১২:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫

নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্ভোগ

আষাঢ়ের বৃষ্টিপাত ও লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে রংপুর মহানগরীতে তৎপর ছিলো প্রশাসন। পুলিশের পাশাপাশি মাঠে সরব ছিলো র‌্যাব, সেনাবাহিনী ও বিজিবিও। একারণে অফিসগামী মানুষ যাতায়াত নিয়ে পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। আর নি¤œ আয়ের মানুষজন কর্মহীন হওয়ায় জীবনধারণ নিয়ে পড়েছেন চরম বিপাকে।

নগরীর পায়রা চত্বর, সিওবাজার, কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল, মর্ডান মোড়, পার্কের মোড়, লালবাঘের মোড়সহ বিভিন্ন এলাকার ঘুরে দেখা গেছে সাধারণ মানুষজন কর্মহীন বসে থাকতে। রংপুর মহানগরীর নজিরের হাট এলাকার মৌসুমি আক্তার স্থানীয় একটি হাসপাতালের পরিচ্ছন্ন কর্মীর কাজ করেন। প্রতিদিন থাকে বাড়ি থেকে হাসপাতালে যাতায়াত করতে হয়। তিনি বলেন লকডাউনেও হাসপাতাল খোলা রাখা হয়েছে। কিন্তু গাড়ি সাপোর্ট দেয়ার কোনো নিয়ম রাখা হয়নি। কোনো যানবাহন পাচ্ছি না। কিভাবে আমি এখন ডিউটিতে যাবো। কথা বলার সময়ে পরে তিনি আরেক সহকর্মীর দেখা পেয়ে তার সাইকেলের পেছনে উঠে পড়েন। তিনি আপডেট হাসপাতালের কর্মী। শফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, খুবই দুর্ভোগে পড়েছি। যানবাহন না পাওয়ায় এক ছোট ভাইয়ের সাইকেল ধার নিয়ে অফিসের দিকে যাচ্ছি। পথে আরেক নারী সহকর্মীর দেখা। তাকেও নিয়ে যেতে হচ্ছে। বহুদিন সাইকেল চালানো হয় না। দু’জনেরই দাবি যেসব অফিস খোলা আছে সেসব অফিস থেকে যানবাহন সাপোর্ট দেয়া প্রয়োজন।

ধাপ মোড় এলাকার কলা-রুটি বিক্রেতা ফয়জুল ইসলাম জানালেন, রংপুর মেডিকেলসহ ধাপ এলাকায় কোনো হোটেল খোলা নেই। হাসপাতালে যারা গরিব রোগী আসেন, তাদের অভিভাবক এবং রোগীরা মূলত রুটি কলাই কিনে নিয়ে যান। এখন স্যার এসে আমার দোকান বন্ধ করে দিলো।

এসব গরিব অভিভাবক ও রোগী এখন কী খাবে। আমরাই বা চলবো কিভাবে দোকান চালাতে না পারলে। এই দোকানের কর্মচারী সৌরভ জানান, এই দোকানে রুটি কলা ও চা বিক্রির সাথে আমরা ৫ কর্মচারী জড়িত। এখন দোকান বন্ধ হলো। আমাদের ডিউটির টাকা কিভাবে দিবো। দোকানের সামনে কথা হয় নীলফামারী থেকে জেলখানায় আসা আল আমিন নামের এক ব্যক্তির সাথে। তিনি জানান, আমি আসছি কলা রুটি খাওয়ার জন্য। এসে দেখি দোকান বন্ধ করে দিয়েছে। তাহলে আমরা এখন কোথায় যাবো সেটা বলেন। সকালে আমরা কোথায় খাবো।


রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানার ওসি আব্দুর রশিদ জানান, কঠোর লকডাউন মানাতে আমরা সেনাবাহিনী, জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশন, র‌্যাব, বিজিবি এবং মেট্রোপুলিশ একযোগে কাজ করছি। গুরুত্বপূর্ণ সব পয়েন্টে চেক পোস্ট বসানো হয়েছে। তিনি বলেন, রংপুরের মানুষ এক হয়ে আমাদের কাজে সহযোগিতা করছেন। রংপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রায়হানুল ইসলাম জানান, বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। জনগণের মধ্যেও কিছুটা সচেতনতা তৈরি হয়েছে। তারাও খুব একটা বেশি ঘর থেকে বের হয়নি।
রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল ওয়াহাব ভূঞা জানান, সিটি করপোরেশন ছাড়াও বিভাগের আট জেলার ৫৮ উপজেলা এবং ইউনিয়নগুলোতেও সরকারের কঠোর বিধিনিষেধ মানাতে প্রশাসন কাজ করছে। তিনি করোনাভাইরাস মোকাবেলায় জনগণকে সরকারি বিধিনিষেধ মেনে চলার আহবান জানান।

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্ভোগ

প্রকাশিত : ০৫:৫১:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ জুলাই ২০২১

আষাঢ়ের বৃষ্টিপাত ও লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে রংপুর মহানগরীতে তৎপর ছিলো প্রশাসন। পুলিশের পাশাপাশি মাঠে সরব ছিলো র‌্যাব, সেনাবাহিনী ও বিজিবিও। একারণে অফিসগামী মানুষ যাতায়াত নিয়ে পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। আর নি¤œ আয়ের মানুষজন কর্মহীন হওয়ায় জীবনধারণ নিয়ে পড়েছেন চরম বিপাকে।

নগরীর পায়রা চত্বর, সিওবাজার, কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল, মর্ডান মোড়, পার্কের মোড়, লালবাঘের মোড়সহ বিভিন্ন এলাকার ঘুরে দেখা গেছে সাধারণ মানুষজন কর্মহীন বসে থাকতে। রংপুর মহানগরীর নজিরের হাট এলাকার মৌসুমি আক্তার স্থানীয় একটি হাসপাতালের পরিচ্ছন্ন কর্মীর কাজ করেন। প্রতিদিন থাকে বাড়ি থেকে হাসপাতালে যাতায়াত করতে হয়। তিনি বলেন লকডাউনেও হাসপাতাল খোলা রাখা হয়েছে। কিন্তু গাড়ি সাপোর্ট দেয়ার কোনো নিয়ম রাখা হয়নি। কোনো যানবাহন পাচ্ছি না। কিভাবে আমি এখন ডিউটিতে যাবো। কথা বলার সময়ে পরে তিনি আরেক সহকর্মীর দেখা পেয়ে তার সাইকেলের পেছনে উঠে পড়েন। তিনি আপডেট হাসপাতালের কর্মী। শফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, খুবই দুর্ভোগে পড়েছি। যানবাহন না পাওয়ায় এক ছোট ভাইয়ের সাইকেল ধার নিয়ে অফিসের দিকে যাচ্ছি। পথে আরেক নারী সহকর্মীর দেখা। তাকেও নিয়ে যেতে হচ্ছে। বহুদিন সাইকেল চালানো হয় না। দু’জনেরই দাবি যেসব অফিস খোলা আছে সেসব অফিস থেকে যানবাহন সাপোর্ট দেয়া প্রয়োজন।

ধাপ মোড় এলাকার কলা-রুটি বিক্রেতা ফয়জুল ইসলাম জানালেন, রংপুর মেডিকেলসহ ধাপ এলাকায় কোনো হোটেল খোলা নেই। হাসপাতালে যারা গরিব রোগী আসেন, তাদের অভিভাবক এবং রোগীরা মূলত রুটি কলাই কিনে নিয়ে যান। এখন স্যার এসে আমার দোকান বন্ধ করে দিলো।

এসব গরিব অভিভাবক ও রোগী এখন কী খাবে। আমরাই বা চলবো কিভাবে দোকান চালাতে না পারলে। এই দোকানের কর্মচারী সৌরভ জানান, এই দোকানে রুটি কলা ও চা বিক্রির সাথে আমরা ৫ কর্মচারী জড়িত। এখন দোকান বন্ধ হলো। আমাদের ডিউটির টাকা কিভাবে দিবো। দোকানের সামনে কথা হয় নীলফামারী থেকে জেলখানায় আসা আল আমিন নামের এক ব্যক্তির সাথে। তিনি জানান, আমি আসছি কলা রুটি খাওয়ার জন্য। এসে দেখি দোকান বন্ধ করে দিয়েছে। তাহলে আমরা এখন কোথায় যাবো সেটা বলেন। সকালে আমরা কোথায় খাবো।


রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানার ওসি আব্দুর রশিদ জানান, কঠোর লকডাউন মানাতে আমরা সেনাবাহিনী, জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশন, র‌্যাব, বিজিবি এবং মেট্রোপুলিশ একযোগে কাজ করছি। গুরুত্বপূর্ণ সব পয়েন্টে চেক পোস্ট বসানো হয়েছে। তিনি বলেন, রংপুরের মানুষ এক হয়ে আমাদের কাজে সহযোগিতা করছেন। রংপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রায়হানুল ইসলাম জানান, বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। জনগণের মধ্যেও কিছুটা সচেতনতা তৈরি হয়েছে। তারাও খুব একটা বেশি ঘর থেকে বের হয়নি।
রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল ওয়াহাব ভূঞা জানান, সিটি করপোরেশন ছাড়াও বিভাগের আট জেলার ৫৮ উপজেলা এবং ইউনিয়নগুলোতেও সরকারের কঠোর বিধিনিষেধ মানাতে প্রশাসন কাজ করছে। তিনি করোনাভাইরাস মোকাবেলায় জনগণকে সরকারি বিধিনিষেধ মেনে চলার আহবান জানান।

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