০৩:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নিধনের বাইরে থাকা স্পটে এডিসের সহজ বংশ বিস্তার

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে তেমন একটা আলোচনায় না থাকা ডেঙ্গু রোগের বিস্তারকারী এডিস মশার প্রকোপ বেড়েছে। নগরে এমন অনেক জায়গা রয়েছে যেখানে এই মশাটি বেশ সহজেই প্রজনন করে চলেছে। তবে সেসব জায়গায় মশক নিধন না হওয়ায় অনেকটা ধরাছোঁয়ার বাইরেই বংশ বিস্তার করে চলেছে মশাটি।

‘ডেঙ্গু’ ও ‘এডিস মশা’ গতবছর দেশের মানুষের কাছে ছিলো আতঙ্ক। সরকারি হিসাবে গেলবছর এই রোগে ১৭৯ জনের মৃত্যু হয়। তবে গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী ডেঙ্গুতে প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছে গতবছর।

জানা যায়, ডেঙ্গুর রোগের জীবাণুবহনকারী এডিস ইজিপ্টি মশার লার্ভা নিধণে নানা উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছে ঢাকার দুই নগর কর্তৃপক্ষ। সকাল-বিকাল নিয়ম করে মশক নিধন ওষুধ ছিটানো, বাড়ি-বাড়ি গিয়ে তল্লাসি, এমন অনেক কার্যক্রমই রয়েছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির হাতে। চেষ্টা গত বছরের মতো এবারও যেন ডেঙ্গু ছড়িয়ে না পরে। তবে নগরে এমন অনেক জায়গায় রয়েছে, সেখানে এডিস ইজিপ্টি মশা বেশ সহজেই প্রজনন করে চলেছে, অথচ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টির আড়ালেই থেকে যাচ্ছে সেসব জায়গা।

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির ১২৯টি ওয়ার্ডে প্রয়োজন অনুপাতে দেওয়া হয়েছে মশক নিধনের সরঞ্জাম। তবুও মশার উপদ্রব নেই, এমন কোনো ওয়ার্ড ঢাকা শহরে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এর কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, নগরীর এমন কিছু জায়গা রয়েছে, যা স্বাভাবিকভাবে মশা নিধনের বাইরে থেকে যায়। আর সেসব স্থানে এডিস মশাকে বংশবিস্তারে কোনো বেগ পেতে হচ্ছে না।

রাজধানীর সদরঘাট বাবু বাজার থেকে গাবতলি পর্যন্ত সাড়ে চার কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সড়ক। সড়কের দুই পাশে নানা স্থাপনা। আর এর মধ্যেই দেখা মিলেছে কয়েকশত স্থান, যেখানে অনায়াসে বংশবিস্তার করে চলেছে এডিস মশা।

বেড়িবাঁধ সড়কের দুই পাশে অর্ধশতাধিক টায়ারের দোকান রয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে টায়ার এসে জমা হয় এসব দোকানে। এরপর তা ট্রাক ভর্তি করে পাঠানো হয় টায়ার গলানোর কারখানায়।

টায়ারের দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক ট্রাক সমান টায়ার না জমা পর্যন্ত তা কারখানায় পাঠানো হয় না। আর প্রতি ট্রাক টায়ারের জন্য কমপক্ষে তাদের অপেক্ষা করতে হয় ১০ থেকে ১২ দিন। অর্থাৎ টায়ারের দোকানগুলোতে টায়ারের স্তুপ জমে থাকে ১০ থেকে ১২ দিন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, তিন দিনের বেশি সময় ধরে জমা স্বচ্ছ পানিতে এডিস মশা বংশবিস্তার করে।

এর প্রমাণও মিলেছে। টায়ারের দোকান মূলত অস্থায়ী। মূল দোকানের উপর ছাদ বা চালা থাকলেও টায়ার রাখা হয় খোলা জায়গায়। ফলে টায়ারের ভেতর জমে থাকতে দেখা গেছে বৃষ্টির পানি। আর সেখানে দেখা মিলেছে এডিসের লার্ভার।

এছাড়া এই সড়কের দুই পাশে রয়েছে মোটর ওয়ার্কশপ ও গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ বিক্রির দোকান। দূর থেকে এসব দোকান ও ওয়ার্কশপের ঠিকানা জানান দিতে গাছ বা খুঁটির সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয় গাড়ির টায়ার। দিনের পর দিন একই জায়গায় থাকা এসব টায়ারে বৃষ্টি হলেই পানি জমছে। বংশবিস্তার করছে এডিস মশা।

শুধু বেড়িবাঁধ সড়ক নয়। একই ভাবে টায়ার ঝুলিয়ে রাখতে দেখা গেছে বাংলামোটর, বংশাল, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, উত্তরা সহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়।

