০৩:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই যুগের মাইলফলক স্পর্শ আজ

গণ বিশ্ববিদ্যালয়, দেশের ব্যতিক্রমধর্মী এই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টি ছুতে যাচ্ছে দুই যুগের মাইলফলক। সাভারের ৩১ একরের এই ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির কথা জানার চেষ্টা করেছেন ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমাল সাইন্সেস অনুষদের শিক্ষার্থী মোঃ বরাতুজ্জামান স্পন্দন।

প্রত্যাশার বিশাল ঝুলি নিয়ে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই। ভর্তির সময়ে ক্যাম্পাস এত জাঁকজমকপূর্ণ ছিল না। যেকোনো কারনে মেডিকেল ফিজিক্স এণ্ড বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তি হওয়ার পর আমার প্রত্যাশার জায়গাটা বেড়ে যায়। তখনকার সময়ের বিভাগীয় প্রধান ড. হাসিন অনুপমা ম্যামের কথা শুনে আমি মুগ্ধ হই এবং বিশ্বাস করতে শুরু করলাম এই সাবজেক্টে পড়া যায়। অদূর ভবিষ্যতে এই পেশাতে কিছু করা যাবে, সেই প্রত্যাশা থেকেই ভর্তি হওয়া। খুব চমৎকার ছিল আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবন। অনেক বাধা-বিপত্তির পরও এখান থেকেই স্নাতক শেষ করেছি। এটাই আসলে আমার অনেক বড় প্রাপ্তি।

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে অনেক ঝামেলা, অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়ে দেরীতে হলেও যে শেষ করতে পেরেছি, এইটা আমার কাছে প্রথম প্রাপ্তি। অামার সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের কারণে শিক্ষক-সহপাঠীসহ সকলের কাছ থেকে অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। করোনার কারণে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশ গমন বা কোনো চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ না হলেও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমার প্রাপ্তির ঝুলিটা বেশ ভরপুরই। গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মদিনে আমি চাই এই বিশ্ববিদ্যালয় ভবিষ্যতে দেশ সেরাদের তালিকায় থাকবে।

ফারজানা আফরিন পূর্বা
মডেল ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব

বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে আমার প্রত্যাশা অনেক বেশি। এই দিবসে আমি মনে করি বিশ্ববিদ্যালয়কে তথ্য প্রযুক্তির দিক থেকে আরও এগিয়ে নেয়া প্রয়োজন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইট ও বিভিন্ন বিভাগের ওয়েবসাইট আরও তথ্য বহুল, সমৃদ্ধ ও যুগোপযোগী করে তোলা খুবই প্রয়োজন। পাশাপশি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ ও ইউজিসি কর্তৃক বৈধ উপাচার্য নিয়োগ করা একান্তভাবে প্রয়োজন। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের জন্য নিজস্ব পরিবহনের ব্যবস্থা, গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সুবিধা ও শিক্ষাবৃত্তি চালু করা বিশেষভাবে প্রয়োজন।

আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বিস্তৃত ও মনোরম পরিবেশ সমৃদ্ধ নিজস্ব স্থায়ী ক্যাম্পাস রয়েছে। অামার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে প্রত্যাশার চেয়ে প্রাপ্তি ছিল অনেক বেশি। দেশের খ্যাতনামা দক্ষ শিক্ষকদের পাঠদান স্বশরীরে উপভোগ করেছি। খেলার মাঠ, জিমনেসিয়াম, ক্যান্টিন, টেনিস কোর্ট, অডিটোরিয়াম, সাংবাদিক সমিতি, ছাত্র সংসদ সহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনে সমৃদ্ধ একটি ক্যাম্পাস পেয়েছি। শিক্ষার্থীবান্ধব এত সুযোগ সুবিধা দেশের অন্য কোন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় নেই বললেই চলে। সকলের সহযোগিতা ও ভালবাসায় সিক্ত আমি যখনই প্রাপ্তির কথা ভাবি তখন নিজেকে সফল মনে হয়।

