১০:৩৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

রোজায় ওজন কমাতে ডায়েট প্ল্যান

Beautiful young woman. Isolated over white background

শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান মাস। যারা নিয়ম মেনে কোন ডায়েট প্ল্যান মেনে চলেন তাদের জন্য রোজার মাসে একই ডায়েট প্ল্যান মেনে চলা কঠিন হয়ে পড়ে। আবার অনেকেই মনে করেন রোজার মাসে সারা দিন না খেয়ে থাকার কারণে ওজন কমে যায়। কিন্তু এটা ভুল ধারণা। আমরা সাধারণত ৩ বেলা খাই আর রোজার সময়েও ইফতার, রাতে আর সেহেরি মিলিয়ে ৩ বেলা-ই খাচ্ছি। তাহলে ওজন কমবে কীভাবে?

তাছাড়া অনেকেই রোজা রাখার পর ইফতারের সময় সামনে বিভিন্ন খাবার দেখলে পেট ভরে গেলেও শুধুমাত্র চোখের ক্ষুধা মেটানোর জন্য খাবার খেতেই থাকে। তখন আর নির্দিষ্ট ডায়েট প্ল্যানের কথা মনে থাকে না। আমাদের দেশে ইফতারের সময় সাধারণত তেলে ভাজা খাবার বেশি থাকে। এগুলো একই সাথে ওজন বাড়ায় এবং এসিডিটির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এরপর আসে সেহরি আর রাতের খাবারের কথা। ইফতারের ৩/৪ ঘন্টা পরেই রাতের খাবারের সময় হয়ে যায়। তখন পেট ভরা থাকার পরেও অনেকে মনে করে যে সারা দিন না খেয়ে থাকব, তার চেয়ে খেয়ে নিই। তাই দেখা যায় ঘুরে ফিরে আমরা প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার খেতেই থাকি। তাছাড়া বিভিন্ন দাওয়াত আর বাইরের দোকানে আকর্ষণীয় সব অফার দেখে সেখানে ইফতার করা তো হবেই। কখনো বন্ধু-বান্ধবের সাথে, কখনো আত্মীয়দের সাথে।

গ্রীষ্মের দীর্ঘ দিনের রোজায় নিত্যদিনের খাবারের ব্যালেন্স ঠিক রাখাটা খুবই কঠিন হয়ে পড়বে সবার জন্যই। আর খাবারের ব্যালেন্স বিগড়ে গেলেই বিগড়ে যাবে দেহঘড়ির ব্যালেন্স।

রোজার সময় আমাদের খাদ্যাভাবে প্রুচুর পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। ইফতারে আপনি চাইবেন আপনার পছন্দের খাদ্যগুলো আপনার ইফতারের খাদ্যতালিকায় রাখতে। তবে আপনি চাইলেই এই রোজায় আপনার শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেলতে পারেন।

রোজার সময়টাতে সুস্থ আর ফিট থাকতে চলতে হবে একটু নিয়ম মেনে। সেহরিতে খেতে হবে এমন সব খাবার, যা হজম হবে ধীরে আর সারাদিনে আপনার খিদে লাগতে দেবে না। এ ধরনের খাবারের মধ্যে রয়েছে লাল চালের ভাত, ডাল, মিষ্টি আলু, গাজরসহ আঁশযুক্ত ফল ও সবজি, হোলগ্রেইন রুটি, পাস্তা, ওটস ইত্যাদি। রোজা রাখার একটা বড় সুবিধা হচ্ছে অসময়ে হালকা নাশতা খাওয়ার অভ্যাসটা কমবে।

চলুন দেখে নেই কিভাবে রোজার সময়ও থাকবেন এক্কেবারে ফিট।

ক্যালোরি হিসেব করে খান
একজন পূর্ণবয়স্ক মহিলা এবং পুরুষের দৈনিক কি পরিমাণ ক্যালোরি প্রয়োজন তা হিসেব করে খাবার বাছুন। খান এমন সব খাবার যেগুলোতে আছে প্রচুর আঁশ এবং প্রয়োজনীয় আমিষ ও খনিজ পদার্থ। কার্বোহাইড্রেট কম খান, বেছে নিতে পারেন লাল চাল বা আটা। এগুলোতে ক্যালোরি কম থাকে কিন্তু আঁশ বেশী থাকে বলে শরীরের জন্য খুব ভালো।

