রাজধানীর কেরানীগঞ্জের একটি বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ জাল মুদ্রাসহ লিয়াকত আলী (৩৫) ও সহযোগী জাহাঙ্গীর আলমকে (৪০) গ্রেফতার করেছে র্যাব।
তিনি ১৯৯৬ সালে ছিলেন জাল মুদ্রা তৈরির মাস্টারমাইন্ড ছগির মাস্টারের সহযোগী। ২০০৭ সাল থেকে নিজেই হন জাল মুদ্রা তৈরির মাস্টারমাইন্ড। বানান নিজেরও সহযোগী ও সিন্ডিকেট। যাদের মাধ্যমে সারাদেশে ছড়িয়ে দিতেন জাল মুদ্রা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানাচ্ছিলেন র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এমরানুল হাসান।
র্যাব অধিনায়ক বলেন, বাংলাদেশি জাল মুদ্রা তৈরি এবং বাজারজাতকরণ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ভারতীয় জাল মুদ্রা তৈরিতে ঝুঁকে পড়েন লিয়াকত। প্রতি মাসে ৫০ থেকে ৬০ লাখ রূপি তৈরি করে বাজারে সরবরাহ করতেন তিনি। এক লাখ জাল রূপি বিক্রি করতেন ১২ হাজার টাকায়।
গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে ভারতীয় ১০ লাখ টাকার জাল রুপি উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও জাল রুপি তৈরির কাজে ব্যবহৃত একটি ল্যাপটপ, মুদ্রা তৈরিতে ব্যবহৃত স্কিন ডাইস ছয়টি, ডাইস প্লেট দুটি, স্ক্যানার কাম প্রিন্টার দুটি, প্রিন্টার চারটি, ভারতীয় জাল রুপির নিরাপত্তা সুতা সাত বান্ডেল, ফয়েল মেশিন একটি, জাল রুপি কাটার কাজে ব্যবহৃত কাটার মেশিন চারটি, কাটার ব্লেড সাত বক্স, জাল রুপি ছাপানোর কাজে ব্যবহৃত স্কিন রাবার পাঁচটি, জাল রুপি ছাপানোর কাজে ব্যবহৃত বিদেশি উন্নতমানের রঙিন কালি ১২০টি ইত্যাদি উদ্ধার করা হয়।
এমরানুল হাসান বলেন, শেয়ারবাজার ধসের পর ছগির মাস্টার জাল মুদ্রা তৈরির সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছিলেন। ছগির মাস্টারের সহযোগী হিসেবে লিয়াকত এই চক্রের সঙ্গে কাজ শুরু করেন। পরে গত দশ বছর ধরে কেরানীগঞ্জে নিজের ভাড়া বাসাতেই জাল মুদ্রা তৈরি শুরু করেন লিয়াকত। তিনি নিজেই গড়ে তুলেন অন্য একটি সিন্ডিকেট।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে লিয়াকত জানান, বাংলাদেশি জাল মুদ্রা বাজারজাতকরণ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ভারতীয় মুদ্রা তৈরি করতেন তিনি। তার স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে রাজধানীর বিভিন্ন মানি এক্সচেঞ্জ এবং সীমান্তবর্তী এলাকায় সরবরাহ করতেন।
যেসব মানি এক্সচেঞ্জে সরবরাহ করতেন সেসবের বিষয়ে এখনো ধারণা পাওয়া যায়নি বলে জানান র্যাব অধিনায়ক।
এরআগে বুধবার রাতে তাদের গ্রেফতার করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় জাল টাকা তৈরির অভিযোগে পাঁচটি মামলা রয়েছে। তাদের সেই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।