১১:২৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫

সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব: গওহর রিজভী

রাষ্ট্রের সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী। তিনি বলেছেন, সমাজের সব স্তরের মানুষের পাশাপাশি নারী-পুরুষের বৈষম্য দূর করার দায়িত্ব প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্রকেই নিতে হবে।

রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের মুজাফ্ফর আহমেদ চৌধুরী অডিটরিয়ামে আয়োজিত ফারজানা মাহমুদের ‘সেক্যুলারিজম, জেন্ডার ইকুয়ালিটি পলিটিক্স অ্যান্ড দ্যা স্টেট’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

গওহর রিজভী বলেন, সমাজের সব স্তরের মানুষের জন্য ‘প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরি করতে না পারলে সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়ে উঠে না। তিনি বলেন, মেধাভিত্তিক সমাজ গড়তে হলে নারীর প্রতি বিদ্বেষ-বৈষম্য দূর করতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অতীত গৌরবের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সম্প্রতি কোটা আন্দোলন হয়েছে। আমি ওই আন্দোলনের বিরুদ্ধে নই। তবে আমি কোটা পুনর্বিন্যাস নয়, পুনর্গঠনের পক্ষে।

এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, আমরা কেউ গ্রামের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করি, কেউ শহরে। এক্ষেত্রে শহুরে সুযোগ-সুবিধা ভোগ করা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা সুবিধাবঞ্চিতরা এক ধরনের বৈষম্যের শিকার হয়। সবাই যাতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমান যোগ্যতা নিয়ে, সুযোগ নিয়ে চাকরিতে প্রবেশ করতে পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।

গওহর রিজভী বলেন, মেরিট বেইজ সোসাইটি গঠন ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্র ফেল করছে। যার ফলে গত ৫০ বছরে একটা বড় গ্যাপ দেখা দিয়েছে। সরকারকে উদ্দেশ্য করে গওহর রিজভী আরো বলেন, সব ক্ষেত্রে ব্যালেন্স করে আনতে হবে। লিঙ্গ ও সামাজিক বৈষম্য কমিয়ে আনতে হবে। এ সময় তিনি বলেন, দেশে ১০/১২ মিলিয়ন দলিত রয়েছে। অথচ, আমরা বলছি- দেশে কোনো দলিত নেই। তাদের জন্যও কাজ করতে হবে।

সামাজিক বৈষম্য নিয়ে বই প্রকাশের উদ্যোগ নেয়ায় লেখকের প্রসংশা করেন গওহর রিজভী। প্রধানমন্ত্রীর এ উপদেষ্টা বলেন, নারী ও সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্য নিয়ে বই লিখে লেখক সাহসিকতার পরচয় দিয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ফখরুল আলম বলেন, ধর্মের কথা বলে ধর্মনিরপেক্ষতায় বারবার আঘাত এসেছে। কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষতা তো ধর্মহীনতা নয়! বিষয়টি যুক্তি-তর্ক দিয়ে ভালোভাবে উপস্থাপিত হয়েছে ফারজানার এ বইয়ে। এ ছাড়া গণতন্ত্রের বিকাশ, আইনের শাসন নিশ্চিত করার জন্য সংবিধানে পরিবর্তন আনার কথাও বলেছেন লেখক।

অনুষ্ঠানে লেখক ফারজানা মাহমুদ বলেন, নারীর প্রতি সামাজিক বৈষম্যের প্রতিবাদ করতে গিয়েই তিনি এ বিষয়ে লেখালেখির অনুপ্রেরণা পান। এর সঙ্গে ধর্মনিরপেক্ষতা, রাজনীতি ও রাষ্ট্রের বিষয়টিও যুক্ত হয়েছে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর

ট্যাগ :

সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব: গওহর রিজভী

প্রকাশিত : ০৭:১০:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২০

রাষ্ট্রের সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী। তিনি বলেছেন, সমাজের সব স্তরের মানুষের পাশাপাশি নারী-পুরুষের বৈষম্য দূর করার দায়িত্ব প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্রকেই নিতে হবে।

রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের মুজাফ্ফর আহমেদ চৌধুরী অডিটরিয়ামে আয়োজিত ফারজানা মাহমুদের ‘সেক্যুলারিজম, জেন্ডার ইকুয়ালিটি পলিটিক্স অ্যান্ড দ্যা স্টেট’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

গওহর রিজভী বলেন, সমাজের সব স্তরের মানুষের জন্য ‘প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরি করতে না পারলে সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়ে উঠে না। তিনি বলেন, মেধাভিত্তিক সমাজ গড়তে হলে নারীর প্রতি বিদ্বেষ-বৈষম্য দূর করতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অতীত গৌরবের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সম্প্রতি কোটা আন্দোলন হয়েছে। আমি ওই আন্দোলনের বিরুদ্ধে নই। তবে আমি কোটা পুনর্বিন্যাস নয়, পুনর্গঠনের পক্ষে।

এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, আমরা কেউ গ্রামের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করি, কেউ শহরে। এক্ষেত্রে শহুরে সুযোগ-সুবিধা ভোগ করা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা সুবিধাবঞ্চিতরা এক ধরনের বৈষম্যের শিকার হয়। সবাই যাতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমান যোগ্যতা নিয়ে, সুযোগ নিয়ে চাকরিতে প্রবেশ করতে পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।

গওহর রিজভী বলেন, মেরিট বেইজ সোসাইটি গঠন ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্র ফেল করছে। যার ফলে গত ৫০ বছরে একটা বড় গ্যাপ দেখা দিয়েছে। সরকারকে উদ্দেশ্য করে গওহর রিজভী আরো বলেন, সব ক্ষেত্রে ব্যালেন্স করে আনতে হবে। লিঙ্গ ও সামাজিক বৈষম্য কমিয়ে আনতে হবে। এ সময় তিনি বলেন, দেশে ১০/১২ মিলিয়ন দলিত রয়েছে। অথচ, আমরা বলছি- দেশে কোনো দলিত নেই। তাদের জন্যও কাজ করতে হবে।

সামাজিক বৈষম্য নিয়ে বই প্রকাশের উদ্যোগ নেয়ায় লেখকের প্রসংশা করেন গওহর রিজভী। প্রধানমন্ত্রীর এ উপদেষ্টা বলেন, নারী ও সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্য নিয়ে বই লিখে লেখক সাহসিকতার পরচয় দিয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ফখরুল আলম বলেন, ধর্মের কথা বলে ধর্মনিরপেক্ষতায় বারবার আঘাত এসেছে। কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষতা তো ধর্মহীনতা নয়! বিষয়টি যুক্তি-তর্ক দিয়ে ভালোভাবে উপস্থাপিত হয়েছে ফারজানার এ বইয়ে। এ ছাড়া গণতন্ত্রের বিকাশ, আইনের শাসন নিশ্চিত করার জন্য সংবিধানে পরিবর্তন আনার কথাও বলেছেন লেখক।

অনুষ্ঠানে লেখক ফারজানা মাহমুদ বলেন, নারীর প্রতি সামাজিক বৈষম্যের প্রতিবাদ করতে গিয়েই তিনি এ বিষয়ে লেখালেখির অনুপ্রেরণা পান। এর সঙ্গে ধর্মনিরপেক্ষতা, রাজনীতি ও রাষ্ট্রের বিষয়টিও যুক্ত হয়েছে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর