০৬:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

রূপগঞ্জে ফাগুনের আগুনে প্রকৃতিতে লেগেছে পরিবর্তনের ছোঁয়া!

মৌমাছির গুঞ্জন আর পাখির কলকাকলিতে মুখর এলাকা। এ যেন কোকিলের সুমিষ্ট কুহুতানে ফাগুনের উত্তাল হাওয়া দিচ্ছে দোলা। গাছে গাছে জেগে উঠেছে সবুজ পাতা। মুকুল আর শিমুল ফুল দেখে বোঝা যায় শীত বিদায় নিয়ে এসেছে ফাগুন। ঋতু পরিক্রমায় বছর ঘুরে বসন্তের আগমনে আবহমান গ্রামবাংলার প্রকৃতি তার নানা পরিবর্তন পেরিয়ে আবার সেজেছে শিমুল ফুলের রঙিন,নয়নাভিরাম সৌন্দর্যে নতুন রূপে।শীতের রিক্ততা কাটিয়ে ফাগুনের আগুনে প্রকৃতিতে লেগেছে পরিবর্তনের ছোঁয়া। ফুলে ফুলে সজ্জিত প্রকৃতি জানান দিচ্ছে বসন্তের আগমনী বার্তা।প্রকৃতিতে বসন্তের সাজ সাজ রব রূপলাবণ্যে ভরা মনোহর পরিবেশ মানুষের মনকে রাঙিয়ে তুলছে।পাতা ঝড়া বৃক্ষগুলির মাথায় দেখা দিয়েছে সবুজ পাতা, কুলি ও ফুল। বসন্তের আগমনে শিমুল গাছে ফাগুনের ছোয়ায় চোখ ধাঁধানো গাঢ় লাল রঙের ফুল শোভা পাচ্ছে। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে রাস্তার ধারে, বাড়ির কোণে, পতিত ভিটায় ঠায় দাড়িয়ে থাকা শিমুল গাছগুলি নতুন কুড়ি ও রঙিন ফুলে ভরেগেছে। প্রকৃতি যেন অনাবিল আনন্দ ও নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমিতে পরিনত হয়েছে।গাছে গাছে রঙিন ফুল প্রকৃতিকে করেছে সৌন্দর্য মন্ডিত ।

এক সময় এ উপজেলায় প্রচুর পরিমানে শিমুল গাছ ছিল। বসন্ত এলে গাছে গাছে লাল রঙের ফুলে ভরে যেত। ফুলে ফুলে প্রকৃতি সাজতো অপরূপ রূপে। শিমুল ফুল ফুটেই জানান দিতো বসন্তের আগমনি বার্তা।কালের বিবর্তনে উপজেলায় আবাসন ও শিল্প-কারখানার প্রসারের সাথে পাল্লা দিয়ে কমেছে কমেছে শিমুল গাছ।তবে উপজেলায় শিল্প-কারখানা ও গনবসতিপূর্ন এলাকায় শিমুল গাছের সংখ্যা কমে গেলেও গ্রামঞ্চলের শিমুল গাছগুলো এখন সেজেছে বাহারি রঙের ফুলে।মাঘ মাসের শেষে ফাল্গুনের শুরুতে ফুল ফুটে চৈত্র মাসের শেষের দিকে পুষ্ট হয় এ গাছের ফল।বৈশাখে মাসের দিকে ফলগুলো পেকে গিয়ে আপনা আপনিই ফল ফেটে বাতাশের সাথে উড়ে উড়ে দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়া বীজ থেকেও গাছের জন্ম হয়।
আবার অনেকে নীজে থেকেই গাছ রোপন করে থাকে।

