আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা। অর্ন্তর্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে লন্ডনে বৈঠকের পর আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সিদ্ধান্ত হয়। এই ঘোষণার পর থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিচ্ছেন নির্বাচনি প্রস্তুতি। এলাকায় গণসংযোগ, সভা-সমাবেশে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
আসন্ন নির্বাচন ঘিরে ইতোমধ্যে প্রত্যেকটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার হাটবাজার থেকে শুরু করে গ্রাম থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্যাপক জনসংযোগ করতে দেখা যাচ্ছে প্রার্থীদের। অনেকেই বলছেন, এতদিন মানুষ তাদের প্রত্যাশিত প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেনি। কারণ ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। এবার মানুষ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন।
ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ। তৃণমূলে চলছে কৌশলী প্রচারণা। চায়ের দোকানগুলোতে জমে উঠেছে নির্বাচনী আলোচনা। সেই আলোচনায় শামিল হচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। পাশাপাশি দলের নীতি-নির্ধারণী মহলে চালাচ্ছেন লবিং।
কুষ্টিয়া এক সময়ে বিএনপির দুর্গ হিসেবে পরিচিত ছিল। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের নির্যাতন-নিপীড়ন ও দুঃশাসনে সব ওলটপালট হয়ে গেছে। দেড় দশক ভোটাধিকার বঞ্চিত ছিল জেলাবাসী।
জুলাই বিপ্লবের পর সেই সুযোগ ফিরে এসেছে। সবাই স্বপ্ন দেখছে উৎসব মুখর পরিবেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করার। তাদের আকাঙ্ক্ষা পূরণে নানা প্রতিশ্রুতি নিয়ে ভোটের মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
কুষ্টিয়া-১ আসনে ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগ জয়ী হলেও ১৯৭৯ সালে বিজয়ী হয় বিএনপি। পরে ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টি আসনটি দখল করে। ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে আবার বিএনপি জয়ী হলেও ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত টানা আওয়ামী লীগের দখলেই ছিল। বর্তমানে সরকার পতনের পর বিএনপি পুনরায় এই আসনটি পুনঃ দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
দৌলতপুর সংসদীয় আসনে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীতে নবীন প্রবীণের বেশ কয়েকজন এগিয়ে আছেন।
এখানে বেশ কয়েকজন জাতীয় কমিটির নেতাকর্মী অবস্থান করায় এ আসনটি শক্ত ঘাঁটি হিসাবে বিএনপির পরিচিতি লাভ করেছে। এদের মধ্যেও মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে আছেন, রেজা আহমেদ (বাচ্চু মোল্লা ) যিনি জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য। এছাড়াও বাচ্চু মোল্লার পিতা ও ছিলেন এখানের সাবেক প্রতিমন্ত্রী, পচা মোল্লা হিসাবে এলাকায় ছিল বিশেষ খ্যাতি। এই মুহূর্তে বাচ্চু মোল্লা দৌলতপুর থানা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায় তিনি তুমুল জনপ্রিয় একজন নেতা।
এরপর আছেন ঢাকা মহানগর উত্তর, যুবদলের আহবায়ক শরিফ উদ্দিন জুয়েল। শরিফ উদ্দিন জুয়েল বিগত সরকারের আমলে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে বিতাড়িত করার জন্য ঢাকা সহ সারা বাংলাদেশে দুর্গ গড়ে তোলেন। জাতীয় নেতা হিসাবে এলাকায় শরিফ উদ্দিন জুয়েলের রয়েছে বিশেষ খ্যাতি মনোনয়ন দৌড়ে তরুণ রাজনীতিবিদ হিসাবে তিনিও এগিয়ে আছেন।
