০৩:২৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

অফিস করছেন না ডাক বিভাগের মহাপরিচালক

করোনা পজিটিভ নিয়ে গণভবনে যাওয়া ডাক বিভাগের মহাপরিচালক সুধাংশু শেখর ভদ্র (এসএস ভদ্র) আপাতত অফিস করছেন না। তাকে তৃতীয় আরেকটি প্রতিষ্ঠানে পুনরায় করোনা পরীক্ষা করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেখানকার রেজাল্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত তাকে অফিস করতে বারণ করা হয়েছে।

তৃতীয় আরেকটি প্রতিষ্ঠান থেকে করোনা পরীক্ষা করিয়ে রেজাল্ট হাতে পাওয়ার পরেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। বুধবার (১৯ আগস্ট) বিকালে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও জানিয়েছেন, এর আগে অফিসিয়ালি তাকে শোকজ করা হয়েছে। তিনি শোকজের জবাব দিয়েছেন। জবাবের কপি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বরাবর পাঠানো হয়েছে। তবে পজিটিভ হওয়ার বিষয়টি এস এস ভদ্র জানতেন না বলেও দাবি করেন মন্ত্রী।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার আরও জানিয়েছেন, আমিসহ ডিজি একই সঙ্গে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) করোনা টেস্টের জন্য নমুনা জমা দেই। ১৪ তারিখ বিকালে আমরা সেই নমুনার রেজাল্ট হাতে পাই। তাতে আমি নেগেটিভ এবং ডিজি পজিটিভ হন।

এক প্রশ্নের জবাবে মোস্তাফা জব্বার জানান, আইইডিসিআরের দেওয়া রেজাল্ট শিটে ১৩ তারিখ উল্লেখ থাকলেও আমরা কেউই ১৩ আগস্ট রিপোর্ট পাইনি। আমরা রিপোর্টটি হাতে পেয়েছি ১৪ আগস্ট বিকালে। গণভবনে অনুষ্ঠানটি ছিল ১৪ আগস্ট সকালে। ১৩ তারিখ সকালে আইইডিসিআর ল্যাবটি নষ্ট ছিল বলে রেজাল্ট দেরিতে এসেছে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী।

মোস্তাফা জব্বার জানান, ডাক বিভাগের ডিজির কোনও উপসর্গও ছিল না। তিনি যদি কোনও অনুমানও করতেন যে করোনা পজিটিভ হতে পারেন, তাহলে ভদ্র নিজেই ওই অনুষ্ঠানে যাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখতেন বলে আমি বিশ্বাস করি।

ডিজি দিনরাত মিলিয়ে করোনাকালে অফিস করেছেন, নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্বশীলতার স্বাক্ষর রেখেছেন তিনি। তার ওপর আমার আস্থা রয়েছে। এটি আমার মন্ত্রী হিসেবে তার সম্পর্কে অভিমত।

আইইডিসিআরের রিপোর্ট বিষয়ে মন্ত্রী আরও জানান, একটি ল্যাব যেকোনও সময় নষ্ট হতেই পারে। কিন্তু সেটি মেরামতের পরপরই সঠিক রিপোর্ট দেবে- এমন সিদ্ধান্তে শতভাগ নিশ্চিত হওয়া ঠিক নয়। ভুলও তো হতে পারে। আমি বলছি না যে ভদ্রকে দেওয়া আইইডিসিআরের রেজাল্ট ভুল। কিন্তু রিপোর্ট ভুল হওয়ার তো রেকর্ড আছে আইইডিসিআরের। এ জন্যই আমি তাকে আবারও অন্য কোনও প্রতিষ্ঠানে টেস্ট করাতে বলেছি বলে জানান ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

এদিকে আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, কোভিড সিচুয়েশনে আইইডিসিআরের ল্যাব কখনও বন্ধ বা নষ্ট ছিল না।

উল্লেখ্য, গত ১৪ আগস্ট সকালে জাতির জনকের ৪৫তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ স্মারক ডাকটিকিট, ডেটা কার্ড উন্মোচন ও বিশেষ খামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে অন্যান্যের সঙ্গে তিনিও গণভবনে যান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে টেবিলে বসে উদ্বোধনী খাম, স্মারক ডাকটিকিট এবং ডেটা কার্ড উন্মোচন কাজে স্বাক্ষর করেছেন সেই টেবিলের পাশেই দাঁড়ানো ছিলেন সুধাংশু শেখর ভদ্র।

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) করা সুধাংশু শেখর ভদ্রের করোনা পরীক্ষার রিপোর্টে তিনি ওইদিন করোনা পজিটিভ ছিলেন। করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী যেকোনও করোনা পজিটিভ রোগীকে আইসোলেশনে থাকার কথা থাকলেও তিনি সেটা না করে গণভবনে গিয়েছেন।

এ বিষয়ে আরও পড়ুন- করোনা পজিটিভ শনাক্তের পরদিন প্রধানমন্ত্রীর সামনে ডাক বিভাগের ডিজি

বিজনেস বাংলাদেশ/ প্রান্ত

জনপ্রিয়

আমি কুমিল্লার মানুষের হৃদয়ে নাম লিখতে চাই : নবাগত জেলা প্রশাসক

অফিস করছেন না ডাক বিভাগের মহাপরিচালক

প্রকাশিত : ০৪:৪৭:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ অগাস্ট ২০২০

করোনা পজিটিভ নিয়ে গণভবনে যাওয়া ডাক বিভাগের মহাপরিচালক সুধাংশু শেখর ভদ্র (এসএস ভদ্র) আপাতত অফিস করছেন না। তাকে তৃতীয় আরেকটি প্রতিষ্ঠানে পুনরায় করোনা পরীক্ষা করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেখানকার রেজাল্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত তাকে অফিস করতে বারণ করা হয়েছে।

তৃতীয় আরেকটি প্রতিষ্ঠান থেকে করোনা পরীক্ষা করিয়ে রেজাল্ট হাতে পাওয়ার পরেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। বুধবার (১৯ আগস্ট) বিকালে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও জানিয়েছেন, এর আগে অফিসিয়ালি তাকে শোকজ করা হয়েছে। তিনি শোকজের জবাব দিয়েছেন। জবাবের কপি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বরাবর পাঠানো হয়েছে। তবে পজিটিভ হওয়ার বিষয়টি এস এস ভদ্র জানতেন না বলেও দাবি করেন মন্ত্রী।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার আরও জানিয়েছেন, আমিসহ ডিজি একই সঙ্গে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) করোনা টেস্টের জন্য নমুনা জমা দেই। ১৪ তারিখ বিকালে আমরা সেই নমুনার রেজাল্ট হাতে পাই। তাতে আমি নেগেটিভ এবং ডিজি পজিটিভ হন।

এক প্রশ্নের জবাবে মোস্তাফা জব্বার জানান, আইইডিসিআরের দেওয়া রেজাল্ট শিটে ১৩ তারিখ উল্লেখ থাকলেও আমরা কেউই ১৩ আগস্ট রিপোর্ট পাইনি। আমরা রিপোর্টটি হাতে পেয়েছি ১৪ আগস্ট বিকালে। গণভবনে অনুষ্ঠানটি ছিল ১৪ আগস্ট সকালে। ১৩ তারিখ সকালে আইইডিসিআর ল্যাবটি নষ্ট ছিল বলে রেজাল্ট দেরিতে এসেছে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী।

মোস্তাফা জব্বার জানান, ডাক বিভাগের ডিজির কোনও উপসর্গও ছিল না। তিনি যদি কোনও অনুমানও করতেন যে করোনা পজিটিভ হতে পারেন, তাহলে ভদ্র নিজেই ওই অনুষ্ঠানে যাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখতেন বলে আমি বিশ্বাস করি।

ডিজি দিনরাত মিলিয়ে করোনাকালে অফিস করেছেন, নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্বশীলতার স্বাক্ষর রেখেছেন তিনি। তার ওপর আমার আস্থা রয়েছে। এটি আমার মন্ত্রী হিসেবে তার সম্পর্কে অভিমত।

আইইডিসিআরের রিপোর্ট বিষয়ে মন্ত্রী আরও জানান, একটি ল্যাব যেকোনও সময় নষ্ট হতেই পারে। কিন্তু সেটি মেরামতের পরপরই সঠিক রিপোর্ট দেবে- এমন সিদ্ধান্তে শতভাগ নিশ্চিত হওয়া ঠিক নয়। ভুলও তো হতে পারে। আমি বলছি না যে ভদ্রকে দেওয়া আইইডিসিআরের রেজাল্ট ভুল। কিন্তু রিপোর্ট ভুল হওয়ার তো রেকর্ড আছে আইইডিসিআরের। এ জন্যই আমি তাকে আবারও অন্য কোনও প্রতিষ্ঠানে টেস্ট করাতে বলেছি বলে জানান ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

এদিকে আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, কোভিড সিচুয়েশনে আইইডিসিআরের ল্যাব কখনও বন্ধ বা নষ্ট ছিল না।

উল্লেখ্য, গত ১৪ আগস্ট সকালে জাতির জনকের ৪৫তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ স্মারক ডাকটিকিট, ডেটা কার্ড উন্মোচন ও বিশেষ খামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে অন্যান্যের সঙ্গে তিনিও গণভবনে যান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে টেবিলে বসে উদ্বোধনী খাম, স্মারক ডাকটিকিট এবং ডেটা কার্ড উন্মোচন কাজে স্বাক্ষর করেছেন সেই টেবিলের পাশেই দাঁড়ানো ছিলেন সুধাংশু শেখর ভদ্র।

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) করা সুধাংশু শেখর ভদ্রের করোনা পরীক্ষার রিপোর্টে তিনি ওইদিন করোনা পজিটিভ ছিলেন। করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী যেকোনও করোনা পজিটিভ রোগীকে আইসোলেশনে থাকার কথা থাকলেও তিনি সেটা না করে গণভবনে গিয়েছেন।

এ বিষয়ে আরও পড়ুন- করোনা পজিটিভ শনাক্তের পরদিন প্রধানমন্ত্রীর সামনে ডাক বিভাগের ডিজি

বিজনেস বাংলাদেশ/ প্রান্ত