১১:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বিশ্ব ঘুম দিবস আজ

আজ বিশ্ব ঘুম দিবস বা World Sleep Day 2020 । সুস্বাস্থ্যের জন্য ঘুম যে কতটা জরুরি, সে ব্যাপারে সচেতনতা গড়ে তুলতেই ২০০৮ সাল থেকে প্রতি বছর মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের শুক্রবার (১৩ মার্চ) ঘুম দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে, যার উদ্যোক্তা হিসেবে রয়েছে ‘ওয়ার্ল্ড অ্যাসোসিয়েশন অব স্লিপ মেডিসিন (ডব্লিউএএসএম)। এ বছরে সেটি পড়েছে ১৩ মার্চ।

এ বছরে বিশ্ব ঘুম দিবসের শ্লোগান হচ্ছে ‘পর্যাপ্ত ঘুম, উন্নততর জীবন, উন্নততর বিশ্ব’। ব্যস্ততার যুগে ঘুম মাথায় উঠেছে বর্তমান প্রজন্মের। যার থেকে বাসা বাঁধছে নানা রোগ। সুস্থতার সঙ্গে ঠিক কী সম্পর্ক রয়েছে ঘুমের, বয়স অনুযায়ী কি ঘুমের পরিমাণ ও পদ্ধতি আলাদা হয়? কী বলছেন চিকিৎসকেরা?

১. শুধু চোখের নীচে ডার্ক সার্কেল মুছতে বা মন ভালো রাখতেই যে ঘুমের প্রয়োজন তা নয়। পর্যাপ্ত ঘুম সুস্থ রাখে আপনার হৃত্‍‌পিণ্ড, নিয়ন্ত্রণে রাখে ওজন।

৪. হার্টের অসুখ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, অকাল বার্ধক্যের থেকে শরীরে জ্বলুনি অনুভূতি হয়। গবেষণা বলছে, যাঁরা রাতে ৬ ঘণ্টা বা তার কম ঘুমোন, তাঁরাই বেশিরভাগ এ ধরনের সমস্যায় ভোগেন। কারণ তাঁদের রক্তে ইনফ্লামেটরি প্রোটিনের পরিমাণ বেড়ে যায়। ২০১০-এর গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যাঁরা কম ঘুমোন, তাঁদের শরীরে বেশি পরিমাণে দেখা দেয় সি-রিঅ্যাকটিভ প্রোটিন, যার ফলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে।

৫. ঘুমোলে বাড়বে সৃজনশীলতা। হার্ভার্ড ও বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলছেন, ঘুমানোর সময় স্মৃতি ও নানা কাল্পনিক বিষয় মাথায় ঘোরাফেরা করে। এজন্য ভালো ঘুম হলে তা সৃষ্টির কাজে বিশেষ সহায়ক হয়। বিশেষত ছবি আঁকার ক্ষেত্রে এটা বিশেষ প্রযোজ্য।

৬. আপনি যদি কোনও খেলোয়াড় হন, তবে আপনার সাফল্যের অন্যতম অস্ত্র নিঃসন্দেহে ঘুম। স্ট্যান্ডফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কলেজের ফুটবল খেলোয়াড়রা, যাঁরা রাতে ১০ ঘণ্টা ঘুমান, ৬-৮ সপ্তাহ পর তাঁদের স্ট্যামিনা বেড়ে যায় কয়েক গুণ। দূরে চলে যায় যাবতীয় ক্লান্তি।

৭. গবেষণা বলছে, কলেজে যেসব ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষায় খুব ভালো ফল করেন, তাঁরা অন্যদের থেকে বেশি ঘুমোন। যাঁরা কম ঘুমোন, তাঁদের ফলাফল হয় খারাপের দিকে।

৮. ঘুম কম হলে শিশুরা অমনোযোগী হয়ে পড়ে। ২০০৯ সালের একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ৭-৮ বছরের শিশুরা রাতে ৮ ঘণ্টার কম ঘুমোলে বদরাগী ও অমনোযোগী হয়ে পড়ে।


৯. পর্যাপ্ত ঘুমিয়ে স্বাস্থ্যকর ওজন পান। আপনি যদি সুস্বাস্থের জন্য ডায়েট চার্ট মেন্টেন করেন, তবে ঘুমনোর ব্যাপারটিও মাথায় রাখুন। গবেষণা বলছে, ডায়েটের পাশাপাশি যাঁরা যথোপযুক্ত ঘুমোন তাঁদের ওজন অন্যদের থেকে ৫৬% বেশি কমে।

১০. স্ট্রেস কমাতে বিশেষ সহযোগী ঘুম। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও ঘুমের জুড়ি মেলা ভার।

১১. পর্যাপ্ত ঘুমোলে হতাশা কমে। ঘুমে ঘাটতি থেকে আসে হতাশা ও উদ্বেগ।

২. ঘুমোলে আপনার স্মৃতিশক্তি বাড়বে। ডাক্তাররাই বলছেন, ভালো করে ঘুমোন, আপনার ভুলে যাওয়ার প্রবণতা কমবে।

৩. অতিরিক্ত অথবা খুব কম ঘুমোলে তার প্রভাব পড়বে আপনার আয়ুষ্কালের উপর। ২০১০-এর একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ৫০-৭৯ বছর বয়সে মৃত মহিলাদের মধ্যে বেশিরভাগেরই মৃত্যু হয়েছে কম বা বেশি ঘুমনোর জন্য। তাই ডাক্তারদের পরামর্শ, If you sleep better, you can certainly live better. অর্থাত্‍‌ পর্যাপ্ত ঘুমোন, ভালোভাবে বাঁচুন।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

