বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে নওগাঁয় অনুষ্ঠিত হয়েছে এক মনোজ্ঞ ও বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শুক্রবার (১৬ মে) সন্ধ্যা ৬টায় নওগাঁ উপজেলা পরিষদের মিনি হলরুমে ‘সংগীত নিকেতন, নওগাঁ’ এবং ‘হাতে খড়ি, নওগাঁ’র যৌথ উদ্যোগে এই আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নজরুল একাডেমির সভাপতি ও সাংস্কৃতিক সংগঠক এস এম সিরাজুল ইসলাম, নওগাঁ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যাপক শরিফুল ইসলাম খান, তেতুলিয়া বিএমসি কলেজের অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান, নওগাঁ সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মোখলেছুর রহমান, নওগাঁ সাংস্কৃতিক ঐক্যের সভাপতি মনোয়ার হোসেন লিটন, নবনাট্য সংঘের সাধারণ সম্পাদক কায়েস উদ্দিন, বিশিষ্ট লেখক ও প্রবীণ সাংবাদিক ফরিদুল করিম, জেলা অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফিন্যান্স অফিসার খাঁন মাজহারুল ইসলাম, বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব রাজা ফকির, ‘হাতে খড়ি’র সভাপতি মাগফুরুল হাসান বিদ্যুৎ ও সাধারণ সম্পাদক নওরীন আখতার শারমিন এবং সংগীত নিকেতনের সংগীত পরিচালক অখিল চন্দ্র সরকারসহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। এছাড়াও স্থানীয় সাংস্কৃতিক কর্মী, শিক্ষক, অভিভাবক ও সুধীজন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা পর্বে বক্তারা বলেন, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শুধু বাংলা সাহিত্য নয়, বিশ্বসাহিত্যেরও এক অনন্য উচ্চতার প্রতীক। তাঁর কাব্য, সংগীত, নাটক, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ ও চিত্রশিল্পে বাংলার আত্মার প্রকাশ ঘটেছে। মানবতা, প্রকৃতি, প্রেম, দর্শন ও শিক্ষাক্ষেত্রে তিনি রেখেছেন সুগভীর প্রভাব। রবীন্দ্রনাথের চিন্তা ও চেতনা নতুন প্রজন্মের জন্য একটি অনন্ত শিক্ষার দিশারী।
অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে গত ৯ মে ‘সংগীত নিকেতন, নওগাঁ’ আয়োজিত রবীন্দ্রসংগীত প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া ৫৪ জন বিজয়ী শিক্ষার্থীর মধ্যে পুরস্কার ও সম্মাননা ক্রেস্ট বিতরণ করা হয়। আমন্ত্রিত অতিথিরা নিজ হাতে শিশু-কিশোরদের হাতে পুরস্কার তুলে দিয়ে তাদের উৎসাহিত করেন।
পরে শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় শুরু হয় আবৃত্তি ও সংগীতানুষ্ঠান। ‘হাতে খড়ি, নওগাঁ’র শিক্ষার্থীরা বিশ্বকবির জনপ্রিয় কবিতা ও গীতিকবিতা আবৃত্তি করেন, যা শ্রোতাদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। অপরদিকে, ‘সংগীত নিকেতন’-এর শিক্ষার্থীরা পরিবেশন করেন একের পর এক হৃদয়গ্রাহী রবীন্দ্রসংগীত—যেমন “আমার সোনার বাংলা”, “আজি ঝর ঝর মুখর বাদল দিনে”, “পুরানো সেই দিনের কথা”। এই গানগুলোর মাধ্যমে মঞ্চজুড়ে সৃষ্টি হয় এক অনন্য সাংস্কৃতিক আবেশ।
শিক্ষার্থীদের আবেগ ও নিষ্ঠা সবাইকে মুগ্ধ করে। অনুষ্ঠানটি শেষ হয় উপস্থিত অভিভাবকদের সম্মিলিত কণ্ঠে “ভেঙে মোর ঘরের চাবি নিয়ে যাবি কে আমারে” গান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে।
আয়োজক সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ভবিষ্যতেও নিয়মিতভাবে এমন আয়োজন অব্যাহত থাকবে এবং রবীন্দ্রচর্চার এই ধারা নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে তারা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ
ডিএস./