০৫:৪৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

অবশেষে একুশে পদক পেলেন কুমিল্লার ভাবী মাহফুজা খানম

মাহফুজা খানম

বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তৈরিতে যারা বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদেরই একজন অধ্যাপিকা মাহফুজা খানম৷ যুদ্ধকালীন নয় মাস ঢাকায় অবস্থান করে যুদ্ধজয়ের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করেছেন তিনি৷

মুক্তিযোদ্ধা ও শিক্ষার পথিকৃৎ এ নারী নেত্রী প্রফেসর মাহফুজা খানমকে অবশেষ একুশে পদকে সম্মানিত করা হচ্ছে। শিক্ষায় অবদানের জন্য দেশের জাতীয় এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক এ পুরস্কারে ভূষিত হচ্ছেন তিনি।

অনেক আগে থেকেই মাহফুজা খানমকে এই সম্মাননা প্রদানের জন্য জোর দাবি উঠেছিল সর্বস্তরের পক্ষ থেকে। কারণ, তিনি একাধারে বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বাংলাদেশের মানবাধিকার ও শিক্ষার পথিকৃৎ।

কারণ হিসেবে অনেকেই তখন বলেছিলেন, নারীরা অবদান রাখার পরও সচরাচর এ ধরনের জাতীয় সম্মাননার জন্য তেমন বেশী নির্বাচিত হন না! তবে সেসব গুজব উড়িয়ে দিয়ে এবার সত্যি সত্যি একুশে পদকের মতো সম্মাননা যাচ্ছে কুমিল্লার ভাবী খ্যাত মাহফুজা খানমের ঘরে। যদিও সেটি ঘটছে অনেক দেরি করে!

১৯৪৬ সালে বাংলা সনের পহেলা বৈশাখ কলকাতায় জন্ম মাহফুজা খানমের৷ পিতা মুস্তাফিজুর রহমান খান৷ মা সালেহা খানম৷ ১৯৬৬-৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ – ডাকসু’র ভাইস-প্রেসিডেন্ট তথা ভিপি ছিলেন মাহফুজা৷ তবে ১৯৬৮ সালের নভেম্বর পর্যন্ত তিনি ডাকসু’র ভিপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন৷ এসময় পদার্থ বিজ্ঞান বিষয়ে এমএসসি’র ছাত্রী ছিলেন তিনি৷ ১৯৬৯ সালে সাবেক আইন মন্ত্রী কুমিল্লার ব্রাম্মনপাড়া উপজেলার নয়নপুর গ্রামের ব্যারিস্টার শফিক আহমেদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন মাহফুজা৷

১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছয় দফা দাবি সারাদেশের মানুষের কাছে এবং বিশেষভাবে ছাত্র সমাজের কাছে তুলে ধরার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিলেন মাহফুজা এবং তাঁর সহকর্মী ছাত্র নেতারা৷ বাঙালির ‘মুক্তি সনদ’ হিসেবে বিবেচিত সেই ছয় দফা দাবিকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত প্রত্যন্ত অঞ্চলে সভা-সমাবেশে বক্তৃতা করে ঘুরেছেন মাহফুজা খানম৷ এরপর ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা এবং সত্তরের নির্বাচন ও নির্বাচন পরবর্তী সংকটে যারা বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে সংগ্রাম করেছেন তাদের মধ্যে মাহফুজা অন্যতম৷

এই পুরস্কার প্রদানের ঘোষণার প্রতিক্রিয়া হিসেবে উচ্ছ্বসিত কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলা প্রেসক্লাবের সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মুক্তিযুদ্ধের গবেষক, লেখক, কলামিষ্ট সাংবাদিক এবিএম আতিকুর রহমান বাশার। মুক্তিযুদ্ধের গবেষক এই সিনিয়র সাংবাদিক বললেন এভাবে, ‘খবরটি পেয়ে আমি ভয়ঙ্কর লেভেলের খুশি হয়েছি। আমাদের কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার সাবেক এমএনএ হাজী হাশেম সাহেব ও কুমিল্লা সদরের ডা. যোবায়দা রহমানকেও যখন এ পদক দেওয়া হয়েছিলো, তখনও ভালো লেগেছে। তবে মাহফুজা খানম এই পুরস্কারের যোগ্যতা অর্জন করেছেন বহু বছর আগেই। তিনি আরো আগে এই সম্মাননা পাওয়া উচিত ছিল বলে আমি মনে করি।’

এদিকে মাহফুজা খানমের স্বামী সাবেক আইন মন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানান পুরস্কার প্রাপ্তিতে আনন্দ লাগার কথা, ভালো লাগার কথা, তাই আমারো ভালো লেগেছে ,আনন্দ লেগেছে। আমাদের জীবনে এটা একটা সারপ্রাইজের কথা বলে মানুষ, এটা তেমন একটা বিষয়”।

এবার শিক্ষা বিভাগ থেকে মাহফুজা খানম ছাড়া আরও তিন ভাষা সৈনিককে মরণোত্তর পদকসহ ২১ বিশিষ্ট নাগরিককে একুশে পদক দেওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব অসীম কুমার দে স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তাদের নাম ঘোষণা করা হয়।

দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানস্বরূপ এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। তিন ভাষাসৈনিক, তিন মুক্তিযোদ্ধা, তিন সাহিত্যিক, সাংবাদিকতা, গবেষণা ও অর্থনীতিতে একজন করে ও শিল্পকলার বিভিন্ন শাখায় সাত জনসহ মোট ২১ জনকে এ পুরস্কার দেওয়া হবে।

ভাষা সৈনিকদের মধ্যে মোতাহার হোসেন তালুকদার (মরণোত্তর), শামছুল হক (মরণোত্তর), অ্যাডভোকেট আফসার উদ্দীন আহমেদ (মরণোত্তর) এ পদক পাচ্ছেন।

মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে গোলাম হাসনায়েন, ফজলুর রহমান খান ফারুক, বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দা ইসাবেলা (মরণোত্তর) এ পদকের জন্য মনোনীত হয়েছেন।

সাংবাদিকতায় অজয় দাশগুপ্ত, গবেষণায় অধ্যাপক ড. সমীর কুমার সাহা, শিক্ষায় মাহফুজা খানম, অর্থনীতিতে ড. মির্জা আব্দুল জলিল, সমাজসেবায় প্রফেসর কাজী কামরুজ্জামান, ভাষা ও সাহিত্যে কবি কাজী রোজী, বুলবুল চৌধুরী ও গোলাম মুরশিদ পদক পাচ্ছেন।

শিল্পকলা ও সংগীতে পাপিয়া সরোয়ার, অভিনয়ে রাইসুল ইসলাম আসাদ, অভিনয়ে সালমা বেগম সুজাতা, নাটকে আহমেদ ইকবাল হায়দার, চলচ্চিত্রে সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকী, আবৃত্তিতে ড. ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যয় (আবৃত্তি) ও আলোকচিত্রে পাভেল রহমান এই পদক পাচ্ছেন।

পদকপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ১৮ ক্যারেট সোনার তৈরি ৩৫ গ্রাম ওজনের একটি পদক, দুই লাখ টাকা, একটি সম্মাননাপত্র এবং একটি রেপ্লিকা দেওয়া হবে।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ইডেন কলেজে অধ্যাপনা শুরু করেন মাহফুজা৷ চাকরি জীবন শেষ করেছেন অধ্যক্ষ হিসেবে৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৬৬-৬৭ ডাকসু নির্বাচনে ভিপিও হয়েছিলেন তিনি। বর্তমানে তিনি এশিয়াটিক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক, ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অফ টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন এর প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট, খেলাঘরের চেয়ারপারসন, অপরাজেয় বাংলাদেশের সভাপতি, পেশাজীবী নারী সমাজের সভাপতি, দুস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সহ-সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য৷ এছাড়া আরো অনেক সমাজসেবামূলক সংগঠনের সাথে জড়িয়ে রয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা মাহফুজা খানম৷
এ ছাড়াও মাহফুজা খানম ২০১২ সালে নারী শিক্ষা ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য “‘বেগম রোকেয়া পদক”‘ লাভ করেন। তিনি ২০১৩ সালের ২৬ আগস্ট ‘অনন্যা শীর্ষ দশ ২০১৩’ পুরস্কার ও সম্মাননা ও বাংলাদেশের স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল আর টিভি থেকে “‘জয়া আলোকিত নারী-২০১৭”‘ পুরস্কার লাভ করেন। ২০২১ সালে শিক্ষা বিভাগে তিনি একুশে পদক লাভ করেন।
ব্যক্তি জীবনে মাহফুজা খানম ৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ সালে কুমিল্লার ব্রাম্মনপাড়ার নারায়নপুর গ্রামের ব্যারিস্টার শফিক আহমেদকে বিয়ে করেন। তাদের ঘরে দুই পুত্র ও এক মেয়ে সন্তান জন্ম নেয়।

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ

শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ আসলামের মামলা প্রত্যাহারের দাবি

অবশেষে একুশে পদক পেলেন কুমিল্লার ভাবী মাহফুজা খানম

প্রকাশিত : ০৪:৫৪:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১

বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তৈরিতে যারা বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদেরই একজন অধ্যাপিকা মাহফুজা খানম৷ যুদ্ধকালীন নয় মাস ঢাকায় অবস্থান করে যুদ্ধজয়ের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করেছেন তিনি৷

মুক্তিযোদ্ধা ও শিক্ষার পথিকৃৎ এ নারী নেত্রী প্রফেসর মাহফুজা খানমকে অবশেষ একুশে পদকে সম্মানিত করা হচ্ছে। শিক্ষায় অবদানের জন্য দেশের জাতীয় এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক এ পুরস্কারে ভূষিত হচ্ছেন তিনি।

অনেক আগে থেকেই মাহফুজা খানমকে এই সম্মাননা প্রদানের জন্য জোর দাবি উঠেছিল সর্বস্তরের পক্ষ থেকে। কারণ, তিনি একাধারে বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বাংলাদেশের মানবাধিকার ও শিক্ষার পথিকৃৎ।

কারণ হিসেবে অনেকেই তখন বলেছিলেন, নারীরা অবদান রাখার পরও সচরাচর এ ধরনের জাতীয় সম্মাননার জন্য তেমন বেশী নির্বাচিত হন না! তবে সেসব গুজব উড়িয়ে দিয়ে এবার সত্যি সত্যি একুশে পদকের মতো সম্মাননা যাচ্ছে কুমিল্লার ভাবী খ্যাত মাহফুজা খানমের ঘরে। যদিও সেটি ঘটছে অনেক দেরি করে!

১৯৪৬ সালে বাংলা সনের পহেলা বৈশাখ কলকাতায় জন্ম মাহফুজা খানমের৷ পিতা মুস্তাফিজুর রহমান খান৷ মা সালেহা খানম৷ ১৯৬৬-৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ – ডাকসু’র ভাইস-প্রেসিডেন্ট তথা ভিপি ছিলেন মাহফুজা৷ তবে ১৯৬৮ সালের নভেম্বর পর্যন্ত তিনি ডাকসু’র ভিপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন৷ এসময় পদার্থ বিজ্ঞান বিষয়ে এমএসসি’র ছাত্রী ছিলেন তিনি৷ ১৯৬৯ সালে সাবেক আইন মন্ত্রী কুমিল্লার ব্রাম্মনপাড়া উপজেলার নয়নপুর গ্রামের ব্যারিস্টার শফিক আহমেদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন মাহফুজা৷

১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছয় দফা দাবি সারাদেশের মানুষের কাছে এবং বিশেষভাবে ছাত্র সমাজের কাছে তুলে ধরার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিলেন মাহফুজা এবং তাঁর সহকর্মী ছাত্র নেতারা৷ বাঙালির ‘মুক্তি সনদ’ হিসেবে বিবেচিত সেই ছয় দফা দাবিকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত প্রত্যন্ত অঞ্চলে সভা-সমাবেশে বক্তৃতা করে ঘুরেছেন মাহফুজা খানম৷ এরপর ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা এবং সত্তরের নির্বাচন ও নির্বাচন পরবর্তী সংকটে যারা বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে সংগ্রাম করেছেন তাদের মধ্যে মাহফুজা অন্যতম৷

এই পুরস্কার প্রদানের ঘোষণার প্রতিক্রিয়া হিসেবে উচ্ছ্বসিত কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলা প্রেসক্লাবের সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মুক্তিযুদ্ধের গবেষক, লেখক, কলামিষ্ট সাংবাদিক এবিএম আতিকুর রহমান বাশার। মুক্তিযুদ্ধের গবেষক এই সিনিয়র সাংবাদিক বললেন এভাবে, ‘খবরটি পেয়ে আমি ভয়ঙ্কর লেভেলের খুশি হয়েছি। আমাদের কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার সাবেক এমএনএ হাজী হাশেম সাহেব ও কুমিল্লা সদরের ডা. যোবায়দা রহমানকেও যখন এ পদক দেওয়া হয়েছিলো, তখনও ভালো লেগেছে। তবে মাহফুজা খানম এই পুরস্কারের যোগ্যতা অর্জন করেছেন বহু বছর আগেই। তিনি আরো আগে এই সম্মাননা পাওয়া উচিত ছিল বলে আমি মনে করি।’

এদিকে মাহফুজা খানমের স্বামী সাবেক আইন মন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানান পুরস্কার প্রাপ্তিতে আনন্দ লাগার কথা, ভালো লাগার কথা, তাই আমারো ভালো লেগেছে ,আনন্দ লেগেছে। আমাদের জীবনে এটা একটা সারপ্রাইজের কথা বলে মানুষ, এটা তেমন একটা বিষয়”।

এবার শিক্ষা বিভাগ থেকে মাহফুজা খানম ছাড়া আরও তিন ভাষা সৈনিককে মরণোত্তর পদকসহ ২১ বিশিষ্ট নাগরিককে একুশে পদক দেওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব অসীম কুমার দে স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তাদের নাম ঘোষণা করা হয়।

দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানস্বরূপ এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। তিন ভাষাসৈনিক, তিন মুক্তিযোদ্ধা, তিন সাহিত্যিক, সাংবাদিকতা, গবেষণা ও অর্থনীতিতে একজন করে ও শিল্পকলার বিভিন্ন শাখায় সাত জনসহ মোট ২১ জনকে এ পুরস্কার দেওয়া হবে।

ভাষা সৈনিকদের মধ্যে মোতাহার হোসেন তালুকদার (মরণোত্তর), শামছুল হক (মরণোত্তর), অ্যাডভোকেট আফসার উদ্দীন আহমেদ (মরণোত্তর) এ পদক পাচ্ছেন।

মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে গোলাম হাসনায়েন, ফজলুর রহমান খান ফারুক, বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দা ইসাবেলা (মরণোত্তর) এ পদকের জন্য মনোনীত হয়েছেন।

সাংবাদিকতায় অজয় দাশগুপ্ত, গবেষণায় অধ্যাপক ড. সমীর কুমার সাহা, শিক্ষায় মাহফুজা খানম, অর্থনীতিতে ড. মির্জা আব্দুল জলিল, সমাজসেবায় প্রফেসর কাজী কামরুজ্জামান, ভাষা ও সাহিত্যে কবি কাজী রোজী, বুলবুল চৌধুরী ও গোলাম মুরশিদ পদক পাচ্ছেন।

শিল্পকলা ও সংগীতে পাপিয়া সরোয়ার, অভিনয়ে রাইসুল ইসলাম আসাদ, অভিনয়ে সালমা বেগম সুজাতা, নাটকে আহমেদ ইকবাল হায়দার, চলচ্চিত্রে সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকী, আবৃত্তিতে ড. ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যয় (আবৃত্তি) ও আলোকচিত্রে পাভেল রহমান এই পদক পাচ্ছেন।

পদকপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ১৮ ক্যারেট সোনার তৈরি ৩৫ গ্রাম ওজনের একটি পদক, দুই লাখ টাকা, একটি সম্মাননাপত্র এবং একটি রেপ্লিকা দেওয়া হবে।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ইডেন কলেজে অধ্যাপনা শুরু করেন মাহফুজা৷ চাকরি জীবন শেষ করেছেন অধ্যক্ষ হিসেবে৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৬৬-৬৭ ডাকসু নির্বাচনে ভিপিও হয়েছিলেন তিনি। বর্তমানে তিনি এশিয়াটিক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক, ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অফ টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন এর প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট, খেলাঘরের চেয়ারপারসন, অপরাজেয় বাংলাদেশের সভাপতি, পেশাজীবী নারী সমাজের সভাপতি, দুস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সহ-সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য৷ এছাড়া আরো অনেক সমাজসেবামূলক সংগঠনের সাথে জড়িয়ে রয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা মাহফুজা খানম৷
এ ছাড়াও মাহফুজা খানম ২০১২ সালে নারী শিক্ষা ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য “‘বেগম রোকেয়া পদক”‘ লাভ করেন। তিনি ২০১৩ সালের ২৬ আগস্ট ‘অনন্যা শীর্ষ দশ ২০১৩’ পুরস্কার ও সম্মাননা ও বাংলাদেশের স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল আর টিভি থেকে “‘জয়া আলোকিত নারী-২০১৭”‘ পুরস্কার লাভ করেন। ২০২১ সালে শিক্ষা বিভাগে তিনি একুশে পদক লাভ করেন।
ব্যক্তি জীবনে মাহফুজা খানম ৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ সালে কুমিল্লার ব্রাম্মনপাড়ার নারায়নপুর গ্রামের ব্যারিস্টার শফিক আহমেদকে বিয়ে করেন। তাদের ঘরে দুই পুত্র ও এক মেয়ে সন্তান জন্ম নেয়।

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