০৯:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫

করোনার নতুন ধরন কতোটা ভিন্ন, কেন ভয়ঙ্কর

Vehicles queue while medical personnel administer tests for the coronavirus disease (COVID-19) at the Bondi Beach drive-through testing centre as the city experiences an outbreak in Sydney, Australia, December 21, 2020. REUTERS/Loren Elliott

যুক্তরাজ্যে শনাক্ত হয়েছে কভিড-১৯-এর নতুন একটি ধরন (স্ট্রেইন)। ব্রিটিশ গবেষকরা বলছেন, ভাইরাসটি অনেক সহজে এবং দ্রুত ছড়াচ্ছে। আগের ভাইরাসটির চেয়ে এটি ৭০ শতাংশ বেশি হারে ছড়াচ্ছে।

করোনার নতুন এই ধরনের কারণে ব্রিটিশ সরকার গত শুক্রবার আবারও কঠোর লকডাউন জারি করেছে। এটি ব্রিটেন সরকারের মধ্যে উদ্বেগও তৈরি করেছে।

করোনার এই নতুন ধরনকে বিজ্ঞানীরা বলছেন, সার্স কোভ-২ (এসএআরএস-সিওভি-২)। এটি শরীরে ১৪ বার রূপ পরিবর্তন করে। মানব শরীরের যেসব কোষ ভাইরাস প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করে সেগুলোকেই আক্রমণ করে করোনার এই নতুন ধরন। বিজ্ঞানীরা বলছেন, করোনাভাইরাসের এ পর্যন্ত যতগুলো পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে তার মধ্যে এটি সবচেয়ে বড় পরিবর্তন।

মূলত তিনটি কারণে করোনাভাইরাসের নতুন এই ধরনটি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। কারণগুলো হলো- ১. এটি ভাইরাসের অন্য সংস্করণগুলোকে প্রতিস্থাপিত করছে, ২. এটির বিভাজন বা রূপান্তর ভাইরাসের কিছু অংশে পরিবর্তন আনে; যা গুরুত্বপূর্ণ এবং ৩. এসব বিভাজনের মধ্যে বেশ কিছু ল্যাবে পরীক্ষার পর দেখা গেছে এগুলো মানুষের দেহে কোষকে সংক্রমিত করার সক্ষমতা বাড়ায়। এই বৈশিষ্ট্যগুলোই ভাইরাসটিকে সহজে ছড়িয়ে পড়ার সক্ষমতা দেয় বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

ভাইরাসটির নতুন বৈশিষ্ট্য নিয়ে প্রাথমিক একটি বিশ্লেষণ প্রকাশিত হয়েছে এবং এতে ১৭টি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। ভাইরাসটির স্পাইক প্রোটিনে পরিবর্তন এসেছে, যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটির মাধ্যমেই ভাইরাসটি মানুষের শরীরে প্রবেশ করে।

ইউনিভার্সিটি অব নটিংহ্যামের ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক জোনাথন বল অবশ্য বলেছেন, এখন পর্যন্ত যে তথ্য জানা যাচ্ছে সেগুলো পর্যাপ্ত নয় এবং এগুলোর ভিত্তিতে দৃঢ় সিদ্ধান্তে পৌঁছানও সম্ভব নয় যে ভাইরাসটি আসলেই বিশালভাবে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে।

বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, গেল সেপ্টেম্বরে করোনাভাইরাসের নতুন এই ধরনটি (স্ট্রেইন) শনাক্ত হয়। নভেম্বর মাসে লন্ডনের এক–চতুর্থাংশ বাসিন্দা নতুন ধরনের ভাইরাসে সংক্রমিত হন। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি এসে সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে দুই-তৃতীয়াংশ হয়। যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হানকক বলেছেন, করোনার এই নতুন ধরন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এবং নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। তাই সরকারকে দ্রুত এবং কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়েছে।

নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক ও অস্ট্রেলিয়াতেও করোনার নতুন এই ধরন পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে দেশগুলোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন ডব্লিউএইচও কর্মকর্তারা।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি দেশ নতুন বৈশিষ্টের এই ভাইরাসের কারণে ব্রিটেন ভ্রমণ নিষিদ্ধ করেছে। সূত্র: বিবিসি, এবিসি নিউজ ও টাইমস অব ইন্ডিয়া

