১০:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫

ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে চলমান সংলাপের মধ্যেই তেহরানের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এবার নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য ইরানের সামরিক বাহিনীর অস্ত্র গবেষণা সংস্থা ‘অর্গানাইজেশন অব ডিফেন্সিভ ইনোভেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এসপিএনডি)’–এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তিন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও একটি প্রতিষ্ঠান।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ইরানের ওই কর্মকর্তারা দেশটির পরমাণু প্রকল্পে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ও তাদের কর্মকাণ্ড পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম গোপন রাখা হয়েছে। তবে এরই মধ্ই যুক্তরাষ্ট্রে তাদের যাবতীয় সম্পদ জব্দ করা হয়েছে ও দেশটিতে তাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কোনো মার্কিন সংস্থাও তাদের সঙ্গে আর্থিক বা বাণিজ্যিক লেনদেন করতে পারবে না।

পৃথক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মার্কো রুবিও বলেন, ইরান ধারাবাহিকভাবে তার পরমাণু কর্মসূচি সম্প্রসারণ করছে এবং দ্বৈত-ব্যবহারের প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে, যা পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহারযোগ্য। তিনি আরও বলেন, বিশ্বে ইরানই একমাত্র দেশ যার কোনো পারমাণবিক অস্ত্র নেই, কিন্তু ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম রয়েছে।

২০১৫ সালে ওবামা প্রশাসনের সময় ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ‘জ্যাকোপা’ চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও, ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে সেই চুক্তি থেকে সরিয়ে নেন। এরপর থেকে ইরান আবার তাদের পরমাণু কর্মসূচিতে মনোযোগ দেয় এবং সম্প্রতি আন্তর্জাতিক পরমাণু সংস্থা আইএইএ জানিয়েছে, দেশটি ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুত করেছে। এই ইউরেনিয়ামকে ৯০ শতাংশ বিশুদ্ধতায় পরিণত করলে ছয়টি পারমাণবিক বোমা তৈরি সম্ভব।

আইআইএ’র এই তথ্যে পর নড়েচড়ে বসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন। ট্রাম্প নিজে ইরানের সঙ্গে সরাসরি সংলাপের আহ্বান জানিয়ে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে চিঠি দেন। ইরানের সরকারও তাতে সাড়া দেয়। কাতারের রাজধানী দোহায় চলছে ওয়াশিংটন ও তেহরানের কর্মকর্তাদের সংলাপ এবং ইরানের চাওয়া অনুযায়ী সংলাপে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় আছে ওমান।

দোহায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে চতুর্থ দফা সংলাপ শেষ হয়েছে। এর মধ্যেই এই নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলো যুক্তরাষ্ট্র, যা আলোচনার ভবিষ্যৎ ফলাফলের ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা বিশ্লেষকদের।

সূত্র: এএফপি

ডিএস//

জনপ্রিয়

লক্ষ্মীপুরে মাদ্রাসা ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় এক শিক্ষক আটক

ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশিত : ১১:৪৩:০৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫

ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে চলমান সংলাপের মধ্যেই তেহরানের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এবার নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য ইরানের সামরিক বাহিনীর অস্ত্র গবেষণা সংস্থা ‘অর্গানাইজেশন অব ডিফেন্সিভ ইনোভেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এসপিএনডি)’–এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তিন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও একটি প্রতিষ্ঠান।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ইরানের ওই কর্মকর্তারা দেশটির পরমাণু প্রকল্পে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ও তাদের কর্মকাণ্ড পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম গোপন রাখা হয়েছে। তবে এরই মধ্ই যুক্তরাষ্ট্রে তাদের যাবতীয় সম্পদ জব্দ করা হয়েছে ও দেশটিতে তাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কোনো মার্কিন সংস্থাও তাদের সঙ্গে আর্থিক বা বাণিজ্যিক লেনদেন করতে পারবে না।

পৃথক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মার্কো রুবিও বলেন, ইরান ধারাবাহিকভাবে তার পরমাণু কর্মসূচি সম্প্রসারণ করছে এবং দ্বৈত-ব্যবহারের প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে, যা পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহারযোগ্য। তিনি আরও বলেন, বিশ্বে ইরানই একমাত্র দেশ যার কোনো পারমাণবিক অস্ত্র নেই, কিন্তু ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম রয়েছে।

২০১৫ সালে ওবামা প্রশাসনের সময় ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ‘জ্যাকোপা’ চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও, ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে সেই চুক্তি থেকে সরিয়ে নেন। এরপর থেকে ইরান আবার তাদের পরমাণু কর্মসূচিতে মনোযোগ দেয় এবং সম্প্রতি আন্তর্জাতিক পরমাণু সংস্থা আইএইএ জানিয়েছে, দেশটি ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুত করেছে। এই ইউরেনিয়ামকে ৯০ শতাংশ বিশুদ্ধতায় পরিণত করলে ছয়টি পারমাণবিক বোমা তৈরি সম্ভব।

আইআইএ’র এই তথ্যে পর নড়েচড়ে বসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন। ট্রাম্প নিজে ইরানের সঙ্গে সরাসরি সংলাপের আহ্বান জানিয়ে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে চিঠি দেন। ইরানের সরকারও তাতে সাড়া দেয়। কাতারের রাজধানী দোহায় চলছে ওয়াশিংটন ও তেহরানের কর্মকর্তাদের সংলাপ এবং ইরানের চাওয়া অনুযায়ী সংলাপে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় আছে ওমান।

দোহায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে চতুর্থ দফা সংলাপ শেষ হয়েছে। এর মধ্যেই এই নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলো যুক্তরাষ্ট্র, যা আলোচনার ভবিষ্যৎ ফলাফলের ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা বিশ্লেষকদের।

সূত্র: এএফপি

ডিএস//