এনায়েতুল্লাহ কৌশিক
সাবেক সভাপতি, সমকাল সুহৃদ সমাবেশ (গবি)।

অাগে থেকে জেনেই ফার্মেসি বিভাগে ভর্তি হয়েছিলাম। স্বল্পমূল্যে দেশের ফার্মেসি সেক্টরের সেরা ফার্মাসিস্ট তৈরির তীর্থস্থান থেকে শিক্ষাগ্রহণ করে ক্যারিয়ার করার জন্যই এখানে আসা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিকে অনেক ভালো ভালো শিক্ষকদের সান্নিধ্য পেয়েছি। তারা আমাদের একাডেমিক ক্ষেত্রে খুবই সাহায্য করেছেন। আমি মনে করি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুধু পুঁথিগত বিদ্যা অর্জনেই নয় বরং জীবনমুখী নানা শিক্ষা অর্জনের যেই প্রত্যাশা আমার ছিল তার ষোল আনাই প্রাপ্তির খাতায় উঠেছে।

আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে বিভিন্ন সময়ে নানা চড়াই-উৎরাইয়ের সম্মুখীন হয়েছি। প্রতিবারই পরিবারের সদস্যের মতো আমার পাশে দাঁড়িয়েছে শিক্ষক-সহপাঠীসহ অনেকেই। শিখিয়েছে কঠিন মুহূর্তগুলো কিভাবে একসাথে একত্রে পাড়ি দিতে হয়। প্রাপ্তির বেশ বড় অংশ জুড়েই এই স্মৃতিগুলো রয়েছে। আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রতিটা মুহূর্তই আমার কাছে আসলে অনেক বড় পাওয়া।

আমি বলব গণ বিশ্ববিদ্যালয় আমার ভালোবাসার জায়গা। আদতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হলেও সব শিক্ষার্থীর কাছে একে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতই মনে হয়। কারন এত বড় ক্যাম্পাস এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম গতানুগতিক কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে কোনো অংশে কম নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিবাহিত করা প্রতিটি দিন আমার কাছে অমুল্য সোনালী স্মৃতি, যা হয়তো সবার কাছে থাকে না।

মৌসুমী মিশু
সাবেক শিক্ষার্থী, ফার্মেসী বিভাগ।

আমার জ্ঞানচক্ষু উন্মোচনের সবুজ পৃথিবী এই গণ বিশ্ববিদ্যালয়। প্রত্যাশা-প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি, আনন্দ-বেদনা আর নিজেকে জাগানো আমার পার্থিব স্বর্গরাজ্যও এটি। সেখানকার বৃক্ষ-লতা-ঘাসের সঙ্গে লেগে থাকা যৌবনের আবেগমথিত সংস্কৃতি ও মানবিক ভাবাবেগের ভেতরে প্রবেশের অনন্য সিংহদুয়ারও এটি। আমরা যারা এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি থেকে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে এদেশের রাষ্ট্র ও সমাজের বিচিত্র কর্মযজ্ঞে নিয়োজিত- সকলেরই রয়েছে এর সঙ্গে আন্তরিক সংযোগ। বিশেষত যেসব গ্র্যাজুয়েট দেশের বাইরে অবস্থান করছেন তারা তাঁদের প্রিয় ক্যাম্পাসকে স্মৃতির মণিকোঠায় ধারণ করে আছেন।

সময়ের পরিক্রমায় শুধু এখানকার শিক্ষক, শিক্ষার্থী কিংবা শুভানুধ্যায়ী নয়, সবাই এই বিশ্ববিদ্যালয় কাছ থেকে দারুণ কিছু আশা করে। এই বিশ্ববিদ্যালয় হবে জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার মাধ্যমে ছাত্রদের নৈতিকতাবোধ তৈরি, প্রগতিবাদী ও সৃষ্টিশীল করে গড়ে তোলার সূতিকাগার। শ্রেণীকক্ষগুলো মুখরিত থাকবে শিক্ষক ও ছাত্রের গঠনমূলক আলোচনায়।

প্রত্যাশা করি, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলেমেয়েরা হয়ে উঠুক সৃজনশীল, সুযোগ্য নাগরিক; যারা আগামীতে দেশ পরিচালনা করবেন। একইসঙ্গে চলমান সংকটগুলোর সুষ্ঠু সমাধান হোক, গুরুত্ব পাক শিক্ষার মান উন্নয়ন, অম্লান থাকুক প্রিয় ক্যাম্পাসের গৌরব আর ঐতিহ্য। ক্যাম্পাস হবে জ্ঞান অর্জন, সংস্কৃতি ও মুক্তবুদ্ধি চর্চার উদ্যান। তবেই পূর্ণ হবে প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি।