অন্যান্য দলগুলোর প্রার্থী এ আসনে জামায়াতের মনোনয়ন পেয়েছেন মাওলানা বেলাল উদ্দিন, যিনি ইতিমধ্যেই মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। এছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (চরমোনাই) থেকে মুফতি আমিনুল ইসলাম এবং এনসিপির নেত্রী নুসরাত তাবাচ্ছুম প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কুষ্টিয়া-২ আসনঃকুষ্টিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দুই উপজেলা ভেড়ামারা ও মিরপুরকে নিয়ে গঠিত কুষ্টিয়া-২আসন। এই আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক তিন বারের জনপ্রিয় সংসদ সদস্য, কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, জাতীয় নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা, উন্নয়নের রূপকার আলহাজ্ব অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম। তিনি দলের ত্যাগী নেতা। দল থেকে নমিনেশন তিনি পাবেন এমন কথা জোরেশোরে শোনা যাচ্ছে। এই আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী জাতীয়তাবাদী কেন্দ্রীয় আইনজীবী ফোরামের দপ্তর সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ আব্দুর রউফ চৌধুরীর ছেলে রাগীব রউফ চৌধুরী। এছাড়া ঢাকা মহানগর মহিলাদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ফরিদা ইয়াসমিন। উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তৌহিদুল ইসলাম আলম মালিথা। এর বাইরে বিএনপির দীর্ঘদিনের জোটসঙ্গী জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মহাসচিব ও সাবেক সংসদ সদস্য আহসান হাবীব লিংকন মনোনয়নপ্রত্যাশী।
জামায়াত জেলা শাখার নায়েবে আমির ও মিরপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল গফুরকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। এছাড়া বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের প্রার্থী হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ আরিফুজ্জামান আরিফ, খেলাফত মজলিসের প্রার্থী জেলা সভাপতি মুফতি আবদুল হামিদ এবং ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ আলী।
জনশ্রুতি রয়েছে ,কুষ্টিয়া-২ আসনের সাধারণ ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশাজীবী মানুষের সাথে সুসম্পর্ক, গরিব দুঃখী মেহনতি দিনমজুরের আস্থাভাজন ও প্রিয় মানুষ হিসেবে খ্যাত বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম। তিনি শুধু একজন রাজনৈতিক নেতা নন, তিনি একদিকে সংগ্রামের প্রতীক অন্যদিকে উন্নয়নের কারিগর ও ভেড়ামারা মিরপুর এলাকার উন্নয়নের রূপকার। ভেড়ামারা- মিরপুর এলাকার তৃণমূল পর্যায়ের নেতা কর্মীদের অভিভাবক হিসাবে খ্যাত। তাই সবাই তাকে ভালোবাসেন। এই আসনে সংসদ নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হিসেবে দল থেকে নমিনেশন পাবেন এমনটাই আশা করছেন এলাকাবাসী।
ভোটাররা বলছেন অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম নমিনেশন না পেলে বা তাকে ছাড়া অন্য কোন প্রার্থীকে নমিনেশন দিলে শতভাগ ওই প্রার্থী হেরে যাবেন। এমন কথা নারী-পুরুষ সহ প্রত্যেকটি মানুষের মুখে মুখে । অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম বিএনপি দলের ত্যাগী নেতা। দল থেকে নমিনেশন তিনিই পাবেন এমন কথা জোরেশোরে শোনা যাচ্ছে।বিএনপির প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম মিরপুর ভেড়ামারায় ব্যাপক গণসংযোগ করছেন। তিনি বলেন, তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর এলাকায় সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন করেছি। তার আশা আসন্ন নির্বাচনে দল থেকে তিনিই মনোনয়ন পাবেন।
অপর দিকে ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের আইনি সহয়তা দিয়ে আসছি। দলের জন্য কাজ করছি। দল আমাকে মনোনয়ন দিলে এই আসনে আমি নির্বাচন করবাে।
ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, হাইকমান্ডের অনুমতি নিয়ে আমি এলাকায় কাজ করছি। খুলনা বিভাগের একমাত্র মহিলা প্রার্থী হিসেবে আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব।কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনঃকুষ্টিয়া সদর- ৩ এই আসনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ আসন। এই আসনে যিনি নির্বাচিত হন তিনিই জেলার সকল ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করে চলেন। এই আসনে বিএনপির শক্তিশালী মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন- অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন, তিনি দল থেকে নমিনেশন পাবেন এমন কথা জোরেশোরে শোনা যাচ্ছে। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন আহমেদ, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার জাকির হোসেন সরকারও কুষ্টিয়ার শক্তিশালী সংগঠক ও মনোনয়ন প্রত্যাশী।কুতুব উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমি বিএনপির দীর্ঘদিনের কর্মী হিসেবে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী। আশা করি আগামী নির্বাচনে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে (নেতাকর্মীরা) দলীয় প্রার্থীকে জয়ী করে কুষ্টিয়ার সংসদীয় আসনগুলো খালেদা জিয়াকে উপহার দিতে পারব।
কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সদস্য সচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার বলেন, দল যদি আমাকে যোগ্য প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয় তাহলে বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হয়ে কুষ্টিয়ার সদর ৩ আসনটি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ফিরিয়ে দিতে পারব। কুষ্টিয়ার জনগণ সহ বিএনপি’র নেতা কর্মীরা আমার সাথে আছে। আমি যদি নির্বাচিত হই কুষ্টিয়ার উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবো।আমি ইতিমধ্যেই কুষ্টিয়ার উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখে চলেছি। আমি স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট সরকারের শাসন আমলে মামলা হামলার শিকার হয়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও আন্দোলন সংগ্রামে মাঠে ছিলাম।
জামায়াত প্রখ্যাত ইসলামি বক্তা মুফতি আমির হামজাকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। তিনি ভোটের লড়াইয়ে কুষ্টিয়া ৩ আসনের গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত মাঠ সষে বেড়াচ্ছেন। বিএনপি’র পাশাপাশি তিনিও মাঠ দখলে রাখার জন্য গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন। ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আহম্মদ আলী এবং খেলাফত মজলিসের প্রার্থী অধ্যাপক সিরাজুল হকও রয়েছেন মাঠে।
কুষ্টিয়া-৪ আসনঃকুষ্টিয়ার মধ্যে এই আসলটিও গুরুত্বপূর্ণ। এ আসনটি এক সময় বিএনপি’র দখলে থাকলেও দীর্ঘ ১৬ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় একপর্যায়ে কোণঠাষার মধ্যে ছিল বিএনপি’র নেতাকর্মীরা। কিন্তু গত বছরের ৫-ই আগস্টের পর থেকে আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে বিএনপি’র নেতাকর্মীরা।
কুষ্টিয়া জেলার প্রবেশদ্বার খোকসা উপজেলা ও বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী উপজেলা কুমারখালী, এই দুই উপজেলা নিয়ে গঠিত কুষ্টিয়ার-৪ আসন। এ আসনটিতে এবার দলীয়
মনোনয়ন প্রত্যাশী ৪ জনঃসৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী,প্রবীণ রাজনীতির স্থিতিশীল ভরসা, দীর্ঘদিনের রাজনীতিক, সাবেক সংসদ সদস্য হিসেবে তার রয়েছে একটি সুদৃঢ় ভোট ব্যাংক। বয়স ও অভিজ্ঞতার কারণে স্থানীয় রাজনীতিতে তিনি একজন “স্থির” ও “পরীক্ষিত” নেতা হিসেবে পরিচিত। ভোটারদের একটি বড় অংশ তার পক্ষে কাজ করছে বলেও এলাকায় আলোচনা শোনা যাচ্ছে। দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ও প্রবীণ কর্মীদের আনুগত্য তাকে শক্ত অবস্থানে রেখেছে।