ইফতারে পেট পুরে খাবেন না
সারাদিন অভূক্ত থাকার পর ইফতারে সাধারণত আমরা পেট ভরে খাই। আর তার ওপর বাঙালিদের ইফতারে ভাজাপোড়া না হলে চলে না। কিন্তু সারাদিন রোজা থাকার পর ভাজাপোড়া খাবার খেলে আপনার ওজন বাড়বে বই কমবে না। রোজা ভাঙুন খেজুর খেয়ে এবং ফল দিয়েই শুরু করুন রোজকার ইফতার। এতে আপনার রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিক হবে, খিদে কমে আসবে আর এর ফলে আপনার অতিরিক্ত খাওয়ার ইচ্ছে হবে না।

সেহরিতে স্বাস্থ্যকর খাবার এবং প্রচুর পানি খান
সেহরিতে লাল চালের ভাতের সাথে প্রচুর সবজি এবং আমিষ খান, তবে লাল মাংস এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। সঙ্গে সময় নিয়ে ধীরে ধীরে প্রচুর পানি খান।

রাতের খাবার নিয়ে একটু ভাবুন
সন্ধ্যায় ইফতারের পরেই রাতে ভারী খাবার খেলে দিনশেষে কিন্তু বেশী খাওয়াই হয়ে যাবে। তাই সন্ধ্যায় ইফতারের পরে রাতে ঘুমানোর অন্তত ঘণ্টা দুয়েক আগে ফল অথবা সালাদ খান, সাথে প্রচুর পানি।

একটু হিসেব করে খেলেই আসলে দেখবেন রোজার সময় খাওয়া দাওয়া নিয়েও সমস্যা হবে না আর আপনার ওজনও বাড়বে না। রোজার শুরুর দিকে রোজকার রুটিনের হঠাৎ পরিবর্তনের সাথে অভ্যস্ত হতে একটু অসুবিধা হলেও দেখবেন সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই অভ্যস্ত হয়ে গেছেন।

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

গাজাজুড়ে ইসরায়েলের নৃশংস হামলা, নারী-শিশুসহ নিহত ২৮

রোজায় ওজন কমাতে ডায়েট প্ল্যান

প্রকাশিত : ০৪:৩০:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ মে ২০১৮

শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান মাস। যারা নিয়ম মেনে কোন ডায়েট প্ল্যান মেনে চলেন তাদের জন্য রোজার মাসে একই ডায়েট প্ল্যান মেনে চলা কঠিন হয়ে পড়ে। আবার অনেকেই মনে করেন রোজার মাসে সারা দিন না খেয়ে থাকার কারণে ওজন কমে যায়। কিন্তু এটা ভুল ধারণা। আমরা সাধারণত ৩ বেলা খাই আর রোজার সময়েও ইফতার, রাতে আর সেহেরি মিলিয়ে ৩ বেলা-ই খাচ্ছি। তাহলে ওজন কমবে কীভাবে?

তাছাড়া অনেকেই রোজা রাখার পর ইফতারের সময় সামনে বিভিন্ন খাবার দেখলে পেট ভরে গেলেও শুধুমাত্র চোখের ক্ষুধা মেটানোর জন্য খাবার খেতেই থাকে। তখন আর নির্দিষ্ট ডায়েট প্ল্যানের কথা মনে থাকে না। আমাদের দেশে ইফতারের সময় সাধারণত তেলে ভাজা খাবার বেশি থাকে। এগুলো একই সাথে ওজন বাড়ায় এবং এসিডিটির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এরপর আসে সেহরি আর রাতের খাবারের কথা। ইফতারের ৩/৪ ঘন্টা পরেই রাতের খাবারের সময় হয়ে যায়। তখন পেট ভরা থাকার পরেও অনেকে মনে করে যে সারা দিন না খেয়ে থাকব, তার চেয়ে খেয়ে নিই। তাই দেখা যায় ঘুরে ফিরে আমরা প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার খেতেই থাকি। তাছাড়া বিভিন্ন দাওয়াত আর বাইরের দোকানে আকর্ষণীয় সব অফার দেখে সেখানে ইফতার করা তো হবেই। কখনো বন্ধু-বান্ধবের সাথে, কখনো আত্মীয়দের সাথে।

