০৪:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ভুলতা-মুড়াপাড়া সড়ক যেন মরণ ফাঁদ!

 নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা-মুড়াপাড়া সড়কটি অত্যন্ত একটি গুরুত্বপুর্ণ সড়ক। প্রায় ৬ কিলোমিটার সড়কের উভয় পাশে ছোট বড় সবমিলিয়ে অর্ধশতাধীক শিল্প কারখানা রয়েছে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক থেকে রুপসী-কাঞ্চন সড়কে সংযোগ হয়েছে সড়কটি। দীর্ঘ ১০ বছর হলো সড়ক উন্নয়নের মুখ দেখেনি। সড়ক ও জনপদ আর এলজিইডির চিঠি চালাচালি আর স্থানীয় জনটপ্রতিনিধির সড়ক উন্নয়নের দাবীতে আবেদনেই কেটে গেছে বিগত ১০ বছর। যানজট ও খানাখন্দে চরম ভোগান্তি এখন নিত্যদিনের। শিল্প কারখানার অতিরিক্ত লোডবাহী গাড়ি চলাচলে চরম ব্যহত হচ্ছে। দ্রুত সড়ক প্রশস্থ্যকরণ ও মেরামতের দাবি স্থানীয় শিল্প মালিক ও স্থানীয় এলাকাবাসীর।

স্থানীয় পথচারী, বাসিন্দা, শিল্পকারখানার মালিক ও গাড়ী চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভুলতা মুড়াপাড়া ৬ কিলোমিটার সড়কটি সর্বশেষ ২০১১ সালের শেষের দিকে পূর্ণনির্মান নির্মাণ হয়েছিলো । এর পর ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও কোন প্রকার উন্নয়ন কাজ করেননি সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষ । তবে মাঝে মধ্যে ইট সুরকী দিয়ে শিল্প মালিক আর জনপ্রতিনিধিদের উদ্যোগে কোনরূপ মেরামত হলেও সড়কটি চলাচল অনুপযোগী রয়ে গেছে। অথচ মাত্র ১৮ ফুট প্রশস্থ্য সড়কটিতে প্রতিদিন হাজারো যানবাহন চলাচল করছে। এসব যানবাহনের মধ্যে বেশির ভাগ রয়েছে শিল্প কারখানা মালামাল ও পাথর বালি বহনে ব্যবহৃত ভারী যানবাহন। আর এই ৬ কিলোমিটার সড়কে যাতায়াতে সময় লাগার কথা মাত্র ১৫ মিনিট। সেখানে সময় লাগছে এক থেকে দুই ঘন্টা।

কোন কোন সময় তিন ঘন্টা সময় পর্যন্ত লেগে যায়। তবে, সওজের মালিকানাধীন থাকায় দাপ্তরিক জটিলতা তৈরি হয়। এ জটিলতা কাটাতে আবেদন আর চিঠি চালাচালিতে সীমাবদ্ধ রয়েছে গত ১০ বছর ধরে উভয় দপ্তরের কার্যক্রম । হাজী এখলাছ উদ্দিন ভুইয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ুয়া শিক্ষার্থী সোয়াদা ইসলাম বলেন, আমি বাড়ি ভায়েলা গ্রামে। ভুলতা-মুড়াপাড়া সড়ক দিয়ে ভুলতা বাসষ্টেশন থেকে স্কুল বাসে উঠি। প্রায় সময় এ সড়কের খানাখন্দে রিক্সা অটো উল্টে দুর্ঘটনার শিকার হই আমরা। আবার অনেক সময় যানজটে আটকা পড়ে স্কুল বাস মিস করি। সড়কটি মেরামত ও প্রশস্থ্যকরণ হলে সকলের জন্য ভালো হতো। মুদিদোকানদার মতিন প্রধান বলেন, আমি আর কি বলবো। ভুলতা-মুড়াপাড়া সড়কের পাশে আমার দোকান। দোকানের সামনে খানাখন্দ হয়ে পুকুরে পরিণতি হয়েছে। এ কারনে দোকান খুলতে পারছিনা। দোকান খুললে কাঁদা ছিটে আসে। এসব কারনে এ সড়কের দুই পাশের অনেকেই দোকানপাট বন্ধ রাখে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, শুধুমাত্র ভুলতা মুড়াপাড়া সড়কের উভয় পাশে রয়েছে ছোটবড় সব মিলিয়ে প্রায় অর্ধশতাধীক শিল্পকারখানা। এর মধ্যে এসিআই সল্ট, সিম গ্রুপ, এনডিই, ঔষুধ উৎপাদন কোম্পানি এস কে এফ, গ্যালকো স্টীল, মীর সিমেন্ট, ওয়াটা ক্যামিকেল, ক্রিয়েটিভ পেপার মিলস, অনন্ত পেপার মিলস, রূপসী কনক্রিট, ছাত্তার জুট মিলস, আরএফএল কারখানা ও গোডাউনসহ বিভিন্ন বৃহত্তর কোম্পানির মালবাহী গাড়ি চলাচল করে প্রায় ২৪ ঘন্টা। ১৮ ফুট প্রশস্থ্য সড়কটিতে সারাদিনই যানজট তৈরী হয়ে থাকে। পুরো সড়ক জুড়েই খানাখন্দে ভরা। এসব খানাখন্দে প্রতিদিনই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন জনসাধারন। কোন কোন স্থানে পুকুরে পরিণতি হয়েছে। ইট সুরকি দিয়ে কিছু কিছু জায়গায় মেরামত করা হলেও সপ্তাহ খানেকের মধ্যে সেই আগের মতোই হয়ে যাচ্ছে। এ সড়কে ভোগান্তি যেন শেষনেই।