হাফেজ মোঃ মঈন উদ্দিনঃতরুণদের উদ্দীপনায় ‘নতুন বিপ্লবের’ সম্ভাবনা অন্যদিকে কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য হাফেজ মোঃ মঈন উদ্দিনকে ঘিরে তরুণদের মাঝে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। সদকী ইউনিয়নের মহিষখোলা গ্রামে জন্ম নেওয়া এই তরুণ নেতা কয়েক হাজার কর্মীর মটরসাইকেল বহর নিয়ে শোডাউন করে ভোটের মাঠে শক্তিশালী বার্তা দিয়েছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, কুষ্টিয়া-৪ আসনে যদি তরুণ ভোটাররা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে এবং পরিবেশবান্ধব উন্নয়নকেন্দ্রিক রাজনীতিকে গুরুত্ব দেয়, তবে হাফেজ মোঃ মঈন উদ্দিনকে অবহেলা করার কোনো সুযোগ থাকবে না। তিনি এখন অনেকের কাছেই “বুলেটের নয়, ব্যালট ও সবুজের বাংলাদেশ” গড়ার প্রতীক হয়ে উঠছেন।
মুক্তিযোদ্ধা আনসার প্রামাণিকঃঅভিজ্ঞতা ও কুমারখালী কেন্দ্রিক প্রভাব, চারবার কুমারখালী পৌরসভার মেয়র থাকা এবং মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সম্মানজনক অবস্থান আনসার প্রামাণিককে ভিন্ন উচ্চতায় রেখেছে। কুমারখালীতে তার ব্যক্তিগত প্রভাব ও নেটওয়ার্ক এখনো শক্তিশালী। স্থানভেদে ভোটারদের মাঝে তার গ্রহণযোগ্যতা ব্যাপক । দলীয় ভেতরে প্রবীণ নেতৃত্বের অংশ হিসেবে তিনি বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের একজন প্রতিদ্বন্দ্বী। নুরুল ইসলাম আনসার প্রামাণিক প্রতিদিন বিএনপিকে আরও শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে ব্যাপক গল্প সংযোগ সভা সমাবেশ করে দলকে সামনের দিকে এগিয়ে নিচ্ছেন। এই আসনটি বিএনপিকে ধরে রাখতে হলে নুরুল ইসলাম আনসার প্রামাণিকের বিকল্প নেই। তিনি প্রার্থী হলে এই আসনটি ফিরে পাবে বিএনপি। এমনটি আশা করছেন সাধারণ জনগণ ভোটাররা।
আরেক প্রার্থী শেখ সাদী বর্তমান কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি’র যুগ্ন আহবায়ক হিসেবে আছে। তিনিও মনোনয়নপ্রত্যাশী । তিনি বিএনপির হাইকমান্ডের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। গ্রামীণ ভোটারদের কাছে শক্তভাবে জায়গা করে নিতে কাজ করে চলেছে। কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে তার সক্রিয়তা রয়েছে। অনেকেই মনে করেন, কেন্দ্রীয় পর্যায়ের তার প্রভাবই তাকে মনোনয়ন এনে দেবে।
অপরদিকে জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে কুমারখালী উপজেলা শাখার নায়েবে আমির ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আফজাল হোসাইনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের প্রার্থী ফজলে নূর ডিকো, খেলাফত মজলিসের প্রার্থী মাওলানা আলী আশরাফ এবং ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী আনোয়ার খান।
কুষ্টিয়া-৪ আসনে বিএনপির এই চারজন নেতার মধ্যে কে দলীয় মনোনয়ন পাবেন তা নির্ভর করছে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের ওপর। তবে একাধিক গ্রুপিং ও কোন্দল বিএনপিকে জটিল অবস্থায় ফেলছে। অনেক ভোটারই আশঙ্কা করছেন, বিএনপি ঐক্যবদ্ধ না হলে জামায়াতের প্রার্থী আফজাল হোসাইন সহজেই বিজয়ী হতে পারেন। জামায়াতে ইসলামের প্রার্থী আফজাল হোসাইন দলকে শক্তিশালী করে আগামী নির্বাচনে জয়লাভ করবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। তিনিও রাত-দিন মাঠ চোষে সাধারণ জনগণকে জামাতে ইসলামীর পক্ষে নিয়ে আসার জন্য ব্যাপক গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন।
তবুও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, যদি বিএনপি হাইকমান্ড সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিতে পারে এবং বিভক্ত নেতৃত্বকে ঐক্যবদ্ধ করতে সক্ষম হয়, তাহলে এই আসনে ধানের শীষ ও জামায়াতের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।
ডিএস./