গ্রীষ্মের দীর্ঘ দিনের রোজায় নিত্যদিনের খাবারের ব্যালেন্স ঠিক রাখাটা খুবই কঠিন হয়ে পড়বে সবার জন্যই। আর খাবারের ব্যালেন্স বিগড়ে গেলেই বিগড়ে যাবে দেহঘড়ির ব্যালেন্স।

রোজার সময় আমাদের খাদ্যাভাবে প্রুচুর পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। ইফতারে আপনি চাইবেন আপনার পছন্দের খাদ্যগুলো আপনার ইফতারের খাদ্যতালিকায় রাখতে। তবে আপনি চাইলেই এই রোজায় আপনার শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেলতে পারেন।

রোজার সময়টাতে সুস্থ আর ফিট থাকতে চলতে হবে একটু নিয়ম মেনে। সেহরিতে খেতে হবে এমন সব খাবার, যা হজম হবে ধীরে আর সারাদিনে আপনার খিদে লাগতে দেবে না। এ ধরনের খাবারের মধ্যে রয়েছে লাল চালের ভাত, ডাল, মিষ্টি আলু, গাজরসহ আঁশযুক্ত ফল ও সবজি, হোলগ্রেইন রুটি, পাস্তা, ওটস ইত্যাদি। রোজা রাখার একটা বড় সুবিধা হচ্ছে অসময়ে হালকা নাশতা খাওয়ার অভ্যাসটা কমবে।

চলুন দেখে নেই কিভাবে রোজার সময়ও থাকবেন এক্কেবারে ফিট।

ক্যালোরি হিসেব করে খান
একজন পূর্ণবয়স্ক মহিলা এবং পুরুষের দৈনিক কি পরিমাণ ক্যালোরি প্রয়োজন তা হিসেব করে খাবার বাছুন। খান এমন সব খাবার যেগুলোতে আছে প্রচুর আঁশ এবং প্রয়োজনীয় আমিষ ও খনিজ পদার্থ। কার্বোহাইড্রেট কম খান, বেছে নিতে পারেন লাল চাল বা আটা। এগুলোতে ক্যালোরি কম থাকে কিন্তু আঁশ বেশী থাকে বলে শরীরের জন্য খুব ভালো।

ইফতারে পেট পুরে খাবেন না
সারাদিন অভূক্ত থাকার পর ইফতারে সাধারণত আমরা পেট ভরে খাই। আর তার ওপর বাঙালিদের ইফতারে ভাজাপোড়া না হলে চলে না। কিন্তু সারাদিন রোজা থাকার পর ভাজাপোড়া খাবার খেলে আপনার ওজন বাড়বে বই কমবে না। রোজা ভাঙুন খেজুর খেয়ে এবং ফল দিয়েই শুরু করুন রোজকার ইফতার। এতে আপনার রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিক হবে, খিদে কমে আসবে আর এর ফলে আপনার অতিরিক্ত খাওয়ার ইচ্ছে হবে না।

সেহরিতে স্বাস্থ্যকর খাবার এবং প্রচুর পানি খান
সেহরিতে লাল চালের ভাতের সাথে প্রচুর সবজি এবং আমিষ খান, তবে লাল মাংস এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। সঙ্গে সময় নিয়ে ধীরে ধীরে প্রচুর পানি খান।

রাতের খাবার নিয়ে একটু ভাবুন
সন্ধ্যায় ইফতারের পরেই রাতে ভারী খাবার খেলে দিনশেষে কিন্তু বেশী খাওয়াই হয়ে যাবে। তাই সন্ধ্যায় ইফতারের পরে রাতে ঘুমানোর অন্তত ঘণ্টা দুয়েক আগে ফল অথবা সালাদ খান, সাথে প্রচুর পানি।

একটু হিসেব করে খেলেই আসলে দেখবেন রোজার সময় খাওয়া দাওয়া নিয়েও সমস্যা হবে না আর আপনার ওজনও বাড়বে না। রোজার শুরুর দিকে রোজকার রুটিনের হঠাৎ পরিবর্তনের সাথে অভ্যস্ত হতে একটু অসুবিধা হলেও দেখবেন সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই অভ্যস্ত হয়ে গেছেন।