বীজ ও কান্ডের মাধ্যমে এর বংশ বিস্তার হয়।প্রাকৃতিকভাবেই শিমুল গাছ বেড়ে উঠছে।শিমুল গাছ শুধু ফুল দিয়ে পরিবেশের সৌন্দর্যই বাড়ায় না এই গাছে রয়েছে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার ভেষজ গুনাগুন। এ গাছের বিভিন্ন অংশ ব্যবহার করে চিকিৎসকরা এখনো নানা রোগের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন রুগিদের।শিমুল গাছের বৈজ্ঞানিক নাম বোমবাক্স সাইবালিন। শিমুল তুলা আরামদায়ক বেডিং শিল্পে ঐতিয্যবাহি কাঁচামাল। বালিশ, লেপ ও তোষক তৈরিতে শিমুল তুলার জুড়ি নেই। শিমুল তুলা ও গাছ মানব জীবনে নানা উপকারিতা এবং অর্থনৈতিকভাবে ও বেশ গুরুত্ব বহন করছে।

মুড়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা আলহাজ্ব নুর মোহাম্মদ জানান, কয়েক দশক আগেও রাস্তার ধারে, বাড়ির কোণে, পতিত ভিটায় প্রচুর পরিমানে শিমুল গাছ ছিল। ফাল্গুন মাস এলে গাছে গাছে চোখ ধাঁধানো গাঢ় লাল রঙের ফুল শোভা পেত। তবে ৯০ দশকের পর থেকেই উদ্যোক্তারা কল-কারখানা তৈরিতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। এতে অবাধে নিধন করা হয়েছে গাছপালা। বিভিন্ন গাছপালার সঙ্গে তাই শিমুল গাছও কমেগেছে। তবে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এখনো ঠায় দায়িয়ে থাকা গাছ গুলোতে ফুল ফুটে প্রকৃতিকে সাজিয়েছে নতুন রূপে জানান দিচ্ছে বসন্তের আগমনি বার্তা।

মঙ্গলখালী এলাকার বাসিন্দা শাহজাহান খান বলেন,আরামদায়ক হওয়ার কারণে আগের তুলনায় এখন শিমুলের তুলার চাহিদার সাথে দামও অনেক বেড়ে গেছে। ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সী একটি বড় ধরনের গাছ থেকে তুলা বিক্রি করে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। শিমুল গাছ ফুল দিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি এর রয়েছে ঔষধি গুন। এছাড়াও গাছ বিক্রি করে এককালীন আয় করা সম্বব। বর্তমানে মানুষ এ গাছ কারণে-অকারণে কেটে ফেলছে। অতীতে নানা ধরনের প্যাকিং বাক্স তৈরি ও ইটভাটার জ্বালানি, দিয়াশলাইয়ের কাঠি হিসেবে ব্যবহার হলেও সেই তুলনায় রোপণ করা হয়নি। ফলে আজ কমে যাচ্ছে শিমুল গাছ।

মুড়াপাড়া এলাকার লেপ তোষক তৈরিকারক ও বিক্রেতা নেছার জানান, বর্তমানে শিমুল তুলা ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে কাপাশ তুলা ১৫০ এবং গার্মেন্টেসের জুট দিয়ে তৈরি তুলা ৫০ টাকা কেজি আর পঞ্চের তুলা ৭০ কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে রুচিশীল মানুষ লেপ,তোষক ও বালিশে শিমুল তুলাই ব্যাবহার করেন।

সরকারী মুড়াপাড়া কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ হাফিজুর রহমান বলেন,ঋুুুুতু বৈচিত্রে আবহমান বাংলায় ঋুুুুতরাজ বসন্ত আসে প্রকৃতিকে অপরূপ রঙে সাজাতে। আর শিমুলের গাঢ় লাল রঙের ফুলের সমাহার ছাড়া বসন্তের প্রকৃত রূপ ফুটেওঠা ভাড় । প্রাকৃতিকভাবেই শিমুল গাছ বেড়ে ওঠে। অন্যান্য গাছের মত এ গাছের কোনো যত নিতে হয় না। আপনা-আপনিই গাছে ফল ফেটে বাতাশে তুলার সঙ্গে উড়ে দূর-দূরান্তে পরে সেখান থেকেই চাড়া জন্মায় ।পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি শিমুল গাছ বিভিন্ন ভাবে আমাদের আর্থিক চাহিদার যোগান দিয়ে থাকে। প্রকৃতি ও ঋতু বৈচিত্রের বাহক শিমুল গাছ রোপনে আমাদের গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ।

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব

জনপ্রিয়

সীতাকুণ্ডে বাস-ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৭

রূপগঞ্জে ফাগুনের আগুনে প্রকৃতিতে লেগেছে পরিবর্তনের ছোঁয়া!

