০৬:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

রূপগঞ্জে সখকরে তৈরী ছাদ বাগান পরিবারের বাড়তি চাহিদা মেটাচ্ছে মাসুদ !

বসত বাড়ির দুই তলার ছাদে মাসুদ গড়ে তুলেছেন একখন্ড সবুজের হাতছানি। বিভিন্ন রকমের ফলজ,সবজি ও ফুলের চাড়া রোপন করে তৈরী করেছেন দৃষ্টিনন্দন ছাদ বাগান। ভুমি থেকে ২০ফিট উপড়ে ইট-পাথরের মেঝেতে তৈরী ছাদ বাগান নজর কাড়ে মানুষের। ছাদ বাগানের উৎপন্ন ফল-মুল দিয়ে নিজেদের বাড়তি চাহিদা মিটিয়েও বন্ধু-বান্ধব আত্নীয়-স্বজনদের মাঝে বিলি করছেন মাসুদ। এতে মানসিক আনন্দের পাশা-পাশি বাগান পরিচর্যার মাধ্যমে অবসর সময়কে কাজে লাগাচ্ছেন তিনি।

প্রাচ্যের ডান্ডি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ শিল্পাঞ্চল উপজেলায় শিল্পায়নের সাথে পাল্লাদিয়ে বেড়েছে জনসংখ্যা বর্ধিত হয়েছে আবাসস্থল। শিল্প-কারখানা আর আবাসনের চাপে ক্রমস কমছে ,আবাধি ও ফসলি জমি।এতে আস্তে আস্তে ছোট হয়ে আসেছে কৃষি জমির পরিধি। ইট পাথর আর কংক্রিটের রাজত্বে ফসলি জমির পরিমান কমে যাওয়ার ফলে ফল-মুল চাষাবাদ ও গাছ-গাছরা রোপনের জায়গা ঘাতটি দেখা দিয়েছে। তাই শখ করে অনেকে ফল-ফুল কিংবা সবজি চাষে পরিরারের পুষ্টি চাহিদা পুরণের জন্য ছাদ বাগান তৈরী করছেন। উপজেলায় ছাদ বাগান এখন অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। স্থানীয়রা অনেকেই তাদের বাড়ির ছাদে সখের বসে ছাদবাগান তৈরীতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। বাড়ির ছাদে সৌখিন চাষিরা গড়েতুলছেন বিভিন্ন ফল-মুল ও সবজি যাতীয় গাছের বাগান। উপজেলার প্রায় বাড়িতেই ছাদ বাগান গুলোতে বিভিন্ন প্রজাতির ও মৌসুমী নানান ফুল,ফল ও সবজি ছাদ বাগানের শোভা বাড়ানোর পাশা-পাশি পরিবারে পুষ্টি চাহিদাও মেটাচ্ছে।

মঞ্জুরুল ইসলাম মাসুদ শিল্পাঞ্চল রূপগঞ্জের প্রান কেন্দ্র তারাব পৌরসভার কর্নগোপ এলাকার বাসিন্দা। পেষায় তিনি একজন ব্যাবসায়ী। ব্যাবসায়ীক কাজের পাশাপাশি অবসর সময়ে নিজ বাসার দুই তলার ছাদে শখ করে গড়ে তুলেছেন ছাদ বাগান। তার ছাদ বাগানে সবজি,ফুল, ফলদ ও ঔষধিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে । কাজের ফাঁকে অবসরে তার বেশিরভাগ সময় কাটে ছাদ কৃষিতে পরিচর্যা করে। মাসুদের ছাদ বাগানে উৎপাদিত ফল ও সবজি একদিকে যেমন পরিবারের নিরাপদ খাদ্য এবং পুষ্টির সহ বাড়তি চাহিদা মেটায়, পাশাপাশি আত্মীয়-স্বজন,বন্ধু-বান্ধব সহ প্রতিবেশীদের মাঝেও বিতরণ করছেন। তার এই দৃষ্টি নন্দন ছাদ কৃষি দেখে অনেকেই উৎসাহী হয়ে উঠছেন।