তবে, এ ব্যপারে রূপগঞ্জ উপজেলা এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী জামালউদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভুলতা-মুড়াপাড়া সড়কটি সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের আওতাধীন। এলজিইডির হলে ১০ বছর পুর্বেই প্রশস্থ্যকরণ ও মেরামত হয়ে যেতো। সড়ক ও জনপদের হওয়াতে আমরা হাত দিতে পারছিনা। তাই এ সড়কটির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে এলজিইডিকে দেয়ার জন্য। যাতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাজ করা যায়। আর এলজিইডিতে দিলে ৪৮ ফুট প্রশস্থকরণ করা হবে। যেহেতু ভারী যানবাহন চলে তাই সড়ক টেকসই করতে ১৮ ইঞ্চি আরসিসি ঢালাই করে সড়ককে মজবুত করা হবে। যাতে ভারী যানচলাচলেও কোন অসুবিধা না হয়।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ইকবাল মেহেদী বলেন,রামপুরা ভুলতা সড়কটি কেন ঝুলে আছে তা জানা নেই। তবে,একটি চিঠির আলোকে আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের একটি নির্দেশনা পেয়েছি। এ
সড়কটি বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্ত না পেলে কোন কিছু বলা যাবে না। তবে, দাপ্তরিক কাজ চলমান রয়েছে।

 

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

ভুলতা-মুড়াপাড়া সড়ক যেন মরণ ফাঁদ!

প্রকাশিত : ১২:১৭:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

 নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা-মুড়াপাড়া সড়কটি অত্যন্ত একটি গুরুত্বপুর্ণ সড়ক। প্রায় ৬ কিলোমিটার সড়কের উভয় পাশে ছোট বড় সবমিলিয়ে অর্ধশতাধীক শিল্প কারখানা রয়েছে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক থেকে রুপসী-কাঞ্চন সড়কে সংযোগ হয়েছে সড়কটি। দীর্ঘ ১০ বছর হলো সড়ক উন্নয়নের মুখ দেখেনি। সড়ক ও জনপদ আর এলজিইডির চিঠি চালাচালি আর স্থানীয় জনটপ্রতিনিধির সড়ক উন্নয়নের দাবীতে আবেদনেই কেটে গেছে বিগত ১০ বছর। যানজট ও খানাখন্দে চরম ভোগান্তি এখন নিত্যদিনের। শিল্প কারখানার অতিরিক্ত লোডবাহী গাড়ি চলাচলে চরম ব্যহত হচ্ছে। দ্রুত সড়ক প্রশস্থ্যকরণ ও মেরামতের দাবি স্থানীয় শিল্প মালিক ও স্থানীয় এলাকাবাসীর।

স্থানীয় পথচারী, বাসিন্দা, শিল্পকারখানার মালিক ও গাড়ী চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভুলতা মুড়াপাড়া ৬ কিলোমিটার সড়কটি সর্বশেষ ২০১১ সালের শেষের দিকে পূর্ণনির্মান নির্মাণ হয়েছিলো । এর পর ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও কোন প্রকার উন্নয়ন কাজ করেননি সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষ । তবে মাঝে মধ্যে ইট সুরকী দিয়ে শিল্প মালিক আর জনপ্রতিনিধিদের উদ্যোগে কোনরূপ মেরামত হলেও সড়কটি চলাচল অনুপযোগী রয়ে গেছে। অথচ মাত্র ১৮ ফুট প্রশস্থ্য সড়কটিতে প্রতিদিন হাজারো যানবাহন চলাচল করছে। এসব যানবাহনের মধ্যে বেশির ভাগ রয়েছে শিল্প কারখানা মালামাল ও পাথর বালি বহনে ব্যবহৃত ভারী যানবাহন। আর এই ৬ কিলোমিটার সড়কে যাতায়াতে সময় লাগার কথা মাত্র ১৫ মিনিট। সেখানে সময় লাগছে এক থেকে দুই ঘন্টা।

কোন কোন সময় তিন ঘন্টা সময় পর্যন্ত লেগে যায়। তবে, সওজের মালিকানাধীন থাকায় দাপ্তরিক জটিলতা তৈরি হয়। এ জটিলতা কাটাতে আবেদন আর চিঠি চালাচালিতে সীমাবদ্ধ রয়েছে গত ১০ বছর ধরে উভয় দপ্তরের কার্যক্রম । হাজী এখলাছ উদ্দিন ভুইয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ুয়া শিক্ষার্থী সোয়াদা ইসলাম বলেন, আমি বাড়ি ভায়েলা গ্রামে। ভুলতা-মুড়াপাড়া সড়ক দিয়ে ভুলতা বাসষ্টেশন থেকে স্কুল বাসে উঠি। প্রায় সময় এ সড়কের খানাখন্দে রিক্সা অটো উল্টে দুর্ঘটনার শিকার হই আমরা। আবার অনেক সময় যানজটে আটকা পড়ে স্কুল বাস মিস করি। সড়কটি মেরামত ও প্রশস্থ্যকরণ হলে সকলের জন্য ভালো হতো। মুদিদোকানদার মতিন প্রধান বলেন, আমি আর কি বলবো। ভুলতা-মুড়াপাড়া সড়কের পাশে আমার দোকান। দোকানের সামনে খানাখন্দ হয়ে পুকুরে পরিণতি হয়েছে। এ কারনে দোকান খুলতে পারছিনা। দোকান খুললে কাঁদা ছিটে আসে। এসব কারনে এ সড়কের দুই পাশের অনেকেই দোকানপাট বন্ধ রাখে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, শুধুমাত্র ভুলতা মুড়াপাড়া সড়কের উভয় পাশে রয়েছে ছোটবড় সব মিলিয়ে প্রায় অর্ধশতাধীক শিল্পকারখানা। এর মধ্যে এসিআই সল্ট, সিম গ্রুপ, এনডিই, ঔষুধ উৎপাদন কোম্পানি এস কে এফ, গ্যালকো স্টীল, মীর সিমেন্ট, ওয়াটা ক্যামিকেল, ক্রিয়েটিভ পেপার মিলস, অনন্ত পেপার মিলস, রূপসী কনক্রিট, ছাত্তার জুট মিলস, আরএফএল কারখানা ও গোডাউনসহ বিভিন্ন বৃহত্তর কোম্পানির মালবাহী গাড়ি চলাচল করে প্রায় ২৪ ঘন্টা। ১৮ ফুট প্রশস্থ্য সড়কটিতে সারাদিনই যানজট তৈরী হয়ে থাকে। পুরো সড়ক জুড়েই খানাখন্দে ভরা। এসব খানাখন্দে প্রতিদিনই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন জনসাধারন। কোন কোন স্থানে পুকুরে পরিণতি হয়েছে। ইট সুরকি দিয়ে কিছু কিছু জায়গায় মেরামত করা হলেও সপ্তাহ খানেকের মধ্যে সেই আগের মতোই হয়ে যাচ্ছে। এ সড়কে ভোগান্তি যেন শেষনেই।

তবে, এ ব্যপারে রূপগঞ্জ উপজেলা এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী জামালউদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভুলতা-মুড়াপাড়া সড়কটি সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের আওতাধীন। এলজিইডির হলে ১০ বছর পুর্বেই প্রশস্থ্যকরণ ও মেরামত হয়ে যেতো। সড়ক ও জনপদের হওয়াতে আমরা হাত দিতে পারছিনা। তাই এ সড়কটির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে এলজিইডিকে দেয়ার জন্য। যাতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাজ করা যায়। আর এলজিইডিতে দিলে ৪৮ ফুট প্রশস্থকরণ করা হবে। যেহেতু ভারী যানবাহন চলে তাই সড়ক টেকসই করতে ১৮ ইঞ্চি আরসিসি ঢালাই করে সড়ককে মজবুত করা হবে। যাতে ভারী যানচলাচলেও কোন অসুবিধা না হয়।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ইকবাল মেহেদী বলেন,রামপুরা ভুলতা সড়কটি কেন ঝুলে আছে তা জানা নেই। তবে,একটি চিঠির আলোকে আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের একটি নির্দেশনা পেয়েছি। এ
সড়কটি বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্ত না পেলে কোন কিছু বলা যাবে না। তবে, দাপ্তরিক কাজ চলমান রয়েছে।

 

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব