আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চট্টগ্রাম–১৫ (সাতকানিয়া–লোহাগাড়া) সংসদীয় আসনে জমে উঠেছে নির্বাচনী মাঠ। মনোনয়নপত্র দাখিলের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে ভোটের লড়াই, যা ইতোমধ্যে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা ও আগ্রহ সৃষ্টি করেছে।
এই আসন থেকে এখন পর্যন্ত তিনজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তারা হলেন জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মনোনীত প্রার্থী নাজমুল মোস্তফা আমিন এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী শরিফুল আলম চৌধুরী। একাধিক প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের অংশগ্রহণে এবারের নির্বাচন যে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হতে যাচ্ছে, তা ইতোমধ্যেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই আসনটি বরাবরই প্রতিযোগিতামূলক হিসেবে পরিচিত। সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া দুটি উপজেলার সমন্বয়ে গঠিত এই সংসদীয় এলাকায় ভোটাররা কেবল দলীয় পরিচয় নয়, প্রার্থীদের ব্যক্তিগত গ্রহণযোগ্যতা, এলাকার উন্নয়নে ভূমিকা এবং জনসম্পৃক্ততাকেও গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। ফলে কে কতটা জনসমর্থন আদায় করতে পারবেন, সেটিই নির্বাচনের ফলাফলে বড় প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের মতে, এই আসনে মূল লড়াই হতে পারে দুই শক্তিশালী প্রার্থী আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী ও নাজমুল মোস্তফা আমিনের মধ্যে। উভয় প্রার্থীরই এলাকায় নিজস্ব রাজনৈতিক বলয়, সংগঠনিক শক্তি এবং দীর্ঘদিনের সক্রিয়তা রয়েছে। অন্যদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী শরিফুল আলম চৌধুরীও ধর্মভিত্তিক ভোটব্যাংকের ওপর ভর করে ভালো অবস্থান তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছেন।
জাতীয় পর্যায়েও এবারের ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে ব্যাপক রাজনৈতিক তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) মোট ৫১টি রাজনৈতিক দলের ২ হাজার ৯০ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেছেন আরও ৪৭৮ জন।
নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী, ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই কার্যক্রম চলবে। আগামী ২০ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। এরপর যাচাই-বাছাই ও প্রত্যাহার প্রক্রিয়া শেষে চূড়ান্ত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে ভোটগ্রহণ।
নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই সাতকানিয়া–লোহাগাড়ার ভোটারদের মধ্যে বাড়ছে কৌতূহল ও আগ্রহ। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, যোগাযোগ অবকাঠামো, কর্মসংস্থান ও সামগ্রিক উন্নয়ন—এই বিষয়গুলোকে সামনে রেখে ভোটাররা তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে চান বলে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক সমীকরণ, দলীয় শক্তি ও জনসমর্থনের বিচারে কে হবেন এই জনপদের আগামী দিনের অভিভাবক সেই প্রশ্নের উত্তর জানতে এখন অপেক্ষায় পুরো সাতকানিয়া–লোহাগাড়া।
জামায়াত প্রার্থী আলহাজ্ব শাহাজান চৌধুরী বলেন,৫৪ বছরের রাজনৈতিক জীবনে দীর্ঘ চার দশকেরও বেশি সময় তিনি সাতকানিয়া লোহাগাড়ার উন্নয়নের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, অথচ তাকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকার বারবার গ্রেফতার করে কারাবন্দি করেছিল, ৩৬ জুলাইয়ের গণ আন্দোলনের মাধ্যমে সেই দুঃশাসনের অবসান হয়েছে।তিনি বলেন এখন আর বিভক্তির রাজনীতি নয়, সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে সুন্দর একটি দেশ গড়ার জন্য একসাথে কাজ করব।
বিএনপির মনোনীত প্রার্থী নাজমুল মোস্তফা আমিন বলেন, দীর্ঘদিন সাতকানিয়া-লোহাগাড়া অবহেলিত, উন্নয়ন বঞ্চিত,অতীতের এমপিরা এক্ষেত্রে আশানুরূপ উন্নয়ন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। নির্বাচিত হলে সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার উন্নয়নে ১শ’ বছরের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। মাদক, কিশোর গ্যাং দমনে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হবে। সাতকানিয়া লোহাগাড়ার উন্নয়নে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক সম্প্রসারণে ভূমিকা, যানজট নিরসন, বাস টার্মিনাল নির্মাণ, গণশৌচাগার নির্মাণ করা হবে।
ডিএস./





