প্রকাশিত : ১২:২২:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ মার্চ ২০২৩

মৌমাছির গুঞ্জন আর পাখির কলকাকলিতে মুখর এলাকা। এ যেন কোকিলের সুমিষ্ট কুহুতানে ফাগুনের উত্তাল হাওয়া দিচ্ছে দোলা। গাছে গাছে জেগে উঠেছে সবুজ পাতা। মুকুল আর শিমুল ফুল দেখে বোঝা যায় শীত বিদায় নিয়ে এসেছে ফাগুন। ঋতু পরিক্রমায় বছর ঘুরে বসন্তের আগমনে আবহমান গ্রামবাংলার প্রকৃতি তার নানা পরিবর্তন পেরিয়ে আবার সেজেছে শিমুল ফুলের রঙিন,নয়নাভিরাম সৌন্দর্যে নতুন রূপে।শীতের রিক্ততা কাটিয়ে ফাগুনের আগুনে প্রকৃতিতে লেগেছে পরিবর্তনের ছোঁয়া। ফুলে ফুলে সজ্জিত প্রকৃতি জানান দিচ্ছে বসন্তের আগমনী বার্তা।প্রকৃতিতে বসন্তের সাজ সাজ রব রূপলাবণ্যে ভরা মনোহর পরিবেশ মানুষের মনকে রাঙিয়ে তুলছে।পাতা ঝড়া বৃক্ষগুলির মাথায় দেখা দিয়েছে সবুজ পাতা, কুলি ও ফুল। বসন্তের আগমনে শিমুল গাছে ফাগুনের ছোয়ায় চোখ ধাঁধানো গাঢ় লাল রঙের ফুল শোভা পাচ্ছে। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে রাস্তার ধারে, বাড়ির কোণে, পতিত ভিটায় ঠায় দাড়িয়ে থাকা শিমুল গাছগুলি নতুন কুড়ি ও রঙিন ফুলে ভরেগেছে। প্রকৃতি যেন অনাবিল আনন্দ ও নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমিতে পরিনত হয়েছে।গাছে গাছে রঙিন ফুল প্রকৃতিকে করেছে সৌন্দর্য মন্ডিত ।

এক সময় এ উপজেলায় প্রচুর পরিমানে শিমুল গাছ ছিল। বসন্ত এলে গাছে গাছে লাল রঙের ফুলে ভরে যেত। ফুলে ফুলে প্রকৃতি সাজতো অপরূপ রূপে। শিমুল ফুল ফুটেই জানান দিতো বসন্তের আগমনি বার্তা।কালের বিবর্তনে উপজেলায় আবাসন ও শিল্প-কারখানার প্রসারের সাথে পাল্লা দিয়ে কমেছে কমেছে শিমুল গাছ।তবে উপজেলায় শিল্প-কারখানা ও গনবসতিপূর্ন এলাকায় শিমুল গাছের সংখ্যা কমে গেলেও গ্রামঞ্চলের শিমুল গাছগুলো এখন সেজেছে বাহারি রঙের ফুলে।মাঘ মাসের শেষে ফাল্গুনের শুরুতে ফুল ফুটে চৈত্র মাসের শেষের দিকে পুষ্ট হয় এ গাছের ফল।বৈশাখে মাসের দিকে ফলগুলো পেকে গিয়ে আপনা আপনিই ফল ফেটে বাতাশের সাথে উড়ে উড়ে দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়া বীজ থেকেও গাছের জন্ম হয়।
আবার অনেকে নীজে থেকেই গাছ রোপন করে থাকে।