সীতাকুণ্ডে বাস-ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৭

বিশ্ব ঘুম দিবস আজ

প্রকাশিত : ০৩:৫৬:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ মার্চ ২০২০

আজ বিশ্ব ঘুম দিবস বা World Sleep Day 2020 । সুস্বাস্থ্যের জন্য ঘুম যে কতটা জরুরি, সে ব্যাপারে সচেতনতা গড়ে তুলতেই ২০০৮ সাল থেকে প্রতি বছর মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের শুক্রবার (১৩ মার্চ) ঘুম দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে, যার উদ্যোক্তা হিসেবে রয়েছে ‘ওয়ার্ল্ড অ্যাসোসিয়েশন অব স্লিপ মেডিসিন (ডব্লিউএএসএম)। এ বছরে সেটি পড়েছে ১৩ মার্চ।

এ বছরে বিশ্ব ঘুম দিবসের শ্লোগান হচ্ছে ‘পর্যাপ্ত ঘুম, উন্নততর জীবন, উন্নততর বিশ্ব’। ব্যস্ততার যুগে ঘুম মাথায় উঠেছে বর্তমান প্রজন্মের। যার থেকে বাসা বাঁধছে নানা রোগ। সুস্থতার সঙ্গে ঠিক কী সম্পর্ক রয়েছে ঘুমের, বয়স অনুযায়ী কি ঘুমের পরিমাণ ও পদ্ধতি আলাদা হয়? কী বলছেন চিকিৎসকেরা?

১. শুধু চোখের নীচে ডার্ক সার্কেল মুছতে বা মন ভালো রাখতেই যে ঘুমের প্রয়োজন তা নয়। পর্যাপ্ত ঘুম সুস্থ রাখে আপনার হৃত্‍‌পিণ্ড, নিয়ন্ত্রণে রাখে ওজন।

৪. হার্টের অসুখ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, অকাল বার্ধক্যের থেকে শরীরে জ্বলুনি অনুভূতি হয়। গবেষণা বলছে, যাঁরা রাতে ৬ ঘণ্টা বা তার কম ঘুমোন, তাঁরাই বেশিরভাগ এ ধরনের সমস্যায় ভোগেন। কারণ তাঁদের রক্তে ইনফ্লামেটরি প্রোটিনের পরিমাণ বেড়ে যায়। ২০১০-এর গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যাঁরা কম ঘুমোন, তাঁদের শরীরে বেশি পরিমাণে দেখা দেয় সি-রিঅ্যাকটিভ প্রোটিন, যার ফলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে।

৫. ঘুমোলে বাড়বে সৃজনশীলতা। হার্ভার্ড ও বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলছেন, ঘুমানোর সময় স্মৃতি ও নানা কাল্পনিক বিষয় মাথায় ঘোরাফেরা করে। এজন্য ভালো ঘুম হলে তা সৃষ্টির কাজে বিশেষ সহায়ক হয়। বিশেষত ছবি আঁকার ক্ষেত্রে এটা বিশেষ প্রযোজ্য।

৬. আপনি যদি কোনও খেলোয়াড় হন, তবে আপনার সাফল্যের অন্যতম অস্ত্র নিঃসন্দেহে ঘুম। স্ট্যান্ডফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কলেজের ফুটবল খেলোয়াড়রা, যাঁরা রাতে ১০ ঘণ্টা ঘুমান, ৬-৮ সপ্তাহ পর তাঁদের স্ট্যামিনা বেড়ে যায় কয়েক গুণ। দূরে চলে যায় যাবতীয় ক্লান্তি।

৭. গবেষণা বলছে, কলেজে যেসব ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষায় খুব ভালো ফল করেন, তাঁরা অন্যদের থেকে বেশি ঘুমোন। যাঁরা কম ঘুমোন, তাঁদের ফলাফল হয় খারাপের দিকে।

৮. ঘুম কম হলে শিশুরা অমনোযোগী হয়ে পড়ে। ২০০৯ সালের একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ৭-৮ বছরের শিশুরা রাতে ৮ ঘণ্টার কম ঘুমোলে বদরাগী ও অমনোযোগী হয়ে পড়ে।


৯. পর্যাপ্ত ঘুমিয়ে স্বাস্থ্যকর ওজন পান। আপনি যদি সুস্বাস্থের জন্য ডায়েট চার্ট মেন্টেন করেন, তবে ঘুমনোর ব্যাপারটিও মাথায় রাখুন। গবেষণা বলছে, ডায়েটের পাশাপাশি যাঁরা যথোপযুক্ত ঘুমোন তাঁদের ওজন অন্যদের থেকে ৫৬% বেশি কমে।

১০. স্ট্রেস কমাতে বিশেষ সহযোগী ঘুম। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও ঘুমের জুড়ি মেলা ভার।

১১. পর্যাপ্ত ঘুমোলে হতাশা কমে। ঘুমে ঘাটতি থেকে আসে হতাশা ও উদ্বেগ।

২. ঘুমোলে আপনার স্মৃতিশক্তি বাড়বে। ডাক্তাররাই বলছেন, ভালো করে ঘুমোন, আপনার ভুলে যাওয়ার প্রবণতা কমবে।

৩. অতিরিক্ত অথবা খুব কম ঘুমোলে তার প্রভাব পড়বে আপনার আয়ুষ্কালের উপর। ২০১০-এর একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ৫০-৭৯ বছর বয়সে মৃত মহিলাদের মধ্যে বেশিরভাগেরই মৃত্যু হয়েছে কম বা বেশি ঘুমনোর জন্য। তাই ডাক্তারদের পরামর্শ, If you sleep better, you can certainly live better. অর্থাত্‍‌ পর্যাপ্ত ঘুমোন, ভালোভাবে বাঁচুন।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর