০৭:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বিদায়ী অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫.২০ শতাংশ

করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রভাবে গোটা বিশ্বের পাশাপাশি বাংলাদেশেও মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি কমে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ শতাংশ কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সদ্য বিদায়ী ২০১৯-২০ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ২০ শতাংশ। যদিও গত অর্থবছরে জন্য প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ২০ শতাংশ। এর আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছর শেষে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, করোনার কারণে অর্থনীতিতে যে বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে তারই নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে প্রবৃদ্ধিতে।

অবশ্য করোনার কারণে প্রবৃদ্ধির ধস নামার আশঙ্কার কথা আগেই জানিয়েছে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো। সরকারও সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রায় প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ২০ শতাংশই পুনঃনির্ধারণ করে। যদিও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, বিদায়ী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ২.৫ শতাংশের বেশি হবে না। বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মতো সংস্থাগুলো জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ২ থেকে ৩ শতাংশ পর্যন্ত নেমে আসার আভাস দিয়েছিল।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষক ও অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত বলেন, বিদায়ী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ২০ শতাংশ হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। কারণ, করোনার মধ্যেও কৃষিতে উৎপাদন ভালো হয়েছে। রফতানিও মন্দের ভালো ছিল। রেমিট্যান্সও ভালো ছিল। অবশ্য জিডিপিতে সরাসরি রেমিট্যান্সের প্রভাব খুব বেশি না থাকলেও এই রেমিট্যান্স বিভিন্নভাবে প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। তবে তিনি মনে করেন, এটা হয়তো প্রাথমিক হিসাব। কারণ, বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে এ সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ তথ্য থাকে না। আর বাংলাদেশ ব্যাংক যেটা প্রকাশ করেছে সেটা হয়তো বিবিএস থেকেই নেওয়া।

সূত্র জানায়, ২০০৫-০৬ ভিত্তিবছর ধরে গত অর্থবছরের বাজেটে টাকার অঙ্কে প্রবৃদ্ধির আকারের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৮ লাখ ৮৫ হাজার ৯শ কোটি টাকা। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সেই লক্ষ্য থেকে কিছুটা সরে আসে অর্থ মন্ত্রণালয়। সেই প্রাক্কলন অনুযায়ী, অর্থবছর শেষে প্রবৃদ্ধির আকার দাঁড়িয়েছে ২৮ লাখ ৫ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা।

বিশ্বব্যাংক গত ১২ এপ্রিল ‘সাউথ এশিয়া ইকোনমিক ফোকাস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে জানায়, করোনা পরিস্থিতি কতটা দীর্ঘায়িত হয়, তার ওপর নির্ভর করে চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ২ থেকে ৩ শতাংশে নেমে আসতে পারে।

আইএমএফ আবার পূর্বাভাস দিয়েছে, এর পরিমাণ নেমে আসতে পারে ২ শতাংশে। গত ১৪ এপ্রিল রাতে প্রকাশিত ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক ২০২০, দ্য গ্রেট লকডাউন’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এই পূর্বাভাস দেওয়া হয়।

তবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৮ শতাংশ হতে পারে বলে আভাস দিয়েছিল। গত ৩ এপ্রিল প্রকাশিত ‘এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক ২০২০’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।

এদিকে করোনা মহামারির মধ্যেই ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ দশমিক ২০ শতাংশ।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর

জনপ্রিয়

সীতাকুণ্ডে বাস-ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৭

বিদায়ী অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫.২০ শতাংশ

প্রকাশিত : ০২:০১:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ অগাস্ট ২০২০

করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রভাবে গোটা বিশ্বের পাশাপাশি বাংলাদেশেও মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি কমে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ শতাংশ কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সদ্য বিদায়ী ২০১৯-২০ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ২০ শতাংশ। যদিও গত অর্থবছরে জন্য প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ২০ শতাংশ। এর আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছর শেষে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, করোনার কারণে অর্থনীতিতে যে বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে তারই নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে প্রবৃদ্ধিতে।

অবশ্য করোনার কারণে প্রবৃদ্ধির ধস নামার আশঙ্কার কথা আগেই জানিয়েছে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো। সরকারও সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রায় প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ২০ শতাংশই পুনঃনির্ধারণ করে। যদিও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, বিদায়ী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ২.৫ শতাংশের বেশি হবে না। বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মতো সংস্থাগুলো জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ২ থেকে ৩ শতাংশ পর্যন্ত নেমে আসার আভাস দিয়েছিল।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষক ও অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত বলেন, বিদায়ী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ২০ শতাংশ হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। কারণ, করোনার মধ্যেও কৃষিতে উৎপাদন ভালো হয়েছে। রফতানিও মন্দের ভালো ছিল। রেমিট্যান্সও ভালো ছিল। অবশ্য জিডিপিতে সরাসরি রেমিট্যান্সের প্রভাব খুব বেশি না থাকলেও এই রেমিট্যান্স বিভিন্নভাবে প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। তবে তিনি মনে করেন, এটা হয়তো প্রাথমিক হিসাব। কারণ, বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে এ সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ তথ্য থাকে না। আর বাংলাদেশ ব্যাংক যেটা প্রকাশ করেছে সেটা হয়তো বিবিএস থেকেই নেওয়া।

সূত্র জানায়, ২০০৫-০৬ ভিত্তিবছর ধরে গত অর্থবছরের বাজেটে টাকার অঙ্কে প্রবৃদ্ধির আকারের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৮ লাখ ৮৫ হাজার ৯শ কোটি টাকা। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সেই লক্ষ্য থেকে কিছুটা সরে আসে অর্থ মন্ত্রণালয়। সেই প্রাক্কলন অনুযায়ী, অর্থবছর শেষে প্রবৃদ্ধির আকার দাঁড়িয়েছে ২৮ লাখ ৫ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা।

বিশ্বব্যাংক গত ১২ এপ্রিল ‘সাউথ এশিয়া ইকোনমিক ফোকাস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে জানায়, করোনা পরিস্থিতি কতটা দীর্ঘায়িত হয়, তার ওপর নির্ভর করে চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ২ থেকে ৩ শতাংশে নেমে আসতে পারে।

আইএমএফ আবার পূর্বাভাস দিয়েছে, এর পরিমাণ নেমে আসতে পারে ২ শতাংশে। গত ১৪ এপ্রিল রাতে প্রকাশিত ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক ২০২০, দ্য গ্রেট লকডাউন’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এই পূর্বাভাস দেওয়া হয়।

তবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৮ শতাংশ হতে পারে বলে আভাস দিয়েছিল। গত ৩ এপ্রিল প্রকাশিত ‘এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক ২০২০’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।

এদিকে করোনা মহামারির মধ্যেই ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ দশমিক ২০ শতাংশ।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর