০১:০৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০১ জানুয়ারী ২০২৬

হারানো স্বজনদের ফেরত পেল পাঁচ পরিবার

শুক্রবার আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে সকাল থেকেই স্বজনদের অপেক্ষা কখন ফিরবে সেই পরিবারের হারিয়ে যাওয়া আপন মানুষ‌। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও দীর্ঘদিন তাঁরা নিখোঁজ ছিলেন। অবশেষে আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ যখন তাদের আপনজনদের ফেরত পেয়েছেন বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্ত রেখার জিরো পয়েন্টে। সাথে সাথে জড়িয়ে ধরে দীর্ঘক্ষন দীর্ঘশ্বাস ছেড়েছেন ৫ টি পরিবারের লোকজন। হারিয়ে যাওয়া লোকদের মধ্যে ৩ নারী ও ২ পুরুষ বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিলেন সে সময়। তারা হলেন- চট্টগ্রামের সন্তোষ দেব, নারায়ণগঞ্জের বিজয় চুনু, মানিকগঞ্জের ময়না বেগম, পটুয়াখালীর রোজিনা বেগম, এবং কুমিল্লার কুলসুম বেগম। ত্রিপুরার বাংলাদেশ সরকারি হাই কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ভারতে হারিয়ে যাওয়া ৫ বাংলাদেশি মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ত্রিপুরায় বিভিন্ন স্পটে দীর্ঘদিন থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হন। পরে আদালতের নির্দেশে আগরতলার মর্ডান সাইক্রিয়াটিক হাসপাতালে তারা চিকিৎসাধীন ছিলেন। বর্তমানে তাদের মধ্যে ৪জন সুস্থ ও স্বাভাবিক আছেন। আর বিজয় চুনু মানসিকভাবে সুস্থ থাকলেও শারীরিকভাবে অসুস্থ রয়েছেন। তিনি অন্যের সাহায্য ছাড়া হাঁটতে পারেছে না। দেশে ফেরত আসা রোজিনা আক্তারের ভাই সাহাব উদ্দিন জানান, বিগত ১২ বছর আগে আমার বোন হারিয়ে যায়, পরে পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারি বুন আগরতলার মানসিক হাসপাতালে আছেন। আমরা ধারণা করছি আমাদের বোনকে পাচার করা হয়েছিল। ময়না বেগমের ছেলে মনির জানান, আমার মা গত ৯ বছর আগে হারিয়ে যায়। প্রথমে ভেবেছিলাম কোন আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে গেছেন। কিন্তু অনেক খোঁজাখুঁজি করে পায়নি। পরে পুলিশ বাড়িতে খোঁজ নিতে এলে জানতে পারি মা ভারতের আগরতলায় আছেন। এত বছর পর মাকে পেয়ে খুব ভালো লাগছে। এজন্য দুই দেশের সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বিজয় চুনুর বড় ভাই আক্কাছ মিয়া জানান, আমার ছোট ভাই গত ৫ বছর আগে হারিয়ে যাই, আজকে ভাইকে খুঁজে পেয়ে আমি অনেক খুশি আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাচ্ছি এবং দুই দেশের সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আখাউড়া স্থলবন্দরের শূন্য রেখায় ফেরত আসাদের গ্রহণ করার সময় উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরায় নিযুক্ত বাংলাদেশ সরকারি হাই কমিশনার কার্যালয়ের সহকারী রাষ্ট্রদূত আরিফ মোহাম্মদ, প্রথম সচিব মোঃ রেজাউল হক চৌধুরী, এস এম আসাদুজ্জামান, আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোমানা আক্তার, উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মোঃ সাইফুল ইসলাম, বেসরকারি সংস্থা ব্র্যা মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের কর্মসূচি প্রধান শরিফুল হাসান, মানবাধিকার কর্মী সৈয়দ খায়রুল আলমসহ ভারত ফেরত ব্যক্তিদের প্ররিবারের সদস্যরা। পরে দেশে ফেরত আসা পরিবারের কাছে ব্রাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম এর পক্ষ থেকে অর্থ সহায়তা এবং কাউন্সিলিং সেবা দেওয়া হয়।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

স্বামীর কবরের পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত আপসহীন নেত্রী