আসিফ আল আজাদ
প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, গণ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (গবিসাস)।
বরাতুজ্জামান স্পন্দন
বরাতুজ্জামান
বরাতুজ্জামান sent Yesterday at 15:50
গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে বিবিএ বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলাম। ভর্তি অাগে-পরে কঠিন সময় কাটিয়েছি। অর্থনেতিক সমস্যার কারণে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কথা ভাবতে পারতাম না। অনেক কম টিউশন ফি এবং ওয়েভার সুবিধা থাকায় কিছুটা স্বস্তি নিয়ে ভর্তি হই। বহু রাস্তা হেটে, ছেড়া জুতা সেলাই করে, ল্যাপটপ না থাকায় ল্যাবে বসে অ্যাসাইনমেন্ট সহ বিভিন্ন সংগ্রাম করতে হয়েছে। এমন আরও অনেক কষ্টের কথা মনে হলে এখনো ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে। কারণ বর্তমানে একজন সার্থক মানুষ হিসেবে নিজেকে তৈরি করতে পেরেছি। বর্তমানে একটি প্রতিষ্ঠিত ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানির কর্মকর্তা হিসেবে অাছি। সব কষ্ট যেন হাজার গুণ সুখ হিসেবে ফিরে এসেছে।

প্রতিটি ক্যাম্পাসের ভালো-মন্দ দিক থাকে। অামার ক্যাম্পাস যে এর বহির্ভূত, তা বলবো না। তবে আমি আমার ক্যাম্পাস থেকে যেই সাপোর্টটুকু পেয়েছি তা আমার জন্য অনেক অনুপ্রেরণার। গণ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমার প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি যা ছিলো, তা আমি পেয়েছি। ক্যাম্পাসের বর্তমান ও ভবিষ্যত শিক্ষার্থীদের বলবো, পাঠ্যপুস্তকের জ্ঞানের পাশাপাশি নিজেরও চেষ্টা করতে হবে ভালো কিছু অর্জন করার। বিভিন্ন সংগঠন-মূলক কার্যক্রম ও বাড়তি প্রচেষ্টাই পারে আমাদের সফল করতে।

মানসূরা হক রুপা
সাবেক শিক্ষার্থী, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই যুগের মাইলফলক স্পর্শ আজ

প্রকাশিত : ১২:২৯:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ জুলাই ২০২১

গণ বিশ্ববিদ্যালয়, দেশের ব্যতিক্রমধর্মী এই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টি ছুতে যাচ্ছে দুই যুগের মাইলফলক। সাভারের ৩১ একরের এই ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির কথা জানার চেষ্টা করেছেন ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমাল সাইন্সেস অনুষদের শিক্ষার্থী মোঃ বরাতুজ্জামান স্পন্দন।

প্রত্যাশার বিশাল ঝুলি নিয়ে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই। ভর্তির সময়ে ক্যাম্পাস এত জাঁকজমকপূর্ণ ছিল না। যেকোনো কারনে মেডিকেল ফিজিক্স এণ্ড বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তি হওয়ার পর আমার প্রত্যাশার জায়গাটা বেড়ে যায়। তখনকার সময়ের বিভাগীয় প্রধান ড. হাসিন অনুপমা ম্যামের কথা শুনে আমি মুগ্ধ হই এবং বিশ্বাস করতে শুরু করলাম এই সাবজেক্টে পড়া যায়। অদূর ভবিষ্যতে এই পেশাতে কিছু করা যাবে, সেই প্রত্যাশা থেকেই ভর্তি হওয়া। খুব চমৎকার ছিল আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবন। অনেক বাধা-বিপত্তির পরও এখান থেকেই স্নাতক শেষ করেছি। এটাই আসলে আমার অনেক বড় প্রাপ্তি।

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে অনেক ঝামেলা, অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়ে দেরীতে হলেও যে শেষ করতে পেরেছি, এইটা আমার কাছে প্রথম প্রাপ্তি। অামার সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের কারণে শিক্ষক-সহপাঠীসহ সকলের কাছ থেকে অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। করোনার কারণে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশ গমন বা কোনো চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ না হলেও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমার প্রাপ্তির ঝুলিটা বেশ ভরপুরই। গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মদিনে আমি চাই এই বিশ্ববিদ্যালয় ভবিষ্যতে দেশ সেরাদের তালিকায় থাকবে।

ফারজানা আফরিন পূর্বা
মডেল ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব

বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে আমার প্রত্যাশা অনেক বেশি। এই দিবসে আমি মনে করি বিশ্ববিদ্যালয়কে তথ্য প্রযুক্তির দিক থেকে আরও এগিয়ে নেয়া প্রয়োজন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইট ও বিভিন্ন বিভাগের ওয়েবসাইট আরও তথ্য বহুল, সমৃদ্ধ ও যুগোপযোগী করে তোলা খুবই প্রয়োজন। পাশাপশি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ ও ইউজিসি কর্তৃক বৈধ উপাচার্য নিয়োগ করা একান্তভাবে প্রয়োজন। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের জন্য নিজস্ব পরিবহনের ব্যবস্থা, গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সুবিধা ও শিক্ষাবৃত্তি চালু করা বিশেষভাবে প্রয়োজন।

আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বিস্তৃত ও মনোরম পরিবেশ সমৃদ্ধ নিজস্ব স্থায়ী ক্যাম্পাস রয়েছে। অামার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে প্রত্যাশার চেয়ে প্রাপ্তি ছিল অনেক বেশি। দেশের খ্যাতনামা দক্ষ শিক্ষকদের পাঠদান স্বশরীরে উপভোগ করেছি। খেলার মাঠ, জিমনেসিয়াম, ক্যান্টিন, টেনিস কোর্ট, অডিটোরিয়াম, সাংবাদিক সমিতি, ছাত্র সংসদ সহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনে সমৃদ্ধ একটি ক্যাম্পাস পেয়েছি। শিক্ষার্থীবান্ধব এত সুযোগ সুবিধা দেশের অন্য কোন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় নেই বললেই চলে। সকলের সহযোগিতা ও ভালবাসায় সিক্ত আমি যখনই প্রাপ্তির কথা ভাবি তখন নিজেকে সফল মনে হয়।

এনায়েতুল্লাহ কৌশিক
সাবেক সভাপতি, সমকাল সুহৃদ সমাবেশ (গবি)।

অাগে থেকে জেনেই ফার্মেসি বিভাগে ভর্তি হয়েছিলাম। স্বল্পমূল্যে দেশের ফার্মেসি সেক্টরের সেরা ফার্মাসিস্ট তৈরির তীর্থস্থান থেকে শিক্ষাগ্রহণ করে ক্যারিয়ার করার জন্যই এখানে আসা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিকে অনেক ভালো ভালো শিক্ষকদের সান্নিধ্য পেয়েছি। তারা আমাদের একাডেমিক ক্ষেত্রে খুবই সাহায্য করেছেন। আমি মনে করি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুধু পুঁথিগত বিদ্যা অর্জনেই নয় বরং জীবনমুখী নানা শিক্ষা অর্জনের যেই প্রত্যাশা আমার ছিল তার ষোল আনাই প্রাপ্তির খাতায় উঠেছে।

আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে বিভিন্ন সময়ে নানা চড়াই-উৎরাইয়ের সম্মুখীন হয়েছি। প্রতিবারই পরিবারের সদস্যের মতো আমার পাশে দাঁড়িয়েছে শিক্ষক-সহপাঠীসহ অনেকেই। শিখিয়েছে কঠিন মুহূর্তগুলো কিভাবে একসাথে একত্রে পাড়ি দিতে হয়। প্রাপ্তির বেশ বড় অংশ জুড়েই এই স্মৃতিগুলো রয়েছে। আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রতিটা মুহূর্তই আমার কাছে আসলে অনেক বড় পাওয়া।

আমি বলব গণ বিশ্ববিদ্যালয় আমার ভালোবাসার জায়গা। আদতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হলেও সব শিক্ষার্থীর কাছে একে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতই মনে হয়। কারন এত বড় ক্যাম্পাস এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম গতানুগতিক কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে কোনো অংশে কম নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিবাহিত করা প্রতিটি দিন আমার কাছে অমুল্য সোনালী স্মৃতি, যা হয়তো সবার কাছে থাকে না।

মৌসুমী মিশু
সাবেক শিক্ষার্থী, ফার্মেসী বিভাগ।

আমার জ্ঞানচক্ষু উন্মোচনের সবুজ পৃথিবী এই গণ বিশ্ববিদ্যালয়। প্রত্যাশা-প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি, আনন্দ-বেদনা আর নিজেকে জাগানো আমার পার্থিব স্বর্গরাজ্যও এটি। সেখানকার বৃক্ষ-লতা-ঘাসের সঙ্গে লেগে থাকা যৌবনের আবেগমথিত সংস্কৃতি ও মানবিক ভাবাবেগের ভেতরে প্রবেশের অনন্য সিংহদুয়ারও এটি। আমরা যারা এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি থেকে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে এদেশের রাষ্ট্র ও সমাজের বিচিত্র কর্মযজ্ঞে নিয়োজিত- সকলেরই রয়েছে এর সঙ্গে আন্তরিক সংযোগ। বিশেষত যেসব গ্র্যাজুয়েট দেশের বাইরে অবস্থান করছেন তারা তাঁদের প্রিয় ক্যাম্পাসকে স্মৃতির মণিকোঠায় ধারণ করে আছেন।

সময়ের পরিক্রমায় শুধু এখানকার শিক্ষক, শিক্ষার্থী কিংবা শুভানুধ্যায়ী নয়, সবাই এই বিশ্ববিদ্যালয় কাছ থেকে দারুণ কিছু আশা করে। এই বিশ্ববিদ্যালয় হবে জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার মাধ্যমে ছাত্রদের নৈতিকতাবোধ তৈরি, প্রগতিবাদী ও সৃষ্টিশীল করে গড়ে তোলার সূতিকাগার। শ্রেণীকক্ষগুলো মুখরিত থাকবে শিক্ষক ও ছাত্রের গঠনমূলক আলোচনায়।

প্রত্যাশা করি, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলেমেয়েরা হয়ে উঠুক সৃজনশীল, সুযোগ্য নাগরিক; যারা আগামীতে দেশ পরিচালনা করবেন। একইসঙ্গে চলমান সংকটগুলোর সুষ্ঠু সমাধান হোক, গুরুত্ব পাক শিক্ষার মান উন্নয়ন, অম্লান থাকুক প্রিয় ক্যাম্পাসের গৌরব আর ঐতিহ্য। ক্যাম্পাস হবে জ্ঞান অর্জন, সংস্কৃতি ও মুক্তবুদ্ধি চর্চার উদ্যান। তবেই পূর্ণ হবে প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি।

আসিফ আল আজাদ
প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, গণ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (গবিসাস)।
বরাতুজ্জামান স্পন্দন
বরাতুজ্জামান
বরাতুজ্জামান sent Yesterday at 15:50
গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে বিবিএ বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলাম। ভর্তি অাগে-পরে কঠিন সময় কাটিয়েছি। অর্থনেতিক সমস্যার কারণে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কথা ভাবতে পারতাম না। অনেক কম টিউশন ফি এবং ওয়েভার সুবিধা থাকায় কিছুটা স্বস্তি নিয়ে ভর্তি হই। বহু রাস্তা হেটে, ছেড়া জুতা সেলাই করে, ল্যাপটপ না থাকায় ল্যাবে বসে অ্যাসাইনমেন্ট সহ বিভিন্ন সংগ্রাম করতে হয়েছে। এমন আরও অনেক কষ্টের কথা মনে হলে এখনো ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে। কারণ বর্তমানে একজন সার্থক মানুষ হিসেবে নিজেকে তৈরি করতে পেরেছি। বর্তমানে একটি প্রতিষ্ঠিত ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানির কর্মকর্তা হিসেবে অাছি। সব কষ্ট যেন হাজার গুণ সুখ হিসেবে ফিরে এসেছে।

প্রতিটি ক্যাম্পাসের ভালো-মন্দ দিক থাকে। অামার ক্যাম্পাস যে এর বহির্ভূত, তা বলবো না। তবে আমি আমার ক্যাম্পাস থেকে যেই সাপোর্টটুকু পেয়েছি তা আমার জন্য অনেক অনুপ্রেরণার। গণ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমার প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি যা ছিলো, তা আমি পেয়েছি। ক্যাম্পাসের বর্তমান ও ভবিষ্যত শিক্ষার্থীদের বলবো, পাঠ্যপুস্তকের জ্ঞানের পাশাপাশি নিজেরও চেষ্টা করতে হবে ভালো কিছু অর্জন করার। বিভিন্ন সংগঠন-মূলক কার্যক্রম ও বাড়তি প্রচেষ্টাই পারে আমাদের সফল করতে।

মানসূরা হক রুপা
সাবেক শিক্ষার্থী, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর