কক্সবাজারের টেকনাফের মেরিন ড্রাইভে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে পুলিশের ৯ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছে নিহত সেনা কর্মকর্তার পরিবার।
ওই মামলায় বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (আইসি) লিয়াকত আলীকে প্রধান আসামি ও টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশকে দুই নাম্বার আসামি করে মোট ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। অন্যান্যদের মধ্যে এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, এসএসআই টুটুল ও লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুর রহমান, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুম, মো মোস্তফা ।
বুধবার (৫ আগষ্ট) কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ’র আদালতে মামলাটি রুজু করা হয়েছে। মামলাটির বাদী হয়েছেন নিহত সেনা কর্মকর্তা সিনহা মো. রাশেদ খানের বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস।
আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ৩টি আদেশ দিয়েছেন।
আদালতের দেয়া আদেশে পুলিশকে বলা হয়েছে, মামলাটি নিয়মিত মামলা হিসেবে রেকর্ড করতে। দ্বিতীয় আদেশে বলা হয়, মামলাটি রেকর্ডের পর এলিট ফোর্স র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) মামলাটি তদন্ত করবে।
আদালতের তৃতীয় আদেশে বলা হয়, আগামি ৭ কার্যদিবসের মধ্যে মামলার অগ্রগতি আদালতকে অবহিত করতে হবে।
বাদী পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সিনিয়র আইনজীবী মোহাম্মদ মোস্তফা।
মামলার আর্জিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান গত ৩ জুলাই একটি ভ্রমণবিষয়ক ভিডিও ডকুমেন্টারী করার জন্য কক্সবাজার এসেছিলেন। গত ৩১ জুলাই রাতে শুটিং স্পট দেখে ফেরার পথে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শাপলাপুরের পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে পৌঁছলে পুলিশ তাদের প্রাইভেট কারটি থামিয়ে মেজর সিনহা ও গাড়িতে থাকা সিফাতকে গাড়ি থেকে নামতে বলেন। মেজর হাত উপরে তুলে গাড়ি থেকে নামার সাথে সাথেই বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের আইসি লিয়াকত আলী পরপর চারটি গুলি করেন মেজর সিনহাকে।
মামলার আর্জিতে দাবি করা হয়, টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশের নির্দেশে পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলী গুলি করেছেন।
মামলার আর্জি মতে, ঘটনার কিছুক্ষণ পর ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি এসেই তখনও জীবিত থাকা মেজর সিনহাকে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং তার শরীরে লাথি মারেন। পরে মৃত্যু নিশ্চিত হলে একটি ছারপোকা গাড়িতে তুলে মেজর সিনহাকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়।