আবার এডিসের বংশবিস্তার দেখা গেছে বেড়িবাঁধ সড়কের স্লুইজ গেইট এলাকায়। ঠিক স্লুইজ গেইটের সামনে জমে থাকতে দেখা গেছে অন্তত কয়েক মণ পলিথিন। যার উপর বৃষ্টির পানি জমে চলছে এডিসের বংশবিস্তার।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্লুইজ গেইট ও পাশের জায়গাগুলোর জমির মালিক পানি উন্নয়ন বোর্ড। এসব জায়গায় সংস্থাটির কোনো কার্যক্রম না থাকায় জায়গাগুলো দীর্ঘ সময় ধরে ফাঁকা পরে রয়েছে। সে সুবাদে এসব জায়গায় পলিথিন বাছাইয়ের কাজ করা হয়। ব্যবহৃত পলিথিন ব্যাগ বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করে এ স্থানে বসে বাছাই করা হয়। বাছাইকৃত পলিথিন আলাদা করে রেখে, যা কাজে আসবে না তা ফেলে দেয়া হয় স্লুইজ গেইটের সামনে। দীর্ঘ সময় ধরেই চলছে এ কর্মযজ্ঞ।

স্লুইজ গেইট সুনিবিড় হাউজিং এলাকার বাসিন্দা মোবারক হোসেনের ভাষ্য মতে, বেড়িবাঁধের পশ্চিম পাশের এ অংশটিতে মশার ওষুধ ছিটাতে তিনি কখনো দেখেননি।

মশা জন্মের স্থান পাওয়া গেছে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে। ইন্টারনেট কোম্পানিরগুলো এসব খুঁটিতে স্থাপন করে তাদের ইন্টারনেট সংযোগের বাক্স। রাজধানীর প্রায় সব এলাকাতেই এমন চিত্র দেখা গেছে। খুঁটিতে বসানো এসব বক্সের নিচের অংশে বৃষ্টির পানি বের হয়ে যাওয়ার ছিদ্র থাকলেও তা খুব একটা কাজে আসে না।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৈদ্যুতিক খুঁটিতে বসানো এসব বাক্সতে বৃষ্টির পানি ঢুকার সুযোগ রয়েছে। বাক্সের নিচে ছিদ্র থাকায় পানি অনেকাংশে বের হয়ে যায়। কিন্তু বাক্সগুলোর ভেতরের অংশে চারপাশেই সামান্য পরিমাণ পানি জমে থাকে। আবার রোদের তাপে সে পানি শুকিয়েও যায়। তবে রোদ পরে না এমন জায়গা, টানা দু’দিন বৃষ্টি হলে কিংবা রোদ কম থাকলে এসব বাক্সতে জন্ম দিতে পারে এডিস মশা।

বিভিন্ন মাজার, মসজিদ ও ব্যক্তির নামে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে দানবাক্স ঝুলতে দেখা যায়। বৃষ্টির সময় এ সকল দানবাক্সে পানি ঢুকছে। আর সে পানি জমে থেকে জন্ম নিচ্ছে এডিস মশা।

এসব বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান স্বাস্থ্যকর্মকর্তা মোমিনুর রহমান মামুনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি উল্লেখিত বিষয়গুলোকে আমলে নিয়ে ঈদের আগেই ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।

মোমিনুর বলেন, ‘আমরা দুই দফা বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযান বা চিরুনি অভিযান পরিচালনা করেছি। এ সময় আমরা নির্মানাধীন ভবনে এডিসের উপস্থিতি বেশি পেয়েছি। টায়ারেও পেয়েছি, তবে সেটা তুলনামূলক কম। টায়ারের দোকানগুলোতে আমরা একটা বিশেষ অভিযান করতে চাই। পাশাপাশি সে সকল স্থানের কথা আপনি জানালেন আমি বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করছি এবং ঈদের আগেই এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

ঢাকা দক্ষিণ সিটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মীর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘প্রতিটি ওয়ার্ডে আমাদের মশক নিধন কার্যক্রম চলছে। সার্ভে রিপোর্টে যেখানে উপদ্রব বেশি পাওয়া গেছে, সেখানে কার্যক্রমটাও বেশি।’

ঝুলন্ত গাড়ির টায়ার, টায়ারের দোকান এবং এডিস জন্মানোর সম্ভাব্য স্থানগুলোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সেসব জায়গাতে আমাদের সংশ্লিষ্ট বিভাগ দৃষ্টি রাখছে। তাদেরকে সতর্ক করছে। সার্বিকভাবে যদি আমাদের মধ্যে সচেতনতা না আসে তাহলে তো রাতারাতি আপনি কিছু করতে পারবেন না। আমরা আমাদের জায়গা থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