মাসুদ তার বাড়ির ছাদে তিন বছর আগে থেকে বিভিন্ন ফল-মুল ও ফুলের চাড়া রোপন ও পরিচর্যার মাধ্যমে ধীরে ধীরে গড়ে তুলেছেন ইট-পাথরের মেঝেতে এক খন্ড সবুজের হাতছানি দৃষ্টিনন্দন ছাদ বাগান। গাছ গুলোতে ফুল,ফল ও সবজির ধরার মাধ্যমে ছাদ বাগানকে করেছে আরও সোন্দয্য মন্ডিত। বাগানে কমলা, মাল্টা, ডালিম, হিমসাগর, হাঁড়িভাঙা,লেবু, পেয়ারা, আমড়া, ড্রাগন, শরিফা, জাম্বুরা,আপেল কুল, তিনফল সহ ১৫ প্রকার ফলের গাছ রোপন করা হয়েছে।। সাথে আছে করলা, কাচা মরিচ, ক্যাপসিকাম, পুদিনা পাতা,ফুল কপি, লাউয়ের ঝাঁকা সহ বিভিন্ন প্রকারের ফুলের গাছ। বাগান পরিচর্যার কাজে তাকে সহযোগিতা করেন স্ত্রী ৩ ছেলে।

বর্তমানে বাগানে বিভিন্ন প্রকার ফল-মুল ও সবজির সমারোহ রয়েছে। বিভিন্ন গাছের ডালে ঝুলছে নানান ফল। চলতি মৌসুমে ছাদ বাগানের গাছে ধরেছে মালটা,কমলা,তিনফল,আপেলকুল,পেয়ারা সহ বিভিন্ন প্রকারের মৌসুমী ফল ও সবজি। এরই মাঝে বেশ কিছু ফলগাছ আছে বছরের পুরো সময়ই ফল ধরে। এতে একদিকে নীজ হাতে চাষ করা কিটনাশক ও ফরমালিনমুক্ত ফলও পাওয়া যাচ্ছে অন্যদিকে সারাবছরই বাগানে ফলের সমারোহ থাকছে। মাসুদের ছাদ বাগান দেখে উৎসাহিত হয়ে আশ-পাশের অনেকেই ছাদে বাগান করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

সৌখিন ছাদ বাগানি মাসুদ বলেন, কৃষির প্রতি ভালোবাসা থেকে বাগান করেছি। পরিবারের বাড়তি পুষ্টির চাহিদাও মিটছে। বর্তমানে অধিকাংশ গাছের ডালে ফল-মুল শোভা পাচ্ছে। অন্যান্য প্রজাতির গাছ গুলোতেও মৌসুম অনুযায়ী ফল ধরবে। ব্যবসায়িক কাজের ফাঁকে বাগানের পরিচর্যা করছি। নীজস্ব বাগানের কিট নাশক ও ফরমালীন বিহীন অরগানিক ফল-মুল পরিবারের বাড়তি চাহিদা মিটিয়েও আত্নীয়-স্বজন,বন্ধু-বান্ধব ও প্রতিবেশিদের মাঝে বিলি করছি। এতে মানসিক তৃপ্তি পাচ্ছি। অন্যদিকে নির্ভেজাল অক্সিজেন গ্রহন করতে পারছি। এলাকার অনেক বাড়ির মালিক আমার বাড়ির ছাদ বাগান দেখছেন এবং ছাদ বাগান তৈরীতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন ।

মাসুদের প্রতিবেশী নাজমুল হক বলেন,আমার বাসার পাশেই এতো সুন্দর একটি ছাদ বাগান দেখে আমি উৎসাহিত হয়ে বিগত এক বছর যাবত আমার ছাদে বাগান তৈরীতে হাত দিয়েছি। ফুলও ফলজ বেশ কিছু চাড়া রোপন করেছি। নিয়মিত পরিচর্যা করছি। এগুলো ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে।

পাশ্ববর্তি নির্মাধীন বাড়ির মালিক বিদ্যুৎ ভুইয়া বলেন,মাসুদের ছাদ বাগানটি দেখতে খুবই সুন্দর। আমার বাড়ির কাজ শেষের পর্যায়ে। বাড়িতে উঠেই ছাদে বাগান করার ইচ্ছে রয়েছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কায়ছুন রাফাত হাওলাদার বলেন, নির্ভেজাল ফল-মুল পাওয়ার জন্য অনেক সৌখিন মানুষ ছাদবাগানের দিকে ঝুকছেন। সুপরিকল্পিত একটি বাগান থেকে সারা বছরই পরিবারের ফল-মুল ও সবজির চাহিদা পুরণ করা সম্ভব। পরিকল্পিতভাবে বৃক্ষরোপণ করে ছাদে বাগান করার ক্ষেত্রে আমরা প্রযুক্তিগত সহায়তা ও পরামর্শ দিচ্ছি।

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব

জনপ্রিয়

সীতাকুণ্ডে বাস-ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৭

রূপগঞ্জে সখকরে তৈরী ছাদ বাগান পরিবারের বাড়তি চাহিদা মেটাচ্ছে মাসুদ !

