দক্ষিণ এশিয়ার তৃতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য করোনাভাইরাসের টিকা উৎপাদনের অনুমতি পেয়েছে বাংলাদেশের গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড। এর আগে ভারতের দুটি ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমোদন পেয়েছে। গ্লোব বায়োটেকের আবিস্কৃত ভ্যাকসিন বঙ্গভ্যাক্স-এর ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সফল হলেই করোনা ভ্যাকসিনের বাণিজ্যিক উৎপাদনে যেতে পারবে বাংলাদেশ।
বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থার ক্লিনিক্যাল ডেভলপমেন্ট ল্যান্ডস্কেপ প্রতিবেদন অনুসরণ করলে, গ্লোব বায়োটেক বিশ্বের ৪৩তম প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেদের আবিস্কৃত ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে যাচ্ছে। গ্লোব বায়োটেকের পূর্বে ৪২টি প্রতিষ্ঠানের ভ্যাকসিন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে গেছে।
বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থার প্রি-ক্লিনিক্যাল ডেভলপমেন্ট ল্যান্ডস্কেপে গ্লোব বায়োটেকের দুটি ভ্যাকসিন ছিল। এর মধ্যে একটি ছিল ডিএনএ বেইজড ভ্যাকসিন, অন্যটি ছিল আরএনএ বেইজড ভ্যাকসিন।
২৮ ডিসেম্বর গ্লোব বায়োটেককে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। বুধবার এই তথ্য গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ইনচার্জ ড. আসিফ মাহমুদ।
তিনি বলেন “ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য টিকা উৎপাদনের যে লাইসেন্স, তা আমরা পেয়েছি। এখন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদে (বিএমআরসি) প্রটোকল জমা দেব সামনের সপ্তাহে। এরপর ট্রায়াল শুরু করা হবে।” চলতি জানুয়ারি মাসের মধ্যেই গ্লোবের টিকা বঙ্গভ্যাক্সের ‘ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল’ শুরু করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন ড. আসিফ।
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১৭২টি কোম্পানি টিকা তৈরির চেষ্টায় আছে। এর মধ্যে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে আছে ৪২টি কোম্পানি। ভ্যাকসিনের দৌড়ে থাকা একমাত্র বাংলাদেশি কোম্পানি গ্লোব বায়োটেক। ভারতের সাতটি কোম্পানি প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে ছিল যেগুলোর মধ্যে দুটি কোম্পানি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমোদন পেয়েছে। এগুলো হলো সেরাম ইন্সটিটিউট অব ইন্ডিয়ার কোভিশিল্ড ভ্যকসিন ও ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন।
শুরুতে গ্লোব বায়োটেকের টিকার নাম ‘ব্যানকোভিড’ থাকলেও ডিসেম্বরে তা পরিবর্তন করে ‘বঙ্গভ্যাক্স’ রাখা হয়। গত বছরের ৩ জুলাই তেজগাঁওয়ে গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে গ্লোব বায়োটেকের পক্ষ থেকে করোনাভাইরাসের টিকা তৈরির চেষ্টার ঘোষণা দেওয়া হয়। পরে ১০ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ইঁদুরের ওপর প্রয়োগ করে তাদের ওই সম্ভাব্য টিকা ‘কার্যকর ও সম্পূর্ণ নিরাপদ’ প্রমাণিত হয়েছে।
টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য আইসিডিডিআর, বির সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) করলেও পরে তা বাতিল করে গ্লোব বায়োটেক। গত ১ ডিসেম্বর গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ চুক্তি বাতিলের কথা জানিয়ে বলেন, আইসিডিডিআর, বির অনাগ্রহ দেখে তারা ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এদিকে গ্লোব বায়োটেকের টিকা ক্রয়ের আগ্রহ দেখিয়েছে শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার ও নেপাল সহ অনেকগুলো দেশ। নেপাল ২০ লাখ ডোজ টিকা সংগ্রহের জন্য গ্লোব বায়োটেকের সঙ্গে চুক্তিও স্বাক্ষর করেছে।
বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর


























