০৬:০৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

১৭ দিনের রিমান্ড শেষে কুয়েতের কারাগারে এমপি পাপুল

মানবপাচার, অর্থপাচার ও ভিসা বাণিজ্যের অভিযোগে কুয়েতে গ্রেপ্তার লক্ষ্মীপুরের সংসদ সদস্য মো. শহিদ ইসলাম ওরফে কাজী পাপুলকে দেশটির কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এসব গুরুতর অভিযোগের বিষয়ে রিমান্ডে টানা ১৭ দিন জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মঙ্গলবার এমপি পাপুলকে ২১ দিনের জন্য কুয়েতের কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর আদেশ হয়েছে বলে আরব বলা হয়েছে।

আরবি দৈনিক আল-কাবাস বলেছে, পাপুলের সঙ্গে তার মালিকাধীন মারাফি কুয়েতিয়া গ্রুপের কর্মকর্তা মুর্তজা মামুনকেও কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গত ৭ জুন কুয়েতের ক্রিমিন্যাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট-সিআইডির হাতে লক্ষ্মীপুর-২ আসন থেকে নির্বাচিত স্বতন্ত্র সাংসদ পাপুলের গ্রেপ্তারের খবর আসে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে।

প্রথমদিকে সেখবর নিশ্চিত হওয়া না গেলেও দুদিন পরে জানা যায় গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডেও নেওয়া হয় পাপুলকে। মারাফি কুয়েতিয়া কোম্পানির অন্যতম মালিক পাপুলের কুয়েতে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি রয়েছে।

এমপি পাপুল রিমান্ডে যা বলেছেন, তা কুয়েতের প্রসিকিউটরদের বরাতে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম প্রকাশ করছে। দেশটির কর্মকর্তাদের পাপুল কীভাবে কতো টাকা ঘুষ দেন সেসব কথাও প্রতিবেদনে উঠে আসছে।

কুয়েত টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, কুয়েতের তদন্তকারীরা পাপুলের মদদদাতা হিসাবে ইতোমধ্যে সাতজনকে চিহ্নিত করেছেন। এদের মধ্যে কুয়েতের দুইজন বর্তমান এবং একজন সাবেক এমপি রয়েছেন। তবে বর্তমান দুই এমপি তাদের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

জিজ্ঞাসাবাদে পাপুল তদন্তকারী কর্মকর্তাদের জানান, তার মালিকাধীন মারাফি কুয়েতিয়া কোম্পানিতে প্রায় ৯ হাজার কর্মী রয়েছে। এদের অধিকাংশই বাংলাদেশি। লোক নিয়োগে ৩৪টি সরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তার প্রতিষ্ঠানের চুক্তি রয়েছে বলেও তথ্য দিয়েছিলেন তিনি।

এদিকে পাপুল ও তার কোম্পানির ব্যাংক হিসাবে থাকা প্রায় ১৩৮ কোটি টাকা জব্দ করা হয়েছে বলে দেশটির পাবলিক প্রসিকিউশনের বরাতে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে খবর এসেছে। কুয়েতের যেসব কর্মকর্তাদের পাপুল ঘুষ দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু করেছে দেশটির দুর্নীতি দমন সংস্থা ‘নাজাহা’।

অর্থপাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের স্বার্থে সাংসদ কাজী সহিদ ইসলাম পাপুল, তার স্ত্রী, মেয়ে ও শ্যালিকাকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। দুদকের চিঠিতে যাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার কথা বলা হয়েছে তাদের মধ্যে পাপুল ছাড়া অন্যরা হলেন- পাপুলের স্ত্রী সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলাম, মেয়ে ওয়াফা ইসলাম ও সেলিনার বোন জেসমিন।

দেশে এমপি পাপুলের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে তার এবং স্ত্রী, মেয়ে ও শ্যালিকার ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সব হিসাবের লেনদেনও স্থগিত করেছে দুদক।

বিজনেস বাংলাদেশ/ মে আর

জনপ্রিয়

১৭ দিনের রিমান্ড শেষে কুয়েতের কারাগারে এমপি পাপুল

প্রকাশিত : ০৬:২৯:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুন ২০২০

মানবপাচার, অর্থপাচার ও ভিসা বাণিজ্যের অভিযোগে কুয়েতে গ্রেপ্তার লক্ষ্মীপুরের সংসদ সদস্য মো. শহিদ ইসলাম ওরফে কাজী পাপুলকে দেশটির কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এসব গুরুতর অভিযোগের বিষয়ে রিমান্ডে টানা ১৭ দিন জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মঙ্গলবার এমপি পাপুলকে ২১ দিনের জন্য কুয়েতের কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর আদেশ হয়েছে বলে আরব বলা হয়েছে।

আরবি দৈনিক আল-কাবাস বলেছে, পাপুলের সঙ্গে তার মালিকাধীন মারাফি কুয়েতিয়া গ্রুপের কর্মকর্তা মুর্তজা মামুনকেও কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গত ৭ জুন কুয়েতের ক্রিমিন্যাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট-সিআইডির হাতে লক্ষ্মীপুর-২ আসন থেকে নির্বাচিত স্বতন্ত্র সাংসদ পাপুলের গ্রেপ্তারের খবর আসে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে।

প্রথমদিকে সেখবর নিশ্চিত হওয়া না গেলেও দুদিন পরে জানা যায় গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডেও নেওয়া হয় পাপুলকে। মারাফি কুয়েতিয়া কোম্পানির অন্যতম মালিক পাপুলের কুয়েতে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি রয়েছে।

এমপি পাপুল রিমান্ডে যা বলেছেন, তা কুয়েতের প্রসিকিউটরদের বরাতে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম প্রকাশ করছে। দেশটির কর্মকর্তাদের পাপুল কীভাবে কতো টাকা ঘুষ দেন সেসব কথাও প্রতিবেদনে উঠে আসছে।

কুয়েত টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, কুয়েতের তদন্তকারীরা পাপুলের মদদদাতা হিসাবে ইতোমধ্যে সাতজনকে চিহ্নিত করেছেন। এদের মধ্যে কুয়েতের দুইজন বর্তমান এবং একজন সাবেক এমপি রয়েছেন। তবে বর্তমান দুই এমপি তাদের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

জিজ্ঞাসাবাদে পাপুল তদন্তকারী কর্মকর্তাদের জানান, তার মালিকাধীন মারাফি কুয়েতিয়া কোম্পানিতে প্রায় ৯ হাজার কর্মী রয়েছে। এদের অধিকাংশই বাংলাদেশি। লোক নিয়োগে ৩৪টি সরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তার প্রতিষ্ঠানের চুক্তি রয়েছে বলেও তথ্য দিয়েছিলেন তিনি।

এদিকে পাপুল ও তার কোম্পানির ব্যাংক হিসাবে থাকা প্রায় ১৩৮ কোটি টাকা জব্দ করা হয়েছে বলে দেশটির পাবলিক প্রসিকিউশনের বরাতে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে খবর এসেছে। কুয়েতের যেসব কর্মকর্তাদের পাপুল ঘুষ দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু করেছে দেশটির দুর্নীতি দমন সংস্থা ‘নাজাহা’।

অর্থপাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের স্বার্থে সাংসদ কাজী সহিদ ইসলাম পাপুল, তার স্ত্রী, মেয়ে ও শ্যালিকাকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। দুদকের চিঠিতে যাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার কথা বলা হয়েছে তাদের মধ্যে পাপুল ছাড়া অন্যরা হলেন- পাপুলের স্ত্রী সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলাম, মেয়ে ওয়াফা ইসলাম ও সেলিনার বোন জেসমিন।

দেশে এমপি পাপুলের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে তার এবং স্ত্রী, মেয়ে ও শ্যালিকার ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সব হিসাবের লেনদেনও স্থগিত করেছে দুদক।

বিজনেস বাংলাদেশ/ মে আর