প্রকাশিত : ০১:১৯:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২২

বসত বাড়ির দুই তলার ছাদে মাসুদ গড়ে তুলেছেন একখন্ড সবুজের হাতছানি। বিভিন্ন রকমের ফলজ,সবজি ও ফুলের চাড়া রোপন করে তৈরী করেছেন দৃষ্টিনন্দন ছাদ বাগান। ভুমি থেকে ২০ফিট উপড়ে ইট-পাথরের মেঝেতে তৈরী ছাদ বাগান নজর কাড়ে মানুষের। ছাদ বাগানের উৎপন্ন ফল-মুল দিয়ে নিজেদের বাড়তি চাহিদা মিটিয়েও বন্ধু-বান্ধব আত্নীয়-স্বজনদের মাঝে বিলি করছেন মাসুদ। এতে মানসিক আনন্দের পাশা-পাশি বাগান পরিচর্যার মাধ্যমে অবসর সময়কে কাজে লাগাচ্ছেন তিনি।

প্রাচ্যের ডান্ডি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ শিল্পাঞ্চল উপজেলায় শিল্পায়নের সাথে পাল্লাদিয়ে বেড়েছে জনসংখ্যা বর্ধিত হয়েছে আবাসস্থল। শিল্প-কারখানা আর আবাসনের চাপে ক্রমস কমছে ,আবাধি ও ফসলি জমি।এতে আস্তে আস্তে ছোট হয়ে আসেছে কৃষি জমির পরিধি। ইট পাথর আর কংক্রিটের রাজত্বে ফসলি জমির পরিমান কমে যাওয়ার ফলে ফল-মুল চাষাবাদ ও গাছ-গাছরা রোপনের জায়গা ঘাতটি দেখা দিয়েছে। তাই শখ করে অনেকে ফল-ফুল কিংবা সবজি চাষে পরিরারের পুষ্টি চাহিদা পুরণের জন্য ছাদ বাগান তৈরী করছেন। উপজেলায় ছাদ বাগান এখন অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। স্থানীয়রা অনেকেই তাদের বাড়ির ছাদে সখের বসে ছাদবাগান তৈরীতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। বাড়ির ছাদে সৌখিন চাষিরা গড়েতুলছেন বিভিন্ন ফল-মুল ও সবজি যাতীয় গাছের বাগান। উপজেলার প্রায় বাড়িতেই ছাদ বাগান গুলোতে বিভিন্ন প্রজাতির ও মৌসুমী নানান ফুল,ফল ও সবজি ছাদ বাগানের শোভা বাড়ানোর পাশা-পাশি পরিবারে পুষ্টি চাহিদাও মেটাচ্ছে।

মঞ্জুরুল ইসলাম মাসুদ শিল্পাঞ্চল রূপগঞ্জের প্রান কেন্দ্র তারাব পৌরসভার কর্নগোপ এলাকার বাসিন্দা। পেষায় তিনি একজন ব্যাবসায়ী। ব্যাবসায়ীক কাজের পাশাপাশি অবসর সময়ে নিজ বাসার দুই তলার ছাদে শখ করে গড়ে তুলেছেন ছাদ বাগান। তার ছাদ বাগানে সবজি,ফুল, ফলদ ও ঔষধিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে । কাজের ফাঁকে অবসরে তার বেশিরভাগ সময় কাটে ছাদ কৃষিতে পরিচর্যা করে। মাসুদের ছাদ বাগানে উৎপাদিত ফল ও সবজি একদিকে যেমন পরিবারের নিরাপদ খাদ্য এবং পুষ্টির সহ বাড়তি চাহিদা মেটায়, পাশাপাশি আত্মীয়-স্বজন,বন্ধু-বান্ধব সহ প্রতিবেশীদের মাঝেও বিতরণ করছেন। তার এই দৃষ্টি নন্দন ছাদ কৃষি দেখে অনেকেই উৎসাহী হয়ে উঠছেন।

