১২:৪৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪

বিলুপ্তির পথে শিমুলতলী কুমারপাড়ার ডুঙ্গি ঐতিহ্য

দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় ঐতিহ্যের হস্তশিল্প হিসেবে বিলীন হতে চলেছে ডুঙ্গি। কুমারদের হাতের তৈরি অত্যন্ত নৈপুণ্যতায় মাটির এ শিল্পটি অল্প দেখা মেলে দই বিক্রির কাজে বিরামপুরের হোটেল রেষ্টুরেন্ট গুলোতে।

শিমুলতলীতে কুমারদের মধ্যে বংশ পরম্পরায় ও জীবিকা নির্বাহের পথও বটে এই ডুঙ্গি বানানো। কুমারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই ঐতিহ্যবাহী মাটির শিল্প যেন আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে না যায়।

আক্ষেপ করে শিমুলতলীর শ্রী বিমল চন্দ্র মহন্ত বলেন, “এখন আগের মত আর মাটির তৈরি তৈজসপত্র চলেনা । আগে দিনে প্রায় ১৮-২০ ঘন্টা কাজ করে তৈরী করছিলাম বাহারী রংঙ্গের বাসন, ঘট, নঁকশি করা বাহারী ফুলদানী, ফুলের টপ, বড় বড় মটকা, গরুর খাবার খাওয়ার জন্য ভাগারী, সরা, মালা, পাতিল, পিঠা বানানোর সাজ, ধুপবাটি, মুড়ি ভাজার পাতিল, রসের হাড়ি, ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের খেলনা হাতি, ঘোড়া, বাশিঁ, টাকা জমানোর মাটির তৈরী ব্যাংক বিভিন্ন তৈজসপত্র”।

এই তৈজসপত্রগুলো তৈরী করতে লাগে মাটি, যা আনতে হয় বিভিন্ন দুর-দুরান্ত থেকে। এরপর শুরু হয় মাটিকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় তৈজসপত্র তৈরী করার উপযোগী। বাহারী রকমের তৈজসপত্র তৈরীর পর তা রৌদ্রে শুকিয়ে পুইনে পোড়ানো হয়। পোড়ানো কাজে ব্যবহার করা হয় খড়কুটা, পাটখড়ি, গাছের গুড়া ও কাঠ। এই মাটির তৈরীর অনেক কিছুই এখনো শোভা পায় ধনীদের বাসার ছাদে, বেলকনীতে, অফিসের সৌন্দর্য বাড়াতে।

তবে কুমাররা হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করেও পাচ্ছে না এর সঠিক মূল্য। অপর দিকে আধুনিক জিনিসপত্র ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় হ্রাস পাচ্ছে মাটির তৈরী তৈজসপত্রের । তাই শিমুলতলী কুমার পাড়া হয়ে পড়ছে নীরব নি:শব্দ। হয়তো কিছুদিন পর শোনা যাবেনা এই কুমার পাড়ার টাকুর-টুকুর শব্দ। দেখা যাবে না কুমার পাড়ার সেই ঐতিহ্যবাহী চাকি ঘুরানো। তাই অনেকেই পৈত্রিক এই কারুকার্যের কাজ ছেড়ে দিয়েছে। যারা একেবারে হত-দরিদ্র তারাই আজও পড়ে আছে এই কাজের মাঝেই।

৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিজানুর রহমান দাবী জানিয়ে বলেন, যাতে করে দেশের এই ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈরী তৈজসপত্র আধুনিক যান্ত্রিক ছোঁয়ায় যেন হারিয়ে না যায় সে দিকে সরকারসহ স্থানীয় প্রশাসন যেন এগিয়ে আসে তাদের প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে আধুনিকভাবে এই হস্তশিল্পের প্রসার ঘটনোর।

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ

জনপ্রিয়

মুরাদনগরের সাবেক ৫বারের এমপি কায়কোবাদের অপেক্ষায় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ

বিলুপ্তির পথে শিমুলতলী কুমারপাড়ার ডুঙ্গি ঐতিহ্য

প্রকাশিত : ০৪:৫৬:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯

দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় ঐতিহ্যের হস্তশিল্প হিসেবে বিলীন হতে চলেছে ডুঙ্গি। কুমারদের হাতের তৈরি অত্যন্ত নৈপুণ্যতায় মাটির এ শিল্পটি অল্প দেখা মেলে দই বিক্রির কাজে বিরামপুরের হোটেল রেষ্টুরেন্ট গুলোতে।

শিমুলতলীতে কুমারদের মধ্যে বংশ পরম্পরায় ও জীবিকা নির্বাহের পথও বটে এই ডুঙ্গি বানানো। কুমারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই ঐতিহ্যবাহী মাটির শিল্প যেন আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে না যায়।

আক্ষেপ করে শিমুলতলীর শ্রী বিমল চন্দ্র মহন্ত বলেন, “এখন আগের মত আর মাটির তৈরি তৈজসপত্র চলেনা । আগে দিনে প্রায় ১৮-২০ ঘন্টা কাজ করে তৈরী করছিলাম বাহারী রংঙ্গের বাসন, ঘট, নঁকশি করা বাহারী ফুলদানী, ফুলের টপ, বড় বড় মটকা, গরুর খাবার খাওয়ার জন্য ভাগারী, সরা, মালা, পাতিল, পিঠা বানানোর সাজ, ধুপবাটি, মুড়ি ভাজার পাতিল, রসের হাড়ি, ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের খেলনা হাতি, ঘোড়া, বাশিঁ, টাকা জমানোর মাটির তৈরী ব্যাংক বিভিন্ন তৈজসপত্র”।

এই তৈজসপত্রগুলো তৈরী করতে লাগে মাটি, যা আনতে হয় বিভিন্ন দুর-দুরান্ত থেকে। এরপর শুরু হয় মাটিকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় তৈজসপত্র তৈরী করার উপযোগী। বাহারী রকমের তৈজসপত্র তৈরীর পর তা রৌদ্রে শুকিয়ে পুইনে পোড়ানো হয়। পোড়ানো কাজে ব্যবহার করা হয় খড়কুটা, পাটখড়ি, গাছের গুড়া ও কাঠ। এই মাটির তৈরীর অনেক কিছুই এখনো শোভা পায় ধনীদের বাসার ছাদে, বেলকনীতে, অফিসের সৌন্দর্য বাড়াতে।

তবে কুমাররা হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করেও পাচ্ছে না এর সঠিক মূল্য। অপর দিকে আধুনিক জিনিসপত্র ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় হ্রাস পাচ্ছে মাটির তৈরী তৈজসপত্রের । তাই শিমুলতলী কুমার পাড়া হয়ে পড়ছে নীরব নি:শব্দ। হয়তো কিছুদিন পর শোনা যাবেনা এই কুমার পাড়ার টাকুর-টুকুর শব্দ। দেখা যাবে না কুমার পাড়ার সেই ঐতিহ্যবাহী চাকি ঘুরানো। তাই অনেকেই পৈত্রিক এই কারুকার্যের কাজ ছেড়ে দিয়েছে। যারা একেবারে হত-দরিদ্র তারাই আজও পড়ে আছে এই কাজের মাঝেই।

৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিজানুর রহমান দাবী জানিয়ে বলেন, যাতে করে দেশের এই ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈরী তৈজসপত্র আধুনিক যান্ত্রিক ছোঁয়ায় যেন হারিয়ে না যায় সে দিকে সরকারসহ স্থানীয় প্রশাসন যেন এগিয়ে আসে তাদের প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে আধুনিকভাবে এই হস্তশিল্পের প্রসার ঘটনোর।

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