১০:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

দুই মাসে শেয়ারবাজারে মূলধন বেড়েছে ৫৮ হাজার কোটি টাকা

অবশেষে বিনিয়োগকারীদের আস্থায় ফিরতে সক্ষম হয়েছে দেশের শেয়ারবাজার। দীর্ঘ ১০ বছর পর এই বাজারে এখন কিছুটা স্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ছোট ও বড় সব ধরনের বিনিয়োগকারীই বাজারে ফিরতে শুরু করেছেন। ডিএসই’র তথ্য মতে, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স টানা ১০ সপ্তাহ ধরে বাড়ছে।

আর গত দুই মাসেই হারিয়ে যাওয়া ৫৮ হাজার কোটি টাকার বেশি পরিমাণ অর্থ ফিরে এসেছে শেয়ারবাজারে। বিনিয়োগকারীরা বলছেন, এই স্বস্তির ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকা জরুরি।

গত জুলাই মাসের শুরুতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন ছিল ৩ লাখ ১১ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা। এখন এই বাজারের মূলধনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত দুই মাসে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৫৮ হাজার ১৮১ কোটি টাকা।

এ প্রসঙ্গে ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী বলেন, ‘বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এখন আস্থা ফিরে এসেছে। এরই মধ্যে বড় বিনিয়োগকারী ও ছোট বিনিয়োগকারীরা বাজারে আসতে শুরু করেছেন, যার প্রভাব পড়েছে সার্বিক বাজারের ওপর।’

ডিএসই’র তথ্য অনুযায়ী, প্রতি মাসে বাজারে ফিরছে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা করে। জুলাই মাসের শুরুতে ৩ লাখ ১১ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা মূলধন থেকে জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ (৯ জুলাই) ডিএসই’র বাজার মূলধন দাড়ায় ৩ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা। গত সপ্তাহেও বেড়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ঊর্ধ্বমুখী ধারায় থাকা শেয়ারবাজার আরও একটি সপ্তাহ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্য দিয়ে পার করেছে। মূল্য সূচক বাড়ার পাশাপাশি গত সপ্তাহজুড়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। এতে এক সপ্তাহেই বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের পরিমাণ বেড়ে গেছে।

তথ্য বলছে, গত সপ্তাহে প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসই’র প্রধান মূল্য বেড়েছে প্রায় দুই শতাংশ। তবে এই সপ্তাহে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। সপ্তাহটিতে লেনদেনের পরিমাণ প্রায় ৩০ শতাংশ কমে গেছে।

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) ডিএসই’র বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। আগের সপ্তাহের শেষ কর্ম দিবসে এর পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৭৮৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৯ হাজার ৮৬৭ কোটি টাকা।

ডিএসই’র তথ্য বলছে, গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৮২৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ১ হাজার ১৭৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা।

অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৩৫০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৪ হাজার ১৪৪ কোটি ২২ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ৫ হাজার ৮৯৮ কোটি টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে ১ হাজার ৭৫৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।

এদিকে গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৭৯ দশমিক ১১ পয়েন্ট। এর মাধ্যমে টানা ১০ সপ্তাহ সূচকটি বাড়লো। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৯০ দশমিক ৭৫ পয়েন্ট। টানা ১০ সপ্তাহের উত্থানে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক বেড়েছে ৯১০ পয়েন্ট।

প্রধান মূল্য সূচকের পাশাপাশি গত সপ্তাহে উত্থান হয়েছে ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচকেরও। শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত এ সূচকটি গত সপ্তাহে বেড়েছে ৩০ দশমিক ২৭ পয়েন্ট। এ সূচকটিও টানা ১০ সপ্তাহ বাড়লো। বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচকটি টানা ছয় সপ্তাহ বাড়লো।

এদিকে গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। তবে দাম কমেছে ১৫০টির। আর ২৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ প্রান্ত