মাসুদ তার বাড়ির ছাদে তিন বছর আগে থেকে বিভিন্ন ফল-মুল ও ফুলের চাড়া রোপন ও পরিচর্যার মাধ্যমে ধীরে ধীরে গড়ে তুলেছেন ইট-পাথরের মেঝেতে এক খন্ড সবুজের হাতছানি দৃষ্টিনন্দন ছাদ বাগান। গাছ গুলোতে ফুল,ফল ও সবজির ধরার মাধ্যমে ছাদ বাগানকে করেছে আরও সোন্দয্য মন্ডিত। বাগানে কমলা, মাল্টা, ডালিম, হিমসাগর, হাঁড়িভাঙা,লেবু, পেয়ারা, আমড়া, ড্রাগন, শরিফা, জাম্বুরা,আপেল কুল, তিনফল সহ ১৫ প্রকার ফলের গাছ রোপন করা হয়েছে।। সাথে আছে করলা, কাচা মরিচ, ক্যাপসিকাম, পুদিনা পাতা,ফুল কপি, লাউয়ের ঝাঁকা সহ বিভিন্ন প্রকারের ফুলের গাছ। বাগান পরিচর্যার কাজে তাকে সহযোগিতা করেন স্ত্রী ৩ ছেলে।

বর্তমানে বাগানে বিভিন্ন প্রকার ফল-মুল ও সবজির সমারোহ রয়েছে। বিভিন্ন গাছের ডালে ঝুলছে নানান ফল। চলতি মৌসুমে ছাদ বাগানের গাছে ধরেছে মালটা,কমলা,তিনফল,আপেলকুল,পেয়ারা সহ বিভিন্ন প্রকারের মৌসুমী ফল ও সবজি। এরই মাঝে বেশ কিছু ফলগাছ আছে বছরের পুরো সময়ই ফল ধরে। এতে একদিকে নীজ হাতে চাষ করা কিটনাশক ও ফরমালিনমুক্ত ফলও পাওয়া যাচ্ছে অন্যদিকে সারাবছরই বাগানে ফলের সমারোহ থাকছে। মাসুদের ছাদ বাগান দেখে উৎসাহিত হয়ে আশ-পাশের অনেকেই ছাদে বাগান করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

সৌখিন ছাদ বাগানি মাসুদ বলেন, কৃষির প্রতি ভালোবাসা থেকে বাগান করেছি। পরিবারের বাড়তি পুষ্টির চাহিদাও মিটছে। বর্তমানে অধিকাংশ গাছের ডালে ফল-মুল শোভা পাচ্ছে। অন্যান্য প্রজাতির গাছ গুলোতেও মৌসুম অনুযায়ী ফল ধরবে। ব্যবসায়িক কাজের ফাঁকে বাগানের পরিচর্যা করছি। নীজস্ব বাগানের কিট নাশক ও ফরমালীন বিহীন অরগানিক ফল-মুল পরিবারের বাড়তি চাহিদা মিটিয়েও আত্নীয়-স্বজন,বন্ধু-বান্ধব ও প্রতিবেশিদের মাঝে বিলি করছি। এতে মানসিক তৃপ্তি পাচ্ছি। অন্যদিকে নির্ভেজাল অক্সিজেন গ্রহন করতে পারছি। এলাকার অনেক বাড়ির মালিক আমার বাড়ির ছাদ বাগান দেখছেন এবং ছাদ বাগান তৈরীতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন ।

মাসুদের প্রতিবেশী নাজমুল হক বলেন,আমার বাসার পাশেই এতো সুন্দর একটি ছাদ বাগান দেখে আমি উৎসাহিত হয়ে বিগত এক বছর যাবত আমার ছাদে বাগান তৈরীতে হাত দিয়েছি। ফুলও ফলজ বেশ কিছু চাড়া রোপন করেছি। নিয়মিত পরিচর্যা করছি। এগুলো ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে।

পাশ্ববর্তি নির্মাধীন বাড়ির মালিক বিদ্যুৎ ভুইয়া বলেন,মাসুদের ছাদ বাগানটি দেখতে খুবই সুন্দর। আমার বাড়ির কাজ শেষের পর্যায়ে। বাড়িতে উঠেই ছাদে বাগান করার ইচ্ছে রয়েছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কায়ছুন রাফাত হাওলাদার বলেন, নির্ভেজাল ফল-মুল পাওয়ার জন্য অনেক সৌখিন মানুষ ছাদবাগানের দিকে ঝুকছেন। সুপরিকল্পিত একটি বাগান থেকে সারা বছরই পরিবারের ফল-মুল ও সবজির চাহিদা পুরণ করা সম্ভব। পরিকল্পিতভাবে বৃক্ষরোপণ করে ছাদে বাগান করার ক্ষেত্রে আমরা প্রযুক্তিগত সহায়তা ও পরামর্শ দিচ্ছি।

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব