বৈঠকে বসছেন। আইনটি চূড়ান্ত করে তা কমিশনের অনুমোদন নিয়ে মতামতের জন্য (ভেটিং) আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এ জন্য বেশ কিছুদিন সময় লাগতে পারে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কমিশন ‘দ্য ডিলিমিটেশন অব কন্সটিটিউয়েন্সিস অর্ডিনেন্স, ১৯৭৬’ রহিত করে ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনঃনির্ধারণ আইন, ২০১৭’ নামে নতুন আইন করছে। নতুন এই আইনটি অংশীজনদের কাছে সহজবোধ্য করতে বাংলায় প্রণয়ন করা হচ্ছে। আগামী সংসদ নির্বাচনে গ্রামাঞ্চলে সংসদীয় আসনের আসন সংখ্যা ঠিক রেখে, শহরের আসনগুলোতে পরিবর্তন এনে নতুন খসড়া প্রস্তুত করেছে কমিশন।
এ প্রসঙ্গে কবিতা খানম বলেন, গ্রামাঞ্চলে যে আসন রয়েছে, সেটা যাতে আর না কমে। সেজন্য কমিশন চিন্তা ভাবনা করছে। গ্রামাঞ্চলে যেন আসন সংখ্যা কোনভাবেই কমে না যায়, এটা মাথায় রেখেই কমিশন আইনের খসড়াটি পরীক্ষা করছে। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে ৪০টি রজনৈতিক দলের মধ্যে বিএনপিসহ ৯টি রাজনৈতিক দল ২০০১ সালে আগের সীমানা অনুযায়ী আসন বিন্যাসের দাবি করেছে। সীমানা আইনে কোন পরিবর্তন না এনে ২০০৮-২০১৪ অনুযায়ী আসন বিন্যাসের দাবি সুপারিশ আওয়ামী লীগসহ ১৩টি দল। ইসি কর্মকর্তারা জানান, জনসংখ্যা, ভোটার সংখ্যা ও সংসদীয় এলাকার আয়তনের ভিত্তিতে ভৌগলিক অখন্ডতা, প্রশাসনিক সুবিধা ও য্গোাযোগ ব্যবস্থা বিবেচনায় রেখে ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনঃনির্ধারণ আইন, ২০১৭’ এর খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। আইনের খসড়া প্রণয়নের পর সীমানা পুনঃনির্ধারণ বিধিমালার খসড়া তৈরি করে তা কমিশনে উপস্থাপন করা হবে। এ বিষয়ে ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ১৯৭৬ সালের অধ্যাদেশটি বাংলায় ভাষাস্তর করা হয়েছে। কমিশনারদের চূড়ান্ত অনুমোদন নিয়ে তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। সর্বশেষ আদমশুমারি প্রতিবেদন প্রকাশের আগের সীমানায় ভোট করার সুযোগ রাখা হয়েছে। ২০১১ সালে সর্বশেষ পঞ্চম আদমশুমারি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বিদ্যমান অধ্যাদেশ অনুযায়ী জনসংখ্যার যথাসম্ভব সমতা রেখে দশম সংসদ নির্বাচনে আদমশুমারি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আসন বিন্যাস করা হয়। পরবর্তী আদমশুমারির প্রতিবেদন হবে ২০২১ সালে। ইসি কর্মকর্তারা জানান, প্রস্তাবিত আইন পাস হলে একাদশ সংসদ নির্বাচন বিদ্যমান সীমানাতেই হতে পারবে। শুধু বিলুপ্ত ছিটমহল ও নতুন উপজেলা বা প্রশাসনিক কিছু এলাকা সংসদীয় আসনের যুক্ত করলেই চলবে। সেক্ষেত্রে বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন আনার দরকার পড়বে না। ২০০১ সালের নির্বাচনের সময় ১৯৯৫ সালের সীমানার গেজেট বহাল রাখা হয়েছিল। তবে ১৯৮৪, ১৯৯১ ও ২০০৮ সালে ১৩৩ সংসদীয় আসনে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছিল। সর্বশেষ ২০১৪ সালে দশম সংসদে ছয়টি নীতিমালা অনুসরণ করে ৫০টি আসনে ছোটখাটো পরিবর্তন করে আসন পুনর্বিন্যাস করা হয়। কমিশনের আইন শাখার এক কর্মকর্তা জানান, বর্তমান সীমানাতেই নির্বাচন করা যেতে পারে। ব্যাপক পরিবর্তন করার সময় ও সুযোগ এখন নেই, কারণ সময় অনেক কম। সীমানা পুনঃবিন্যাস অনেক জটিল কাজ।