০৩:৩৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

জনগণের সঙ্গে খারাপ আচরণের কোনো সুযোগ নেই: আইজিপি

ঢাকা রেঞ্জের ১৩টি জেলার পুলিশ সুপার ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভায় কথা বলেন আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ

পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, জনগণের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা ও নির্যাতন করার কো‌নো সু‌যোগ নেই। জনগণের প্রতি যেকো‌নো প্রকার নির্দয় আচরণ বন্ধ করে সংশ্লিষ্ট বিষ‌য়ে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নিতে হবে।

বুধবার ঢাকা রেঞ্জের ১৩টি জেলার পুলিশ সুপার ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিশেষ সভায় এসব কথা বলেন তিনি। পুলিশ সদর দফতরের জনসংযোগ বিভাগের এআইজি মো. সোহেল রানা স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, পুলিশ হবে দুর্নীতি ও মাদকমুক্ত, জনগণের প্রতি মানবিক। বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া হবে পুলিশি সেবা। মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করলে ভালোবাসা পাওয়া যায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর প্রমাণ করোনাকালে পুলিশ পেয়েছে।

পুলিশ প্রধান বলেন, কোনো দুর্নী‌তির আশ্রয় যেন না নিতে হয়, সেজন্য সরকার সব সরকা‌রি পেশাজীবীর সু‌যোগ-সু‌বিধা ও বেতন- ভাতা অনেক বাড়িয়েছে। তাই, আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ জীবন-যাপন করতে হবে।

তিনি বলেন, পুলিশের কোনো সদস্য দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না। পুলিশের কোনো সদস্য মাদক গ্রহণ করবেন না, মাদক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকবেন না। মাদক কারবারিদের সঙ্গে সম্পর্কও রাখা যাবে না।

বিট পুলিশিংয়ের ব্যাপকতা ও গুরুত্ব উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, পুলিশি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সারাদেশে ৬ হাজার ৯১২টি বিটে ভাগ করে বিট পুলিশিং চালু করা হয়েছে। এর ফলে বিট এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা ওই এলাকার প্রতিটি থানা সম্পর্কে জানতে পারবেন, তাদের সমস্যা চিহ্নিত করতে পারবেন। ফলে ওই এলাকার আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও আইনি সেবা দেয়া সহজ হবে।

চাকরিরত অবস্থায় পুলিশ সদস্যদের কল্যাণে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসায় কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের আধুনিকায়ন করা হয়েছে। বিভাগীয় পর্যায়ের হাসপাতালগুলো আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। জেলা হাসপাতাল আধুনিকায়নের আওতায় আনা হচ্ছে। এছাড়া আটটি বিভাগে ক্যাডেট কলেজের আদলে উন্নতমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করা হবে।

ড. বেনজির আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে ধনী দেশে উন্নীত করার লক্ষ্যে নিরন্তর কাজ করছেন। উন্নত দেশের উপযোগী পুলিশ হওয়ার জন্য নিজেদের যোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে। পেশাগত দক্ষতা বাড়াতে হবে। নিজের টার্গেট সেট করতে হবে। অধঃস্তনদেরকে তৈরি করতে হবে। সংগঠনকে ভালোবাসতে হবে, সম্মান নিয়ে চাকরি করতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা প্রযুক্তিনির্ভর, জ্ঞানভিত্তিক পুলিশি ব্যবস্থা গড়ে তুলবো। ফলে পুলিশের কাজে স্বচ্ছতা আসবে, দুর্নীতি কমবে। মানুষ সহজে পুলিশের সেবা পাবে।

ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।

এর আগে, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের কালজয়ী ভাষণকে উপজীব্য করে রেঞ্জ চত্বরে নির্মিত ‘মুক্তির মহাকাব্য’ ম্যুরাল উদ্বোধন করেন আইজিপি। একই সঙ্গে ঢাকা রেঞ্জে স্থাপিত আধুনিক অপারেশন্স কন্ট্রোল রুম অ্যান্ড মনিটরিং সেন্টার উদ্বোধন করেন তিনি।

উল্লেখ্য, পুলিশি সেবা দ্রুত জনগণের মাঝে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে রেঞ্জের ১৩টি জেলার ৯৬টি থানাকে এ কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে সংযুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে থানার ডিউটি অফিসার, হাজতখানা ও সেন্ট্রি বক্সের কার্যক্রম সি‌সি‌টি‌ভির মাধ্য‌মে সরাসরি মনিটর করা যাবে। রেঞ্জ ডিআইজি কার্যাল‌য়ের একজন অতিরিক্ত ডিআইজির নেতৃত্বে পরিচালিত হবে এই ক‌ন্ট্রোল রুম।

ট্যাগ :

জনগণের সঙ্গে খারাপ আচরণের কোনো সুযোগ নেই: আইজিপি

প্রকাশিত : ০৯:০৪:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ ডিসেম্বর ২০২০

পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, জনগণের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা ও নির্যাতন করার কো‌নো সু‌যোগ নেই। জনগণের প্রতি যেকো‌নো প্রকার নির্দয় আচরণ বন্ধ করে সংশ্লিষ্ট বিষ‌য়ে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নিতে হবে।

বুধবার ঢাকা রেঞ্জের ১৩টি জেলার পুলিশ সুপার ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিশেষ সভায় এসব কথা বলেন তিনি। পুলিশ সদর দফতরের জনসংযোগ বিভাগের এআইজি মো. সোহেল রানা স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, পুলিশ হবে দুর্নীতি ও মাদকমুক্ত, জনগণের প্রতি মানবিক। বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া হবে পুলিশি সেবা। মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করলে ভালোবাসা পাওয়া যায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর প্রমাণ করোনাকালে পুলিশ পেয়েছে।

পুলিশ প্রধান বলেন, কোনো দুর্নী‌তির আশ্রয় যেন না নিতে হয়, সেজন্য সরকার সব সরকা‌রি পেশাজীবীর সু‌যোগ-সু‌বিধা ও বেতন- ভাতা অনেক বাড়িয়েছে। তাই, আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ জীবন-যাপন করতে হবে।

তিনি বলেন, পুলিশের কোনো সদস্য দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না। পুলিশের কোনো সদস্য মাদক গ্রহণ করবেন না, মাদক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকবেন না। মাদক কারবারিদের সঙ্গে সম্পর্কও রাখা যাবে না।

বিট পুলিশিংয়ের ব্যাপকতা ও গুরুত্ব উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, পুলিশি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সারাদেশে ৬ হাজার ৯১২টি বিটে ভাগ করে বিট পুলিশিং চালু করা হয়েছে। এর ফলে বিট এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা ওই এলাকার প্রতিটি থানা সম্পর্কে জানতে পারবেন, তাদের সমস্যা চিহ্নিত করতে পারবেন। ফলে ওই এলাকার আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও আইনি সেবা দেয়া সহজ হবে।

চাকরিরত অবস্থায় পুলিশ সদস্যদের কল্যাণে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসায় কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের আধুনিকায়ন করা হয়েছে। বিভাগীয় পর্যায়ের হাসপাতালগুলো আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। জেলা হাসপাতাল আধুনিকায়নের আওতায় আনা হচ্ছে। এছাড়া আটটি বিভাগে ক্যাডেট কলেজের আদলে উন্নতমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করা হবে।

ড. বেনজির আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে ধনী দেশে উন্নীত করার লক্ষ্যে নিরন্তর কাজ করছেন। উন্নত দেশের উপযোগী পুলিশ হওয়ার জন্য নিজেদের যোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে। পেশাগত দক্ষতা বাড়াতে হবে। নিজের টার্গেট সেট করতে হবে। অধঃস্তনদেরকে তৈরি করতে হবে। সংগঠনকে ভালোবাসতে হবে, সম্মান নিয়ে চাকরি করতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা প্রযুক্তিনির্ভর, জ্ঞানভিত্তিক পুলিশি ব্যবস্থা গড়ে তুলবো। ফলে পুলিশের কাজে স্বচ্ছতা আসবে, দুর্নীতি কমবে। মানুষ সহজে পুলিশের সেবা পাবে।

ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।

এর আগে, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের কালজয়ী ভাষণকে উপজীব্য করে রেঞ্জ চত্বরে নির্মিত ‘মুক্তির মহাকাব্য’ ম্যুরাল উদ্বোধন করেন আইজিপি। একই সঙ্গে ঢাকা রেঞ্জে স্থাপিত আধুনিক অপারেশন্স কন্ট্রোল রুম অ্যান্ড মনিটরিং সেন্টার উদ্বোধন করেন তিনি।

উল্লেখ্য, পুলিশি সেবা দ্রুত জনগণের মাঝে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে রেঞ্জের ১৩টি জেলার ৯৬টি থানাকে এ কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে সংযুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে থানার ডিউটি অফিসার, হাজতখানা ও সেন্ট্রি বক্সের কার্যক্রম সি‌সি‌টি‌ভির মাধ্য‌মে সরাসরি মনিটর করা যাবে। রেঞ্জ ডিআইজি কার্যাল‌য়ের একজন অতিরিক্ত ডিআইজির নেতৃত্বে পরিচালিত হবে এই ক‌ন্ট্রোল রুম।