হারানো স্বজনদের ফেরত পেল পাঁচ পরিবার

প্রকাশিত : ০৭:০৩:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ এপ্রিল ২০২২

শুক্রবার আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে সকাল থেকেই স্বজনদের অপেক্ষা কখন ফিরবে সেই পরিবারের হারিয়ে যাওয়া আপন মানুষ‌। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও দীর্ঘদিন তাঁরা নিখোঁজ ছিলেন। অবশেষে আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ যখন তাদের আপনজনদের ফেরত পেয়েছেন বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্ত রেখার জিরো পয়েন্টে। সাথে সাথে জড়িয়ে ধরে দীর্ঘক্ষন দীর্ঘশ্বাস ছেড়েছেন ৫ টি পরিবারের লোকজন। হারিয়ে যাওয়া লোকদের মধ্যে ৩ নারী ও ২ পুরুষ বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিলেন সে সময়। তারা হলেন- চট্টগ্রামের সন্তোষ দেব, নারায়ণগঞ্জের বিজয় চুনু, মানিকগঞ্জের ময়না বেগম, পটুয়াখালীর রোজিনা বেগম, এবং কুমিল্লার কুলসুম বেগম। ত্রিপুরার বাংলাদেশ সরকারি হাই কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ভারতে হারিয়ে যাওয়া ৫ বাংলাদেশি মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ত্রিপুরায় বিভিন্ন স্পটে দীর্ঘদিন থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হন। পরে আদালতের নির্দেশে আগরতলার মর্ডান সাইক্রিয়াটিক হাসপাতালে তারা চিকিৎসাধীন ছিলেন। বর্তমানে তাদের মধ্যে ৪জন সুস্থ ও স্বাভাবিক আছেন। আর বিজয় চুনু মানসিকভাবে সুস্থ থাকলেও শারীরিকভাবে অসুস্থ রয়েছেন। তিনি অন্যের সাহায্য ছাড়া হাঁটতে পারেছে না। দেশে ফেরত আসা রোজিনা আক্তারের ভাই সাহাব উদ্দিন জানান, বিগত ১২ বছর আগে আমার বোন হারিয়ে যায়, পরে পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারি বুন আগরতলার মানসিক হাসপাতালে আছেন। আমরা ধারণা করছি আমাদের বোনকে পাচার করা হয়েছিল। ময়না বেগমের ছেলে মনির জানান, আমার মা গত ৯ বছর আগে হারিয়ে যায়। প্রথমে ভেবেছিলাম কোন আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে গেছেন। কিন্তু অনেক খোঁজাখুঁজি করে পায়নি। পরে পুলিশ বাড়িতে খোঁজ নিতে এলে জানতে পারি মা ভারতের আগরতলায় আছেন। এত বছর পর মাকে পেয়ে খুব ভালো লাগছে। এজন্য দুই দেশের সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বিজয় চুনুর বড় ভাই আক্কাছ মিয়া জানান, আমার ছোট ভাই গত ৫ বছর আগে হারিয়ে যাই, আজকে ভাইকে খুঁজে পেয়ে আমি অনেক খুশি আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাচ্ছি এবং দুই দেশের সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আখাউড়া স্থলবন্দরের শূন্য রেখায় ফেরত আসাদের গ্রহণ করার সময় উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরায় নিযুক্ত বাংলাদেশ সরকারি হাই কমিশনার কার্যালয়ের সহকারী রাষ্ট্রদূত আরিফ মোহাম্মদ, প্রথম সচিব মোঃ রেজাউল হক চৌধুরী, এস এম আসাদুজ্জামান, আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোমানা আক্তার, উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মোঃ সাইফুল ইসলাম, বেসরকারি সংস্থা ব্র্যা মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের কর্মসূচি প্রধান শরিফুল হাসান, মানবাধিকার কর্মী সৈয়দ খায়রুল আলমসহ ভারত ফেরত ব্যক্তিদের প্ররিবারের সদস্যরা। পরে দেশে ফেরত আসা পরিবারের কাছে ব্রাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম এর পক্ষ থেকে অর্থ সহায়তা এবং কাউন্সিলিং সেবা দেওয়া হয়।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর