সারা বিশ্বের প্রায় নয় কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্ট ফেসবুক বুধবার নিজেই এই তথ্য ফাঁসের কথা স্বীকার করেছে। যা আগে প্রকাশ করা সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি।
একটি ‘কুইজ অ্যাপ’-এর মাধ্যমে ওইসব তথ্য পৌঁছে যায় ‘কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা’ নামে এক রাজনৈতিক কনসালেটেন্সি সংস্থার হাতে। তথ্য ফাঁস হওয়া ব্যবহারকারীর বেশিরভাগই যুক্তরাষ্ট্রের। এদিকে বিবিসি বলেছে, এদের মধ্যে এক কোটি ১০ লাখ যুক্তরাজ্যের।
এক মার্কিন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে প্রথম এই তথ্য ফাঁসের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। অন্তত পাঁচ কোটি মানুষের তথ্য ফাঁস হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। কিন্তু ফেসবুক জানিয়েছে, সেই সংখ্যাটা আসলে ৮ কোটি ৭০ লাখ, যা প্রাথমিক অনুমানের থেকেই অনেক বেশি।
ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী মার্ক জুকারবার্গ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, এই কেলেঙ্কারির পর ব্যবহারকারী ও বিজ্ঞাপন বিক্রেতাদের মধ্যে কোনো অর্থপূর্ণ প্রভাব পড়েনি। এ সত্ত্বেও তিনি বলেন, কোম্পানির প্রতি যদি ব্যবহারকারীরা অসন্তুষ্ট হয় তবে সেটি প্রতিষ্ঠানের ভাল নয়।
তথ্য ফাঁসের ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পরও ফেসবুকের শেয়ার তিন শতাংশের বেশি বেড়েছে।
জুকারবার্গ সাংবাদিকদের বলেন, তিনি এই তথ্য ফাঁসের দায় স্বীকার করছেন। তথ্য ফাঁস ব্যবহারকারী, বিজ্ঞাপনদাতা ও আইনপ্রণেতাদের ক্ষুব্ধ করেছে। তবে তিনি বলেছেন, তিনি যে কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠা করেছেন তার নেতৃত্ব দিতে এখনো তিনিই সঠিক ব্যক্তি বলে মনে করেন।
এ বিষয়ে জুকারবার্গ আগামী মঙ্গল ও বুধবার মার্কিন কংগ্রেসের দুটি শুনানিতে সাক্ষ্য দেবেন। ফেসবুক গত মাসেই প্রথম এই তথ্য ফাঁসের কথা জানতে পারে।
অনলাইনে বুধবার একটি পোস্টের মাধ্যমে এই স্বীকারোক্তি দিয়েছে ফেসবুক। তারা জানিয়েছে, ২ লাখ ৭০ হাজার মানুষ ওই কুইজ অ্যাপটি ডাউনলোড করেছিল। আর ওইসব ফেসবুক ব্যবহারকারী ও তাদের ফ্রেন্ডলিস্টে থাকা বন্ধুদের তথ্য এক রিসার্চারের হাতে চলে যায়। সেই ‘কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা’র হাতে ওই তথ্য তুলে দেয়। এটা ফেসবুকের নির্দেশিকার বিরোধী বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
ফেসবুক আরো জানিয়েছে, যাদের তথ্য ফাঁস হয়েছে তাদের নিউজ ফিডে জানিয়ে দেয়া হবে। আগামী ৯ এপ্রিল থেকে সেই নোটিফিকেশন দেবে ফেসবুক।
২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচারে পরামর্শক হিসেবে কাজ করে লন্ডনভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা। ট্রাম্পের প্রচারের রসদ যোগাতে তারা পাঁচ কোটি ফেসবুক গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য কাজে লাগায় বলে বেরিয়ে এসেছে। সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স ও কলকাতা২৪/৭