জনপ্রিয়

একজন ব্যবসায়ী বান্ধব নেতা ওয়াহিদুল হাসান দিপু

দুই মাসে শেয়ারবাজারে মূলধন বেড়েছে ৫৮ হাজার কোটি টাকা

প্রকাশিত : ০৭:৩৯:২২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ অগাস্ট ২০২০

অবশেষে বিনিয়োগকারীদের আস্থায় ফিরতে সক্ষম হয়েছে দেশের শেয়ারবাজার। দীর্ঘ ১০ বছর পর এই বাজারে এখন কিছুটা স্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ছোট ও বড় সব ধরনের বিনিয়োগকারীই বাজারে ফিরতে শুরু করেছেন। ডিএসই’র তথ্য মতে, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স টানা ১০ সপ্তাহ ধরে বাড়ছে।

আর গত দুই মাসেই হারিয়ে যাওয়া ৫৮ হাজার কোটি টাকার বেশি পরিমাণ অর্থ ফিরে এসেছে শেয়ারবাজারে। বিনিয়োগকারীরা বলছেন, এই স্বস্তির ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকা জরুরি।

গত জুলাই মাসের শুরুতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন ছিল ৩ লাখ ১১ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা। এখন এই বাজারের মূলধনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত দুই মাসে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৫৮ হাজার ১৮১ কোটি টাকা।

এ প্রসঙ্গে ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী বলেন, ‘বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এখন আস্থা ফিরে এসেছে। এরই মধ্যে বড় বিনিয়োগকারী ও ছোট বিনিয়োগকারীরা বাজারে আসতে শুরু করেছেন, যার প্রভাব পড়েছে সার্বিক বাজারের ওপর।’

ডিএসই’র তথ্য অনুযায়ী, প্রতি মাসে বাজারে ফিরছে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা করে। জুলাই মাসের শুরুতে ৩ লাখ ১১ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা মূলধন থেকে জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ (৯ জুলাই) ডিএসই’র বাজার মূলধন দাড়ায় ৩ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা। গত সপ্তাহেও বেড়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ঊর্ধ্বমুখী ধারায় থাকা শেয়ারবাজার আরও একটি সপ্তাহ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্য দিয়ে পার করেছে। মূল্য সূচক বাড়ার পাশাপাশি গত সপ্তাহজুড়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। এতে এক সপ্তাহেই বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের পরিমাণ বেড়ে গেছে।

তথ্য বলছে, গত সপ্তাহে প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসই’র প্রধান মূল্য বেড়েছে প্রায় দুই শতাংশ। তবে এই সপ্তাহে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। সপ্তাহটিতে লেনদেনের পরিমাণ প্রায় ৩০ শতাংশ কমে গেছে।

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) ডিএসই’র বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। আগের সপ্তাহের শেষ কর্ম দিবসে এর পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৭৮৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৯ হাজার ৮৬৭ কোটি টাকা।

ডিএসই’র তথ্য বলছে, গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৮২৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ১ হাজার ১৭৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা।

অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৩৫০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৪ হাজার ১৪৪ কোটি ২২ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ৫ হাজার ৮৯৮ কোটি টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে ১ হাজার ৭৫৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।

এদিকে গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৭৯ দশমিক ১১ পয়েন্ট। এর মাধ্যমে টানা ১০ সপ্তাহ সূচকটি বাড়লো। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৯০ দশমিক ৭৫ পয়েন্ট। টানা ১০ সপ্তাহের উত্থানে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক বেড়েছে ৯১০ পয়েন্ট।

প্রধান মূল্য সূচকের পাশাপাশি গত সপ্তাহে উত্থান হয়েছে ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচকেরও। শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত এ সূচকটি গত সপ্তাহে বেড়েছে ৩০ দশমিক ২৭ পয়েন্ট। এ সূচকটিও টানা ১০ সপ্তাহ বাড়লো। বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচকটি টানা ছয় সপ্তাহ বাড়লো।

এদিকে গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। তবে দাম কমেছে ১৫০টির। আর ২৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ প্রান্ত