০১:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

ডিজিটাল হুন্ডিতে অ্যাপসের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার ৫

সিআইডি সাইবার ক্রাইম এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে ভালো কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে অনলাইন গ্যাম্বলিং এবং ই-মানিসংক্রান্ত অপরাধ প্রতিরোধে সিআইডিতে দক্ষ জনবল নিয়ে সাইবার অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন । সাম্প্রতিক সময়ে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) ব্যবহার করে ডিজিটাল হুন্ডির মাধ্যমে একটি অ্যাপসের মাধ্যমে বিদেশে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ৫ ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।গতকাল বুধবার রাতে ঢাকা ও চট্টগ্রামে পৃথক অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে আটক করা হয়। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকালে আজকের বিজনেস বাংলাদেশ’কে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিআইডির প্রধান ও অতিরিক্ত আইজি মোহাম্মদ আলী মিয়া। গ্রেপ্তার পাঁচজন হলেন, নাসিম আহেমেদ, ফজলে রাব্বি সুমন, কামরুজ্জামান, জহির উদ্দিন ও খায়রুল ইসলাম পিয়াস। তাদের কাছ থেকে ছয়টি মোবাইল, ১৮টি সিম কার্ড, একটি ল্যাপটপ, ছয়টি মডেম ও নগদ ২৮ লাখ ৫১ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।  সিআইডিপ্রধান বলেন, ‘‘গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ‘জেট রোবটিক অ্যাপস’-এর মাধ্যমে অভিনব কৌশলে ৪০০  কোটি টাকা পাচার করেছে। তারা চট্টগ্রামের তাসমিয়া অ্যাসোসিয়েটস নামে একটি বিকাশ ডিস্ট্রিবিউশন হাউসের কাছ থেকে এজেন্ট সিম সংগ্রহ করে। সিমগুলো মডেমের মাধ্যমে ল্যাপটপে ও কম্পিউটারে সংযুক্ত করে। জেট রোবটিক অ্যাপসের মাধ্যমে সংযুক্ত সিমের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় অ্যাপস নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তিদের হাতে। তারা সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই অফিস থেকে ডিজিটাল হুন্ডির কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করে।’ মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, ‘এই ডিজিটাল হুন্ডি চক্রটির হোতা শহিদুল ইসলাম মামুন। তিনি ২০২০ সাল থেকে দুবাই অবস্থান করছেন। সেখানে মামুনসহ পাঁচজন জেট রোবটিক অ্যাপসের নিয়ন্ত্রক।

তারা মালয়েশিয়ান একজন সফটওয়্যার ডেভেলপারের মাধ্যমে তৈরি করা অ্যাপসটিকে কাস্টমাইজ করে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখেন। এজেন্ট সিমগুলো বাংলাদেশে থাকলেও মূলত সেগুলোর নিয়ন্ত্রণ করা হয়ে থাকে দুবাই থেকে। দুবাই থেকে তারা বাংলাদেশের নগদ বিকাশসহ বিভিন্ন এমএফএস সার্ভিসে ক্যাশ-ইন-এর মাধ্যমে টাকা পাঠাতে পারে।  এই হুন্ডির কাজে তারা বিশ্বস্ত এজেন্টের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করে। সংগ্রহকৃত অর্থ কোন নম্বরে বা কোন ব্যাংক হিসাবে পাঠাতে হবে সেটা নিশ্চিত হয়। তখন বাংলাদেশ থেকে সংগ্রাহকরা এজেন্ট সিম থেকে অ্যাপস ব্যবহার করে প্রবাসীদের আত্নীয়দের নম্বরে টাকা পাঠিয়ে দেয় এই চক্র।  এই চক্র চট্টগ্রামের চাদগাঁও অবস্থিত তাসমিয়া অ্যাসোসিয়েটস থেকে ১৫০টি এজেন্ট সিম সংগ্রহ করে ব্যবহার করেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থকে মার্চ পর্যন্ত মাত্র তিন মাসে চক্রটি প্রায় ৪০০ কোটি টাকা হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। সিআইডি প্রধান আরো বলেন বর্তমানে হুন্ডি ও মাদক ব্যবসার মূল হোতাদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনের আওতায় মামলা করে তাদের অবৈধভাবে উপার্জিত সম্পত্তি জব্দ করা হচ্ছে। তাদের ব্যাংক হিসাবও ফ্রিজ করা হচ্ছে। এতে করে অন্য মাদক ব্যবসায়ীরা ও হুন্ডি ব্যবসায়ীরা নিরুত্সাহ হচ্ছে এবং এই অবৈধ পথ থেকে নিজেদের সরিয়ে নিচ্ছে।

ট্যাগ :

ডিজিটাল হুন্ডিতে অ্যাপসের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার ৫

প্রকাশিত : ০৮:১৩:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

সিআইডি সাইবার ক্রাইম এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে ভালো কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে অনলাইন গ্যাম্বলিং এবং ই-মানিসংক্রান্ত অপরাধ প্রতিরোধে সিআইডিতে দক্ষ জনবল নিয়ে সাইবার অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন । সাম্প্রতিক সময়ে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) ব্যবহার করে ডিজিটাল হুন্ডির মাধ্যমে একটি অ্যাপসের মাধ্যমে বিদেশে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ৫ ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।গতকাল বুধবার রাতে ঢাকা ও চট্টগ্রামে পৃথক অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে আটক করা হয়। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকালে আজকের বিজনেস বাংলাদেশ’কে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিআইডির প্রধান ও অতিরিক্ত আইজি মোহাম্মদ আলী মিয়া। গ্রেপ্তার পাঁচজন হলেন, নাসিম আহেমেদ, ফজলে রাব্বি সুমন, কামরুজ্জামান, জহির উদ্দিন ও খায়রুল ইসলাম পিয়াস। তাদের কাছ থেকে ছয়টি মোবাইল, ১৮টি সিম কার্ড, একটি ল্যাপটপ, ছয়টি মডেম ও নগদ ২৮ লাখ ৫১ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।  সিআইডিপ্রধান বলেন, ‘‘গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ‘জেট রোবটিক অ্যাপস’-এর মাধ্যমে অভিনব কৌশলে ৪০০  কোটি টাকা পাচার করেছে। তারা চট্টগ্রামের তাসমিয়া অ্যাসোসিয়েটস নামে একটি বিকাশ ডিস্ট্রিবিউশন হাউসের কাছ থেকে এজেন্ট সিম সংগ্রহ করে। সিমগুলো মডেমের মাধ্যমে ল্যাপটপে ও কম্পিউটারে সংযুক্ত করে। জেট রোবটিক অ্যাপসের মাধ্যমে সংযুক্ত সিমের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় অ্যাপস নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তিদের হাতে। তারা সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই অফিস থেকে ডিজিটাল হুন্ডির কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করে।’ মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, ‘এই ডিজিটাল হুন্ডি চক্রটির হোতা শহিদুল ইসলাম মামুন। তিনি ২০২০ সাল থেকে দুবাই অবস্থান করছেন। সেখানে মামুনসহ পাঁচজন জেট রোবটিক অ্যাপসের নিয়ন্ত্রক।

তারা মালয়েশিয়ান একজন সফটওয়্যার ডেভেলপারের মাধ্যমে তৈরি করা অ্যাপসটিকে কাস্টমাইজ করে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখেন। এজেন্ট সিমগুলো বাংলাদেশে থাকলেও মূলত সেগুলোর নিয়ন্ত্রণ করা হয়ে থাকে দুবাই থেকে। দুবাই থেকে তারা বাংলাদেশের নগদ বিকাশসহ বিভিন্ন এমএফএস সার্ভিসে ক্যাশ-ইন-এর মাধ্যমে টাকা পাঠাতে পারে।  এই হুন্ডির কাজে তারা বিশ্বস্ত এজেন্টের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করে। সংগ্রহকৃত অর্থ কোন নম্বরে বা কোন ব্যাংক হিসাবে পাঠাতে হবে সেটা নিশ্চিত হয়। তখন বাংলাদেশ থেকে সংগ্রাহকরা এজেন্ট সিম থেকে অ্যাপস ব্যবহার করে প্রবাসীদের আত্নীয়দের নম্বরে টাকা পাঠিয়ে দেয় এই চক্র।  এই চক্র চট্টগ্রামের চাদগাঁও অবস্থিত তাসমিয়া অ্যাসোসিয়েটস থেকে ১৫০টি এজেন্ট সিম সংগ্রহ করে ব্যবহার করেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থকে মার্চ পর্যন্ত মাত্র তিন মাসে চক্রটি প্রায় ৪০০ কোটি টাকা হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। সিআইডি প্রধান আরো বলেন বর্তমানে হুন্ডি ও মাদক ব্যবসার মূল হোতাদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনের আওতায় মামলা করে তাদের অবৈধভাবে উপার্জিত সম্পত্তি জব্দ করা হচ্ছে। তাদের ব্যাংক হিসাবও ফ্রিজ করা হচ্ছে। এতে করে অন্য মাদক ব্যবসায়ীরা ও হুন্ডি ব্যবসায়ীরা নিরুত্সাহ হচ্ছে এবং এই অবৈধ পথ থেকে নিজেদের সরিয়ে নিচ্ছে।