বিজনেস বাংলাদেশ/ প্রান্ত

জনপ্রিয়

আমি কুমিল্লার মানুষের হৃদয়ে নাম লিখতে চাই : নবাগত জেলা প্রশাসক

নিধনের বাইরে থাকা স্পটে এডিসের সহজ বংশ বিস্তার

প্রকাশিত : ০৭:২৯:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জুলাই ২০২০

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে তেমন একটা আলোচনায় না থাকা ডেঙ্গু রোগের বিস্তারকারী এডিস মশার প্রকোপ বেড়েছে। নগরে এমন অনেক জায়গা রয়েছে যেখানে এই মশাটি বেশ সহজেই প্রজনন করে চলেছে। তবে সেসব জায়গায় মশক নিধন না হওয়ায় অনেকটা ধরাছোঁয়ার বাইরেই বংশ বিস্তার করে চলেছে মশাটি।

‘ডেঙ্গু’ ও ‘এডিস মশা’ গতবছর দেশের মানুষের কাছে ছিলো আতঙ্ক। সরকারি হিসাবে গেলবছর এই রোগে ১৭৯ জনের মৃত্যু হয়। তবে গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী ডেঙ্গুতে প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছে গতবছর।

জানা যায়, ডেঙ্গুর রোগের জীবাণুবহনকারী এডিস ইজিপ্টি মশার লার্ভা নিধণে নানা উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছে ঢাকার দুই নগর কর্তৃপক্ষ। সকাল-বিকাল নিয়ম করে মশক নিধন ওষুধ ছিটানো, বাড়ি-বাড়ি গিয়ে তল্লাসি, এমন অনেক কার্যক্রমই রয়েছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির হাতে। চেষ্টা গত বছরের মতো এবারও যেন ডেঙ্গু ছড়িয়ে না পরে। তবে নগরে এমন অনেক জায়গায় রয়েছে, সেখানে এডিস ইজিপ্টি মশা বেশ সহজেই প্রজনন করে চলেছে, অথচ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টির আড়ালেই থেকে যাচ্ছে সেসব জায়গা।

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির ১২৯টি ওয়ার্ডে প্রয়োজন অনুপাতে দেওয়া হয়েছে মশক নিধনের সরঞ্জাম। তবুও মশার উপদ্রব নেই, এমন কোনো ওয়ার্ড ঢাকা শহরে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এর কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, নগরীর এমন কিছু জায়গা রয়েছে, যা স্বাভাবিকভাবে মশা নিধনের বাইরে থেকে যায়। আর সেসব স্থানে এডিস মশাকে বংশবিস্তারে কোনো বেগ পেতে হচ্ছে না।

রাজধানীর সদরঘাট বাবু বাজার থেকে গাবতলি পর্যন্ত সাড়ে চার কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সড়ক। সড়কের দুই পাশে নানা স্থাপনা। আর এর মধ্যেই দেখা মিলেছে কয়েকশত স্থান, যেখানে অনায়াসে বংশবিস্তার করে চলেছে এডিস মশা।

বেড়িবাঁধ সড়কের দুই পাশে অর্ধশতাধিক টায়ারের দোকান রয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে টায়ার এসে জমা হয় এসব দোকানে। এরপর তা ট্রাক ভর্তি করে পাঠানো হয় টায়ার গলানোর কারখানায়।

টায়ারের দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক ট্রাক সমান টায়ার না জমা পর্যন্ত তা কারখানায় পাঠানো হয় না। আর প্রতি ট্রাক টায়ারের জন্য কমপক্ষে তাদের অপেক্ষা করতে হয় ১০ থেকে ১২ দিন। অর্থাৎ টায়ারের দোকানগুলোতে টায়ারের স্তুপ জমে থাকে ১০ থেকে ১২ দিন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, তিন দিনের বেশি সময় ধরে জমা স্বচ্ছ পানিতে এডিস মশা বংশবিস্তার করে।

এর প্রমাণও মিলেছে। টায়ারের দোকান মূলত অস্থায়ী। মূল দোকানের উপর ছাদ বা চালা থাকলেও টায়ার রাখা হয় খোলা জায়গায়। ফলে টায়ারের ভেতর জমে থাকতে দেখা গেছে বৃষ্টির পানি। আর সেখানে দেখা মিলেছে এডিসের লার্ভার।

এছাড়া এই সড়কের দুই পাশে রয়েছে মোটর ওয়ার্কশপ ও গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ বিক্রির দোকান। দূর থেকে এসব দোকান ও ওয়ার্কশপের ঠিকানা জানান দিতে গাছ বা খুঁটির সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয় গাড়ির টায়ার। দিনের পর দিন একই জায়গায় থাকা এসব টায়ারে বৃষ্টি হলেই পানি জমছে। বংশবিস্তার করছে এডিস মশা।

শুধু বেড়িবাঁধ সড়ক নয়। একই ভাবে টায়ার ঝুলিয়ে রাখতে দেখা গেছে বাংলামোটর, বংশাল, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, উত্তরা সহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়।

আবার এডিসের বংশবিস্তার দেখা গেছে বেড়িবাঁধ সড়কের স্লুইজ গেইট এলাকায়। ঠিক স্লুইজ গেইটের সামনে জমে থাকতে দেখা গেছে অন্তত কয়েক মণ পলিথিন। যার উপর বৃষ্টির পানি জমে চলছে এডিসের বংশবিস্তার।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্লুইজ গেইট ও পাশের জায়গাগুলোর জমির মালিক পানি উন্নয়ন বোর্ড। এসব জায়গায় সংস্থাটির কোনো কার্যক্রম না থাকায় জায়গাগুলো দীর্ঘ সময় ধরে ফাঁকা পরে রয়েছে। সে সুবাদে এসব জায়গায় পলিথিন বাছাইয়ের কাজ করা হয়। ব্যবহৃত পলিথিন ব্যাগ বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করে এ স্থানে বসে বাছাই করা হয়। বাছাইকৃত পলিথিন আলাদা করে রেখে, যা কাজে আসবে না তা ফেলে দেয়া হয় স্লুইজ গেইটের সামনে। দীর্ঘ সময় ধরেই চলছে এ কর্মযজ্ঞ।

স্লুইজ গেইট সুনিবিড় হাউজিং এলাকার বাসিন্দা মোবারক হোসেনের ভাষ্য মতে, বেড়িবাঁধের পশ্চিম পাশের এ অংশটিতে মশার ওষুধ ছিটাতে তিনি কখনো দেখেননি।

মশা জন্মের স্থান পাওয়া গেছে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে। ইন্টারনেট কোম্পানিরগুলো এসব খুঁটিতে স্থাপন করে তাদের ইন্টারনেট সংযোগের বাক্স। রাজধানীর প্রায় সব এলাকাতেই এমন চিত্র দেখা গেছে। খুঁটিতে বসানো এসব বক্সের নিচের অংশে বৃষ্টির পানি বের হয়ে যাওয়ার ছিদ্র থাকলেও তা খুব একটা কাজে আসে না।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৈদ্যুতিক খুঁটিতে বসানো এসব বাক্সতে বৃষ্টির পানি ঢুকার সুযোগ রয়েছে। বাক্সের নিচে ছিদ্র থাকায় পানি অনেকাংশে বের হয়ে যায়। কিন্তু বাক্সগুলোর ভেতরের অংশে চারপাশেই সামান্য পরিমাণ পানি জমে থাকে। আবার রোদের তাপে সে পানি শুকিয়েও যায়। তবে রোদ পরে না এমন জায়গা, টানা দু’দিন বৃষ্টি হলে কিংবা রোদ কম থাকলে এসব বাক্সতে জন্ম দিতে পারে এডিস মশা।

বিভিন্ন মাজার, মসজিদ ও ব্যক্তির নামে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে দানবাক্স ঝুলতে দেখা যায়। বৃষ্টির সময় এ সকল দানবাক্সে পানি ঢুকছে। আর সে পানি জমে থেকে জন্ম নিচ্ছে এডিস মশা।

এসব বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান স্বাস্থ্যকর্মকর্তা মোমিনুর রহমান মামুনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি উল্লেখিত বিষয়গুলোকে আমলে নিয়ে ঈদের আগেই ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।

মোমিনুর বলেন, ‘আমরা দুই দফা বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযান বা চিরুনি অভিযান পরিচালনা করেছি। এ সময় আমরা নির্মানাধীন ভবনে এডিসের উপস্থিতি বেশি পেয়েছি। টায়ারেও পেয়েছি, তবে সেটা তুলনামূলক কম। টায়ারের দোকানগুলোতে আমরা একটা বিশেষ অভিযান করতে চাই। পাশাপাশি সে সকল স্থানের কথা আপনি জানালেন আমি বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করছি এবং ঈদের আগেই এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

ঢাকা দক্ষিণ সিটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মীর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘প্রতিটি ওয়ার্ডে আমাদের মশক নিধন কার্যক্রম চলছে। সার্ভে রিপোর্টে যেখানে উপদ্রব বেশি পাওয়া গেছে, সেখানে কার্যক্রমটাও বেশি।’

ঝুলন্ত গাড়ির টায়ার, টায়ারের দোকান এবং এডিস জন্মানোর সম্ভাব্য স্থানগুলোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সেসব জায়গাতে আমাদের সংশ্লিষ্ট বিভাগ দৃষ্টি রাখছে। তাদেরকে সতর্ক করছে। সার্বিকভাবে যদি আমাদের মধ্যে সচেতনতা না আসে তাহলে তো রাতারাতি আপনি কিছু করতে পারবেন না। আমরা আমাদের জায়গা থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

বিজনেস বাংলাদেশ/ প্রান্ত