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ

ট্যাগ :

বরিশালে পেশাদার সাংবাদিকদের ৩৫ সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময়

করোনার নতুন ধরন কতোটা ভিন্ন, কেন ভয়ঙ্কর

প্রকাশিত : ০৯:৫৪:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২০

যুক্তরাজ্যে শনাক্ত হয়েছে কভিড-১৯-এর নতুন একটি ধরন (স্ট্রেইন)। ব্রিটিশ গবেষকরা বলছেন, ভাইরাসটি অনেক সহজে এবং দ্রুত ছড়াচ্ছে। আগের ভাইরাসটির চেয়ে এটি ৭০ শতাংশ বেশি হারে ছড়াচ্ছে।

করোনার নতুন এই ধরনের কারণে ব্রিটিশ সরকার গত শুক্রবার আবারও কঠোর লকডাউন জারি করেছে। এটি ব্রিটেন সরকারের মধ্যে উদ্বেগও তৈরি করেছে।

করোনার এই নতুন ধরনকে বিজ্ঞানীরা বলছেন, সার্স কোভ-২ (এসএআরএস-সিওভি-২)। এটি শরীরে ১৪ বার রূপ পরিবর্তন করে। মানব শরীরের যেসব কোষ ভাইরাস প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করে সেগুলোকেই আক্রমণ করে করোনার এই নতুন ধরন। বিজ্ঞানীরা বলছেন, করোনাভাইরাসের এ পর্যন্ত যতগুলো পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে তার মধ্যে এটি সবচেয়ে বড় পরিবর্তন।

মূলত তিনটি কারণে করোনাভাইরাসের নতুন এই ধরনটি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। কারণগুলো হলো- ১. এটি ভাইরাসের অন্য সংস্করণগুলোকে প্রতিস্থাপিত করছে, ২. এটির বিভাজন বা রূপান্তর ভাইরাসের কিছু অংশে পরিবর্তন আনে; যা গুরুত্বপূর্ণ এবং ৩. এসব বিভাজনের মধ্যে বেশ কিছু ল্যাবে পরীক্ষার পর দেখা গেছে এগুলো মানুষের দেহে কোষকে সংক্রমিত করার সক্ষমতা বাড়ায়। এই বৈশিষ্ট্যগুলোই ভাইরাসটিকে সহজে ছড়িয়ে পড়ার সক্ষমতা দেয় বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

ভাইরাসটির নতুন বৈশিষ্ট্য নিয়ে প্রাথমিক একটি বিশ্লেষণ প্রকাশিত হয়েছে এবং এতে ১৭টি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। ভাইরাসটির স্পাইক প্রোটিনে পরিবর্তন এসেছে, যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটির মাধ্যমেই ভাইরাসটি মানুষের শরীরে প্রবেশ করে।

ইউনিভার্সিটি অব নটিংহ্যামের ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক জোনাথন বল অবশ্য বলেছেন, এখন পর্যন্ত যে তথ্য জানা যাচ্ছে সেগুলো পর্যাপ্ত নয় এবং এগুলোর ভিত্তিতে দৃঢ় সিদ্ধান্তে পৌঁছানও সম্ভব নয় যে ভাইরাসটি আসলেই বিশালভাবে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে।

বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, গেল সেপ্টেম্বরে করোনাভাইরাসের নতুন এই ধরনটি (স্ট্রেইন) শনাক্ত হয়। নভেম্বর মাসে লন্ডনের এক–চতুর্থাংশ বাসিন্দা নতুন ধরনের ভাইরাসে সংক্রমিত হন। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি এসে সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে দুই-তৃতীয়াংশ হয়। যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হানকক বলেছেন, করোনার এই নতুন ধরন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এবং নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। তাই সরকারকে দ্রুত এবং কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়েছে।

নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক ও অস্ট্রেলিয়াতেও করোনার নতুন এই ধরন পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে দেশগুলোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন ডব্লিউএইচও কর্মকর্তারা।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি দেশ নতুন বৈশিষ্টের এই ভাইরাসের কারণে ব্রিটেন ভ্রমণ নিষিদ্ধ করেছে। সূত্র: বিবিসি, এবিসি নিউজ ও টাইমস অব ইন্ডিয়া

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