কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় আগুনে পুড়ে যাওয়া নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস প্রায় ১০ মাস পর আবারও চালু হয়েছে।
রোববার (৪ মে) সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসটি উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা।
উদ্বোধনের পর জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, “এই অফিসে কোনো প্রকার দালালচক্রের স্থান হবে না। আমি নাগরিকদের অনুরোধ করব, কেউ যেন দালালের আশ্রয় না নেন। আমরা পাসপোর্ট সেবাকে শতভাগ স্বচ্ছ ও হয়রানিমুক্ত রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। কোথাও দালালচক্রের উপস্থিতি বা কার্যকলাপের খবর পাওয়া মাত্রই আমরা তাৎক্ষণিকভাবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করব এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক জামাল হোসেন বলেন, আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিয়ে নবনির্মিত এই অফিস এখন থেকে পুনরায় পাসপোর্ট সেবা প্রদান শুরু করবে। এতে করে জেলার পাঁচটি উপজেলার সাধারণ মানুষ আবারও নিজ এলাকার মধ্যেই এই গুরুত্বপূর্ণ সেবা গ্রহণ করতে পারবেন।
পাসপোর্ট সেবা গ্রহণ করতে আসা জিয়া রওন হক জানান, আমি একজন ব্যবসায়ী। আমি সিদ্ধিরগঞ্জে থাকি। তাই আমার পাসপোর্ট নবায়ন করতে মুন্সিগঞ্জ যাওয়া লাগতো। কিন্তু সিদ্ধিগঞ্জ থেকে মুন্সিগঞ্জ অনেক দূর হওয়ায় যাওয়া হয়ে ওঠেনি। তবে এখন সাইনবোর্ডে অবস্থিত পাসপোর্ট অফিস কি চালু হওয়ায় ভোগান্তি অনেক কমে গেছে। আজ আমি আমার পাসপোর্ট নবায়ন করতে এসেছি। কোন দালাল ধরে নয়, নিজে নিজেই সবকিছু করেছি। আশা করি খুব দ্রুতই আমি আমার পাসপোর্ট পেয়ে যাবো।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৮ জুলাই রাতে নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ভয়াবহ সেই অগ্নিকাণ্ডে অফিস ভবনসহ ভেতরের সব আসবাবপত্র, প্রযুক্তি যন্ত্রাংশ এবং বিতরণের জন্য প্রস্তুত থাকা প্রায় ৮ হাজার পাসপোর্ট সম্পূর্ণভাবে পুড়ে যায়। এ ঘটনায় পাসপোর্ট সেবায় চরম ব্যাঘাত ঘটে এবং নাগরিকদের মধ্যে ব্যাপক ভোগান্তির সৃষ্টি হয়।
অগ্নিকাণ্ডের পর সাময়িকভাবে নারায়ণগঞ্জ জেলার সেবা গ্রহণকারীদের কেরাণীগঞ্জ, নারসিংদী এবং মুন্সিগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে পাঠানো হয়। এতে করে প্রতিদিনের যাতায়াত, ভিড় ও দীর্ঘ সময় অপেক্ষার কারণে সাধারণ মানুষের পাসপোর্ট প্রক্রিয়া জটিল ও সময়সাপেক্ষ হয়ে উঠেছিল।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আলমগীর হুসাইন, নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক জামাল হোসেন সহ গণমাধ্যমকর্মীরা।
ডিএস./