বীজ ও কান্ডের মাধ্যমে এর বংশ বিস্তার হয়।প্রাকৃতিকভাবেই শিমুল গাছ বেড়ে উঠছে।শিমুল গাছ শুধু ফুল দিয়ে পরিবেশের সৌন্দর্যই বাড়ায় না এই গাছে রয়েছে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার ভেষজ গুনাগুন। এ গাছের বিভিন্ন অংশ ব্যবহার করে চিকিৎসকরা এখনো নানা রোগের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন রুগিদের।শিমুল গাছের বৈজ্ঞানিক নাম বোমবাক্স সাইবালিন। শিমুল তুলা আরামদায়ক বেডিং শিল্পে ঐতিয্যবাহি কাঁচামাল। বালিশ, লেপ ও তোষক তৈরিতে শিমুল তুলার জুড়ি নেই। শিমুল তুলা ও গাছ মানব জীবনে নানা উপকারিতা এবং অর্থনৈতিকভাবে ও বেশ গুরুত্ব বহন করছে।

মুড়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা আলহাজ্ব নুর মোহাম্মদ জানান, কয়েক দশক আগেও রাস্তার ধারে, বাড়ির কোণে, পতিত ভিটায় প্রচুর পরিমানে শিমুল গাছ ছিল। ফাল্গুন মাস এলে গাছে গাছে চোখ ধাঁধানো গাঢ় লাল রঙের ফুল শোভা পেত। তবে ৯০ দশকের পর থেকেই উদ্যোক্তারা কল-কারখানা তৈরিতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। এতে অবাধে নিধন করা হয়েছে গাছপালা। বিভিন্ন গাছপালার সঙ্গে তাই শিমুল গাছও কমেগেছে। তবে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এখনো ঠায় দায়িয়ে থাকা গাছ গুলোতে ফুল ফুটে প্রকৃতিকে সাজিয়েছে নতুন রূপে জানান দিচ্ছে বসন্তের আগমনি বার্তা।

মঙ্গলখালী এলাকার বাসিন্দা শাহজাহান খান বলেন,আরামদায়ক হওয়ার কারণে আগের তুলনায় এখন শিমুলের তুলার চাহিদার সাথে দামও অনেক বেড়ে গেছে। ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সী একটি বড় ধরনের গাছ থেকে তুলা বিক্রি করে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। শিমুল গাছ ফুল দিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি এর রয়েছে ঔষধি গুন। এছাড়াও গাছ বিক্রি করে এককালীন আয় করা সম্বব। বর্তমানে মানুষ এ গাছ কারণে-অকারণে কেটে ফেলছে। অতীতে নানা ধরনের প্যাকিং বাক্স তৈরি ও ইটভাটার জ্বালানি, দিয়াশলাইয়ের কাঠি হিসেবে ব্যবহার হলেও সেই তুলনায় রোপণ করা হয়নি। ফলে আজ কমে যাচ্ছে শিমুল গাছ।

মুড়াপাড়া এলাকার লেপ তোষক তৈরিকারক ও বিক্রেতা নেছার জানান, বর্তমানে শিমুল তুলা ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে কাপাশ তুলা ১৫০ এবং গার্মেন্টেসের জুট দিয়ে তৈরি তুলা ৫০ টাকা কেজি আর পঞ্চের তুলা ৭০ কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে রুচিশীল মানুষ লেপ,তোষক ও বালিশে শিমুল তুলাই ব্যাবহার করেন।

সরকারী মুড়াপাড়া কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ হাফিজুর রহমান বলেন,ঋুুুুতু বৈচিত্রে আবহমান বাংলায় ঋুুুুতরাজ বসন্ত আসে প্রকৃতিকে অপরূপ রঙে সাজাতে। আর শিমুলের গাঢ় লাল রঙের ফুলের সমাহার ছাড়া বসন্তের প্রকৃত রূপ ফুটেওঠা ভাড় । প্রাকৃতিকভাবেই শিমুল গাছ বেড়ে ওঠে। অন্যান্য গাছের মত এ গাছের কোনো যত নিতে হয় না। আপনা-আপনিই গাছে ফল ফেটে বাতাশে তুলার সঙ্গে উড়ে দূর-দূরান্তে পরে সেখান থেকেই চাড়া জন্মায় ।পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি শিমুল গাছ বিভিন্ন ভাবে আমাদের আর্থিক চাহিদার যোগান দিয়ে থাকে। প্রকৃতি ও ঋতু বৈচিত্রের বাহক শিমুল গাছ রোপনে আমাদের গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ।

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব